কানাডীয় সেনেটর সালমা আতাউল্লাহজানের নেতৃত্বে একটি পার্লামেন্টারি প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। এই সাক্ষাতে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সরকার এখন ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং এ নির্বাচন জাতির জন্য একটি ‘ঐতিহাসিক মুহূর্ত’ হবে।
বুধবার রাষ্ট্রীয় অতিথিভবন যমুনায় এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, কানাডার পার্লামেন্ট সদস্য সালমা জাহিদ ও সামির জুবেইরি এই প্রতিনিধি দলে অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।
প্রধান উপদেষ্টা কানাডীয় প্রতিনিধিদলকে বলেন, "এখন আমরা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি, যা জাতির জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত হবে।" তিনি তাদের চলমান সংস্কার প্রক্রিয়া ও আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে অবহিত করেন।
তিনি আরও বলেন, "আপনারা এমন সময়ে এসেছেন, যখন বাংলাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তরুণদের নেতৃত্বে একটি অভ্যুত্থান ঘটেছে।"
রোহিঙ্গা সংকট প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা কানাডার অব্যাহত সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, "আট বছর পেরিয়ে গেছে। রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবর্তনই একমাত্র টেকসই সমাধান, এর কোনো বিকল্প নেই। প্রায় ১২ লাখ মানুষ এখানে অবস্থান করছে। হাজারো শিশু জন্ম নিচ্ছে ও বেড়ে উঠছে, কিন্তু তাদের নাগরিকত্ব বা ভবিষ্যৎ নিয়ে কোনো স্পষ্টতা নেই। তারা হতাশ ও ক্ষুব্ধ। আর্থিক সহায়তা কমে যাওয়ায় এখন আমরা চ্যালেঞ্জের মুখে আছি, যা এই সংকটকে আরও গভীর করছে।"
সেনেটর সালমা আতাউল্লাহজান বলেন, তিনি রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন এবং শিগগিরই এ বিষয়ে বিবৃতি দেবেন। তিনি এই সংকটকে একটি "গুরুতর মানবিক সংকট" আখ্যায়িত করে বলেন, "বিশ্বকে এখন তাদের শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দিকে মনোযোগ দিতে হবে।" তিনি এ বিষয়ে অব্যাহত প্রচেষ্টার জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানান।
কানাডার বৈচিত্র্য, অন্তর্ভুক্তি ও প্রতিবন্ধী বিষয়ক মন্ত্রীর পার্লামেন্টারি সেক্রেটারি সামির জুবেইরি বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার আগ্রহের কথা তুলে ধরে বলেন, "আমরা এখন আমাদের বাণিজ্য সম্পর্ককে বৈচিত্র্যময় করার উদ্যোগ নিচ্ছি। বাংলাদেশ ও কানাডার মধ্যে জনগণ পর্যায়ের শক্তিশালী বন্ধন রয়েছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি এশিয়া সফর করেছেন বাণিজ্য অংশীদারত্ব সম্প্রসারণ ও বৈচিত্র্য বাড়ানোর লক্ষ্যে।"
প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন হিউম্যান কনসার্ন ইন্টারন্যাশনালের (এইচসিআই) গ্লোবাল সিইও মাহমুদা খান, হিউম্যান কনসার্ন ইউএসএর (এইচসিইউএসএ) সিইও মাসুম মাহবুব, গেসটাল্ট কমিউনিকেশনের সিইও আহমাদ আতিয়া এবং ইসলামিক রিলিফ কানাডার সিইও উসামা খান।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাক্ষাৎকালে উভয়পক্ষ তৈরি পোশাক, কৃষি ও অন্যান্য খাতে সম্ভাব্য বাণিজ্য সুযোগ নিয়ে আলোচনা করে এবং বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান রপ্তানি খাতে কানাডার বিনিয়োগ বাড়ানোর সম্ভাবনা নিয়ে গুরুত্ব আরোপ করে।
এ সময় জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান এবং এসডিজি বিষয়ক জ্যেষ্ঠ সচিব লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫
কানাডীয় সেনেটর সালমা আতাউল্লাহজানের নেতৃত্বে একটি পার্লামেন্টারি প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। এই সাক্ষাতে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সরকার এখন ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং এ নির্বাচন জাতির জন্য একটি ‘ঐতিহাসিক মুহূর্ত’ হবে।
বুধবার রাষ্ট্রীয় অতিথিভবন যমুনায় এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, কানাডার পার্লামেন্ট সদস্য সালমা জাহিদ ও সামির জুবেইরি এই প্রতিনিধি দলে অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।
প্রধান উপদেষ্টা কানাডীয় প্রতিনিধিদলকে বলেন, "এখন আমরা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি, যা জাতির জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত হবে।" তিনি তাদের চলমান সংস্কার প্রক্রিয়া ও আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে অবহিত করেন।
তিনি আরও বলেন, "আপনারা এমন সময়ে এসেছেন, যখন বাংলাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তরুণদের নেতৃত্বে একটি অভ্যুত্থান ঘটেছে।"
রোহিঙ্গা সংকট প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা কানাডার অব্যাহত সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, "আট বছর পেরিয়ে গেছে। রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবর্তনই একমাত্র টেকসই সমাধান, এর কোনো বিকল্প নেই। প্রায় ১২ লাখ মানুষ এখানে অবস্থান করছে। হাজারো শিশু জন্ম নিচ্ছে ও বেড়ে উঠছে, কিন্তু তাদের নাগরিকত্ব বা ভবিষ্যৎ নিয়ে কোনো স্পষ্টতা নেই। তারা হতাশ ও ক্ষুব্ধ। আর্থিক সহায়তা কমে যাওয়ায় এখন আমরা চ্যালেঞ্জের মুখে আছি, যা এই সংকটকে আরও গভীর করছে।"
সেনেটর সালমা আতাউল্লাহজান বলেন, তিনি রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন এবং শিগগিরই এ বিষয়ে বিবৃতি দেবেন। তিনি এই সংকটকে একটি "গুরুতর মানবিক সংকট" আখ্যায়িত করে বলেন, "বিশ্বকে এখন তাদের শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দিকে মনোযোগ দিতে হবে।" তিনি এ বিষয়ে অব্যাহত প্রচেষ্টার জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানান।
কানাডার বৈচিত্র্য, অন্তর্ভুক্তি ও প্রতিবন্ধী বিষয়ক মন্ত্রীর পার্লামেন্টারি সেক্রেটারি সামির জুবেইরি বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার আগ্রহের কথা তুলে ধরে বলেন, "আমরা এখন আমাদের বাণিজ্য সম্পর্ককে বৈচিত্র্যময় করার উদ্যোগ নিচ্ছি। বাংলাদেশ ও কানাডার মধ্যে জনগণ পর্যায়ের শক্তিশালী বন্ধন রয়েছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি এশিয়া সফর করেছেন বাণিজ্য অংশীদারত্ব সম্প্রসারণ ও বৈচিত্র্য বাড়ানোর লক্ষ্যে।"
প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন হিউম্যান কনসার্ন ইন্টারন্যাশনালের (এইচসিআই) গ্লোবাল সিইও মাহমুদা খান, হিউম্যান কনসার্ন ইউএসএর (এইচসিইউএসএ) সিইও মাসুম মাহবুব, গেসটাল্ট কমিউনিকেশনের সিইও আহমাদ আতিয়া এবং ইসলামিক রিলিফ কানাডার সিইও উসামা খান।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাক্ষাৎকালে উভয়পক্ষ তৈরি পোশাক, কৃষি ও অন্যান্য খাতে সম্ভাব্য বাণিজ্য সুযোগ নিয়ে আলোচনা করে এবং বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান রপ্তানি খাতে কানাডার বিনিয়োগ বাড়ানোর সম্ভাবনা নিয়ে গুরুত্ব আরোপ করে।
এ সময় জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান এবং এসডিজি বিষয়ক জ্যেষ্ঠ সচিব লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।