বিদায়ের আগে সমালোচকদের কথার জবাব দিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা। তার সহকর্মী থেকে শুরু করে সাবেক সিইসি এবং নাগরিক সংগঠনের প্রতিনিধিকেও গতকাল এক হাত নিলেন নূরুল হুদা।
সাবেক সিইসি এটিএম শামসুল হুদার সমালোচনার জবাবে তিনি বলেন, ২০০৭-০৮ সালে জরুরি অবস্থার সময়ে সিইসির দায়িত্ব পালন করা শামসুল হুদা ‘বিরাজনীতির পরিবেশে সাংবিধানিক ব্যত্যয়’ ঘটিয়েছেন।
নাগরিক সংগঠন সুজন-এর সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পূর্ব পরিচিত হলেও সুজনের বিরুদ্ধে ‘আর্থিক অনিয়মসহ নানা ধরনের অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায়’ ওই সংগঠনকে কোনো কাজে সম্পৃক্ত করেনি বর্তমান ইসি। আর তাই ‘ক্ষুব্ধ হয়ে’ বদিউল আলম কমিশনের সমালোচনা করছেন বলে মন্তব্য নূরুল হুদার।
আর তার সহকর্মী নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার প্রসঙ্গে সিইসি নূরুল হুদা বলেন, তার (মাহবুব তালুকদার) চিকিৎসার জন্য নির্বাচন কমিশন (ইসি) ‘৩০ থেকে ৪০ লাখ টাকা’ ব্যয় করেছে। আর কমিশনে কোনো মিটিং থাকলে তিনি তা নিয়ে ‘আগে থেকেই খুঁত ধরতে’ থাকেন। গণমাধ্যম ‘খাবে’ এমন কথা বলতে থাকেন তিনি, অভিযোগ নূরুল হুদার।
নুরুল হুদা বলেন, ‘মাহবুব তালুকদারের কথা আমি বরাবরই বলেছি। ইসিতে উনি ব্যক্তিগত এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন। উনি রোগাক্রান্ত ব্যক্তি। তিনি (মাহবুব) কখনও আইসিইউতে, কখনও সিসিইউতে ছিলেন। উনি সিঙ্গাপুর, ভারতে চিকিৎসা নিয়েছেন। এসব চিকিৎসার ব্যয় কমিশন থেকে করা হয়। এ অর্থের পরিমাণ প্রায় ৩০ থেকে ৪০ লাখ টাকা।’
গতকাল বৃহস্পতিবার নির্বাচন ভবনে রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসির (আরএফইডি) সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে এসব কথা বলেন সিইসি নূরুল হুদা। আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি ৫ সদস্যের বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। এ উপলক্ষ্যে এই মতবিনিময়ের আয়োজন করা হয়।
আদালতে অভিযোগ নেই, তাই তদন্ত হয়নি
এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি নূরুল হুদা বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘দিনের ভোট রাতে হয়েছে’ বলে যে অভিযোগ তা অভিযোগ আকারেই থেকে গেছে। অভিযোগের তদন্ত ‘আদালতের নির্দেশনা ছাড়া’ হয় না বলে মন্তব্য তার।
তিনি বলেন, ‘অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে আমি কনক্লুসিভ কিছু বলতে পারি না। কারণ, আমি তো দেখি নাই। তদন্ত হলে বেরিয়ে আসত, বেরিয়ে এলে আদালতের নির্দেশে নির্বাচন বন্ধ হয়ে যেত। সারা দেশের নির্বাচনও বন্ধ হয়ে যেতে পারত। রাজনৈতিক দলগুলো কেন আদালতে অভিযোগ দেয়নি সেটা তাদের বিষয়। এ সুযোগ তারা হাতছাড়া করেছে।’
শামসুল হুদার ‘সাংবিধানিক ব্যত্যয়’
সম্প্রতি সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার শামসুল হুদা প্রসঙ্গে বর্তমান সিইসি নূরুল হুদা বলেন, “কয়েকদিন আগে এটিএম শামসুল হুদা সাহেব সবক দিলেন। তিনি বললেন, আমাদের অনেক কাজ করার কথা ছিল, করতে পারিনি, বিতর্ক সৃষ্টি করেছি। একজন সিইসি হিসেবে তার কথা আমার কাছে গ্রহণযোগ্য মনে হয়নি।
নূরুল হুদা বলেন, ‘ইসির দায়িত্ব ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করা। তিনি (শামসুল হুদা) নির্বাচন করেছেন ৬৯০ দিন পরে। এ সাংবিধানিক ব্যত্যয় ঘটানোর অধিকার তাকে কে দিয়েছে? তখন গণতান্ত্রিক সরকার ছিল না, সেনা সমর্থিত সরকার ছিল; ইমারজেন্সির কারণে এটা করেছে। গণতান্ত্রিক সরকারের সময়ে করা সম্ভব না।’
নবম সংসদ নির্বাচনের আগে সুজনকে (সুশাসনের জন্য নাগরিক) প্রার্থীদের হলফনামা প্রচারের কাজ দেওয়ার সমালোচনাও করেন নূরুল হুদা। তিনি বলেন, ‘তিনি বদিউল আলম মজুমদারকে কীভাবে নিয়োগ দিয়েছেন? লাখ লাখ টাকা কীভাবে দিলেন?’
বদিউল আলম ‘সংবাদ সম্মেলনের বিশেষজ্ঞ’
বদিউল আলম মজুমদার বর্তমান কমিশনকে ‘অদক্ষ’, ভোটে ‘অনিয়ম’ এবং নির্বাচন ব্যবস্থা ‘ভেঙে দেওয়া’সহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে সমালচনা করে আসছেন।।
এর জবাবেই নূরুল হুদা বলেন, ‘বদিউল আলম মজুমদার এই কমিশন নিয়ে অনেক কথা বলে ফেলেন। এটার একটা ইতিহাস আছে। এখানে যোগদানের পর থেকে আমার সঙ্গে দেখা করতে চান।… তাকে নিয়ে অনেক ঝামেলা, অনিয়ম। এক কোটি টাকার আর্থিক অনিয়ম, কাজ না করে টাকা দেওয়া, নির্বাচন কমিশনে সভায় অনিয়ম নিয়ে সিদ্ধান্ত আছে।’
‘দুই বছর আমার পেছনে ঘুর ঘুর করছেন। একা একা এসেছেন। … এ লোকের সঙ্গে আলাদাভাবে আলোচনা করা যায় না, বিশ্বাস করা যায় না। উনি নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কোনো বিশেষজ্ঞ... কাজ নেই। সংবাদ সম্মেলন করার বিশেষজ্ঞ উনি। আমাদের তো তার দরকার নেই।’
বদিউল আলমকে উদ্দেশ্য করে নূরুল হুদা বলেন, ‘তখন ছিল ইমারজেন্সি সরকার, সেনাশাসিত একটা অবস্থা। ওই অবস্থা আর এখনকার অবস্থা এক না। কাউকে কাজ দিলে আমাকে বিজ্ঞপ্তি দিতে হবে, যোগ্যতা আছে কিনা, যে কাজের জন্য বলছেন এ জন্যে আপনার প্রয়োজন নেই। তখন ছিল যে অবস্থা সেই কমিশন কীভাবে করেছেন, এখানে পারবেন না।’
বৃহস্পতিবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২২
বিদায়ের আগে সমালোচকদের কথার জবাব দিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা। তার সহকর্মী থেকে শুরু করে সাবেক সিইসি এবং নাগরিক সংগঠনের প্রতিনিধিকেও গতকাল এক হাত নিলেন নূরুল হুদা।
সাবেক সিইসি এটিএম শামসুল হুদার সমালোচনার জবাবে তিনি বলেন, ২০০৭-০৮ সালে জরুরি অবস্থার সময়ে সিইসির দায়িত্ব পালন করা শামসুল হুদা ‘বিরাজনীতির পরিবেশে সাংবিধানিক ব্যত্যয়’ ঘটিয়েছেন।
নাগরিক সংগঠন সুজন-এর সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পূর্ব পরিচিত হলেও সুজনের বিরুদ্ধে ‘আর্থিক অনিয়মসহ নানা ধরনের অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায়’ ওই সংগঠনকে কোনো কাজে সম্পৃক্ত করেনি বর্তমান ইসি। আর তাই ‘ক্ষুব্ধ হয়ে’ বদিউল আলম কমিশনের সমালোচনা করছেন বলে মন্তব্য নূরুল হুদার।
আর তার সহকর্মী নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার প্রসঙ্গে সিইসি নূরুল হুদা বলেন, তার (মাহবুব তালুকদার) চিকিৎসার জন্য নির্বাচন কমিশন (ইসি) ‘৩০ থেকে ৪০ লাখ টাকা’ ব্যয় করেছে। আর কমিশনে কোনো মিটিং থাকলে তিনি তা নিয়ে ‘আগে থেকেই খুঁত ধরতে’ থাকেন। গণমাধ্যম ‘খাবে’ এমন কথা বলতে থাকেন তিনি, অভিযোগ নূরুল হুদার।
নুরুল হুদা বলেন, ‘মাহবুব তালুকদারের কথা আমি বরাবরই বলেছি। ইসিতে উনি ব্যক্তিগত এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন। উনি রোগাক্রান্ত ব্যক্তি। তিনি (মাহবুব) কখনও আইসিইউতে, কখনও সিসিইউতে ছিলেন। উনি সিঙ্গাপুর, ভারতে চিকিৎসা নিয়েছেন। এসব চিকিৎসার ব্যয় কমিশন থেকে করা হয়। এ অর্থের পরিমাণ প্রায় ৩০ থেকে ৪০ লাখ টাকা।’
গতকাল বৃহস্পতিবার নির্বাচন ভবনে রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসির (আরএফইডি) সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে এসব কথা বলেন সিইসি নূরুল হুদা। আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি ৫ সদস্যের বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। এ উপলক্ষ্যে এই মতবিনিময়ের আয়োজন করা হয়।
আদালতে অভিযোগ নেই, তাই তদন্ত হয়নি
এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি নূরুল হুদা বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘দিনের ভোট রাতে হয়েছে’ বলে যে অভিযোগ তা অভিযোগ আকারেই থেকে গেছে। অভিযোগের তদন্ত ‘আদালতের নির্দেশনা ছাড়া’ হয় না বলে মন্তব্য তার।
তিনি বলেন, ‘অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে আমি কনক্লুসিভ কিছু বলতে পারি না। কারণ, আমি তো দেখি নাই। তদন্ত হলে বেরিয়ে আসত, বেরিয়ে এলে আদালতের নির্দেশে নির্বাচন বন্ধ হয়ে যেত। সারা দেশের নির্বাচনও বন্ধ হয়ে যেতে পারত। রাজনৈতিক দলগুলো কেন আদালতে অভিযোগ দেয়নি সেটা তাদের বিষয়। এ সুযোগ তারা হাতছাড়া করেছে।’
শামসুল হুদার ‘সাংবিধানিক ব্যত্যয়’
সম্প্রতি সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার শামসুল হুদা প্রসঙ্গে বর্তমান সিইসি নূরুল হুদা বলেন, “কয়েকদিন আগে এটিএম শামসুল হুদা সাহেব সবক দিলেন। তিনি বললেন, আমাদের অনেক কাজ করার কথা ছিল, করতে পারিনি, বিতর্ক সৃষ্টি করেছি। একজন সিইসি হিসেবে তার কথা আমার কাছে গ্রহণযোগ্য মনে হয়নি।
নূরুল হুদা বলেন, ‘ইসির দায়িত্ব ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করা। তিনি (শামসুল হুদা) নির্বাচন করেছেন ৬৯০ দিন পরে। এ সাংবিধানিক ব্যত্যয় ঘটানোর অধিকার তাকে কে দিয়েছে? তখন গণতান্ত্রিক সরকার ছিল না, সেনা সমর্থিত সরকার ছিল; ইমারজেন্সির কারণে এটা করেছে। গণতান্ত্রিক সরকারের সময়ে করা সম্ভব না।’
নবম সংসদ নির্বাচনের আগে সুজনকে (সুশাসনের জন্য নাগরিক) প্রার্থীদের হলফনামা প্রচারের কাজ দেওয়ার সমালোচনাও করেন নূরুল হুদা। তিনি বলেন, ‘তিনি বদিউল আলম মজুমদারকে কীভাবে নিয়োগ দিয়েছেন? লাখ লাখ টাকা কীভাবে দিলেন?’
বদিউল আলম ‘সংবাদ সম্মেলনের বিশেষজ্ঞ’
বদিউল আলম মজুমদার বর্তমান কমিশনকে ‘অদক্ষ’, ভোটে ‘অনিয়ম’ এবং নির্বাচন ব্যবস্থা ‘ভেঙে দেওয়া’সহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে সমালচনা করে আসছেন।।
এর জবাবেই নূরুল হুদা বলেন, ‘বদিউল আলম মজুমদার এই কমিশন নিয়ে অনেক কথা বলে ফেলেন। এটার একটা ইতিহাস আছে। এখানে যোগদানের পর থেকে আমার সঙ্গে দেখা করতে চান।… তাকে নিয়ে অনেক ঝামেলা, অনিয়ম। এক কোটি টাকার আর্থিক অনিয়ম, কাজ না করে টাকা দেওয়া, নির্বাচন কমিশনে সভায় অনিয়ম নিয়ে সিদ্ধান্ত আছে।’
‘দুই বছর আমার পেছনে ঘুর ঘুর করছেন। একা একা এসেছেন। … এ লোকের সঙ্গে আলাদাভাবে আলোচনা করা যায় না, বিশ্বাস করা যায় না। উনি নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কোনো বিশেষজ্ঞ... কাজ নেই। সংবাদ সম্মেলন করার বিশেষজ্ঞ উনি। আমাদের তো তার দরকার নেই।’
বদিউল আলমকে উদ্দেশ্য করে নূরুল হুদা বলেন, ‘তখন ছিল ইমারজেন্সি সরকার, সেনাশাসিত একটা অবস্থা। ওই অবস্থা আর এখনকার অবস্থা এক না। কাউকে কাজ দিলে আমাকে বিজ্ঞপ্তি দিতে হবে, যোগ্যতা আছে কিনা, যে কাজের জন্য বলছেন এ জন্যে আপনার প্রয়োজন নেই। তখন ছিল যে অবস্থা সেই কমিশন কীভাবে করেছেন, এখানে পারবেন না।’