রাজধানীর সুপারশপগুলোতে পলিথিন ও পলিপ্রপাইলিন ব্যাগ ব্যবহারে প্রাথমিকভাবে নিষেধাজ্ঞা জারি করার পর, ধাপে ধাপে ক্ষতিকর পলিথিন ব্যাগের ওপর বিদ্যমান নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) এক অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানান। মোহাম্মদপুর টাউন হলের উত্তর সিটি করপোরেশন কাঁচা বাজারে পলিথিন ও পলিপ্রপাইলিন ব্যাগ ব্যবহারের বিরুদ্ধে ক্লিন-আপ কার্যক্রম উদ্বোধন ও বিকল্প সামগ্রী বিতরণ উপলক্ষে এ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, "পলিথিনের ব্যবহার বন্ধ করার নতুন কোনো প্রয়োজন নেই। ২০০২ সালের আইন অনুযায়ী এটি ইতোমধ্যেই নিষিদ্ধ। তবে সারাদেশে এই নিষেধাজ্ঞা একসাথে কার্যকর করা হবে না। ধাপে ধাপে রাজধানী থেকে শুরু করে এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হবে।"
তিন ধাপের পরিকল্পনা
রিজওয়ানা হাসান তিন ধাপে পলিথিন নিষিদ্ধের পরিকল্পনার কথা জানান। প্রথম ধাপে, ১ অক্টোবর থেকে রাজধানীর সুপারশপগুলোতে পলিথিন ও পলিপ্রপাইলিন ব্যাগের ব্যবহার সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করা হবে। দ্বিতীয় ধাপে, ১ নভেম্বর থেকে কাঁচা বাজারগুলোতেও এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হবে এবং পলিথিন উৎপাদনকারী কারখানাগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে। তখন আইন প্রয়োগেরও পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, “প্লাস্টিক পণ্য নিষিদ্ধের ব্যাপারে আরও কিছু কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। তবে আমরা আপাতত শুধুমাত্র পলিথিন এবং পলিপ্রপাইলিনের উপর ফোকাস করছি। এটি একটি জাতীয় প্রয়োজন।”
রিসাইক্লিং নিয়ে চ্যালেঞ্জ ও বাস্তবতা
পলিথিন নিষিদ্ধের পর রিসাইক্লিংয়ের চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশে রিসাইকেলিং এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। তাপ দিয়ে গলিয়ে পুনরায় পলিথিন তৈরি হচ্ছে যা সঠিকভাবে কেমিক্যাল ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে হচ্ছে না। এ ধরনের রিসাইকেলিং শিল্পকে সম্পূর্ণভাবে রিসাইকেলিং বলা যায় না।
তিনি আরও বলেন, “রিসাইকেলিং আমাদের তৃতীয় ধাপ। তবে এটি সঠিকভাবে করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি এবং ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন। আমাদের দেশের বর্তমান অবস্থা রিসাইকেলিংয়ের জন্য পর্যাপ্ত নয়, তবে আমরা এর উন্নয়নের চেষ্টা করছি।”
শাস্তি নয়, বরং সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্যোগ
পলিথিন নিষিদ্ধ করার পর শাস্তি দেওয়া হবে কিনা এমন প্রশ্নে রিজওয়ানা হাসান বলেন, “আমাদের মূল লক্ষ্য শাস্তি নয়, বরং ক্ষতিকর এই ব্যাগের ব্যবহার বন্ধ করা। তবে পলিথিন ব্যবহারকারীদের সচেতন করতে এবং বিকল্প উপকরণের দিকে উৎসাহিত করতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আমরা মনে করি, ভোক্তা পর্যায়েও সচেতনতা অত্যন্ত জরুরি।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরেই সতর্ক করছি এবং কঠোর পদক্ষেপের সময় এখন চলে এসেছে। তাই উৎপাদনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে।”
বিকল্প ব্যবহারের প্রচারণা ও নতুন উদ্যোগ
পলিথিনের বিকল্প নিয়ে কাজ করছে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান। রিজওয়ানা হাসান বলেন, “পলিথিনের বিকল্প নতুন করে আবিষ্কারের প্রয়োজন নেই। পাট, কাপড় এবং কাগজের ব্যাগ ব্যবহার করাই যথেষ্ট। ইতোমধ্যে পলিথিনের বিকল্প সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং সেগুলোর যথাযথ বিতরণ চলছে। সুপারশপ কর্তৃপক্ষও বিকল্প ব্যাগের ব্যবহারের পরিকল্পনা করেছে।”
অনুষ্ঠানে মোহাম্মদপুর টাউন হলের কাঁচা বাজারের দোকান মালিক সমিতির সভাপতির হাতে বিকল্প পাট, কাপড় ও কাগজের ব্যাগ তুলে দেওয়া হয়। জানা যায়, ওই বাজারে ৩১১টি দোকানের মধ্যে ১০টি দোকান পলিথিন ব্যাগ সরবরাহ করে থাকে। তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
সফল উদাহরণ এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
২০০৪ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত সফলভাবে পলিথিন নিষিদ্ধ করার উদাহরণ টেনে উপদেষ্টা বলেন, “সেই সময় বাজারে পলিথিন ব্যবহার পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব হয়েছিল, তবে পরবর্তী সময়ে শুধুমাত্র উৎপাদনকারী কারখানাগুলোর ওপর নজরদারি করা হয়েছে। বাজারে পলিথিনের ব্যবহার বেড়ে গেছে, যা এখন আবার নিয়ন্ত্রণে আনা হবে।”
সরকারের এই উদ্যোগের লক্ষ্য হলো ধাপে ধাপে পলিথিনের ব্যবহার কমিয়ে নিয়ে আসা এবং বিকল্প ব্যবহারের জন্য বাজারকে প্রস্তুত করা।
মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
রাজধানীর সুপারশপগুলোতে পলিথিন ও পলিপ্রপাইলিন ব্যাগ ব্যবহারে প্রাথমিকভাবে নিষেধাজ্ঞা জারি করার পর, ধাপে ধাপে ক্ষতিকর পলিথিন ব্যাগের ওপর বিদ্যমান নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) এক অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানান। মোহাম্মদপুর টাউন হলের উত্তর সিটি করপোরেশন কাঁচা বাজারে পলিথিন ও পলিপ্রপাইলিন ব্যাগ ব্যবহারের বিরুদ্ধে ক্লিন-আপ কার্যক্রম উদ্বোধন ও বিকল্প সামগ্রী বিতরণ উপলক্ষে এ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, "পলিথিনের ব্যবহার বন্ধ করার নতুন কোনো প্রয়োজন নেই। ২০০২ সালের আইন অনুযায়ী এটি ইতোমধ্যেই নিষিদ্ধ। তবে সারাদেশে এই নিষেধাজ্ঞা একসাথে কার্যকর করা হবে না। ধাপে ধাপে রাজধানী থেকে শুরু করে এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হবে।"
তিন ধাপের পরিকল্পনা
রিজওয়ানা হাসান তিন ধাপে পলিথিন নিষিদ্ধের পরিকল্পনার কথা জানান। প্রথম ধাপে, ১ অক্টোবর থেকে রাজধানীর সুপারশপগুলোতে পলিথিন ও পলিপ্রপাইলিন ব্যাগের ব্যবহার সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করা হবে। দ্বিতীয় ধাপে, ১ নভেম্বর থেকে কাঁচা বাজারগুলোতেও এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হবে এবং পলিথিন উৎপাদনকারী কারখানাগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে। তখন আইন প্রয়োগেরও পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, “প্লাস্টিক পণ্য নিষিদ্ধের ব্যাপারে আরও কিছু কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। তবে আমরা আপাতত শুধুমাত্র পলিথিন এবং পলিপ্রপাইলিনের উপর ফোকাস করছি। এটি একটি জাতীয় প্রয়োজন।”
রিসাইক্লিং নিয়ে চ্যালেঞ্জ ও বাস্তবতা
পলিথিন নিষিদ্ধের পর রিসাইক্লিংয়ের চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশে রিসাইকেলিং এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। তাপ দিয়ে গলিয়ে পুনরায় পলিথিন তৈরি হচ্ছে যা সঠিকভাবে কেমিক্যাল ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে হচ্ছে না। এ ধরনের রিসাইকেলিং শিল্পকে সম্পূর্ণভাবে রিসাইকেলিং বলা যায় না।
তিনি আরও বলেন, “রিসাইকেলিং আমাদের তৃতীয় ধাপ। তবে এটি সঠিকভাবে করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি এবং ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন। আমাদের দেশের বর্তমান অবস্থা রিসাইকেলিংয়ের জন্য পর্যাপ্ত নয়, তবে আমরা এর উন্নয়নের চেষ্টা করছি।”
শাস্তি নয়, বরং সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্যোগ
পলিথিন নিষিদ্ধ করার পর শাস্তি দেওয়া হবে কিনা এমন প্রশ্নে রিজওয়ানা হাসান বলেন, “আমাদের মূল লক্ষ্য শাস্তি নয়, বরং ক্ষতিকর এই ব্যাগের ব্যবহার বন্ধ করা। তবে পলিথিন ব্যবহারকারীদের সচেতন করতে এবং বিকল্প উপকরণের দিকে উৎসাহিত করতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আমরা মনে করি, ভোক্তা পর্যায়েও সচেতনতা অত্যন্ত জরুরি।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরেই সতর্ক করছি এবং কঠোর পদক্ষেপের সময় এখন চলে এসেছে। তাই উৎপাদনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে।”
বিকল্প ব্যবহারের প্রচারণা ও নতুন উদ্যোগ
পলিথিনের বিকল্প নিয়ে কাজ করছে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান। রিজওয়ানা হাসান বলেন, “পলিথিনের বিকল্প নতুন করে আবিষ্কারের প্রয়োজন নেই। পাট, কাপড় এবং কাগজের ব্যাগ ব্যবহার করাই যথেষ্ট। ইতোমধ্যে পলিথিনের বিকল্প সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং সেগুলোর যথাযথ বিতরণ চলছে। সুপারশপ কর্তৃপক্ষও বিকল্প ব্যাগের ব্যবহারের পরিকল্পনা করেছে।”
অনুষ্ঠানে মোহাম্মদপুর টাউন হলের কাঁচা বাজারের দোকান মালিক সমিতির সভাপতির হাতে বিকল্প পাট, কাপড় ও কাগজের ব্যাগ তুলে দেওয়া হয়। জানা যায়, ওই বাজারে ৩১১টি দোকানের মধ্যে ১০টি দোকান পলিথিন ব্যাগ সরবরাহ করে থাকে। তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
সফল উদাহরণ এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
২০০৪ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত সফলভাবে পলিথিন নিষিদ্ধ করার উদাহরণ টেনে উপদেষ্টা বলেন, “সেই সময় বাজারে পলিথিন ব্যবহার পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব হয়েছিল, তবে পরবর্তী সময়ে শুধুমাত্র উৎপাদনকারী কারখানাগুলোর ওপর নজরদারি করা হয়েছে। বাজারে পলিথিনের ব্যবহার বেড়ে গেছে, যা এখন আবার নিয়ন্ত্রণে আনা হবে।”
সরকারের এই উদ্যোগের লক্ষ্য হলো ধাপে ধাপে পলিথিনের ব্যবহার কমিয়ে নিয়ে আসা এবং বিকল্প ব্যবহারের জন্য বাজারকে প্রস্তুত করা।