মিশরের বোয়িং ভাড়া
মিশর থেকে দুটি উড়োজাহাজার ভাড়া নেয়ার ক্ষেত্রে ‘অনিয়মের’ মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছেন সাবেক বিচারপতি এ এফ এম মেজবাউদ্দিনসহ তিনজন। জামিন পাওয়া বাকি দুইজন হলেন বিমান পরিচালনা পর্ষদের সাবেক চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত এয়ার মার্শাল জামাল উদ্দিন আহমেদ, সাবেক পরিচালক ফজলে কবির।
বুধবার,(১২ নভেম্বর ২০২৫) তারা ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. সাব্বির ফয়েজের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। তাদের পক্ষে অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার জামিন চেয়ে শুনানি করেন। দুদকের পক্ষে প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম জামিনের বিরোধিতা করেন। শুনানি নিয়ে আদালত তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।
গত ৪ নভেম্বর এ মামলায় ১৮ জনের বিরুদ্ধে দুদকের দেয়া অভিযোগপত্র আমলে নেয় আদালত। পলাতক থাকায় সাবেক বিচারপতি এ এফ এম মেজবাউদ্দিনসহ সাতজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। বিমানের সাবেক পরিচালক খোরশেদ আলম চৌধুরী, সাবেক পরিচালক এয়ার ভাইস মার্শাল আবু এসরার (অব.), সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল আবুল হোসেন (অব) ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইকবাল আহমেদ এখনও পলাতক।
জামিনে থাকা আসামিরা হলো- বিমানের সাবেক পরিচালক ক্যাপ্টেন ইশরাত আহমেদ, সাবেক ডেপুটি চিফ ইঞ্জিনিয়ার মো. শফিকুল আলম সিদ্দিক, সাবেক প্রিন্সিপাল ইঞ্জিনিয়ার শহীদ উদ্দিন মোহাম্মদ হানিফ, সাবেক প্রিন্সিপাল ইঞ্জিনিয়ার দেবেশ চৌধুরী, সাবেক এয়ারক্রাফট মেকানিক মো. সাদেকুল ইসলাম ভূঁইয়া, প্রিন্সিপাল সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার শরীফ রুহুল কুদ্দুস, সাবেক উপ-প্রধান প্রকৌশলী মো. শাহজাহান, সাবেক ইঞ্জিনিয়ার অফিসার মো. জাহিদ হোসেন, প্রকৌশলী কর্মকর্তা হীরালাল চক্রবর্তী, প্রিন্সিপাল সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার অশোক কুমার সর্দার, প্রকৌশলী কর্মকর্তা মো. লুৎফর রহমান।
ইজিপ্ট এয়ার থেকে পাঁচ বছরের জন্য বিমান বাংলাদেশ দুটি বোয়িং উড়োজাহাজ ভাড়া নেয়ার পর তা ২০১৯ সালে ফেরত দেয়া হয়। এজন্য দরপত্র ডাকা হয়েছিল ২০১৩ সালে। এ দুটো উড়োজাহাজ ভাড়া নেয়ার ক্ষেত্রে প্রতারণা ও বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগে ২০২৩ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি বিমানের ২৩ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেন দুদকের উপ-পরিচালক জেসমিন আক্তার। মামলায় ১ হাজার ১৬৪ কোটি টাকা ‘গচ্চা’ দেয়ার ক্ষেত্রে ‘অনিয়মের’ অভিযোগ আনা হয়।
তদন্ত শেষে গত বছরের মে মাসে ১৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র এবং এজাহারভুক্ত ২৩ জনের মধ্যে ১৪ জনকে অব্যাহতি দেয়ার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক আনোয়ারুল হক।
এর মধ্যে সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কেভিন জন স্টিল মারা যান। পরে মামলাটি অধিকতর তদন্তে পাঠানো হয়। সেখানে সাবেক বিচারপতি এ এফ এম মেজবাউদ্দিন আরও সাতজনের নামে আসে। তাদের অভিযুক্ত করে ২২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় দুদক। অধিকতর তদন্তে সরকারের ৭৪১ কোটি টাকা ক্ষতির তথ্য পায় দুদক।
মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, ২০১৪ সালে পাঁচ বছরের চুক্তিতে ইজিপ্ট এয়ার থেকে বোয়িং ৭৭৭-২০০ ইআর উড়োজাহাজ দুটি লিজ নিয়েছিল বিমান। ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে ফ্লাইট পরিচালনার পর একটির ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। উড়োজাহাজটি সচল রাখতে ইজিপ্ট এয়ার থেকেই ভাড়ায় আনা হয় আরেকটি ইঞ্জিন। দেড় বছরের মাথায় নষ্ট হয় বাকি ইঞ্জিনটিও। উড়োজাহাজটি সচল রাখতে ইজিপ্ট এয়ার থেকে ফের ভাড়ায় আনা হয় আরেকটি ইঞ্জিন। পরে ভাড়ায় আনা ইঞ্জিনও নষ্ট হয়ে যায়। সেই ইঞ্জিন মেরামত করতে যুক্তরাষ্ট্রের আরেকটি প্রতিষ্ঠানে পাঠানো হয়। তবে কোনো সময় নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়নি। সে কারণে ইজিপ্ট এয়ার এবং মেরামতকারী কোম্পানি উভয়কেই অর্থ দিতে হয়েছে বিমানকে। ফলে উড়োজাহাজ দুটির জন্য রাষ্ট্রের ক্ষতি হয় ৭৪১ কোটি টাকা।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
মিশরের বোয়িং ভাড়া
বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫
মিশর থেকে দুটি উড়োজাহাজার ভাড়া নেয়ার ক্ষেত্রে ‘অনিয়মের’ মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছেন সাবেক বিচারপতি এ এফ এম মেজবাউদ্দিনসহ তিনজন। জামিন পাওয়া বাকি দুইজন হলেন বিমান পরিচালনা পর্ষদের সাবেক চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত এয়ার মার্শাল জামাল উদ্দিন আহমেদ, সাবেক পরিচালক ফজলে কবির।
বুধবার,(১২ নভেম্বর ২০২৫) তারা ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. সাব্বির ফয়েজের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। তাদের পক্ষে অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার জামিন চেয়ে শুনানি করেন। দুদকের পক্ষে প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম জামিনের বিরোধিতা করেন। শুনানি নিয়ে আদালত তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।
গত ৪ নভেম্বর এ মামলায় ১৮ জনের বিরুদ্ধে দুদকের দেয়া অভিযোগপত্র আমলে নেয় আদালত। পলাতক থাকায় সাবেক বিচারপতি এ এফ এম মেজবাউদ্দিনসহ সাতজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। বিমানের সাবেক পরিচালক খোরশেদ আলম চৌধুরী, সাবেক পরিচালক এয়ার ভাইস মার্শাল আবু এসরার (অব.), সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল আবুল হোসেন (অব) ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইকবাল আহমেদ এখনও পলাতক।
জামিনে থাকা আসামিরা হলো- বিমানের সাবেক পরিচালক ক্যাপ্টেন ইশরাত আহমেদ, সাবেক ডেপুটি চিফ ইঞ্জিনিয়ার মো. শফিকুল আলম সিদ্দিক, সাবেক প্রিন্সিপাল ইঞ্জিনিয়ার শহীদ উদ্দিন মোহাম্মদ হানিফ, সাবেক প্রিন্সিপাল ইঞ্জিনিয়ার দেবেশ চৌধুরী, সাবেক এয়ারক্রাফট মেকানিক মো. সাদেকুল ইসলাম ভূঁইয়া, প্রিন্সিপাল সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার শরীফ রুহুল কুদ্দুস, সাবেক উপ-প্রধান প্রকৌশলী মো. শাহজাহান, সাবেক ইঞ্জিনিয়ার অফিসার মো. জাহিদ হোসেন, প্রকৌশলী কর্মকর্তা হীরালাল চক্রবর্তী, প্রিন্সিপাল সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার অশোক কুমার সর্দার, প্রকৌশলী কর্মকর্তা মো. লুৎফর রহমান।
ইজিপ্ট এয়ার থেকে পাঁচ বছরের জন্য বিমান বাংলাদেশ দুটি বোয়িং উড়োজাহাজ ভাড়া নেয়ার পর তা ২০১৯ সালে ফেরত দেয়া হয়। এজন্য দরপত্র ডাকা হয়েছিল ২০১৩ সালে। এ দুটো উড়োজাহাজ ভাড়া নেয়ার ক্ষেত্রে প্রতারণা ও বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগে ২০২৩ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি বিমানের ২৩ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেন দুদকের উপ-পরিচালক জেসমিন আক্তার। মামলায় ১ হাজার ১৬৪ কোটি টাকা ‘গচ্চা’ দেয়ার ক্ষেত্রে ‘অনিয়মের’ অভিযোগ আনা হয়।
তদন্ত শেষে গত বছরের মে মাসে ১৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র এবং এজাহারভুক্ত ২৩ জনের মধ্যে ১৪ জনকে অব্যাহতি দেয়ার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক আনোয়ারুল হক।
এর মধ্যে সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কেভিন জন স্টিল মারা যান। পরে মামলাটি অধিকতর তদন্তে পাঠানো হয়। সেখানে সাবেক বিচারপতি এ এফ এম মেজবাউদ্দিন আরও সাতজনের নামে আসে। তাদের অভিযুক্ত করে ২২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় দুদক। অধিকতর তদন্তে সরকারের ৭৪১ কোটি টাকা ক্ষতির তথ্য পায় দুদক।
মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, ২০১৪ সালে পাঁচ বছরের চুক্তিতে ইজিপ্ট এয়ার থেকে বোয়িং ৭৭৭-২০০ ইআর উড়োজাহাজ দুটি লিজ নিয়েছিল বিমান। ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে ফ্লাইট পরিচালনার পর একটির ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। উড়োজাহাজটি সচল রাখতে ইজিপ্ট এয়ার থেকেই ভাড়ায় আনা হয় আরেকটি ইঞ্জিন। দেড় বছরের মাথায় নষ্ট হয় বাকি ইঞ্জিনটিও। উড়োজাহাজটি সচল রাখতে ইজিপ্ট এয়ার থেকে ফের ভাড়ায় আনা হয় আরেকটি ইঞ্জিন। পরে ভাড়ায় আনা ইঞ্জিনও নষ্ট হয়ে যায়। সেই ইঞ্জিন মেরামত করতে যুক্তরাষ্ট্রের আরেকটি প্রতিষ্ঠানে পাঠানো হয়। তবে কোনো সময় নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়নি। সে কারণে ইজিপ্ট এয়ার এবং মেরামতকারী কোম্পানি উভয়কেই অর্থ দিতে হয়েছে বিমানকে। ফলে উড়োজাহাজ দুটির জন্য রাষ্ট্রের ক্ষতি হয় ৭৪১ কোটি টাকা।