দেশে ৯ মাসে কোনো সংস্কার হয়নি, সংস্কারের নামে কালক্ষেপণ হয়েছে : ছাত্রদল সভাপতি
সাম্য হত্যার বিচারের দাবিতে বৃহস্পতিবার শাহবাগ ও ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ে অবস্থান নেয় ছাত্রদল কর্মীরা -সংবাদ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার বিচারের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচিতে নামা ছাত্রদল নেতাকর্মীরা ৭ ঘণ্টা পর রাজধানীর শাহবাগ মোড় ছেড়েছেন। এর আগে (২২ মে ২০২৫) বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে শাহবাগ ও হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ে জড়ো হতে থাকনে ছাত্রদলের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা।
অবস্থান কর্মসূচির সময় তারা ‘৮ দিন হয়ে গেল, কেউ কিছু জানে না’, ‘আর চাই না, আর চাই না এনএসআইয়ের প্রক্টর,’ ‘ক্যাম্পাসে লাশ ঝুলে, প্রক্টর কী করে’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’, ‘বিচার বিচার বিচার চাই ,সাম্য হত্যার বিচার চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উদ্দেশে ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, ‘তারা আমাদের এখনও আশ্বস্ত করতে পারেনি। এখনও তারা প্রকৃত হত্যাকারীদের চিহ্নিত করতে পারেনি। ‘এ ঘটনায় অন্তর্বর্তী সরকারের দায় রয়েছে। তারা সাম্যের হত্যার পর এখনও কোনো সহমর্মিতা দেখিয়ে বিজ্ঞপ্তি দেয়নি শুধু ছাত্রদল নেতা হওয়ার কারণে। আমরা তার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা যদি সাম্য হত্যার বিচার না পাই, তীব্র আন্দোলনে যাব। আমরা রাজপথ ছাড়ব না। ‘আমরা সরকারের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি, দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শক্তি প্রয়োগ করে হলেও এ হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত করতে হবে। এটা জনগণের কাছে কী ম্যাসেজ যায়? একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সুষ্ঠু বিচার পাচ্ছে না, তাহলে জনগণ কি বিচার পাবে?’
ছাত্রদল সভাপতি বলেন, ‘গত ৯ মাস ধরে সেনাবাহিনী যে সাপোর্ট দিয়ে যাচ্ছে, তারপরও যদি পুলিশ প্রশাসনে এত দুর্বলতা থাকে, তাহলে দেশের জনগণ কোথায় যাবে।’ বিগত ৯ মাসে দেশে কোনো সংস্কার হয়নি, সংস্কারের নামে সরকার কালক্ষেপণ করেছে বলেও অভিযোগ করেন রাকিব।
এ দিকে, সাম্য হত্যার বিচার দাবিতে ৭ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে রাজধানীর শাহবাগ মোড় থেকে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল পর্যন্ত সড়কে অবস্থান নিয়ে কর্মসূচি পালন করছেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। এ কারণে শাহবাগ মোড় দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আশপাশের সড়কগুলোতে তৈরি হয় তীব্র যানজট।
ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের অবস্থানের কারণে শাহবাগ মোড়সংলগ্ন সড়কগুলোয় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, ‘ইতোমধ্যে শাহরিয়ার আলমের খুনিদের কয়েকজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হলেও প্রকৃত আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রক্টর কোনোভাবে এই হত্যার দায় এড়াতে পারেন না। তাই তাদের পদত্যাগ দাবি করছি।’
গতকাল বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে তিনজনকে আটকের কথা এক বিবৃতিতে জানায়। এ প্রসঙ্গে রাকিবুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তিনজনকে আটকের কথা জানিয়েছে। কিন্তু তাদের পরিচয় সম্পর্কে জানাতে পারেনি। তারা মনে করছেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখনও সন্দিহান। আসামিদের সম্পর্কে তারা নিশ্চিত করে কিছু জানাতে পারেনি।
গতকাল বুধবার এক বিবৃতিতে ছাত্রদলের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবারও এই অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা করা হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যা মামলার তদন্তে গাফিলতির প্রতিবাদ, হত্যাকাণ্ডে জড়িত মূল ঘাতকসহ সব আসামিকে গ্রেপ্তার, সুষ্ঠু বিচারে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের দাবিতে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত শাহবাগ মোড় ও ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের সামনে অবস্থান করবেন সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
গত ১৩ মে রাত ১১টার দিকে সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে ছুরিকাঘাতে আহত হন শাহরিয়ার আলম সাম্য। রাত ১২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় পরদিন সকালে সাম্যের বড় ভাই শরীফুল আলম শাহবাগ থানায় ‘১০-১২ জনকে’ আসামি করে মামলা করেন। ওই মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নেয় পুলিশ।
সাম্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। এ এফ রহমান হল ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক ছিলেন তিনি। তার বাড়ি সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে। তার হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে এক সপ্তাহ ধরে আন্দোলন করে আসছেন ছাত্রদল ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা। এর আগেও তারা শাহবাগ মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ-সমাবেশ করেন।
দেশে ৯ মাসে কোনো সংস্কার হয়নি, সংস্কারের নামে কালক্ষেপণ হয়েছে : ছাত্রদল সভাপতি
সাম্য হত্যার বিচারের দাবিতে বৃহস্পতিবার শাহবাগ ও ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ে অবস্থান নেয় ছাত্রদল কর্মীরা -সংবাদ
বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার বিচারের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচিতে নামা ছাত্রদল নেতাকর্মীরা ৭ ঘণ্টা পর রাজধানীর শাহবাগ মোড় ছেড়েছেন। এর আগে (২২ মে ২০২৫) বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে শাহবাগ ও হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ে জড়ো হতে থাকনে ছাত্রদলের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা।
অবস্থান কর্মসূচির সময় তারা ‘৮ দিন হয়ে গেল, কেউ কিছু জানে না’, ‘আর চাই না, আর চাই না এনএসআইয়ের প্রক্টর,’ ‘ক্যাম্পাসে লাশ ঝুলে, প্রক্টর কী করে’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’, ‘বিচার বিচার বিচার চাই ,সাম্য হত্যার বিচার চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উদ্দেশে ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, ‘তারা আমাদের এখনও আশ্বস্ত করতে পারেনি। এখনও তারা প্রকৃত হত্যাকারীদের চিহ্নিত করতে পারেনি। ‘এ ঘটনায় অন্তর্বর্তী সরকারের দায় রয়েছে। তারা সাম্যের হত্যার পর এখনও কোনো সহমর্মিতা দেখিয়ে বিজ্ঞপ্তি দেয়নি শুধু ছাত্রদল নেতা হওয়ার কারণে। আমরা তার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা যদি সাম্য হত্যার বিচার না পাই, তীব্র আন্দোলনে যাব। আমরা রাজপথ ছাড়ব না। ‘আমরা সরকারের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি, দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শক্তি প্রয়োগ করে হলেও এ হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত করতে হবে। এটা জনগণের কাছে কী ম্যাসেজ যায়? একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সুষ্ঠু বিচার পাচ্ছে না, তাহলে জনগণ কি বিচার পাবে?’
ছাত্রদল সভাপতি বলেন, ‘গত ৯ মাস ধরে সেনাবাহিনী যে সাপোর্ট দিয়ে যাচ্ছে, তারপরও যদি পুলিশ প্রশাসনে এত দুর্বলতা থাকে, তাহলে দেশের জনগণ কোথায় যাবে।’ বিগত ৯ মাসে দেশে কোনো সংস্কার হয়নি, সংস্কারের নামে সরকার কালক্ষেপণ করেছে বলেও অভিযোগ করেন রাকিব।
এ দিকে, সাম্য হত্যার বিচার দাবিতে ৭ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে রাজধানীর শাহবাগ মোড় থেকে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল পর্যন্ত সড়কে অবস্থান নিয়ে কর্মসূচি পালন করছেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। এ কারণে শাহবাগ মোড় দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আশপাশের সড়কগুলোতে তৈরি হয় তীব্র যানজট।
ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের অবস্থানের কারণে শাহবাগ মোড়সংলগ্ন সড়কগুলোয় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, ‘ইতোমধ্যে শাহরিয়ার আলমের খুনিদের কয়েকজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হলেও প্রকৃত আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রক্টর কোনোভাবে এই হত্যার দায় এড়াতে পারেন না। তাই তাদের পদত্যাগ দাবি করছি।’
গতকাল বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে তিনজনকে আটকের কথা এক বিবৃতিতে জানায়। এ প্রসঙ্গে রাকিবুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তিনজনকে আটকের কথা জানিয়েছে। কিন্তু তাদের পরিচয় সম্পর্কে জানাতে পারেনি। তারা মনে করছেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখনও সন্দিহান। আসামিদের সম্পর্কে তারা নিশ্চিত করে কিছু জানাতে পারেনি।
গতকাল বুধবার এক বিবৃতিতে ছাত্রদলের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবারও এই অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা করা হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যা মামলার তদন্তে গাফিলতির প্রতিবাদ, হত্যাকাণ্ডে জড়িত মূল ঘাতকসহ সব আসামিকে গ্রেপ্তার, সুষ্ঠু বিচারে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের দাবিতে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত শাহবাগ মোড় ও ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের সামনে অবস্থান করবেন সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
গত ১৩ মে রাত ১১টার দিকে সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে ছুরিকাঘাতে আহত হন শাহরিয়ার আলম সাম্য। রাত ১২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় পরদিন সকালে সাম্যের বড় ভাই শরীফুল আলম শাহবাগ থানায় ‘১০-১২ জনকে’ আসামি করে মামলা করেন। ওই মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নেয় পুলিশ।
সাম্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। এ এফ রহমান হল ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক ছিলেন তিনি। তার বাড়ি সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে। তার হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে এক সপ্তাহ ধরে আন্দোলন করে আসছেন ছাত্রদল ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা। এর আগেও তারা শাহবাগ মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ-সমাবেশ করেন।