চাওয়ার সঙ্গে পাওয়ার অতৃপ্তি নিয়েই শেষ হয়েছে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন কপ২৯। দীর্ঘ তেত্রিশ ঘণ্টার দর কষাকষির পর সম্মত হওয়া তিনশ’ ডলার আদৌ মোড়ল রাষ্ট্রগুলোর কাছ থেকে পাওয়া যাবে কিনা তা নিয়ে সংশয় কাটেনি ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর।
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় হ্রদ ‘কাস্পিয়ান সাগরের’ তীরে আজারবাইজানের বাকুতে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন কপ২৯ প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছিল। গত দুই সপ্তাহের তীব্র ‘দর কষাকষির’ পর মোড়ল রাষ্ট্রগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ৩০০ বিলিয়ন ডলার দিতে সম্মত হয়।
সংশ্লিষ্টরা বলছে, এই কপ২৯ বুঝিয়ে দিয়েছে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় উন্নত রাষ্ট্রগুলোর রাজনৈতিক সদ্বিচ্ছার অভাব। জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় অর্থায়নে উন্নত রাষ্ট্রগুলোকে রাজি করানো কতটা কঠিন তা-ও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে এই সম্মেলনে। গত ১১-২২ নভেম্বর পর্যন্ত সম্মেলনের সিদ্ধান্ত থাকলেও আলোচনার দীর্ঘসূত্রিতায় তা শেষ পর্যন্ত গড়ায় ২৪ নভেম্বর সকাল পর্যন্ত।
লেখক, গবেষক পাভেল পার্থ বলেন, ‘৩০০ বিলিয়ন ডলার জলবায়ু অর্থায়নে দেয়ার জন্য সম্মত হয়েছে। কিন্ত এটি গ্রান্ট হবে, না লোন হবে- এটা নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এমনকি এই টাকার কত অংশ কোনো কোনো দেশে দিবে সেই বিষয়েও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এই টাকা কোনো কোনো খাতে কিভাবে ব্যবহার করবে বিশেষত : ক্ষতিগ্রস্ত রাষ্ট্রগুলো এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’
ধনী দেশগুলোর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে টালবাহনা বাংলাদেশের মত দেশগুলোকে বাধ্য করছে নিজ অর্থায়নের মাধ্যমে জলবায়ু মোকাবিলা করতে, যা জলবায়ু সুবিচার পাওয়ার দাবীকে উপেক্ষা করেছে।
জলবায়ু বিশেষজ্ঞ, বিভিন্ন জাতীয়-আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং গোষ্ঠী আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, বাংলাদেশের মতো স্বল্পোন্নত, কিন্তু অধিক ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলো অভিযোজন ও প্রশমন পরিকল্পনা চরমভাবে ব্যহত হওয়ার শঙ্কায় পড়বে। ২৯ বছর ধরে চলা এই জলবায়ু আলোচনার কার্যকারিতাও তাই আজ প্রশ্নের সম্মুখীন।
খ্রিস্টান কমিশন ফর ডেভেলপমেন্ট ইন বাংলাদেশ (সিসিডিবি) হেড অব ক্লাইমেট চেঞ্জ প্রোগ্রাম মো. ফয়েজুল্লাহ তালুকদার সংবাদকে বলেন, ‘জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত দেশমূহের প্রত্যাশার ভরাডুবি হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনে দায়ী উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর জোট জি-৭৭ উন্নতদেশসমূহের কাছে প্রতিবছর ১ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন ডলারের জলবায়ু তহবিল প্রদানের চাহিদা পেশ করলেও, তা শেষ পর্যন্ত মাত্র ৩০০ বিলিয়ন ডলার প্রদানের সম্মতি দিয়েছে। এ যেন জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত দেশ ও মানুষের প্রতি চরম অবজ্ঞার সামিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘এবারের কপ২৯ এ বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি বৃদ্ধি টার্গেটে সীমিত রাখার কার্যকরী সিদ্ধান্তে অগ্রগতির অভাব দেখা গেছে। জীবাশ্ম জ্বালানী বন্ধের যে জোর দাবী শুরু হয়েছিল, সে বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। শুধু জলবায়ু অর্থায়নের হতাশাই নয়, পুথিবীকে জলবায়ু সংকট হতে বাঁচানোর জন্য প্রশমন সিদ্ধান্তেও তেমন জোর অগ্রগতি নেই।’
কপ২৯ এর প্রেক্ষাপট: সামগ্রিক মূল্যায়ন এবং জলবায়ু অর্থায়ন নিয়ে জানতে চাইলে স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার সংবাদকে বলেন, ‘এবারও হতাশাজনক ফলাফল নিয়ে শেষ হয়েছে কপ২৯ সম্মেলন। দীর্ঘ তেত্রিশ ঘণ্টার আলোচনার পর ধনী দেশগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় উন্নয়নশীল দেশগুলোকে ৩০০ বিলিয়ন ডলার সহায়তার অঙ্গীকার করেছে। তবে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সরে আসার বিষয়ে কোনো চুক্তি হয়নি।’
ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর দাবি ছিল, জলবায়ু অর্থায়নের টাকা মূলত। স্বল্পোউন্নত দেশগুলো বা এলডিসিভুক্ত রাষ্ট্র আছে বাংলাদেশসহ এবং ক্ষুদ্র দ্বীপ রাষ্ট্রগুলো এমসিস এবং সিপস কান্ট্রিজগুলো যারা আছে এই দুইটি ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলের জন্য এই জলবায়ু তহবিলটা ব্যবহার করতে হবে।
বরাদ্দ কোনো খাতে কতটুকু ব্যবহার করা হবে সেই বিষয়ে বাকু সম্মেলনে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। অর্থায়নের টাকা কিভাবে নিবে ও কোন খাতে ব্যবহার করা হবে সে বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।
গবেষক পাভেল পার্থ বলেন,‘জলবায়ু তহবিলে অভিযোজন ও লস এন্ড ড্যামেজ ফান্ডের ব্যবহার, জলবায়ু অর্থায়নে অনেকগুলো ফান্ড আছে এডাপটেশন ফান্ড, লস এন্ড ড্যামেজ ফান্ড, এলডিসি ফান্ড, ও জলবায়ু অর্থায়নের যে অঙ্কিকার করা হয়েছে তা বরাদ্দ কোন খাতে কতটুকু ব্যবহার করা হবে সেই বিষয়ে বাকু সম্মেলনে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি।’
আগামী ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে যে এনডিসি জমা দেওয়ার কথা রয়েছে, সে বিষয়ে উন্নত দেশসমূহকে জিবাশ্ম জ্বালানীর ব্যবহার বন্ধ বা কমানোর চাপ প্রয়োগে কপ২৯ ব্যর্থ হয়েছে বলে জানান বিশেষজ্ঞ ফয়েজুল্লাহ তালুকদার। তিনি বলেন, ‘জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ প্রান্তিক জনগোষ্ঠী যেমন আদিবাসী, অরক্ষিত সম্প্রদায় এবং ব্যক্তি, যারা প্রাকৃতিক সম্পদেও উপর বেশি নির্ভরশীল, যাদের সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত, তাদের ঝুঁকি হ্রাস বা মোকাবিলা করার জন্য কার্যকরী সিদ্ধন্ত হয়নি।’
তিনি জলবায়ু অভিযোজনে গ্লোবাল গোলের জন্য ১০০টি বৈশ্বিক ও স্থানীয় সূচক তৈরির নির্দেশনা এবং সেখানে সূচক নির্নয়ে মানবাধিকার ও অন্তর্ভূক্তিমূলকসমূহে প্রাধান্য দেওয়ার সিদ্ধান্তকে একমাত্র আশার কথা বলছেন।
পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক (বায়ুমান ব্যবস্থাপনা) মো. জিয়াউল হক সংবাদকে বলেন, ‘উন্নত দেশগুলো যে ৩০০ বিলিয়ন ডলার দেয়া প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সেই টাকা বিভিন্ন উৎস থেকে আসবে। বাই লেটারাল, মাল্টিলেটারাল, পাব্লিক ও প্রাইভেটসহ বিভিন্ন মাধ্যমে আসবে। আমাদের ক্লাইমেট চেঞ্চ ফান্ডের আওতায় যে গ্লোবাল ফান্ড আছে সেখান থেকে টাকা পাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। আমরা চেষ্টা করছি এ চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।’
বিভিন্ন সোর্সের মধ্যে প্রাইভেট ও ইনোভেটিভ সোর্স থেকে অর্থ আসা ‘অনিশ্চিত’ বলে মনে করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘এবারের কোপে বলেছে; উন্নত দেশের সরকার থেকে অর্থ আসবে। বলা হয়েছে, ২০২২ সালে যে টাকা এসেছিল ২০৩০ সালের মধ্যে এর তিনগুন করা হবে। এক্ষেত্রে সরকার যদি দেয় ভালো চেষ্টা করতে হবে ভালো প্রজেক্ট তৈরি করা, এডাপটেশন, মিটিগেশ ও বিভিন্ন সেক্টরে ক্লাইমেট চেঞ্জের যে ইমপ্যাক্ট আছে সেসব নিয়ে ভালো প্রোজেক্ট তৈরি করে যে ভালো ভালো গ্লোবাল ফান্ড আছে সেখানে জমা দিয়ে ভালো প্রজেক্ট আনা সম্ভব হবে।’
তিনি দ্বিপাক্ষিক সর্ম্পক উন্নয়ণের মাধ্যমে অর্থ আনার বিষয়টিকে গুরুত্ব দেন।
শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪
চাওয়ার সঙ্গে পাওয়ার অতৃপ্তি নিয়েই শেষ হয়েছে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন কপ২৯। দীর্ঘ তেত্রিশ ঘণ্টার দর কষাকষির পর সম্মত হওয়া তিনশ’ ডলার আদৌ মোড়ল রাষ্ট্রগুলোর কাছ থেকে পাওয়া যাবে কিনা তা নিয়ে সংশয় কাটেনি ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর।
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় হ্রদ ‘কাস্পিয়ান সাগরের’ তীরে আজারবাইজানের বাকুতে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন কপ২৯ প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছিল। গত দুই সপ্তাহের তীব্র ‘দর কষাকষির’ পর মোড়ল রাষ্ট্রগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ৩০০ বিলিয়ন ডলার দিতে সম্মত হয়।
সংশ্লিষ্টরা বলছে, এই কপ২৯ বুঝিয়ে দিয়েছে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় উন্নত রাষ্ট্রগুলোর রাজনৈতিক সদ্বিচ্ছার অভাব। জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় অর্থায়নে উন্নত রাষ্ট্রগুলোকে রাজি করানো কতটা কঠিন তা-ও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে এই সম্মেলনে। গত ১১-২২ নভেম্বর পর্যন্ত সম্মেলনের সিদ্ধান্ত থাকলেও আলোচনার দীর্ঘসূত্রিতায় তা শেষ পর্যন্ত গড়ায় ২৪ নভেম্বর সকাল পর্যন্ত।
লেখক, গবেষক পাভেল পার্থ বলেন, ‘৩০০ বিলিয়ন ডলার জলবায়ু অর্থায়নে দেয়ার জন্য সম্মত হয়েছে। কিন্ত এটি গ্রান্ট হবে, না লোন হবে- এটা নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এমনকি এই টাকার কত অংশ কোনো কোনো দেশে দিবে সেই বিষয়েও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এই টাকা কোনো কোনো খাতে কিভাবে ব্যবহার করবে বিশেষত : ক্ষতিগ্রস্ত রাষ্ট্রগুলো এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’
ধনী দেশগুলোর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে টালবাহনা বাংলাদেশের মত দেশগুলোকে বাধ্য করছে নিজ অর্থায়নের মাধ্যমে জলবায়ু মোকাবিলা করতে, যা জলবায়ু সুবিচার পাওয়ার দাবীকে উপেক্ষা করেছে।
জলবায়ু বিশেষজ্ঞ, বিভিন্ন জাতীয়-আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং গোষ্ঠী আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, বাংলাদেশের মতো স্বল্পোন্নত, কিন্তু অধিক ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলো অভিযোজন ও প্রশমন পরিকল্পনা চরমভাবে ব্যহত হওয়ার শঙ্কায় পড়বে। ২৯ বছর ধরে চলা এই জলবায়ু আলোচনার কার্যকারিতাও তাই আজ প্রশ্নের সম্মুখীন।
খ্রিস্টান কমিশন ফর ডেভেলপমেন্ট ইন বাংলাদেশ (সিসিডিবি) হেড অব ক্লাইমেট চেঞ্জ প্রোগ্রাম মো. ফয়েজুল্লাহ তালুকদার সংবাদকে বলেন, ‘জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত দেশমূহের প্রত্যাশার ভরাডুবি হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনে দায়ী উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর জোট জি-৭৭ উন্নতদেশসমূহের কাছে প্রতিবছর ১ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন ডলারের জলবায়ু তহবিল প্রদানের চাহিদা পেশ করলেও, তা শেষ পর্যন্ত মাত্র ৩০০ বিলিয়ন ডলার প্রদানের সম্মতি দিয়েছে। এ যেন জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত দেশ ও মানুষের প্রতি চরম অবজ্ঞার সামিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘এবারের কপ২৯ এ বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি বৃদ্ধি টার্গেটে সীমিত রাখার কার্যকরী সিদ্ধান্তে অগ্রগতির অভাব দেখা গেছে। জীবাশ্ম জ্বালানী বন্ধের যে জোর দাবী শুরু হয়েছিল, সে বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। শুধু জলবায়ু অর্থায়নের হতাশাই নয়, পুথিবীকে জলবায়ু সংকট হতে বাঁচানোর জন্য প্রশমন সিদ্ধান্তেও তেমন জোর অগ্রগতি নেই।’
কপ২৯ এর প্রেক্ষাপট: সামগ্রিক মূল্যায়ন এবং জলবায়ু অর্থায়ন নিয়ে জানতে চাইলে স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার সংবাদকে বলেন, ‘এবারও হতাশাজনক ফলাফল নিয়ে শেষ হয়েছে কপ২৯ সম্মেলন। দীর্ঘ তেত্রিশ ঘণ্টার আলোচনার পর ধনী দেশগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় উন্নয়নশীল দেশগুলোকে ৩০০ বিলিয়ন ডলার সহায়তার অঙ্গীকার করেছে। তবে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সরে আসার বিষয়ে কোনো চুক্তি হয়নি।’
ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর দাবি ছিল, জলবায়ু অর্থায়নের টাকা মূলত। স্বল্পোউন্নত দেশগুলো বা এলডিসিভুক্ত রাষ্ট্র আছে বাংলাদেশসহ এবং ক্ষুদ্র দ্বীপ রাষ্ট্রগুলো এমসিস এবং সিপস কান্ট্রিজগুলো যারা আছে এই দুইটি ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলের জন্য এই জলবায়ু তহবিলটা ব্যবহার করতে হবে।
বরাদ্দ কোনো খাতে কতটুকু ব্যবহার করা হবে সেই বিষয়ে বাকু সম্মেলনে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। অর্থায়নের টাকা কিভাবে নিবে ও কোন খাতে ব্যবহার করা হবে সে বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।
গবেষক পাভেল পার্থ বলেন,‘জলবায়ু তহবিলে অভিযোজন ও লস এন্ড ড্যামেজ ফান্ডের ব্যবহার, জলবায়ু অর্থায়নে অনেকগুলো ফান্ড আছে এডাপটেশন ফান্ড, লস এন্ড ড্যামেজ ফান্ড, এলডিসি ফান্ড, ও জলবায়ু অর্থায়নের যে অঙ্কিকার করা হয়েছে তা বরাদ্দ কোন খাতে কতটুকু ব্যবহার করা হবে সেই বিষয়ে বাকু সম্মেলনে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি।’
আগামী ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে যে এনডিসি জমা দেওয়ার কথা রয়েছে, সে বিষয়ে উন্নত দেশসমূহকে জিবাশ্ম জ্বালানীর ব্যবহার বন্ধ বা কমানোর চাপ প্রয়োগে কপ২৯ ব্যর্থ হয়েছে বলে জানান বিশেষজ্ঞ ফয়েজুল্লাহ তালুকদার। তিনি বলেন, ‘জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ প্রান্তিক জনগোষ্ঠী যেমন আদিবাসী, অরক্ষিত সম্প্রদায় এবং ব্যক্তি, যারা প্রাকৃতিক সম্পদেও উপর বেশি নির্ভরশীল, যাদের সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত, তাদের ঝুঁকি হ্রাস বা মোকাবিলা করার জন্য কার্যকরী সিদ্ধন্ত হয়নি।’
তিনি জলবায়ু অভিযোজনে গ্লোবাল গোলের জন্য ১০০টি বৈশ্বিক ও স্থানীয় সূচক তৈরির নির্দেশনা এবং সেখানে সূচক নির্নয়ে মানবাধিকার ও অন্তর্ভূক্তিমূলকসমূহে প্রাধান্য দেওয়ার সিদ্ধান্তকে একমাত্র আশার কথা বলছেন।
পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক (বায়ুমান ব্যবস্থাপনা) মো. জিয়াউল হক সংবাদকে বলেন, ‘উন্নত দেশগুলো যে ৩০০ বিলিয়ন ডলার দেয়া প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সেই টাকা বিভিন্ন উৎস থেকে আসবে। বাই লেটারাল, মাল্টিলেটারাল, পাব্লিক ও প্রাইভেটসহ বিভিন্ন মাধ্যমে আসবে। আমাদের ক্লাইমেট চেঞ্চ ফান্ডের আওতায় যে গ্লোবাল ফান্ড আছে সেখান থেকে টাকা পাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। আমরা চেষ্টা করছি এ চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।’
বিভিন্ন সোর্সের মধ্যে প্রাইভেট ও ইনোভেটিভ সোর্স থেকে অর্থ আসা ‘অনিশ্চিত’ বলে মনে করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘এবারের কোপে বলেছে; উন্নত দেশের সরকার থেকে অর্থ আসবে। বলা হয়েছে, ২০২২ সালে যে টাকা এসেছিল ২০৩০ সালের মধ্যে এর তিনগুন করা হবে। এক্ষেত্রে সরকার যদি দেয় ভালো চেষ্টা করতে হবে ভালো প্রজেক্ট তৈরি করা, এডাপটেশন, মিটিগেশ ও বিভিন্ন সেক্টরে ক্লাইমেট চেঞ্জের যে ইমপ্যাক্ট আছে সেসব নিয়ে ভালো প্রোজেক্ট তৈরি করে যে ভালো ভালো গ্লোবাল ফান্ড আছে সেখানে জমা দিয়ে ভালো প্রজেক্ট আনা সম্ভব হবে।’
তিনি দ্বিপাক্ষিক সর্ম্পক উন্নয়ণের মাধ্যমে অর্থ আনার বিষয়টিকে গুরুত্ব দেন।