alt

জাতীয়

স্বপ্ন, সংকল্প, আত্মবিশ্বাস : সম্ভাবনার নতুন দুয়ার

: শনিবার, ২৫ জুন ২০২২

আজ সেই মাহিন্দ্রক্ষণ। যার জন্য দীর্ঘদিন অপেক্ষায় ছিল বাংলাদেশের মানুষ। সেই কবে এই স্বপ্নের শুরু। আর সেই স্বপ্নই আজ বাস্তবে উন্মোচিত হবে। আজ সকাল ১০টায় মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সেই ১৯৯৯ সালের মে মাসে পদ্মা সেতু প্রকল্পের জন্য প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাই সমীক্ষা (প্রি-ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি) শুরু হয়। বলা হয়, এটাই দালিলিকভাবে পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রকল্পের প্রথম সূত্রপাত। এ হিসেবে স্বপ্নের পদ্মা সেতু নির্মাণের যাত্রা প্রায় দুই যুগ।

বাংলাদেশের পঞ্চাশ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় যোগাযোগ প্রকল্প এই পদ্মা সেতু। গত ১১ বছরে নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে তৈরি হয়েছে এই সেতু।

অর্থনীতিবিদরা কেউ কেউ বলছেন, এই সেতু বাংলাদেশের জন্য একটি ‘নেশন বিল্ডিং প্রজেক্ট’ (জাতি গঠন প্রকল্প), দেশে যোগাযোগের সবচেয়ে বড় ‘হারানো সূত্র’ (মিসিং লিংক)। দেশের দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার মানুষকে ঢাকাসহ দেশের অন্য অঞ্চলের সঙ্গে সড়ক পথে যুক্ত করবে এই সেতু। বদলে দেবে অর্থনীতির চেহারা।

কিন্তু এই সেতু নির্মাণের কাহিনী এত সোজাসাপটা নয়। বাংলাদেশের পঞ্চাশ বছরের ইতিহাসে সম্ভবত সবচেয়ে বেশি বিতর্ক হয়েছে এই প্রকল্পকে ঘিরে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে বারবার উঠে এসেছে এই সেতুটি, হয়ত ভবিষ্যতের রাজনীতিতেও আলোচনায় থাকবে।

বিতর্ক, সমালোচনার শুরু যখন বিশ্বব্যাংক এই প্রকল্পে ‘দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের’ অভিযোগ তোলে। তা নিয়ে শুরু হয় টানাপোড়েন। এক সময় এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা যাবে কিনা তা নিয়েই দেখা দেয় সন্দেহ। তবে এই প্রকল্পের ‘মোড় ঘোরানো’ ঘোষণা আসে ২০১২ সালে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেন।

বিশ্বব্যাংক এই প্রকল্প থেকে সরে যাওয়ায় তাদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কয়েকদিন আগে এক সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি বরং বিশ্বব্যাংককে ধন্যবাদ জানাই। কারণ, এটা (ঋণ বন্ধ) ঘটেছিল বলেই আমরা এটা (পদ্মা সেতু) করতে পেরেছি। আমাদের একটা ধারণা ছিল, আমরা নিজেদের টাকায়, নিজেরা কিছু করতে পারি না। একটা পরমুখাপেক্ষিতা, দৈন্য ছিল। আমাদের সেই ধারণা বদলে গেছে।’

তিনি বলেছেন, ‘মানুষের কাছ থেকে যে অভূতপূর্ব সাড়াটা আমি পেয়েছিলাম, সেটাই কিন্তু আমার সাহস আর শক্তি। মানুষ আমার পাশে দাঁড়িয়েছিল। তাদেরই সাহসে এই পদ্মা সেতু আজ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে।’

দেশি-বিদেশি মিলে প্রায় ১০ হাজার শ্রমিক ও ৫৫০ জন প্রকৌশলীদের পরিশ্রমে পৃথিবীর অন্যতম খরস্রোত নদী পদ্মায় বাস্তবায়িত হয়েছে এই বহুমুখী সেতু প্রকল্প। যার উপর দিয়ে চলবে গাড়ি ও নিচ দিয়ে চলবে ট্রেন।

পদ্মা সেতুর ইতিহাস

আশি ও নব্বই দশকে পদ্মা নদীর মাওয়া-জাজিরা ও দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া পয়েন্ট সেতু নির্মাণের আলোচনা শুরু হয়। তবে দালিলিকভাবে পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রকল্পের প্রথম সূত্রপাত ১৯৯৯ সালে। সে বছরের মে মাসে পদ্মা সেতু প্রকল্পের জন্য প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাই সমীক্ষা (প্রি-ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি) শুরু হয়। দুটি পয়েন্ট প্রাথমিক সমীক্ষা হলেও চূড়ান্ত হয় মুন্সীগঞ্জের মাওয়া ও শরীয়তপুরে জাজিরা অংশ। এরপর ২০০১ সালে ৪ জুলাই মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে প্রথম পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

পদ্মা সেতুর প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাই হয় দেশীয় অর্থায়নে। এরপর জাপানের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা জাইকার অর্থায়নে ২০০৩ সালের মে থেকে তৎকালীন সরকারের সময়ে পদ্মা সেতু প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই সমীক্ষার কাজ শুরু হয়। যা ২০০৫ সালে শেষ। এর পর ২০০৭ সালে পদ্মা বহুমুখী সেতুর মূল উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) প্রণয়ন করা হয়।

তবে বাস্তবে এই প্রকল্প গতি পায় ২০০৯ সালে এসে। নতুন করে পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়। ২০০৯ থেকে ২০১১ পর্যন্ত দুই বছর লাগে সেতুর বিস্তারিত নকশা প্রণয়ন করতে। নিউজিল্যান্ডভিত্তিক পরামর্শ প্রতিষ্ঠান মুনসেল পদ্মা সেতুর নকশা তৈরি করে।

পদ্মা সেতু নির্মাণে অর্থায়নে আগ্রহ প্রকাশ করে বিশ্বব্যাংকসহ বিভিন্ন দাতা সংস্থা। জাইকা, আইডিবি ও এডিবি অর্থায়নে আগ্রহ প্রকাশ করে। তবে মূল অর্থ যোগদাতা ছিল বিশ্বব্যাংক। পদ্মা সেতু নির্মাণে ২০১১ সালের এপ্রিলে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরিত।

প্রথম সংশোধিত ডিপিপি পর্যন্ত মোট প্রকল্প ব্যয় ২০ হাজার ৫০৭ কোটি ২০ লাখ টাকার মধ্যে ১৬ হাজার ২৪৯ কোটি ৫২ লাখ (৭৯ দশমিক ২৪ শতাংশ) টাকা বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), জাইকা ও ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংকের (আইডিবি) দেয়ার কথা ছিল। সেই লক্ষ্যে ২০১১ সালের ২৮ এপ্রিল বিশ্বব্যাংক, একই বছরের ১৮ মে জাইকা, ২৪ মে আইডিবি এবং ৬ জুন এডিবির সঙ্গে ঋণচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল।

দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ

বহুজাতিক ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান বিশ্বব্যাংকই একসময় পদ্মা সেতুর মূল প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়ায়। ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ তদারকির জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ প্রক্রিয়া চলাকালীন কানাডীয় কোম্পানি ‘এসএনসি-লাভালিন’ এবং সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনে বিশ্বব্যাংক। পাশাপাশি পদ্মা সেতুতে এসব বিদেশি ঋণদাতা বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানও অর্থ প্রদান স্থগিত করে।

বিশ্বব্যাংক অর্থ প্রদানে অপারগতা প্রকাশ করলে ২০১২ সালের ৯ জুলাই জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের জনগণের অর্থে পদ্মা সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেন। অবশ্য বিশ্বব্যাংক আরোপিত দুর্নীতির অভিযোগের কলঙ্ক বেশিদিন বইতে হয়নি বাংলাদেশকে।

২০১৭ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি কানাডার টরেন্টোর একটি আদালতে পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্পের দুর্নীতির এ অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়। কানাডার আদালতের রায়ে বলা হয়, ‘এই মামলায় যেসব তথ্য দেয়া হয়েছে, তা অনুমানভিত্তিক, গালগল্প এবং গুজবের বেশি কিছু নয়।’ এর আগে ২০১৪ সালে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দুই দফা অনুসন্ধান করেও বিশ্বব্যাংকের ওই অভিযোগের কোন সত্যতা পায়নি।

নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু

২০০৭ সালে রেলপথ ছাড়া একনেকে প্রকল্প অনুমোদনের সময় ব্যয় ধরা হয়েছিল ১০ হাজার ১৬১ কোটি টাকা। ২০১১ সালে রেলপথ যুক্ত করে প্রথম দফায় প্রকল্প ব্যয় বৃদ্ধি করা হয় দ্বিগুণের বেশি। তখন ব্যয় ধরা হয়েছিল ২০ হাজার ৫০৭ কোটি ২০ লাখ টাকা।

দ্বিতীয় দফায় ২০১৬ সালে ৮ হাজার ২৮৬ কোটি টাকা বাড়িয়ে ব্যয় নির্ধারণ করা হয় ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। তৃতীয় দফায় ২০১৮ সালে ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকা বাড়িয়ে ব্যয় নির্ধারণ করা হয় ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। অর্থ মন্ত্রণালয়ের ঋণের টাকায় নির্মাণ করা হচ্ছে পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প। ১ শতাংশ হারে সুদসহ ৩৫ বছরে এই ঋণ পরিশোধ করবে সেতু কর্তৃপক্ষ।

এরপর ২০১৪ সালের ২৭ নভেম্বরে মূল সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পদ্মা সেতুর প্রথম ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিয়ারে প্রথম স্প্যান (ইস্পাতের কাঠামো) বসানো হয়।

২০১৮ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ১৪ পিয়ারের পাইলিং সমস্যা নতুন ডিজাইনে চূড়ান্ত করতে অনেক সময় চলে যায় তাই নির্মাণ সময় ১ বছর বৃদ্ধি ২০১৯ সালে ৩০ ডিসেম্বরে নির্ধারণ করা হয়। পরবর্তিতে ১ বছর ৬ মাস মেয়াদ বৃদ্ধি করে ২১ সালের জুন পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। কিন্তু করোনা ও নদী ভাঙনের কারণে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধির করা হয়েছে। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনোহাইড্রো করপোরেশন।

সেতুর কাজ শুরু

২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বরে নদীশাসনের কাজের উদ্বোধনের মাধ্যমে পদ্মা সেতু প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর সেতুর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিয়ারে বসানো হয় প্রথম স্প্যান (ইস্পাতের কাঠামো)। সেতু ৪২টি পিয়ারে ৪১ স্প্যান বসাতে ৩ বছর ২ মাস লেগে যায়। এই স্প্যানের ভেতর দিয়ে চলাচল করবে রেল। প্রতিটি স্প্যানের ওজন ছিল ৩ হাজার টনের বেশি। দৈর্ঘ্য ছিল ১৫০ মিটার। এই স্প্যানগুলো সার্ভিস এরিয়া থেকে ৩ হাজার ৬০০ টন ধারণ ক্ষমতার ‘তিয়ান-ই’ ভাসমান ক্রেন দিয়ে পিয়ারের উপর বসানো হয়।

দ্বিতলবিশিষ্ট পদ্মা সেতু। নিচতলায় অর্থাৎ ইস্পাতের কাঠামোর (স্প্যান) ভেতর দিয়ে রেল চলবে। মিটারগেজ ও ব্রডগেজ দুই ধরনের ট্রেনই চলতে পারবে। আর ওপর দিয়ে চলবে যানবাহন। এ জন্য স্প্যানের ওপরে কংক্রিটের ২ হাজার ৯১৭টি রোড ও স্প্যানের ভিতর ২ হাজার ৯৫৯টি রেলওয়ে সø্যাব বসানো হয়েছে। গত বছর জুনে রেলওয়ে সø্যাব ও অক্টোবরে রোড সø্যাব বসানোর কাজ শেষ হয়।

রোড সø্যাবের ওপরের এই অংশ চওড়ায় ২২ মিটার, চার লেনের সড়কের সমান। এছাড়া সেতু দিয়ে ৭৬০ মিলিমিটার ব্যসের গ্যাসের পাইপলাইন বসানো হয়। ১৫০ মিলিমিটার ব্যসের ফাইবার অপটিক ও টেলিফোন লাইনের পাইপ বসানো হয়।

এ বিষয়ে প্রকল্পের পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম সংবাদকে বলেন, ‘ভূমি অধিগ্রহণ, ১২ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণ, সার্ভিস এরিয়া-১-২ নির্মাণ, ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার মূল সেতু, ১৪ কিলোমিটার নদীশাসন, ইঞ্জিনিয়ারিং সাপোর্ট এবং সেফটি, কন্সট্রাকশন সুপারভিশন, পুনর্বাসন-পরিবেশগত কার্যক্রম ও ম্যানেজমেন্ট সাপোর্ট এই ৮ ভাগে প্রকল্প নির্মাণ করা হয়েছে। এর মধ্যে মূল সেতু ও নদীশাসন ছাড়া অন্য কাজ আরও আগে শেষ হয়েছে। সেতু ২৫ জুন উদ্বোধন হলেও নদীশাসন কাজ শেষ হবে আগামী বছর জুনের মধ্যে।’

ছবি

তাপপ্রবাহ অব্যাহত : ৭২ ঘণ্টার সতর্ক বার্তা আবহাওয়া অধিদপ্তরের

ছবি

বঙ্গবন্ধু টানেলে টোল ফ্রি সুবিধা পেল যেসব গাড়ি

ছবি

সারাদেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি

ছবি

জাতীয় পতাকার নকশাকার শিবনারায়ণ দাস আর নেই

ছবি

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা ও অভিজ্ঞতা বিনিময় করা হবে : আরাফাত

স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র এবং মুজিবনগর দিবস সম্পর্কে নতুন প্রজন্মেকে জানাতে হবে

ছবি

স্থানীয় সরকার নির্বাচ‌নে ভোটার উপ‌স্থি‌তি সংসদ নির্বাচ‌নের ‌চে‌য়ে বে‌শি থাকবে

ছবি

প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী

ছবি

থাইল্যান্ড সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী

জুন-জুলাইয়ে দেশে ইনফ্লুয়েঞ্জার হার বেশি

মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতির ওপর নজর রাখতে বললেন প্রধানমন্ত্রী

এথেন্স সম্মেলনে দায়িত্বশীল ও টেকসই সমুদ্র ব্যবস্থাপনায় সম্মিলিত প্রয়াসের আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর

ছবি

কৃষকরাই অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি: স্পিকার

ছবি

মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতির ওপর নজর রাখার তাগিদ প্রধানমন্ত্রীর

ছবি

লালমনিরহাট সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে সাবেক ইউপি সদস্য গুলিবিদ্ধ

ছবি

তৃতীয় ধাপে ১১২ উপজেলায় ভোট ২৯ মে

ছবি

এমভি আবদুল্লাহ : ২১ নাবিক দেশে ফিরবেন জাহাজে, বাকি দুজন বিমানে

ছবি

৯৬ হাজার ৭৩৬ শিক্ষক নিয়োগে প্রক্রিয়া শুরু, আবেদনের নিয়ম

ছবি

ঢাকায় গ্রিসের দূতাবাস স্থাপন ও জনশক্তি রপ্তানি বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা

ছবি

টিসিবির তালিকা হালনাগাদ করতে চাই:বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী

ছবি

লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে গমের আবাদ কম

ছবি

ভোজ্য তেলের দাম বাড়াতে চায় ব্যবসায়ীরা আপত্তি বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীর

ছবি

অনিবন্ধিত অনলাইনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেবো : তথ্য প্রতিমন্ত্রী

ছবি

জলবায়ু পরিবর্তনে দেশে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষিখাত : মন্ত্রী

ছবি

দেশে ফিরতে আরও ১০ দিন সময় লাগবে নাবিকদের

ছবি

মুক্ত এমভি আবদুল্লাহর ৩ ছবি প্রকাশ

ছবি

২ মে বসছে সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশন

ছবি

কারো যাতে ডেঙ্গু না হয় সেজন্য সবাইকে কাজ করতে হবে : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

ছবি

মুক্তিপণ দেওয়ার ছবি নিয়ে যা বললেন নৌ প্রতিমন্ত্রী

ছবি

লঞ্চে বেড়েছে ঢাকায় ফেরা যাত্রীর চাপ

ছবি

নববর্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সমৃদ্ধ ও স্মার্ট ভবিষ্যৎ নির্মাণে একযোগে কাজ করার আহ্বান অর্থ প্রতিমন্ত্রীর

ছবি

জিম্মি জাহাজটি কীভাবে মুক্ত হলো, জানাল মালিকপক্ষ

ছবি

সোমানিয়ান জলদস্যুদের কবল থেকে এমভি আব্দুল্লাহ মুক্ত ২৩ নাবিক অক্ষত

ছবি

মুক্তিপণ নিয়ে তীরে উঠেই ৮ জলদস্যু গ্রেপ্তার

ছবি

দেশের প্রতি ভালোবাসার বার্তা এমভি আব্দুল্লাহর নাবিকদের

ছবি

কত টাকায় মুক্তি পেলেন জিম্মি ২৩ বাংলাদেশি নাবিক

tab

জাতীয়

স্বপ্ন, সংকল্প, আত্মবিশ্বাস : সম্ভাবনার নতুন দুয়ার

শনিবার, ২৫ জুন ২০২২

আজ সেই মাহিন্দ্রক্ষণ। যার জন্য দীর্ঘদিন অপেক্ষায় ছিল বাংলাদেশের মানুষ। সেই কবে এই স্বপ্নের শুরু। আর সেই স্বপ্নই আজ বাস্তবে উন্মোচিত হবে। আজ সকাল ১০টায় মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সেই ১৯৯৯ সালের মে মাসে পদ্মা সেতু প্রকল্পের জন্য প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাই সমীক্ষা (প্রি-ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি) শুরু হয়। বলা হয়, এটাই দালিলিকভাবে পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রকল্পের প্রথম সূত্রপাত। এ হিসেবে স্বপ্নের পদ্মা সেতু নির্মাণের যাত্রা প্রায় দুই যুগ।

বাংলাদেশের পঞ্চাশ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় যোগাযোগ প্রকল্প এই পদ্মা সেতু। গত ১১ বছরে নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে তৈরি হয়েছে এই সেতু।

অর্থনীতিবিদরা কেউ কেউ বলছেন, এই সেতু বাংলাদেশের জন্য একটি ‘নেশন বিল্ডিং প্রজেক্ট’ (জাতি গঠন প্রকল্প), দেশে যোগাযোগের সবচেয়ে বড় ‘হারানো সূত্র’ (মিসিং লিংক)। দেশের দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার মানুষকে ঢাকাসহ দেশের অন্য অঞ্চলের সঙ্গে সড়ক পথে যুক্ত করবে এই সেতু। বদলে দেবে অর্থনীতির চেহারা।

কিন্তু এই সেতু নির্মাণের কাহিনী এত সোজাসাপটা নয়। বাংলাদেশের পঞ্চাশ বছরের ইতিহাসে সম্ভবত সবচেয়ে বেশি বিতর্ক হয়েছে এই প্রকল্পকে ঘিরে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে বারবার উঠে এসেছে এই সেতুটি, হয়ত ভবিষ্যতের রাজনীতিতেও আলোচনায় থাকবে।

বিতর্ক, সমালোচনার শুরু যখন বিশ্বব্যাংক এই প্রকল্পে ‘দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের’ অভিযোগ তোলে। তা নিয়ে শুরু হয় টানাপোড়েন। এক সময় এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা যাবে কিনা তা নিয়েই দেখা দেয় সন্দেহ। তবে এই প্রকল্পের ‘মোড় ঘোরানো’ ঘোষণা আসে ২০১২ সালে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেন।

বিশ্বব্যাংক এই প্রকল্প থেকে সরে যাওয়ায় তাদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কয়েকদিন আগে এক সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি বরং বিশ্বব্যাংককে ধন্যবাদ জানাই। কারণ, এটা (ঋণ বন্ধ) ঘটেছিল বলেই আমরা এটা (পদ্মা সেতু) করতে পেরেছি। আমাদের একটা ধারণা ছিল, আমরা নিজেদের টাকায়, নিজেরা কিছু করতে পারি না। একটা পরমুখাপেক্ষিতা, দৈন্য ছিল। আমাদের সেই ধারণা বদলে গেছে।’

তিনি বলেছেন, ‘মানুষের কাছ থেকে যে অভূতপূর্ব সাড়াটা আমি পেয়েছিলাম, সেটাই কিন্তু আমার সাহস আর শক্তি। মানুষ আমার পাশে দাঁড়িয়েছিল। তাদেরই সাহসে এই পদ্মা সেতু আজ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে।’

দেশি-বিদেশি মিলে প্রায় ১০ হাজার শ্রমিক ও ৫৫০ জন প্রকৌশলীদের পরিশ্রমে পৃথিবীর অন্যতম খরস্রোত নদী পদ্মায় বাস্তবায়িত হয়েছে এই বহুমুখী সেতু প্রকল্প। যার উপর দিয়ে চলবে গাড়ি ও নিচ দিয়ে চলবে ট্রেন।

পদ্মা সেতুর ইতিহাস

আশি ও নব্বই দশকে পদ্মা নদীর মাওয়া-জাজিরা ও দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া পয়েন্ট সেতু নির্মাণের আলোচনা শুরু হয়। তবে দালিলিকভাবে পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রকল্পের প্রথম সূত্রপাত ১৯৯৯ সালে। সে বছরের মে মাসে পদ্মা সেতু প্রকল্পের জন্য প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাই সমীক্ষা (প্রি-ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি) শুরু হয়। দুটি পয়েন্ট প্রাথমিক সমীক্ষা হলেও চূড়ান্ত হয় মুন্সীগঞ্জের মাওয়া ও শরীয়তপুরে জাজিরা অংশ। এরপর ২০০১ সালে ৪ জুলাই মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে প্রথম পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

পদ্মা সেতুর প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাই হয় দেশীয় অর্থায়নে। এরপর জাপানের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা জাইকার অর্থায়নে ২০০৩ সালের মে থেকে তৎকালীন সরকারের সময়ে পদ্মা সেতু প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই সমীক্ষার কাজ শুরু হয়। যা ২০০৫ সালে শেষ। এর পর ২০০৭ সালে পদ্মা বহুমুখী সেতুর মূল উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) প্রণয়ন করা হয়।

তবে বাস্তবে এই প্রকল্প গতি পায় ২০০৯ সালে এসে। নতুন করে পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়। ২০০৯ থেকে ২০১১ পর্যন্ত দুই বছর লাগে সেতুর বিস্তারিত নকশা প্রণয়ন করতে। নিউজিল্যান্ডভিত্তিক পরামর্শ প্রতিষ্ঠান মুনসেল পদ্মা সেতুর নকশা তৈরি করে।

পদ্মা সেতু নির্মাণে অর্থায়নে আগ্রহ প্রকাশ করে বিশ্বব্যাংকসহ বিভিন্ন দাতা সংস্থা। জাইকা, আইডিবি ও এডিবি অর্থায়নে আগ্রহ প্রকাশ করে। তবে মূল অর্থ যোগদাতা ছিল বিশ্বব্যাংক। পদ্মা সেতু নির্মাণে ২০১১ সালের এপ্রিলে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরিত।

প্রথম সংশোধিত ডিপিপি পর্যন্ত মোট প্রকল্প ব্যয় ২০ হাজার ৫০৭ কোটি ২০ লাখ টাকার মধ্যে ১৬ হাজার ২৪৯ কোটি ৫২ লাখ (৭৯ দশমিক ২৪ শতাংশ) টাকা বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), জাইকা ও ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংকের (আইডিবি) দেয়ার কথা ছিল। সেই লক্ষ্যে ২০১১ সালের ২৮ এপ্রিল বিশ্বব্যাংক, একই বছরের ১৮ মে জাইকা, ২৪ মে আইডিবি এবং ৬ জুন এডিবির সঙ্গে ঋণচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল।

দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ

বহুজাতিক ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান বিশ্বব্যাংকই একসময় পদ্মা সেতুর মূল প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়ায়। ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ তদারকির জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ প্রক্রিয়া চলাকালীন কানাডীয় কোম্পানি ‘এসএনসি-লাভালিন’ এবং সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনে বিশ্বব্যাংক। পাশাপাশি পদ্মা সেতুতে এসব বিদেশি ঋণদাতা বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানও অর্থ প্রদান স্থগিত করে।

বিশ্বব্যাংক অর্থ প্রদানে অপারগতা প্রকাশ করলে ২০১২ সালের ৯ জুলাই জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের জনগণের অর্থে পদ্মা সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেন। অবশ্য বিশ্বব্যাংক আরোপিত দুর্নীতির অভিযোগের কলঙ্ক বেশিদিন বইতে হয়নি বাংলাদেশকে।

২০১৭ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি কানাডার টরেন্টোর একটি আদালতে পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্পের দুর্নীতির এ অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়। কানাডার আদালতের রায়ে বলা হয়, ‘এই মামলায় যেসব তথ্য দেয়া হয়েছে, তা অনুমানভিত্তিক, গালগল্প এবং গুজবের বেশি কিছু নয়।’ এর আগে ২০১৪ সালে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দুই দফা অনুসন্ধান করেও বিশ্বব্যাংকের ওই অভিযোগের কোন সত্যতা পায়নি।

নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু

২০০৭ সালে রেলপথ ছাড়া একনেকে প্রকল্প অনুমোদনের সময় ব্যয় ধরা হয়েছিল ১০ হাজার ১৬১ কোটি টাকা। ২০১১ সালে রেলপথ যুক্ত করে প্রথম দফায় প্রকল্প ব্যয় বৃদ্ধি করা হয় দ্বিগুণের বেশি। তখন ব্যয় ধরা হয়েছিল ২০ হাজার ৫০৭ কোটি ২০ লাখ টাকা।

দ্বিতীয় দফায় ২০১৬ সালে ৮ হাজার ২৮৬ কোটি টাকা বাড়িয়ে ব্যয় নির্ধারণ করা হয় ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। তৃতীয় দফায় ২০১৮ সালে ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকা বাড়িয়ে ব্যয় নির্ধারণ করা হয় ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। অর্থ মন্ত্রণালয়ের ঋণের টাকায় নির্মাণ করা হচ্ছে পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প। ১ শতাংশ হারে সুদসহ ৩৫ বছরে এই ঋণ পরিশোধ করবে সেতু কর্তৃপক্ষ।

এরপর ২০১৪ সালের ২৭ নভেম্বরে মূল সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পদ্মা সেতুর প্রথম ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিয়ারে প্রথম স্প্যান (ইস্পাতের কাঠামো) বসানো হয়।

২০১৮ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ১৪ পিয়ারের পাইলিং সমস্যা নতুন ডিজাইনে চূড়ান্ত করতে অনেক সময় চলে যায় তাই নির্মাণ সময় ১ বছর বৃদ্ধি ২০১৯ সালে ৩০ ডিসেম্বরে নির্ধারণ করা হয়। পরবর্তিতে ১ বছর ৬ মাস মেয়াদ বৃদ্ধি করে ২১ সালের জুন পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। কিন্তু করোনা ও নদী ভাঙনের কারণে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধির করা হয়েছে। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনোহাইড্রো করপোরেশন।

সেতুর কাজ শুরু

২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বরে নদীশাসনের কাজের উদ্বোধনের মাধ্যমে পদ্মা সেতু প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর সেতুর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিয়ারে বসানো হয় প্রথম স্প্যান (ইস্পাতের কাঠামো)। সেতু ৪২টি পিয়ারে ৪১ স্প্যান বসাতে ৩ বছর ২ মাস লেগে যায়। এই স্প্যানের ভেতর দিয়ে চলাচল করবে রেল। প্রতিটি স্প্যানের ওজন ছিল ৩ হাজার টনের বেশি। দৈর্ঘ্য ছিল ১৫০ মিটার। এই স্প্যানগুলো সার্ভিস এরিয়া থেকে ৩ হাজার ৬০০ টন ধারণ ক্ষমতার ‘তিয়ান-ই’ ভাসমান ক্রেন দিয়ে পিয়ারের উপর বসানো হয়।

দ্বিতলবিশিষ্ট পদ্মা সেতু। নিচতলায় অর্থাৎ ইস্পাতের কাঠামোর (স্প্যান) ভেতর দিয়ে রেল চলবে। মিটারগেজ ও ব্রডগেজ দুই ধরনের ট্রেনই চলতে পারবে। আর ওপর দিয়ে চলবে যানবাহন। এ জন্য স্প্যানের ওপরে কংক্রিটের ২ হাজার ৯১৭টি রোড ও স্প্যানের ভিতর ২ হাজার ৯৫৯টি রেলওয়ে সø্যাব বসানো হয়েছে। গত বছর জুনে রেলওয়ে সø্যাব ও অক্টোবরে রোড সø্যাব বসানোর কাজ শেষ হয়।

রোড সø্যাবের ওপরের এই অংশ চওড়ায় ২২ মিটার, চার লেনের সড়কের সমান। এছাড়া সেতু দিয়ে ৭৬০ মিলিমিটার ব্যসের গ্যাসের পাইপলাইন বসানো হয়। ১৫০ মিলিমিটার ব্যসের ফাইবার অপটিক ও টেলিফোন লাইনের পাইপ বসানো হয়।

এ বিষয়ে প্রকল্পের পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম সংবাদকে বলেন, ‘ভূমি অধিগ্রহণ, ১২ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণ, সার্ভিস এরিয়া-১-২ নির্মাণ, ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার মূল সেতু, ১৪ কিলোমিটার নদীশাসন, ইঞ্জিনিয়ারিং সাপোর্ট এবং সেফটি, কন্সট্রাকশন সুপারভিশন, পুনর্বাসন-পরিবেশগত কার্যক্রম ও ম্যানেজমেন্ট সাপোর্ট এই ৮ ভাগে প্রকল্প নির্মাণ করা হয়েছে। এর মধ্যে মূল সেতু ও নদীশাসন ছাড়া অন্য কাজ আরও আগে শেষ হয়েছে। সেতু ২৫ জুন উদ্বোধন হলেও নদীশাসন কাজ শেষ হবে আগামী বছর জুনের মধ্যে।’

back to top