ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) পুকুর থেকে গত বৃহস্পতিবার সাজিদ আবদুল্লাহ নামের এক শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে পুরো ক্যাম্পাস। শিক্ষার্থীরা তার মৃত্যুকে ‘অস্বাভাবিক’ দাবি করে শনিবার,(১৯ জুলাই ২০২৫) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে বিক্ষোভে অংশ নেন।
এ সময় হাজারো শিক্ষার্থী বিভিন্ন বিভাগের ব্যানারে একত্রিত হয়ে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দেন। বিক্ষোভ চলাকালে শিক্ষার্থীরা প্রশাসন ভবনের উভয় দিক অবরোধ করলে উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, রেজিস্ট্রার ও প্রক্টরসহ অনেক শিক্ষক ও কর্মকর্তারা ভবনে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন।
দুপুর দেড়টার দিকে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে এলে তাদের তোপের মুখে পড়তে হয়। শিক্ষার্থীরা ৬ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার আশ্বাস লিখিত আকারে দাবি করেন। এরপর দুপুর ২টার দিকে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকও আটকে দেন।
পরবর্তীতে প্রশাসনের বিরুদ্ধে ‘টালবাহানা’ ও ‘গাফিলতি’র অভিযোগ এনে শিক্ষার্থীরা প্রশাসন ভবনের নাম পরিবর্তন করে ‘প্রহসন ভবন’ লিখে দেন। টানা সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা আন্দোলনের পর বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে প্রশাসন লিখিতভাবে শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিলে অবরোধ তুলে নেয়া হয়।
শিক্ষার্থীদের ১৫ দফা দাবি: ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মৃত্যুর প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ, ৬ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ, পুরো ক্যাম্পাস সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনা, আবাসিক হলে শিক্ষার্থীদের এন্ট্রি ও এক্সিট মনিটরিং, ক্যাম্পাসজুড়ে সুরক্ষিত বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ, পর্যাপ্ত ও কার্যকর রোড লাইট স্থাপন, বহিরাগত প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ, নতুন হলের নাম ‘সাজিদ আবদুল্লাহ হল’ হিসেবে নামকরণ এছাড়াও আরও কয়েকটি দাবি মিলিয়ে মোট ১৫ দফা উত্থাপন করা হয়।
শিক্ষার্থীরা জানান, দাবি মানা না হলে তারা আরও কঠোর কর্মসূচিতে যাবেন। তাদের এ কর্মসূচিতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন, ছাত্র ইউনিয়নসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন সংহতি প্রকাশ করে অংশ নেয়।
এর আগে সকাল সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুটবল মাঠে সাজিদ আবদুল্লাহর গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা প্রশাসন ভবনের সামনে সমবেত হন।
গতকাল শুক্রবার রাতে শাখা ছাত্রশিবির টর্চলাইট মিছিল করে সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবি জানায়। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় শাখা ছাত্রদল প্রধান ফটকের সামনে মানববন্ধন করে সাজিদের মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটন ও ক্যাম্পাসে শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানায়।
ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শহীদ জিয়াউর রহমান হল কর্তৃপক্ষ পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, ‘দেশের বাইরে থাকায় আমি সরাসরি উপস্থিত থাকতে পারিনি, যা দুঃখজনক। তবে আমি প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে দ্রুত তদন্ত সম্পন্ন করে শিক্ষার্থীদের দাবি বাস্তবায়নের ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’
দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এয়াকুব আলী বলেন, ‘ঘটনার প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটনে আমরা কাজ করছি। শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করছি।’
ঘটনার পটভূমি: গত বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ আজিজুর রহমান হলসংলগ্ন পুকুরে সাজিদ আবদুল্লাহর মরদেহ ভেসে থাকতে দেখেন শিক্ষার্থীরা। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও ইবি থানা পুলিশ উপস্থিত হয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। সাজিদ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আল কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি শহীদ জিয়াউর রহমান হলের ১০৯ নম্বর কক্ষে থাকতেন। তার বাড়ি টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল উপজেলায়।
শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) পুকুর থেকে গত বৃহস্পতিবার সাজিদ আবদুল্লাহ নামের এক শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে পুরো ক্যাম্পাস। শিক্ষার্থীরা তার মৃত্যুকে ‘অস্বাভাবিক’ দাবি করে শনিবার,(১৯ জুলাই ২০২৫) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে বিক্ষোভে অংশ নেন।
এ সময় হাজারো শিক্ষার্থী বিভিন্ন বিভাগের ব্যানারে একত্রিত হয়ে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দেন। বিক্ষোভ চলাকালে শিক্ষার্থীরা প্রশাসন ভবনের উভয় দিক অবরোধ করলে উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, রেজিস্ট্রার ও প্রক্টরসহ অনেক শিক্ষক ও কর্মকর্তারা ভবনে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন।
দুপুর দেড়টার দিকে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে এলে তাদের তোপের মুখে পড়তে হয়। শিক্ষার্থীরা ৬ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার আশ্বাস লিখিত আকারে দাবি করেন। এরপর দুপুর ২টার দিকে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকও আটকে দেন।
পরবর্তীতে প্রশাসনের বিরুদ্ধে ‘টালবাহানা’ ও ‘গাফিলতি’র অভিযোগ এনে শিক্ষার্থীরা প্রশাসন ভবনের নাম পরিবর্তন করে ‘প্রহসন ভবন’ লিখে দেন। টানা সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা আন্দোলনের পর বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে প্রশাসন লিখিতভাবে শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিলে অবরোধ তুলে নেয়া হয়।
শিক্ষার্থীদের ১৫ দফা দাবি: ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মৃত্যুর প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ, ৬ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ, পুরো ক্যাম্পাস সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনা, আবাসিক হলে শিক্ষার্থীদের এন্ট্রি ও এক্সিট মনিটরিং, ক্যাম্পাসজুড়ে সুরক্ষিত বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ, পর্যাপ্ত ও কার্যকর রোড লাইট স্থাপন, বহিরাগত প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ, নতুন হলের নাম ‘সাজিদ আবদুল্লাহ হল’ হিসেবে নামকরণ এছাড়াও আরও কয়েকটি দাবি মিলিয়ে মোট ১৫ দফা উত্থাপন করা হয়।
শিক্ষার্থীরা জানান, দাবি মানা না হলে তারা আরও কঠোর কর্মসূচিতে যাবেন। তাদের এ কর্মসূচিতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন, ছাত্র ইউনিয়নসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন সংহতি প্রকাশ করে অংশ নেয়।
এর আগে সকাল সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুটবল মাঠে সাজিদ আবদুল্লাহর গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা প্রশাসন ভবনের সামনে সমবেত হন।
গতকাল শুক্রবার রাতে শাখা ছাত্রশিবির টর্চলাইট মিছিল করে সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবি জানায়। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় শাখা ছাত্রদল প্রধান ফটকের সামনে মানববন্ধন করে সাজিদের মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটন ও ক্যাম্পাসে শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানায়।
ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শহীদ জিয়াউর রহমান হল কর্তৃপক্ষ পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, ‘দেশের বাইরে থাকায় আমি সরাসরি উপস্থিত থাকতে পারিনি, যা দুঃখজনক। তবে আমি প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে দ্রুত তদন্ত সম্পন্ন করে শিক্ষার্থীদের দাবি বাস্তবায়নের ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’
দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এয়াকুব আলী বলেন, ‘ঘটনার প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটনে আমরা কাজ করছি। শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করছি।’
ঘটনার পটভূমি: গত বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ আজিজুর রহমান হলসংলগ্ন পুকুরে সাজিদ আবদুল্লাহর মরদেহ ভেসে থাকতে দেখেন শিক্ষার্থীরা। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও ইবি থানা পুলিশ উপস্থিত হয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। সাজিদ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আল কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি শহীদ জিয়াউর রহমান হলের ১০৯ নম্বর কক্ষে থাকতেন। তার বাড়ি টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল উপজেলায়।