নির্ধারিত সময়ে শেষ হচ্ছে না ধর্ষণ মামলার বিচার : অভিযোগ জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ এর ধারা ২০(৩)-এ বলা হয়েছে, বিচারের জন্য ধর্ষণ মামলা প্রাপ্তির তারিখ থেকে ১৮০ দিনের মধ্যে ট্রাইব্যুনালকে কাজ শেষ করতে হবে। আইনে এমন বাধ্যবাধকতা থাকলেও বাস্তবে তা কার্যকর হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছে জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম।
শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম এমন অভিযোগ তুলে জাতীয় কন্যাশিশু দিবস উপলক্ষে ‘কন্যাশিশু পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন-২০২২’ উপস্থাপন করে।
২০২২ সালের প্রথম ৮ মাসে দেশের ২৪টি জাতীয়, স্থানীয় ও অনলাইন সংবাদমাধ্যম থেকে কন্যাশিশুদের প্রতি নির্যাতনের তথ্য সংগ্রহ করে এ ফোরাম। তবে বাল্যবিয়ে সংক্রান্ত তথ্য তারা মাঠপর্যায় থেকে নিয়েছে বলে জানায়।
জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত ৫৭৪ জন কন্যাশিশু ধর্ষণের শিকার হয়। এর মধ্যে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার ৮৪ জন ও ৪৩ জন প্রতিবন্ধী কন্যাশিশু ধর্ষণের শিকার হয়। জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম বলেছে, ধর্ষণের ঘটনার পর আইনি পদক্ষেপ নেয়া হলেও অনেকেই জামিনে মুক্ত হয়ে ভুক্তভোগীর পরিবারকে ভয়ভীতি দেখায়। চূড়ান্ত শাস্তির কোন তথ্য পাওয়া যায় না।
এ বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত দেশের ২৮টি জেলায় ২ হাজার ৩০১ জন কন্যাশিশু বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে। সে হিসাবে প্রতি মাসে ২৮৮ কন্যাশিশুর বাল্যবিয়ে হয়েছে। এ সময় ৫৮৯টি বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ করা হয়েছে।
গৃহশ্রমিক নির্যাতনের তথ্য তুলে ধরে এই ফোরাম বলে, প্রথম ৮ মাসে ১৫টি নির্যাতনের ঘটনা ঘটে এবং ২ জন হত্যার শিকার ও একজন আত্মহত্যা করে। এছাড়া মাঠপর্যায়ে ১৮ থেকে ৩০ বছর বয়সীদের ফোকাসড গ্রুপ আলোচনার তথ্য তুলে ধরে বলা হয়, দিনে ৩০ থেকে ৩৫ জন নারী সাইবার বুলিংয়ের শিকার।
জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের কিছু উল্লেখযোগ্য সুপারিশ দেয়। সুপারিশগুলো হলো- শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ ও হত্যার মতো ঘটনাকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে দ্রুত বিচার করা, অভিযুক্ত ব্যক্তিকেই অভিযোগ প্রমাণের দায়, কন্যাশিশু নির্যাতনকারীদের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক প্রশ্রয় বন্ধ করা, শিশুদের জন্য আলাদা অধিদপ্তর, বাল্যবিয়ে বন্ধে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নজরদারি বৃদ্ধি, সাইবার সচেতনতা বাড়ানো, আইনের সঠিক ও কঠোর প্রয়োগ।
জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সাধারণ সম্পাদক নাছিমা আক্তার অনুষ্ঠানে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন। সেখানে বলা হয়, প্রথম ৮ মাসে ৭৬ কন্যাশিশু যৌন হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার হয়। এর বেশিরভাগই রাস্তায়, নিজ বাসায় ও স্বজনদের দ্বারা নির্যাতনের শিকার। এ সময় পর্নোগ্রাফির শিকার ১৫ জন, অ্যাসিড সন্ত্রাসের শিকার ৩ জন, অপহরণ ও পাচারের শিকার ১৩৬ জন, হত্যার শিকার ১৮৬ জন, যৌতুকের কারণে নির্যাতনের শিকার ১৩ জন এবং হত্যা করা হয়েছে ৫ জনকে, আত্মহত্যা করেছে ১৮১ জন ও ৮ কন্যাশিশুকে বিভিন্ন স্থানে ফেলে যাওয়া হয়।
জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সভাপতি বদিউল আলম মজুমদার বলেন, কন্যাশিশু নির্যাতন ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। এর প্রতিরোধ প্রয়োজন। তিনি বলেন, নারীর প্রতি সুরক্ষা জন্মকাল থেকেই নিশ্চিত করতে হবে। কন্যাশিশুদের প্রতি বিশেষ নজর দেয়া প্রয়োজন। তাদের জন্য সুন্দর ভবিষ্যৎ সৃষ্টি করতে পারলে সবার জন্যই সুন্দর ভবিষ্যৎ তৈরি হবে।
অনুষ্ঠানে এডুকো বাংলাদেশ, গুডনেইবারস বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ওয়াউডব্লিউসিএর প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
নির্ধারিত সময়ে শেষ হচ্ছে না ধর্ষণ মামলার বিচার : অভিযোগ জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের
শুক্রবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ এর ধারা ২০(৩)-এ বলা হয়েছে, বিচারের জন্য ধর্ষণ মামলা প্রাপ্তির তারিখ থেকে ১৮০ দিনের মধ্যে ট্রাইব্যুনালকে কাজ শেষ করতে হবে। আইনে এমন বাধ্যবাধকতা থাকলেও বাস্তবে তা কার্যকর হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছে জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম।
শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম এমন অভিযোগ তুলে জাতীয় কন্যাশিশু দিবস উপলক্ষে ‘কন্যাশিশু পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন-২০২২’ উপস্থাপন করে।
২০২২ সালের প্রথম ৮ মাসে দেশের ২৪টি জাতীয়, স্থানীয় ও অনলাইন সংবাদমাধ্যম থেকে কন্যাশিশুদের প্রতি নির্যাতনের তথ্য সংগ্রহ করে এ ফোরাম। তবে বাল্যবিয়ে সংক্রান্ত তথ্য তারা মাঠপর্যায় থেকে নিয়েছে বলে জানায়।
জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত ৫৭৪ জন কন্যাশিশু ধর্ষণের শিকার হয়। এর মধ্যে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার ৮৪ জন ও ৪৩ জন প্রতিবন্ধী কন্যাশিশু ধর্ষণের শিকার হয়। জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম বলেছে, ধর্ষণের ঘটনার পর আইনি পদক্ষেপ নেয়া হলেও অনেকেই জামিনে মুক্ত হয়ে ভুক্তভোগীর পরিবারকে ভয়ভীতি দেখায়। চূড়ান্ত শাস্তির কোন তথ্য পাওয়া যায় না।
এ বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত দেশের ২৮টি জেলায় ২ হাজার ৩০১ জন কন্যাশিশু বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে। সে হিসাবে প্রতি মাসে ২৮৮ কন্যাশিশুর বাল্যবিয়ে হয়েছে। এ সময় ৫৮৯টি বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ করা হয়েছে।
গৃহশ্রমিক নির্যাতনের তথ্য তুলে ধরে এই ফোরাম বলে, প্রথম ৮ মাসে ১৫টি নির্যাতনের ঘটনা ঘটে এবং ২ জন হত্যার শিকার ও একজন আত্মহত্যা করে। এছাড়া মাঠপর্যায়ে ১৮ থেকে ৩০ বছর বয়সীদের ফোকাসড গ্রুপ আলোচনার তথ্য তুলে ধরে বলা হয়, দিনে ৩০ থেকে ৩৫ জন নারী সাইবার বুলিংয়ের শিকার।
জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের কিছু উল্লেখযোগ্য সুপারিশ দেয়। সুপারিশগুলো হলো- শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ ও হত্যার মতো ঘটনাকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে দ্রুত বিচার করা, অভিযুক্ত ব্যক্তিকেই অভিযোগ প্রমাণের দায়, কন্যাশিশু নির্যাতনকারীদের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক প্রশ্রয় বন্ধ করা, শিশুদের জন্য আলাদা অধিদপ্তর, বাল্যবিয়ে বন্ধে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নজরদারি বৃদ্ধি, সাইবার সচেতনতা বাড়ানো, আইনের সঠিক ও কঠোর প্রয়োগ।
জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সাধারণ সম্পাদক নাছিমা আক্তার অনুষ্ঠানে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন। সেখানে বলা হয়, প্রথম ৮ মাসে ৭৬ কন্যাশিশু যৌন হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার হয়। এর বেশিরভাগই রাস্তায়, নিজ বাসায় ও স্বজনদের দ্বারা নির্যাতনের শিকার। এ সময় পর্নোগ্রাফির শিকার ১৫ জন, অ্যাসিড সন্ত্রাসের শিকার ৩ জন, অপহরণ ও পাচারের শিকার ১৩৬ জন, হত্যার শিকার ১৮৬ জন, যৌতুকের কারণে নির্যাতনের শিকার ১৩ জন এবং হত্যা করা হয়েছে ৫ জনকে, আত্মহত্যা করেছে ১৮১ জন ও ৮ কন্যাশিশুকে বিভিন্ন স্থানে ফেলে যাওয়া হয়।
জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সভাপতি বদিউল আলম মজুমদার বলেন, কন্যাশিশু নির্যাতন ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। এর প্রতিরোধ প্রয়োজন। তিনি বলেন, নারীর প্রতি সুরক্ষা জন্মকাল থেকেই নিশ্চিত করতে হবে। কন্যাশিশুদের প্রতি বিশেষ নজর দেয়া প্রয়োজন। তাদের জন্য সুন্দর ভবিষ্যৎ সৃষ্টি করতে পারলে সবার জন্যই সুন্দর ভবিষ্যৎ তৈরি হবে।
অনুষ্ঠানে এডুকো বাংলাদেশ, গুডনেইবারস বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ওয়াউডব্লিউসিএর প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।