অমল রায়ের ড্রাগন বাগান -সংবাদ
প্রচলিত ও ঐতিহ্যগত শস্যের পাশাপাশি নতুন নতুন শস্য চাষে আগ্রহী হচ্ছেন অনেক কৃষক। দেশের শিক্ষিত জনগোষ্ঠীও কৃষির সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন। আধুনিক ও সঠিক চাষপদ্ধতির ফলে কৃষিতে সুফলও মিলছে।
হাতির শুঁড়ের মতো ছড়ানো ড্রাগন গাছে থোকায় থোকায় পিংক রঙের ড্রাগন ফল চোখজুড়িয়ে যায়। সাথী ফসল হিসেবে আদা ও বেদনার চাষ আরও মনোহর করে তুলেছে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার চাঁদখানা ইউনিয়নের বগুলাগাড়ী কামারপাড়া গ্রামের মনমোহন রায়ের ছেলে অমল রায়ের (৫১) ড্রাগন বাগান।
প্রতিবছর ড্রাগন চাষ থেকে ভালো লাভ আসায় শ্রমিকদের পাশাপাশি নিজেও শ্রম দেন অমল রায়। দুপুরের তীব্র রোদ উপেক্ষা করে বাগানে পাখি তাড়ানোর জন্য শব্দ সৃষ্টিকারী টিনের যন্ত্রে রশি লাগিয়ে টানতে দেখা যায় তাকে। তার মোহনীয় বাগান যেমন মানুষের নজর কাড়ে, তেমনি ক্ষুধার্ত পাখিদেরও নজর এড়ায় না। তাই দিন-রাত পালা করে অমল রায় ও শ্রমিকরা পাখি তাড়ানোর কাজে ব্যস্ত থাকেন। প্রতিবছর ড্রাগন চাষ করে সফল হয়েছেন তিনি।
৬০ শতক বেলে দোঁ-আশ জমিতে পিংক কালারের ড্রাগন চাষ করেছেন অমল। প্রতিবছর ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা লাভ আসে। ড্রাগনের চারা লাগানোর অনেক সময় পর ফল পাওয়া যায়, তাই তিনি জমি না বাড়িয়ে সাথী ফসল করছেন। গত কয়েক বছর বস্তায় আদা চাষ করলেও এবার ড্রাগন বাগানেই আদা চাষ করছেন। এখন পর্যন্ত আদায় কোনো মড়ক ধরেনি। পাশাপাশি বেদনার চড়াও রোপণ করেছেন।
তিনি বলেন, ‘বছরে ৫ বার ড্রাগন ফল বিক্রি করি। এর মধ্যেই ১ম রাউন্ড (১৫ মে-১৫ জুন) ফল বাজারে বিক্রি করেছি। ডিসেম্বর পর্যন্ত ড্রাগন ফল ঘরে উঠবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ড্রাগন ফল গ্রীষ্মকালীন ফসল। তীব্র শীতে এর মুকুল আসে না। তবে হালকা শীতে মেঘলা আকাশ ও রাতে লাইটিং পদ্ধতি ব্যবহার করলে মাঝারি ধরনের ফলন হয়। এতে খরচ পড়ে।’
অমল বলেন, ‘বাগানে ক্ষতিকর কোনো ওষুধ প্রয়োগ করি না। এ কারণেই পাখি ছুটে আসে আমার বাগানে। এলাকার মাটি ড্রাগন চাষের উপযোগী।’
বিভিন্ন জেলা শহরের পাইকাররা বাগান থেকেই কিনে নিয়ে যায় তার ড্রাগন ফল। এবারে ১৫০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি করছেন। ২০১৫ সালে ১,০০০টি ড্রাগন চারা রোপণ করেন। ড্রাগন ফলের পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের ৭০টি আমের গাছ, ভিয়েতনামের আঁটাবিহীন ৬০টি কাঁঠাল গাছ, মসলাজাতীয় ৮০টি চারা রোপণ করেছেন। এ ছাড়াও সবজি ও আখ চাষ করেন।
অমল রায় বলেন, ‘১৯৯২ সালে এসএসসি পাস করার পর চাষাবাদ শুরু করি। পৈতৃক সূত্রে পাওয়া সাড়ে
চার একর জমিতে চাষাবাদে সফলতা পাই। পরে চাষাবাদের লাভে কিছু জমি নিজে কিনে, বর্গা ও বন্দকে নিয়ে আরও সাড়ে চার একরের বেশি জমি চাষ করছি। কোনো ফসলে লোকসান হলেও অন্য ফসল দিয়ে তা উসুল হয়।’
নীলফামারী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. এস এম আবুবকর সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘গত বছর জেলায় ড্রাগন বাগান ছিল ১৫টি। বাজারে প্রচুর চাহিদা ও লাভজনক ফসল হওয়ায় এবারে তা বেড়ে ৩০টি ড্রাগন ফল বাগানে উন্নীত হয়েছে।’
অমল রায়ের ড্রাগন বাগান -সংবাদ
মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫
প্রচলিত ও ঐতিহ্যগত শস্যের পাশাপাশি নতুন নতুন শস্য চাষে আগ্রহী হচ্ছেন অনেক কৃষক। দেশের শিক্ষিত জনগোষ্ঠীও কৃষির সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন। আধুনিক ও সঠিক চাষপদ্ধতির ফলে কৃষিতে সুফলও মিলছে।
হাতির শুঁড়ের মতো ছড়ানো ড্রাগন গাছে থোকায় থোকায় পিংক রঙের ড্রাগন ফল চোখজুড়িয়ে যায়। সাথী ফসল হিসেবে আদা ও বেদনার চাষ আরও মনোহর করে তুলেছে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার চাঁদখানা ইউনিয়নের বগুলাগাড়ী কামারপাড়া গ্রামের মনমোহন রায়ের ছেলে অমল রায়ের (৫১) ড্রাগন বাগান।
প্রতিবছর ড্রাগন চাষ থেকে ভালো লাভ আসায় শ্রমিকদের পাশাপাশি নিজেও শ্রম দেন অমল রায়। দুপুরের তীব্র রোদ উপেক্ষা করে বাগানে পাখি তাড়ানোর জন্য শব্দ সৃষ্টিকারী টিনের যন্ত্রে রশি লাগিয়ে টানতে দেখা যায় তাকে। তার মোহনীয় বাগান যেমন মানুষের নজর কাড়ে, তেমনি ক্ষুধার্ত পাখিদেরও নজর এড়ায় না। তাই দিন-রাত পালা করে অমল রায় ও শ্রমিকরা পাখি তাড়ানোর কাজে ব্যস্ত থাকেন। প্রতিবছর ড্রাগন চাষ করে সফল হয়েছেন তিনি।
৬০ শতক বেলে দোঁ-আশ জমিতে পিংক কালারের ড্রাগন চাষ করেছেন অমল। প্রতিবছর ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা লাভ আসে। ড্রাগনের চারা লাগানোর অনেক সময় পর ফল পাওয়া যায়, তাই তিনি জমি না বাড়িয়ে সাথী ফসল করছেন। গত কয়েক বছর বস্তায় আদা চাষ করলেও এবার ড্রাগন বাগানেই আদা চাষ করছেন। এখন পর্যন্ত আদায় কোনো মড়ক ধরেনি। পাশাপাশি বেদনার চড়াও রোপণ করেছেন।
তিনি বলেন, ‘বছরে ৫ বার ড্রাগন ফল বিক্রি করি। এর মধ্যেই ১ম রাউন্ড (১৫ মে-১৫ জুন) ফল বাজারে বিক্রি করেছি। ডিসেম্বর পর্যন্ত ড্রাগন ফল ঘরে উঠবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ড্রাগন ফল গ্রীষ্মকালীন ফসল। তীব্র শীতে এর মুকুল আসে না। তবে হালকা শীতে মেঘলা আকাশ ও রাতে লাইটিং পদ্ধতি ব্যবহার করলে মাঝারি ধরনের ফলন হয়। এতে খরচ পড়ে।’
অমল বলেন, ‘বাগানে ক্ষতিকর কোনো ওষুধ প্রয়োগ করি না। এ কারণেই পাখি ছুটে আসে আমার বাগানে। এলাকার মাটি ড্রাগন চাষের উপযোগী।’
বিভিন্ন জেলা শহরের পাইকাররা বাগান থেকেই কিনে নিয়ে যায় তার ড্রাগন ফল। এবারে ১৫০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি করছেন। ২০১৫ সালে ১,০০০টি ড্রাগন চারা রোপণ করেন। ড্রাগন ফলের পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের ৭০টি আমের গাছ, ভিয়েতনামের আঁটাবিহীন ৬০টি কাঁঠাল গাছ, মসলাজাতীয় ৮০টি চারা রোপণ করেছেন। এ ছাড়াও সবজি ও আখ চাষ করেন।
অমল রায় বলেন, ‘১৯৯২ সালে এসএসসি পাস করার পর চাষাবাদ শুরু করি। পৈতৃক সূত্রে পাওয়া সাড়ে
চার একর জমিতে চাষাবাদে সফলতা পাই। পরে চাষাবাদের লাভে কিছু জমি নিজে কিনে, বর্গা ও বন্দকে নিয়ে আরও সাড়ে চার একরের বেশি জমি চাষ করছি। কোনো ফসলে লোকসান হলেও অন্য ফসল দিয়ে তা উসুল হয়।’
নীলফামারী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. এস এম আবুবকর সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘গত বছর জেলায় ড্রাগন বাগান ছিল ১৫টি। বাজারে প্রচুর চাহিদা ও লাভজনক ফসল হওয়ায় এবারে তা বেড়ে ৩০টি ড্রাগন ফল বাগানে উন্নীত হয়েছে।’