বোধনের মধ্য দিয়ে আজ সন্ধ্যায় শুরু হচ্ছে দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা। চারদিকে উৎসবের আমেজ। মন্দির-ম-পে আয়োজক ও কারিগরদের যেনো দম ফেলারও সময় নেই।
পঞ্জিকা অনুযায়ী, আজ ষষ্ঠী। তিথি আজ সায়ংকালে (সন্ধ্যায়) অনুষ্ঠিত হবে দেবী দুর্গার বোধন, আমন্ত্রণ ও অধিবাস। মন্দির ও ম-পে স্থাপন করা হবে বোধনের ঘট। ভক্তের ভক্তি, নিষ্ঠা আর পূজার আনুষ্ঠানিকতায় মাতৃরূপে দেবী দুর্গা অধিষ্ঠিত হবেন ম-পে ম-পে। ২ অক্টোবর সপ্তমী, ৩ অক্টোবর অষ্টমী, ৪ অক্টোবর নবমী এবং ৫ অক্টোবর বিজয়া দশমী। গতকাল বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন কমিটির নেতারা বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে রাজধানীসহ সারাদেশের ম-পগুলোতে যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার পূজাম-পগুলো ঘুরে দেখা গেছে, মঞ্চ তৈরি ও প্রতিমাকে কাপড় পরানোর কাজ প্রায় শেষ। কোথাও কোথাও প্রতিমাকে সাজিয়ে তোলার কাজও চলছে। মন্দিরের চারপাশও সাজানো হয়েছে বাহারি নকশায়। মন্দিরের প্রধান ফটকসহ অন্য জায়গাগুলোও বর্ণিল হয়ে উঠেছে।
সারাদেশে এবার ৩ হাজার ২৬৮টি ম-পে দুর্গাপূজা উদ্যাপিত হবে। এর মধ্যে রাজধানীতে ২৪২টি ম-প রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির, রামকৃষ্ণ মন্দির, ধানমন্ডি পূজাম-প ও বনানী সার্বজনীন পূজাম-পকে বিশেষ হিসেবে শ্রেণীভুক্ত করা হয়েছে। ঢাকার বৃহত্তর মন্দির হলো সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দির, রমনা কালীমন্দির, উত্তরা সার্বজনীন পূজাম-প, বসুন্ধরা সার্বজনীন পূজাম-প এবং কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটের পূজাম-প। এছাড়া ২ তারকা চিহ্নিত ৮৬টি পূজাম-প, এক তারকাবিশিষ্ট ৭৭টি এবং সাধারণ শ্রেণীর ৬১টি পূজাম-প রয়েছে।
পূজা উদ্যাপনকে ঘিরে সরকারের নেয়া পদক্ষেপে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি জেএল ভৌমিক বলেন, ঢাকাসহ সারাদেশের পূজা প-পগুলোতে প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি এরইমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। ষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে, আর ৫ অক্টোবর বুধবার বিসর্জনের মধ্যে শেষ হবে। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে এবারের পূজা উদ্যাপনের আশা করছি আমরা।
গতকাল আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে মতবিনিময় সভা করে পূজা উদ্যাপন কমিটির নেতারা। সেখানে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সতর্কভাবে মন্দিরে ও ম-প পাহারা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শফিকুল ইসলাম বলেন, যেকোন পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য পূজাম-পে আমাদের কন্ট্রোল রুমসহ সব জায়গায় আলাদা ফোর্স মোতায়েন থাকবে। পূজায় কোন ধরনের নাশকতা যাতে না ঘটে সেই বিষয়ে খেয়াল রেখে আমরা কাজ করছি। তারপরও কোথাও হামলা হলে সেটি মোকাবিলার জন্য আমাদের যথেষ্ট প্রস্তুতি রয়েছে। যেসব পুণ্যার্থী আসবেন তাদের তল্লাশিসহ যেসব জিনিস নিয়ে মন্দিরে প্রবেশ নিষেধ তারা যেন সেগুলো নিয়ে প্রবেশ করতে না পারে, এ বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্তরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
পূজায় এসে নারীদের শ্লীলতাহানি কিংবা মাদক নিয়ে নাচানাচি প্রতিরোধ করাসহ সারা শহরে ট্রাফিকে বিশেষ ব্যবস্থাপনা থাকবে বলেও জানান ডিএমপি কমিশনার। এছাড়া বিসর্জনের দিন নির্দিষ্ট রুট ব্যবহার করে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দেবীকে নিয়ে ভক্তরা বিসর্জনস্থলে পৌঁছাবে। সুশৃঙ্খলভাবে বিসর্জন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
দুর্গা শব্দের অর্থ হলো ব্যুহ বা আবদ্ধ স্থান। যা কিছু দুঃখ কষ্ট মানুষকে আবদ্ধ করে, যেমন বাধাবিঘœ, ভয়, দুঃখ, শোক, জ্বালা, যন্ত্রণা এসব থেকে তিনি ভক্তকে রক্ষা করেন। শাস্ত্রকাররা দুর্গার নামের অন্য একটি অর্থ করেছেন। দুঃখের দ্বারা যাকে লাভ করা যায় তিনিই দুর্গা। দেবী দুঃখ দিয়ে মানুষের সহ্যক্ষমতা পরীক্ষা করেন। তখন মানুষ অস্থির না হয়ে তাকে ডাকলেই তিনি তার কষ্ট দূর করেন।
দুর্গাপূজা উপলক্ষে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের প্রতিটি পূজাম-পের নিরাপত্তা রক্ষায় পুলিশ, আনসার, বিজিবি, র্যাবসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। পুলিশ ও র্যাবের পাশাপাশি প্রায় প্রতিটি ম-পে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী দায়িত্ব পালন করবে। ঢাকেশ্বরী মন্দির মেলাঙ্গনে মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির উদ্যোগে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে।
দেবী দুর্গা এবার মর্ত্যলোকে আসবেন গজে (হাতি) চড়ে। এর ফল হচ্ছে শষ্যপূর্ণ বসুন্ধরা। আর দেবী সপরিবারে স্বর্গালোকে বিদায় নেবেন নৌকায় চড়ে। যার ফল হচ্ছে বন্যা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। যাওয়ার লক্ষণ শুভ না হলেও ভক্তের বিশ^াস, দেবী মঙ্গলময়ী। তিনি জগতের মঙ্গলই করবেন। সন্তানদের আশীষ দেবেন দু’হাত ভরে।
শনিবার, ০১ অক্টোবর ২০২২
বোধনের মধ্য দিয়ে আজ সন্ধ্যায় শুরু হচ্ছে দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা। চারদিকে উৎসবের আমেজ। মন্দির-ম-পে আয়োজক ও কারিগরদের যেনো দম ফেলারও সময় নেই।
পঞ্জিকা অনুযায়ী, আজ ষষ্ঠী। তিথি আজ সায়ংকালে (সন্ধ্যায়) অনুষ্ঠিত হবে দেবী দুর্গার বোধন, আমন্ত্রণ ও অধিবাস। মন্দির ও ম-পে স্থাপন করা হবে বোধনের ঘট। ভক্তের ভক্তি, নিষ্ঠা আর পূজার আনুষ্ঠানিকতায় মাতৃরূপে দেবী দুর্গা অধিষ্ঠিত হবেন ম-পে ম-পে। ২ অক্টোবর সপ্তমী, ৩ অক্টোবর অষ্টমী, ৪ অক্টোবর নবমী এবং ৫ অক্টোবর বিজয়া দশমী। গতকাল বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন কমিটির নেতারা বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে রাজধানীসহ সারাদেশের ম-পগুলোতে যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার পূজাম-পগুলো ঘুরে দেখা গেছে, মঞ্চ তৈরি ও প্রতিমাকে কাপড় পরানোর কাজ প্রায় শেষ। কোথাও কোথাও প্রতিমাকে সাজিয়ে তোলার কাজও চলছে। মন্দিরের চারপাশও সাজানো হয়েছে বাহারি নকশায়। মন্দিরের প্রধান ফটকসহ অন্য জায়গাগুলোও বর্ণিল হয়ে উঠেছে।
সারাদেশে এবার ৩ হাজার ২৬৮টি ম-পে দুর্গাপূজা উদ্যাপিত হবে। এর মধ্যে রাজধানীতে ২৪২টি ম-প রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির, রামকৃষ্ণ মন্দির, ধানমন্ডি পূজাম-প ও বনানী সার্বজনীন পূজাম-পকে বিশেষ হিসেবে শ্রেণীভুক্ত করা হয়েছে। ঢাকার বৃহত্তর মন্দির হলো সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দির, রমনা কালীমন্দির, উত্তরা সার্বজনীন পূজাম-প, বসুন্ধরা সার্বজনীন পূজাম-প এবং কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটের পূজাম-প। এছাড়া ২ তারকা চিহ্নিত ৮৬টি পূজাম-প, এক তারকাবিশিষ্ট ৭৭টি এবং সাধারণ শ্রেণীর ৬১টি পূজাম-প রয়েছে।
পূজা উদ্যাপনকে ঘিরে সরকারের নেয়া পদক্ষেপে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি জেএল ভৌমিক বলেন, ঢাকাসহ সারাদেশের পূজা প-পগুলোতে প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি এরইমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। ষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে, আর ৫ অক্টোবর বুধবার বিসর্জনের মধ্যে শেষ হবে। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে এবারের পূজা উদ্যাপনের আশা করছি আমরা।
গতকাল আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে মতবিনিময় সভা করে পূজা উদ্যাপন কমিটির নেতারা। সেখানে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সতর্কভাবে মন্দিরে ও ম-প পাহারা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শফিকুল ইসলাম বলেন, যেকোন পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য পূজাম-পে আমাদের কন্ট্রোল রুমসহ সব জায়গায় আলাদা ফোর্স মোতায়েন থাকবে। পূজায় কোন ধরনের নাশকতা যাতে না ঘটে সেই বিষয়ে খেয়াল রেখে আমরা কাজ করছি। তারপরও কোথাও হামলা হলে সেটি মোকাবিলার জন্য আমাদের যথেষ্ট প্রস্তুতি রয়েছে। যেসব পুণ্যার্থী আসবেন তাদের তল্লাশিসহ যেসব জিনিস নিয়ে মন্দিরে প্রবেশ নিষেধ তারা যেন সেগুলো নিয়ে প্রবেশ করতে না পারে, এ বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্তরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
পূজায় এসে নারীদের শ্লীলতাহানি কিংবা মাদক নিয়ে নাচানাচি প্রতিরোধ করাসহ সারা শহরে ট্রাফিকে বিশেষ ব্যবস্থাপনা থাকবে বলেও জানান ডিএমপি কমিশনার। এছাড়া বিসর্জনের দিন নির্দিষ্ট রুট ব্যবহার করে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দেবীকে নিয়ে ভক্তরা বিসর্জনস্থলে পৌঁছাবে। সুশৃঙ্খলভাবে বিসর্জন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
দুর্গা শব্দের অর্থ হলো ব্যুহ বা আবদ্ধ স্থান। যা কিছু দুঃখ কষ্ট মানুষকে আবদ্ধ করে, যেমন বাধাবিঘœ, ভয়, দুঃখ, শোক, জ্বালা, যন্ত্রণা এসব থেকে তিনি ভক্তকে রক্ষা করেন। শাস্ত্রকাররা দুর্গার নামের অন্য একটি অর্থ করেছেন। দুঃখের দ্বারা যাকে লাভ করা যায় তিনিই দুর্গা। দেবী দুঃখ দিয়ে মানুষের সহ্যক্ষমতা পরীক্ষা করেন। তখন মানুষ অস্থির না হয়ে তাকে ডাকলেই তিনি তার কষ্ট দূর করেন।
দুর্গাপূজা উপলক্ষে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের প্রতিটি পূজাম-পের নিরাপত্তা রক্ষায় পুলিশ, আনসার, বিজিবি, র্যাবসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। পুলিশ ও র্যাবের পাশাপাশি প্রায় প্রতিটি ম-পে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী দায়িত্ব পালন করবে। ঢাকেশ্বরী মন্দির মেলাঙ্গনে মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির উদ্যোগে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে।
দেবী দুর্গা এবার মর্ত্যলোকে আসবেন গজে (হাতি) চড়ে। এর ফল হচ্ছে শষ্যপূর্ণ বসুন্ধরা। আর দেবী সপরিবারে স্বর্গালোকে বিদায় নেবেন নৌকায় চড়ে। যার ফল হচ্ছে বন্যা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। যাওয়ার লক্ষণ শুভ না হলেও ভক্তের বিশ^াস, দেবী মঙ্গলময়ী। তিনি জগতের মঙ্গলই করবেন। সন্তানদের আশীষ দেবেন দু’হাত ভরে।