alt

জাতীয়

পোশাক শিল্পে অস্থিরতা, বন্ধ অনেক কারখানা

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক, ঢাকা ও প্রতিনিধি, গাজীপুর ও আশুলিয়া : মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সাভারের আশুলিয়ায় বন্ধ শিল্প-কারখানার সামনে পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভ-সংবাদ

সরকার, শ্রমিক ও মালিকপক্ষ নানা উদ্যোগ নিলেও কিছুতেই থামছে না পোশাক খাতের অস্থিরতা। এই অস্থিরতা প্রায় তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে চলছে। মাঝের কয়েকদিন কিছুটা স্বাভাবিক হতে শুরু হলেও সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) থেকে অস্থিরতা আরও বেড়েছে। ইতোমধ্যেই অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রয়েছে বহু কারখানা।

এই পরিস্থিতিতে করণীয় নির্ধারণে সোমবার বিকেলে বৈঠকে বসে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক ও শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ। সেখানেও তেমন কোনো সুখবর আসেনি। বৈঠকে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম বলেছেন, ‘দিনের পর দিন বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা করার পরও দেশের তৈরি পোশাক শিল্পের বর্তমান সার্বিক পরিস্থিতির কাক্সিক্ষত উন্নতি হয়নি। এখন বিভিন্ন কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ চলছে। জানি না এই পরিস্থিতি আরও কতদিন স্থায়ী হবে।’

গত ৫ আগস্ট গণআন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিভিন্ন শ্রেণী গোষ্ঠী ও পেশাজীবীরা নানা দাবি নিয়ে সোচ্চার হলেও এখন সেই প্রবণতা কিছুটা কমেছে। কিন্তু তৈরি পোশাক শিল্পের শ্রমিকরা নানা দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করার পর তা আর থামছেই না।

শ্রমিকদের কোনো সুনির্দিষ্ট দাবি নেই, গাজীপুর, টঙ্গী, সাভারের আশুলিয়ার একেক এলাকায় একেক দাবিতে তারা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। তবে বকেয়া বেতন আর সরকার পতনের পর চাপে পড়া বিভিন্ন কারখানার কর্তৃপক্ষের বেতন আটকে যাওয়ার বিষয়টি সামনে আসছে। গত ৪ সেপ্টেম্বর বিজিএমইএ নিজেদের মধ্যে বৈঠকের পর অনেক কারখানার বেতন পরিশোধ হয়, এরপর কারখানা সচল হওয়ার সংখ্যাও বেড়েছিল।

তবু সংকট থেকে বের হতে পারেনি এই খাত। এই অবস্থায় অভিযানে নামে যৌথ বাহিনী। কারখানায় হামলা, ভাঙচুরের অভিযোগে ১৫ জনেরও বেশি মানুষকে আটকের কথা জানানো হয়। শ্রমিকদের উসকানি দেয়ার অভিযোগে নেত্রকোনা থেকে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তবু পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। গত ১৪ সেপ্টেম্বর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তিনজন উপদেষ্টা উপস্থিতিতে পোশাক খাতের উদ্যোক্তা, শ্রমিক প্রতিনিধি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে সভা করে বিজিএমইএ। সেদিন সিদ্ধান্ত হয়, যে কারখানায় অসন্তোষ দেখা দেবে, শ্রম আইন অনুযায়ী সেই কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হবে। ‘নো ওয়ার্ক, নো পে’ নীতি, অর্থাৎ কাজ না করলে সেদিনের মজুরি না দেয়ার ঘোষণাও হয়।

গাজীপুর ও আশুলিয়ায় বন্ধ ঘোষণা বহু কারখানা

সোমবার গাজীপুর ও আশুলিয়া এলাকার বহু কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বিজিএমইএর জানিয়েছে, আশুলিয়া এলাকার মোট ২৭২টি রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক কারখানার মধ্যে সোমবার ১৩/১ ধারায় বন্ধ ছিল ২৭টি। কারখানা খোলার পর কাজ বন্ধ রাখা হয় বা ছুটি দেয়া হয় এমন কারখানার সংখ্যা ১২টি আর স্বাভাবিক উৎপাদনে ছিল ২৩৩টি তৈরি পোশাক কারখানা। অর্থাৎ সোমবার মোট বন্ধ ছিল প্রায় ৩৯টি কারখানা।

তবে শিল্প পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আশুলিয়ায় ২২ সেপ্টেম্বর রোববার অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ কারখানার সংখ্যা ছিল ২২টি। এরপর সোমবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫২টিতে। একই সঙ্গে গাজীপুরে সোমবার বন্ধ ছিল প্রায় ১৩টি কারখানা। অর্থাৎ শিল্পপুলিশের তথ্যানুসারে সোমবার বন্ধ ছিল প্রায় ৬৫টি কারখানা।

শিল্প পুলিশ বলছে, মালিকদেরও সমস্যা আছে

কারখানা বন্ধের বিষয়ে গাজীপুর শিল্পাঞ্চল পুলিশ-২ এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম সংবাদকে বলেন, ‘সোমবার (সোমবার) শ্রমিক আন্দোলনের মুখে ১৩টি কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে ১২টি পোষাক কারখানা ও একটি খাদ্য উৎপাদন তৈরি কারখানা। এর মধ্যে খাদ্য উৎপাদন তৈরি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বাকিগুলো একদিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে বলে আমরা শুনেছি।’

শুধু শ্রমিকদেরই নয়, মালিকদেরও সমস্যা আছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘সমস্যা কিন্তু শুধু শ্রমিকদের আছে এমন নয়, সমস্যা মালিকদেরও আছে। আজকে টঙ্গীতে যেটা হলো দেড় দুই মাসের বেতনের জন্য আন্দোলন হয়েছে। শ্রমিকদের বারবারই বেতন দিবে বলে মালিক পক্ষ আশ্বস্ত করেছে কিন্ত দিচ্ছে না।’

সারওয়ার আলম আরও বলেন, ‘বল প্রয়োগ করে শ্রমিকদের দাবি দেওয়া মোকাবিলার কৌশল আগেও ফল দেয়নি, এবারও মালিক-শ্রমিকদের আন্তঃসম্পর্ক বৃদ্ধি ও পরস্পরের সমঝোতার মাধ্যমেই এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে।’

এদিকে যেকোনো ধরনের সহিংসতা এড়াতে শিল্পাঞ্চলে মোতায়েন রয়েছে পুলিশ, আর্ম পুলিশ, শিল্প পুলিশ, বিজিবি ও সেনা সদস্যদের যৌথ টহল। শিল্প প্রতিষ্ঠানের সুরক্ষায় বিভিন্ন কারখানার সামনে মোতায়েন করা হয়েছে সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যান ও পুলিশের জলকামান।

শ্রমিকদের দাবি মানবে না বিজিএমইএ

পোশাক শিল্প খাতে বিদ্যমান অস্থিরতা ও সমস্যা নিরসনে সরকারের কাছে ১৮টি দাবি উত্থাপন করেছে শ্রমিক পক্ষ। এদের মধ্যে মজুরি বোর্ড পুনর্গঠন করে মজুরি পুনর্নিধারণ ও বাৎসরিক ন্যূনতম ১০ শতাংশ ইনক্রিমেন্টের (বেতন বৃদ্ধি) দাবি ছিল।

তবে সেই দাবি মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে বিজিএমইএ। সোমবারের জরুরি সাধারণ সভায় এ সিদ্ধান্তের কথা জানায় সংগঠনটি। কারণ হিসেবে তারা বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি, শিল্পের অক্ষমতা এবং উৎপাদনের খরচ বৃদ্ধিতে হিসেবে উল্লেখ করেছে।

এর আগে দুপুরে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের এক সভায় ১৮টি দাবি উত্থাপন করে শ্রমিক পক্ষ। এতে সভাপতিত্ব করেন শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান। শ্রমিকদের দাবিগুলো হলো, মজুরি বোর্ড পুনর্গঠনপূর্বক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি পুনর্নিধারণ করতে হবে। যে সব কারখানায় ২০২৩ সালে সরকার ঘোষিত নিম্নতম মজুরি ও এখনো বাস্তবায়ন করা হয়নি তা দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। শ্রম আইন সংশোধন করতে হবে। কোনো শ্রমিকের চাকরি পাঁচ বছর পূর্ণ হওয়ার পর চাকরি থেকে অব্যাহতি দিলে বা চাকরিচ্যুত হলে একটি বেসিকের সমান অর্থ প্রদান করতে হবে। এর সাথে সাংঘর্ষিক শ্রম আইনের ২৭ ধারাসহ অন্য ধারাসমূহ সংশোধন করতে হবে। সব প্রকার বকেয়া মজুরি অবিলম্বে পরিশোধ করতে হবে। হাজিরা বোনাস (২২৫ টাকা), টিফিন বিল (৫০ টাকা), নাইট বিল (১০০ টাকা) সব কারখানায় সমান হারে বাড়াতে হবে। সব কারখানায় প্রভিডেন্ড ফান্ড ব্যবস্থা চালু করতে হবে। বেতনের বিপরীতে বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট ন্যূনতম ১০ শতাংশ নির্ধারণ করতে হবে।

অন্য দাবিগুলো হলো, শ্রমিকদের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা চালু করতে হবে। বিজিএমইএ কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত বায়োমেট্রিক ব্ল্যাকলিস্টিং করা যাবে না; বায়োমেট্রিক তালিকা সরকারের নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। সব প্রকার হয়রানিমূলক এবং রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। ঝুট ব্যবসার আধিপত্য বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে, প্রয়োজনে এ বিষয়ে আইন করতে হবে। কলকারখানায় বৈষম্যবিহীন নিয়োগ প্রদান করতে হবে। জুলাই বিপ্লবে শহীদ এবং আহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ এবং চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে হবে। রানা প্লাজা এবং তাজরীন ফ্যাশনস দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের কল্যাণে তদন্তান্তে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। শ্রম আইন অনুযায়ী সব কারখানায় ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপন করতে হবে। অন্যায্যভাবে শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ করতে হবে ও নারী শ্রমিকদের মাতৃত্বকালীন ছুটির মেয়াদ ১২০ দিন নির্ধারণ করতে হবে। শ্রমিকদের এসব দাবি মানবে না বলে জানিয়েছে বিজিএমইএ।

গাজীপুর ও আশুলিয়ার পরিস্থিতি সোমবার যেমন ছিল

বোনাস, টিফিন বিল, নাইট বিল বৃদ্ধি বাস্তবায়ন না হওয়ায় রোববার বিভিন্ন কারখানায় বিক্ষোভ করেন আশুলিয়ার শ্রমিকরা। অজানা আশঙ্কায় ছুটি ঘোষণা করার পর সোমবার থেকে দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী হা-মীম গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের মালিকানাধীন দ্যাটস ইট স্পোর্টস ওয়ার লিমিটেড, এ্যাপারেল গ্যালারি লিমিটেড, রিফাত গার্মেন্টস লিমিটেড, এক্সপ্রেস ওয়াশিং অ্যান্ড ডাইং লিমিটেড, আর্টিস্টিক ডিজাইন লিমিটেড, নেক্সট কালেকশন লিমিটেড নামের তৈরি পোশাক কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের ঘোষণা দেয়। তাদের অনুসরণ করে এনভয়, দ্য রোজ গার্মেন্টস, ইউকোরিয়া অ্যাপারেলস, জেবারেস নেক্সট, সিন সিন অ্যাপারেল, টেক্সট ম্যাক্স, মেহনাজ স্টাইল ও রেডিয়ান্স যোগ দেবার কারণে শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় শ্রম পরিস্থিতি ক্রমশ ঘোলাটে হয়ে পড়েছে।

সোমবার সকাল ৯টার পর থেকে গাজীপুরের টঙ্গীর এরশাদ নগর এলাকায় সিজন্স ড্রেসেস লিমিটেডের নামের কারখানার শ্রমিকরা। গত তিন মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের দু’পাশে অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে। দুপুর ৩টার দিকে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে আসলে শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনায় বসে। পরে শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনার এক পর্যায়ে কারখানার কর্তৃপক্ষরা ঘটনাস্থলে আসলে শ্রমিকদের সব দাবিগুলো মেনে নেয় মালিক পক্ষ। সোমবার দুপুরের পর সেনাবাহিনীর মাধ্যমে পোশাক কারখানার শ্রমিক ও মালিকদের সমঝোতা হলে ৪টার পর ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের দু’পাশের যানচলাচল স্বাভাবিক হয়।

এছাড়া গাজীপুরের সদর উপজেলার বাঘের বাজার এলাকায় গোল্ডেন রিফিট গার্মেন্টস্ লিমিটেড নামের একটি গার্মেন্টস কারখানার শ্রমিকরা ১২ দফা দাবি জানিয়ে মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করছে। একই সঙ্গে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক এলাকায় একটি খাদ্য উৎপাদন তৈরি কারখানায় বিক্ষোভের সময় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে ৬ জনকে আটক করেছে সেনাবাহিনী। সোমবার সকালে কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাকে কোকোলা ফুড প্রোডাক্ট লিমিটেড কারখানা এলাকায় বিক্ষোভের সময় তাদের আটক করা হয়।

এর আগে শ্রমিকরা আধা ঘণ্টা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে অবরোধ করে রাখে। খবর পেয়ে পুলিশ ও সোনাবাহিনীর সদস্যরা শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে ছয়জনকে আটক করে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে আটককৃতদের নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি।

ছবি

লেফটেন্যান্ট তানজিম ছারোয়ারের স্মৃতি সংরক্ষণে উদ্যোগ

আন্দোলনে শহীদ পরিবারের সদস্যদের পর্যটন শিল্পে সম্পৃক্ত করা হবে

ছবি

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য হলেই নির্বাচন : নিউইয়র্কে মুহাম্মদ ইউনূস

ছবি

মানবাধিকার ও বাকস্বাধীনতা সমুন্নত রাখার প্রতিশ্রুতি দিলেন অধ্যাপক ইউনূস

ছবি

অতিরিক্ত ডিআইজি হলেন ৪৭ এসপি

ছবি

অপরাধ করে থাকলে শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করা উচিত: ইউনূস

ছবি

সংস্কার উদ্যোগে ৩৫০ কোটি ডলার দেবে বিশ্ব ব্যাংক

ছবি

দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করতে শাহবাজ শরিফ ও মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠক

বিদ্যুতে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি : ভারত-বাংলাদেশের সম্মতির অপেক্ষায় নেপাল

ছবি

সরকার পতনের পর দেড়মাসে শতাধিক খুন রাজধানীতে

ছবি

গুলিতেই মারা গেছে আবু সাইদ ,মাথায় আঘাত উল্লেখ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেয়া ময়না তদন্ত প্রতিবেদনটি ভুয়া

ছবি

নাহিদ ইসলাম এর সাথে গণঅভ্যুত্থানে শহীদ মিরাজ ও রাব্বির পরিবারের সাক্ষাৎ

ছবি

‘বিরল’ বৈঠকে ইউনূসকে বুকে টেনে নিলেন বাইডেন

ছবি

তরুণদের আত্মত্যাগে নতুন বাংলাদেশের সম্ভাবনা, বিদেশি বন্ধুদের সহায়তা কামনা ইউনূসের

ছবি

ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, ২৪ ঘণ্টায় ৮৫৪ জন ভর্তি, ২ জনের মৃত্যু

ছবি

দুর্গাপূজায় প্রতিটি মণ্ডপের নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ সতর্কতা: ডিএমপি কমিশনার

ছবি

তরুণদের স্বপ্নের নতুন বাংলাদেশ গড়তে বিদেশী বন্ধুদের সহযোগিতা চান ইউনূস

ছবি

কানাডার প্রধানমন্ত্রী ট্রুডোর সঙ্গে বৈঠক করলেন মুহাম্মদ ইউনূস

ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বাইডেনের পূর্ণ সমর্থন মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে

ছবি

ইউনূস ও জাস্টিন ট্রুডো একান্ত বৈঠক

ছবি

এ মাসে ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা অর্ধশতাধিক

ছবি

সাংবাদিক রুহুল আমিন গাজী আর নেই

ছবি

অন্তবর্র্তী সরকারকে ‘পূর্ণ সমর্থন’ জানালেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন

ছবি

রাজধানীর সুপারশপে পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধের প্রথম ধাপ: সচেতনতা এবং বিকল্পের দিকে উদ্যোগ

ছবি

গণঅভ্যুত্থানে নিহত ৭০৮ জনের তালিকা প্রকাশ করল সরকার

ছবি

শ্রমিকদের নিম্নতম মজুরি বাস্তবায়ন হবে, হাজিরা বোনাস বাড়ছে

ছবি

জুলাই-অগাস্টে নিহতদের ‘জাতীয় বীর’ ঘোষণায় রুল জারি

ছবি

১ নভেম্বর থেকে কাঁচাবাজারেও পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার বন্ধ : পরিবেশ উপদেষ্টা

ছবি

সংস্কারকাজের সময় দীর্ঘায়িত হবে: বদিউল আলম মজুমদার

ছবি

নিউইয়র্কে আজ রাতে ইউনূস-বাইডেন বৈঠক

ছবি

সেনাবাহিনী রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করবে না : ওয়াকার-উজ-জামান

চরমপন্থী নেতা সুশীলের মৃত্যু নিশ্চিত হতে ১০ মিনিট দাঁড়িয়ে ছিল হামলাকারীরা

বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মন্তব্যের কড়া প্রতিবাদ ঢাকার

সারাদেশে ৩২ হাজার পূজামণ্ডপে থাকবে নিñিদ্র নিরাপত্তা

দুর্গাপূজায় ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবিতে মন্দিরে মন্দিরে উড়োচিঠি

ছবি

‘গান গেয়ে গেয়ে’ যুবককে পিটিয়ে হত্যা, মরদেহ ফেলে রাখে রাস্তায়

tab

জাতীয়

পোশাক শিল্পে অস্থিরতা, বন্ধ অনেক কারখানা

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক, ঢাকা ও প্রতিনিধি, গাজীপুর ও আশুলিয়া

সাভারের আশুলিয়ায় বন্ধ শিল্প-কারখানার সামনে পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভ-সংবাদ

মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সরকার, শ্রমিক ও মালিকপক্ষ নানা উদ্যোগ নিলেও কিছুতেই থামছে না পোশাক খাতের অস্থিরতা। এই অস্থিরতা প্রায় তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে চলছে। মাঝের কয়েকদিন কিছুটা স্বাভাবিক হতে শুরু হলেও সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) থেকে অস্থিরতা আরও বেড়েছে। ইতোমধ্যেই অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রয়েছে বহু কারখানা।

এই পরিস্থিতিতে করণীয় নির্ধারণে সোমবার বিকেলে বৈঠকে বসে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক ও শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ। সেখানেও তেমন কোনো সুখবর আসেনি। বৈঠকে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম বলেছেন, ‘দিনের পর দিন বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা করার পরও দেশের তৈরি পোশাক শিল্পের বর্তমান সার্বিক পরিস্থিতির কাক্সিক্ষত উন্নতি হয়নি। এখন বিভিন্ন কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ চলছে। জানি না এই পরিস্থিতি আরও কতদিন স্থায়ী হবে।’

গত ৫ আগস্ট গণআন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিভিন্ন শ্রেণী গোষ্ঠী ও পেশাজীবীরা নানা দাবি নিয়ে সোচ্চার হলেও এখন সেই প্রবণতা কিছুটা কমেছে। কিন্তু তৈরি পোশাক শিল্পের শ্রমিকরা নানা দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করার পর তা আর থামছেই না।

শ্রমিকদের কোনো সুনির্দিষ্ট দাবি নেই, গাজীপুর, টঙ্গী, সাভারের আশুলিয়ার একেক এলাকায় একেক দাবিতে তারা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। তবে বকেয়া বেতন আর সরকার পতনের পর চাপে পড়া বিভিন্ন কারখানার কর্তৃপক্ষের বেতন আটকে যাওয়ার বিষয়টি সামনে আসছে। গত ৪ সেপ্টেম্বর বিজিএমইএ নিজেদের মধ্যে বৈঠকের পর অনেক কারখানার বেতন পরিশোধ হয়, এরপর কারখানা সচল হওয়ার সংখ্যাও বেড়েছিল।

তবু সংকট থেকে বের হতে পারেনি এই খাত। এই অবস্থায় অভিযানে নামে যৌথ বাহিনী। কারখানায় হামলা, ভাঙচুরের অভিযোগে ১৫ জনেরও বেশি মানুষকে আটকের কথা জানানো হয়। শ্রমিকদের উসকানি দেয়ার অভিযোগে নেত্রকোনা থেকে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তবু পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। গত ১৪ সেপ্টেম্বর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তিনজন উপদেষ্টা উপস্থিতিতে পোশাক খাতের উদ্যোক্তা, শ্রমিক প্রতিনিধি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে সভা করে বিজিএমইএ। সেদিন সিদ্ধান্ত হয়, যে কারখানায় অসন্তোষ দেখা দেবে, শ্রম আইন অনুযায়ী সেই কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হবে। ‘নো ওয়ার্ক, নো পে’ নীতি, অর্থাৎ কাজ না করলে সেদিনের মজুরি না দেয়ার ঘোষণাও হয়।

গাজীপুর ও আশুলিয়ায় বন্ধ ঘোষণা বহু কারখানা

সোমবার গাজীপুর ও আশুলিয়া এলাকার বহু কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বিজিএমইএর জানিয়েছে, আশুলিয়া এলাকার মোট ২৭২টি রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক কারখানার মধ্যে সোমবার ১৩/১ ধারায় বন্ধ ছিল ২৭টি। কারখানা খোলার পর কাজ বন্ধ রাখা হয় বা ছুটি দেয়া হয় এমন কারখানার সংখ্যা ১২টি আর স্বাভাবিক উৎপাদনে ছিল ২৩৩টি তৈরি পোশাক কারখানা। অর্থাৎ সোমবার মোট বন্ধ ছিল প্রায় ৩৯টি কারখানা।

তবে শিল্প পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আশুলিয়ায় ২২ সেপ্টেম্বর রোববার অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ কারখানার সংখ্যা ছিল ২২টি। এরপর সোমবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫২টিতে। একই সঙ্গে গাজীপুরে সোমবার বন্ধ ছিল প্রায় ১৩টি কারখানা। অর্থাৎ শিল্পপুলিশের তথ্যানুসারে সোমবার বন্ধ ছিল প্রায় ৬৫টি কারখানা।

শিল্প পুলিশ বলছে, মালিকদেরও সমস্যা আছে

কারখানা বন্ধের বিষয়ে গাজীপুর শিল্পাঞ্চল পুলিশ-২ এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম সংবাদকে বলেন, ‘সোমবার (সোমবার) শ্রমিক আন্দোলনের মুখে ১৩টি কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে ১২টি পোষাক কারখানা ও একটি খাদ্য উৎপাদন তৈরি কারখানা। এর মধ্যে খাদ্য উৎপাদন তৈরি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বাকিগুলো একদিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে বলে আমরা শুনেছি।’

শুধু শ্রমিকদেরই নয়, মালিকদেরও সমস্যা আছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘সমস্যা কিন্তু শুধু শ্রমিকদের আছে এমন নয়, সমস্যা মালিকদেরও আছে। আজকে টঙ্গীতে যেটা হলো দেড় দুই মাসের বেতনের জন্য আন্দোলন হয়েছে। শ্রমিকদের বারবারই বেতন দিবে বলে মালিক পক্ষ আশ্বস্ত করেছে কিন্ত দিচ্ছে না।’

সারওয়ার আলম আরও বলেন, ‘বল প্রয়োগ করে শ্রমিকদের দাবি দেওয়া মোকাবিলার কৌশল আগেও ফল দেয়নি, এবারও মালিক-শ্রমিকদের আন্তঃসম্পর্ক বৃদ্ধি ও পরস্পরের সমঝোতার মাধ্যমেই এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে।’

এদিকে যেকোনো ধরনের সহিংসতা এড়াতে শিল্পাঞ্চলে মোতায়েন রয়েছে পুলিশ, আর্ম পুলিশ, শিল্প পুলিশ, বিজিবি ও সেনা সদস্যদের যৌথ টহল। শিল্প প্রতিষ্ঠানের সুরক্ষায় বিভিন্ন কারখানার সামনে মোতায়েন করা হয়েছে সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যান ও পুলিশের জলকামান।

শ্রমিকদের দাবি মানবে না বিজিএমইএ

পোশাক শিল্প খাতে বিদ্যমান অস্থিরতা ও সমস্যা নিরসনে সরকারের কাছে ১৮টি দাবি উত্থাপন করেছে শ্রমিক পক্ষ। এদের মধ্যে মজুরি বোর্ড পুনর্গঠন করে মজুরি পুনর্নিধারণ ও বাৎসরিক ন্যূনতম ১০ শতাংশ ইনক্রিমেন্টের (বেতন বৃদ্ধি) দাবি ছিল।

তবে সেই দাবি মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে বিজিএমইএ। সোমবারের জরুরি সাধারণ সভায় এ সিদ্ধান্তের কথা জানায় সংগঠনটি। কারণ হিসেবে তারা বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি, শিল্পের অক্ষমতা এবং উৎপাদনের খরচ বৃদ্ধিতে হিসেবে উল্লেখ করেছে।

এর আগে দুপুরে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের এক সভায় ১৮টি দাবি উত্থাপন করে শ্রমিক পক্ষ। এতে সভাপতিত্ব করেন শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান। শ্রমিকদের দাবিগুলো হলো, মজুরি বোর্ড পুনর্গঠনপূর্বক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি পুনর্নিধারণ করতে হবে। যে সব কারখানায় ২০২৩ সালে সরকার ঘোষিত নিম্নতম মজুরি ও এখনো বাস্তবায়ন করা হয়নি তা দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। শ্রম আইন সংশোধন করতে হবে। কোনো শ্রমিকের চাকরি পাঁচ বছর পূর্ণ হওয়ার পর চাকরি থেকে অব্যাহতি দিলে বা চাকরিচ্যুত হলে একটি বেসিকের সমান অর্থ প্রদান করতে হবে। এর সাথে সাংঘর্ষিক শ্রম আইনের ২৭ ধারাসহ অন্য ধারাসমূহ সংশোধন করতে হবে। সব প্রকার বকেয়া মজুরি অবিলম্বে পরিশোধ করতে হবে। হাজিরা বোনাস (২২৫ টাকা), টিফিন বিল (৫০ টাকা), নাইট বিল (১০০ টাকা) সব কারখানায় সমান হারে বাড়াতে হবে। সব কারখানায় প্রভিডেন্ড ফান্ড ব্যবস্থা চালু করতে হবে। বেতনের বিপরীতে বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট ন্যূনতম ১০ শতাংশ নির্ধারণ করতে হবে।

অন্য দাবিগুলো হলো, শ্রমিকদের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা চালু করতে হবে। বিজিএমইএ কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত বায়োমেট্রিক ব্ল্যাকলিস্টিং করা যাবে না; বায়োমেট্রিক তালিকা সরকারের নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। সব প্রকার হয়রানিমূলক এবং রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। ঝুট ব্যবসার আধিপত্য বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে, প্রয়োজনে এ বিষয়ে আইন করতে হবে। কলকারখানায় বৈষম্যবিহীন নিয়োগ প্রদান করতে হবে। জুলাই বিপ্লবে শহীদ এবং আহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ এবং চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে হবে। রানা প্লাজা এবং তাজরীন ফ্যাশনস দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের কল্যাণে তদন্তান্তে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। শ্রম আইন অনুযায়ী সব কারখানায় ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপন করতে হবে। অন্যায্যভাবে শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ করতে হবে ও নারী শ্রমিকদের মাতৃত্বকালীন ছুটির মেয়াদ ১২০ দিন নির্ধারণ করতে হবে। শ্রমিকদের এসব দাবি মানবে না বলে জানিয়েছে বিজিএমইএ।

গাজীপুর ও আশুলিয়ার পরিস্থিতি সোমবার যেমন ছিল

বোনাস, টিফিন বিল, নাইট বিল বৃদ্ধি বাস্তবায়ন না হওয়ায় রোববার বিভিন্ন কারখানায় বিক্ষোভ করেন আশুলিয়ার শ্রমিকরা। অজানা আশঙ্কায় ছুটি ঘোষণা করার পর সোমবার থেকে দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী হা-মীম গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের মালিকানাধীন দ্যাটস ইট স্পোর্টস ওয়ার লিমিটেড, এ্যাপারেল গ্যালারি লিমিটেড, রিফাত গার্মেন্টস লিমিটেড, এক্সপ্রেস ওয়াশিং অ্যান্ড ডাইং লিমিটেড, আর্টিস্টিক ডিজাইন লিমিটেড, নেক্সট কালেকশন লিমিটেড নামের তৈরি পোশাক কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের ঘোষণা দেয়। তাদের অনুসরণ করে এনভয়, দ্য রোজ গার্মেন্টস, ইউকোরিয়া অ্যাপারেলস, জেবারেস নেক্সট, সিন সিন অ্যাপারেল, টেক্সট ম্যাক্স, মেহনাজ স্টাইল ও রেডিয়ান্স যোগ দেবার কারণে শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় শ্রম পরিস্থিতি ক্রমশ ঘোলাটে হয়ে পড়েছে।

সোমবার সকাল ৯টার পর থেকে গাজীপুরের টঙ্গীর এরশাদ নগর এলাকায় সিজন্স ড্রেসেস লিমিটেডের নামের কারখানার শ্রমিকরা। গত তিন মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের দু’পাশে অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে। দুপুর ৩টার দিকে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে আসলে শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনায় বসে। পরে শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনার এক পর্যায়ে কারখানার কর্তৃপক্ষরা ঘটনাস্থলে আসলে শ্রমিকদের সব দাবিগুলো মেনে নেয় মালিক পক্ষ। সোমবার দুপুরের পর সেনাবাহিনীর মাধ্যমে পোশাক কারখানার শ্রমিক ও মালিকদের সমঝোতা হলে ৪টার পর ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের দু’পাশের যানচলাচল স্বাভাবিক হয়।

এছাড়া গাজীপুরের সদর উপজেলার বাঘের বাজার এলাকায় গোল্ডেন রিফিট গার্মেন্টস্ লিমিটেড নামের একটি গার্মেন্টস কারখানার শ্রমিকরা ১২ দফা দাবি জানিয়ে মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করছে। একই সঙ্গে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক এলাকায় একটি খাদ্য উৎপাদন তৈরি কারখানায় বিক্ষোভের সময় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে ৬ জনকে আটক করেছে সেনাবাহিনী। সোমবার সকালে কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাকে কোকোলা ফুড প্রোডাক্ট লিমিটেড কারখানা এলাকায় বিক্ষোভের সময় তাদের আটক করা হয়।

এর আগে শ্রমিকরা আধা ঘণ্টা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে অবরোধ করে রাখে। খবর পেয়ে পুলিশ ও সোনাবাহিনীর সদস্যরা শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে ছয়জনকে আটক করে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে আটককৃতদের নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি।

back to top