alt

জাতীয়

জুলাইয়ের দমন-পীড়নের ‘মাস্টারমাইন্ড ও হুকুমদাতা’ শেখ হাসিনা: ট্রাইব্যুনালের তদন্ত প্রতিবেদন

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : সোমবার, ১২ মে ২০২৫

২০২৪ সালের ২৪ জুলাইয়ের অভ্যুত্থান দমন অভিযানে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। সোমবার (১২ মে) ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে এই প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়।

তদন্ত প্রতিবেদনে শেখ হাসিনা ছাড়াও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

পরে ট্রাইব্যুনালে সংবাদ সম্মেলনে চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, “তদন্ত কর্মকর্তা ছয় মাস ২৮ দিন তদন্ত শেষে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। এতে ২৪ জুলাইয়ের ঘটনার পেছনে ‘মাস্টারমাইন্ড ও হুকুমদাতা’ হিসেবে শেখ হাসিনাকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তিনি ছিলেন সুপিরিয়র কমান্ডার এবং প্রত্যক্ষ নির্দেশদাতা।”

তাজুল ইসলাম জানান, তদন্ত প্রতিবেদনে পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে। প্রথম অভিযোগে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা ১৪ জুলাই এক প্রেস কনফারেন্সে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ এবং ‘রাজাকারের নাতিপুতি’ বলে আক্রমণ করেন। তার এই বক্তব্যের মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় ও দলীয় বাহিনীকে উসকে দেওয়া হয়, যা পরবর্তীতে ব্যাপক সহিংসতা, হত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে রূপ নেয়।

দ্বিতীয় অভিযোগে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা সরাসরি নিরাপত্তা বাহিনীকে নিরস্ত্র সাধারণ মানুষের ওপর অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেন। তদন্ত কর্মকর্তাদের দাবি, শেখ হাসিনার একাধিক টেলিফোন আলাপ তাদের হাতে রয়েছে, যেখানে তিনি হেলিকপ্টার, ড্রোন ও ভারী অস্ত্র ব্যবহার করে আন্দোলন দমন করতে বলেন। তিনি স্পষ্টভাবে নিরীহ নাগরিকদের ‘নির্মূল’ করার নির্দেশ দেন।

তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম অভিযোগ নির্দিষ্ট ঘটনায় সংগঠিত মানবতাবিরোধী অপরাধসংক্রান্ত হলেও, সংবাদ সম্মেলনে এসব বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।

তাজুল ইসলাম আরও জানান, প্রায় দেড় হাজার মানুষকে হত্যা, ২৫ হাজারের বেশি আন্দোলনকারীকে গুলি করে আহত করা, নারীদের ওপর সহিংসতা, শিশুদের টার্গেট করে হত্যা, এমনকি লাশ ও জীবিত মানুষকে একত্র করে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ার মতো ভয়াবহ কর্মকাণ্ড তদন্ত প্রতিবেদনে এসেছে।

তিনি বলেন, “আহতদের হাসপাতালে নিতে বাধা দেওয়া হয়েছে। এমনকি ময়নাতদন্তেও বাধা দেওয়া হয়েছে। সরকারি স্থাপনায় আগুন দিয়ে সেটার দায় আন্দোলনকারীদের ওপর চাপাতে শেখ হাসিনার নির্দেশ রয়েছে বলে টেলিফোন আলাপের রেকর্ড তদন্তকারীদের হাতে রয়েছে।”

চিফ প্রসিকিউটর বলেন, “যদিও ঘটনাগুলো গণহত্যার মতোই ভয়াবহ, তবুও আন্তর্জাতিক আইনের কাঠামো অনুসারে এটিকে ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে।”

২০১০ সালে আওয়ামী লীগ সরকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করলেও, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এই ট্রাইব্যুনালেই বিচারের উদ্যোগ নেয়।

এই মামলায় তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে প্রসিকিউশনের আবেদনের পর গত ১৭ অক্টোবর ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। তখন থেকেই তিনি ভারতে অবস্থান করছেন।

চিফ প্রসিকিউটরের দপ্তর এখন প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্র দাখিলের প্রস্তুতি নিচ্ছে। যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেলে, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে জানা গেছে।

ছবি

আসন্ন বৈঠক ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে কৌতূহল, আলোচনায় নির্বাচনী প্রসঙ্গ

ছবি

শোকবার্তা পাঠালেন মুহাম্মদ ইউনূস এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান বিধ্বস্তে প্রাণহানি

ছবি

দেশের কিছু অঞ্চলে মৃদু তাপপ্রবাহ, কোথাও কোথাও হতে পারে বৃষ্টি

ছবি

এক মাসেই ৬৫৮ জন নিহত, দুর্ঘটনায় শীর্ষে ঢাকা বিভাগ

ছবি

২৫ জুলাইয়ের মধ্যে এসএসসির ফল প্রকাশের প্রস্তুতি

ছবি

দুই সপ্তাহ পর আংশিক চালু চক্ষুবিজ্ঞান হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা, শনিবার থেকে পুরোপুরি চালুর সম্ভাবনা

ছবি

ইউনূসকে সাক্ষাৎ দিচ্ছেন না ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্টারমার

ছবি

যুক্তরাজ্যে সাবেক ভূমিমন্ত্রী জাবেদের সম্পত্তি জব্দ

ছবি

‘দেশ ও রাজনীতির নিরাপত্তার স্বার্থে’ আ.লীগের কার্যক্রম ‘স্থগিত’, দল নিষিদ্ধ নয় : মুহাম্মদ ইউনূস

ছবি

নির্বাচন শেষেই বিদায়—পরবর্তী সরকারের অংশ হওয়ার ইচ্ছা নেই: মুহাম্মদ ইউনূস

ছবি

বাড়ছে করোনার সংক্রমণ, প্রতিরোধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ১১ নির্দেশনা

ছবি

বাংলাদেশের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি অংশীদারিত্বে আগ্রহী এয়ারবাস ও মেনজিস

ছবি

তাপপ্রবাহ কিছুটা কমতে পারে, ভ্যাপসা গরম থাকবে: আবহাওয়া অফিস

ছবি

মেট্রোরেলে যাত্রীদের মাস্ক পরার অনুরোধ

ছবি

হাজিদের ফিরতি ফ্লাইট শুরু আজ, চলবে ১০ জুলাই পর্যন্ত

ছবি

লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা ও তারেক রহমানের সম্ভাব্য বৈঠক ১৩ জুন

যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে দেশ ছাড়লেন প্রধান উপদেষ্টা

ছবি

করোনার নতুন ধরন নিয়ে সতর্কতা, ভারতসহ আক্রান্ত দেশগুলোতে ভ্রমণ এড়ানোর পরামর্শ

ছবি

৩৩ জেলায় তাপপ্রবাহ, বুধবার থেকে পরিস্থিতি কিছুটা স্বস্তিদায়ক হতে পারে

ছবি

ইউনূস-মোদীর মধ্যে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়

ছবি

‘নির্দোষরা যেন সাজা না পায়’—সাবেক রাষ্ট্রপতি হামিদ ইস্যুতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

ছবি

চার দিনের সফরে আজ যুক্তরাজ্যে যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা

ছবি

মধ্য রাতে দেশে ফিরলেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ

এ কে খন্দকারের স্ত্রী ফরিদা খন্দকারের ইন্তেকাল

ছবি

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন, ইউনূসের সাক্ষাৎ চেয়ে চিঠি দিয়েছেন টিউলিপ সিদ্দিক

ছবি

ঈদের ফিরতি যাত্রায় ট্রেনযাত্রীদের মাস্ক পরার অনুরোধ

ছবি

ঈদের ছুটিতে বৃষ্টির পরও ঢাকায় ‘অস্বাস্থ্যকর’ বাতাস

ছবি

২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় ২৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত, তাপমাত্রা ৩৩ ডিগ্রি

ছবি

ঈদের দিন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সেনা ও নৌবাহিনী প্রধানের সাক্ষাৎ

ছবি

কোরবানির পশু কাটতে গিয়ে শতাধিক ব্যক্তি আহত

ছবি

উৎসবের আমেজে উদযাপিত হচ্ছে ঈদুল আজহা

ছবি

ঢাকাসহ ৬ বিভাগে হালকা বৃষ্টির আভাস

ছবি

দেশের মঙ্গলে সবার দোয়া চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা

ছবি

জাতীয় ঈদগাহে ঈদুল আজহার প্রধান জামাত, দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা

আজ ঈদুল আজহা

সব অংশীদারকে এই প্রক্রিয়ায় গঠনমূলকভাবে জড়িত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ইইউ

tab

জাতীয়

জুলাইয়ের দমন-পীড়নের ‘মাস্টারমাইন্ড ও হুকুমদাতা’ শেখ হাসিনা: ট্রাইব্যুনালের তদন্ত প্রতিবেদন

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

সোমবার, ১২ মে ২০২৫

২০২৪ সালের ২৪ জুলাইয়ের অভ্যুত্থান দমন অভিযানে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। সোমবার (১২ মে) ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে এই প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়।

তদন্ত প্রতিবেদনে শেখ হাসিনা ছাড়াও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

পরে ট্রাইব্যুনালে সংবাদ সম্মেলনে চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, “তদন্ত কর্মকর্তা ছয় মাস ২৮ দিন তদন্ত শেষে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। এতে ২৪ জুলাইয়ের ঘটনার পেছনে ‘মাস্টারমাইন্ড ও হুকুমদাতা’ হিসেবে শেখ হাসিনাকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তিনি ছিলেন সুপিরিয়র কমান্ডার এবং প্রত্যক্ষ নির্দেশদাতা।”

তাজুল ইসলাম জানান, তদন্ত প্রতিবেদনে পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে। প্রথম অভিযোগে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা ১৪ জুলাই এক প্রেস কনফারেন্সে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ এবং ‘রাজাকারের নাতিপুতি’ বলে আক্রমণ করেন। তার এই বক্তব্যের মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় ও দলীয় বাহিনীকে উসকে দেওয়া হয়, যা পরবর্তীতে ব্যাপক সহিংসতা, হত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে রূপ নেয়।

দ্বিতীয় অভিযোগে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা সরাসরি নিরাপত্তা বাহিনীকে নিরস্ত্র সাধারণ মানুষের ওপর অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেন। তদন্ত কর্মকর্তাদের দাবি, শেখ হাসিনার একাধিক টেলিফোন আলাপ তাদের হাতে রয়েছে, যেখানে তিনি হেলিকপ্টার, ড্রোন ও ভারী অস্ত্র ব্যবহার করে আন্দোলন দমন করতে বলেন। তিনি স্পষ্টভাবে নিরীহ নাগরিকদের ‘নির্মূল’ করার নির্দেশ দেন।

তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম অভিযোগ নির্দিষ্ট ঘটনায় সংগঠিত মানবতাবিরোধী অপরাধসংক্রান্ত হলেও, সংবাদ সম্মেলনে এসব বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।

তাজুল ইসলাম আরও জানান, প্রায় দেড় হাজার মানুষকে হত্যা, ২৫ হাজারের বেশি আন্দোলনকারীকে গুলি করে আহত করা, নারীদের ওপর সহিংসতা, শিশুদের টার্গেট করে হত্যা, এমনকি লাশ ও জীবিত মানুষকে একত্র করে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ার মতো ভয়াবহ কর্মকাণ্ড তদন্ত প্রতিবেদনে এসেছে।

তিনি বলেন, “আহতদের হাসপাতালে নিতে বাধা দেওয়া হয়েছে। এমনকি ময়নাতদন্তেও বাধা দেওয়া হয়েছে। সরকারি স্থাপনায় আগুন দিয়ে সেটার দায় আন্দোলনকারীদের ওপর চাপাতে শেখ হাসিনার নির্দেশ রয়েছে বলে টেলিফোন আলাপের রেকর্ড তদন্তকারীদের হাতে রয়েছে।”

চিফ প্রসিকিউটর বলেন, “যদিও ঘটনাগুলো গণহত্যার মতোই ভয়াবহ, তবুও আন্তর্জাতিক আইনের কাঠামো অনুসারে এটিকে ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে।”

২০১০ সালে আওয়ামী লীগ সরকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করলেও, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এই ট্রাইব্যুনালেই বিচারের উদ্যোগ নেয়।

এই মামলায় তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে প্রসিকিউশনের আবেদনের পর গত ১৭ অক্টোবর ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। তখন থেকেই তিনি ভারতে অবস্থান করছেন।

চিফ প্রসিকিউটরের দপ্তর এখন প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্র দাখিলের প্রস্তুতি নিচ্ছে। যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেলে, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে জানা গেছে।

back to top