অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিটি আইন করার ক্ষেত্রে গোপনীয়তার আশ্রয় নিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশনের প্রধান ও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। দেশে সংস্কার কাজের পথে আমলাতন্ত্র বড় বাধা বলেও অভিযোগ তার।
মঙ্গলবার,( ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫) আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস ২০২৫ উপলক্ষে রাজধানীর ধানমন্ডিতে টিআইবি কার্যালয়ে ‘কর্তৃত্ববাদের পতন-পরবর্তী গণমাধ্যম পরিস্থিতি’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব সমালোচনা ও অভিযোগের কথা বলেন। তিনি বলেন, রাজনৈতিক সরকারের মতোই অন্তর্বর্তী সরকারও প্রতিটি আইন তৈরির ক্ষেত্রে গোপনীয়তার আশ্রয় নিয়েছে।
সংস্কার কমিশনের প্রধান হওয়ার পরও তাকে অন্য মাধ্যম থেকে অধ্যাদেশের খসড়া পেয়ে মতামত দিতে হয়েছে বলে জানান তিনি। এ সরকারের সময় পাস হওয়া বেশ কয়েকটি অধ্যাদেশের সঙ্গে ড. ইফতেখারুজ্জামান সম্পৃক্ত হতে পেরেছিলেন জানিয়ে বলেন, ‘আমাকে সম্পৃক্ত হতে দেয়া হয়েছে, আমি সেটা বলছি না। আমি সম্পৃক্ত হতে পেরেছি।’
টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক আরও জানান, দুদক সংস্কার কমিশন সরকারকে আশু বাস্তবায়নের জন্য যে প্রস্তাবগুলো দিয়েছিল, অধ্যাদেশ করার সময় তার শতভাগই বিবেচনায় নেয়া হয়নি। দুদক সংস্কার প্রসঙ্গে একটি নির্দিষ্ট উদাহরণ তুলে ধরে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, কমিশনের প্রস্তাবনায় দুদকের জন্য একটি ‘বাছাই’ ও ‘পর্যালোচনা’ কমিটির কথা বলা ছিল। কিন্তু অধ্যাদেশ করার সময় ‘বাছাই’ শব্দটি রেখে ‘পর্যালোচনা’ শব্দটি ফেলে দেয়া হয়। এরপর তিনি সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করলে তারা ‘পর্যালোচনা’ শব্দটি রাখতে রাজি হন। কিন্তু পরবর্তীতে তিনি জানতে পারেন, সেটি বাতিল করা হয়েছে।
ইফতেখারুজ্জামান মন্তব্য করেন, দেশে সংস্কারের পথে ‘বড় অন্তরায় হলো আমলাতন্ত্র’। তিনি মনে করেন, এই আমলাতন্ত্রের পেছনে হাতিয়ার হিসেবে কাজ করেছে রাজনীতিবিদদের ‘আওয়ার টাইম’ সংস্কৃতি। এই সংস্কৃতি হলো, ‘১৫ বছর ক্ষমতার বাইরে ছিলাম, এবার আমাদের পালা’।
তিনি বলেন, রাজনীতিবিদ ও আমলাতন্ত্রের এমন মানসিকতার কারণে সংস্কারের সম্ভাবনা ঝুঁকিতে পড়েছে। তিনি সতর্ক করে বলেন, যতদিন এ ধরনের রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও আমলাতান্ত্রিক সংস্কৃতি দূর না হবে, ততদিন পরিবর্তন আসবে না।
অপরাধ ও দুর্নীতি: দেশে ও লন্ডনে আনোয়ারুজ্জামানের বিপুল সম্পদের তথ্য পেয়েছে দুদক
অপরাধ ও দুর্নীতি: ৪৩ বছর ধরে প্লট দখলে আমলা-রাজনীতিকরা, বঞ্চিত স্থানীয় চাষিরা