তফসিলের পর ‘অনুমোদনহীন’ জনসমাবেশ-আন্দোলনে ‘কঠোর নিয়ন্ত্রণ’

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচন পর্যন্ত যে কোনো ধরনের ‘বেআইনি ও অনুমোদনহীন’ জনসমাবেশ, জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে এমন আন্দোলন কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে বলে জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। মঙ্গলবার,( ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫) এই সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, যারা ‘বেআইনিভাবে’ সভা-সমাবেশে অংশ নেবেন তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।

আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে উল্লেখ করে ‘অনুমোদনহীন’ সামাবেশ-আন্দোলন থেকে সবাইকে বিরত থাকতে এবং যা কিছু দাবি-দাওয়া আছে তা নির্বাচন পরবর্তী সরকারের কাছে উপস্থাপনের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আহ্বান জানানো হয়।

মঙ্গলবার দুপুরে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বৈঠক থেকে এ আহ্বান জানানোর সিদ্ধান্ত হয়।

তফসিল কবে

আসছে ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে রোজার আগে একই দিনে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ও গণভোট অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান মুহাম্মদ ইউনূস। তার নির্দেশে ইসিও প্রস্তুতি এগিয়ে নিচ্ছে। ভোটের জন্য ৬০ দিন সময় হাতে রাখতে এ সপ্তাহেই তফসিল ঘোষণা করার বিষয়টি আগেই সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন।

তফসিল সামনে রেখে গত রোববার প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন সিইসি।

আজ রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাতের কথা রয়েছে ইসির। এ দিন তফসিল ঘোষণা ও প্রচারের জন্য সিইসির বক্তব্য রেকর্ড করতে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ও বেতারকে ডেকেছে কমিশন। ইসির সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, আগামীকাল জাতির উদ্দেশে দেয়া বক্তব্যে তফসিল ঘোষণার মধ্য দিয়ে নির্বাচনের দিনক্ষণ তুলে ধরবেন সিইসি।সরকারপ্রধানের দপ্তরের বক্তব্য এদিকে মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বৈঠকের পর প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিতব্য ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন যেন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও উৎসবমুখর হয় বর্তমানে এটিই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মূল লক্ষ্য। একটি সুন্দর নির্বাচন আয়োজনের জন্য যা যা করণীয় সরকার সেদিকেই মনোনিবেশ করছে।’

*সতর্কতা*

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর সশস্ত্র বাহিনীসহ দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত সব বাহিনী নির্বাচনী পরিবেশ যাতে নিশ্চিত হয় সে লক্ষ্যে কাজ করবে। দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনীসহ অন্যান্য বাহিনীর প্রায় নয় লাখ সদস্য নিয়োজিত থাকবে, যা এ যাবৎকালের মধ্যে সর্বোচ্চ। সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনার জন্য ইতোমধ্যেই রেকর্ডসংখ্যক দেড় লাখ পুলিশ সদস্যকে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। তফসিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচন পর্যন্ত যে কোনো ধরনের বেআইনি ও অনুমোদনহীন জনসমাবেশ, জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে এমন আন্দোলন কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। যারা বেআইনিভাবে সভা-সমাবেশে অংশ নেবেন তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।’

*স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বক্তব্য*

অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধানের দপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বক্তব্যও তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়- স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘আমরা জানি, অনেকেরই নায্য দাবি-দাওয়া রয়েছে। গত দেড় বছরে দুই হাজারের বেশি আন্দোলন-বিক্ষোভ সংগঠিত করে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আন্দোলনকারীরা দাবি-দাওয়া উপস্থাপন করেছেন। সরকার ন্যায্য দাবিতে সবসময়ই সাড়া দিয়েছে, আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধানে পৌঁছাতে চেষ্টা করেছে।’

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘কিন্তু আমরা এখন নির্বাচনমুখী সময়ে আছি। এ কারণে, সবার যা কিছু দাবি-দাওয়া আছে তা নির্বাচন পরবর্তী সরকারের কাছে উপস্থাপনের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হচ্ছে। আমরা আশা করবো, এ সময়ের মধ্যে কেউ দাবি-দাওয়া নিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি বা স্বাভাবিক পরিবেশ বিঘ্ন করবেন না।’

সম্প্রতি

সারাদেশ: রংপুরে নানা আয়োজনে বেগম রোকেয়া দিবস পালন

সারাদেশ: আগৈলঝাড়ায় ভূমিকম্পে ২২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিম, ছাদ, পিলার ও মেঝেতে ফাটল

রাজনীতি: প্রশাসনে থেকে দলের পক্ষে কাজ করলে ছাড় দেয়া হবে না: সারজিস আলম

অপরাধ ও দুর্নীতি: দেশে ও লন্ডনে আনোয়ারুজ্জামানের বিপুল সম্পদের তথ্য পেয়েছে দুদক

অপরাধ ও দুর্নীতি: ৪৩ বছর ধরে প্লট দখলে আমলা-রাজনীতিকরা, বঞ্চিত স্থানীয় চাষিরা