এ বছর লাভ ৬ কোটি ৭২ লাখ টাকা
টেলিযোগাযোগ কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল) পনেরো বছর একটানা লোকসান দিয়েছে। অবশেষে লাভের মুখ দেখলো। এ বছর প্রতিষ্ঠানটির লাভ হয়েছে ৬ কোটি ৭২ লাখ টাকা।
প্রতিষ্ঠানটিকে আরও লাভজনক করতে বিটিসিএল কর্তৃপক্ষ নানা উদ্যোগ নিয়েছে। বিটিসিসিএলের ইস্কাটনস্থ প্রধান কার্যালয় থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত বিটিসিএলের ওয়াইফাই ইন্টারনেট সেবাসহ অন্যান্য সুবিধা গ্রাহকদেরকে পৌঁছে দিতে প্রকল্প হাতে নিয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, আগে গ্রাহকরা বিটিসিএলের ডিভিশন অফিসগুলোতে গিয়ে টেলিফোন সংযোগের জন্য নানাভাবে তদবির করেছেন। আর হয়রানি ও বাজে আচরণের শিকার হয়েছেন। এখন বিটিসিএল কর্তৃপক্ষ উল্টো গ্রাহক ধরে রাখতে ও নতুন গ্রাহক সৃষ্টি করতে নিজেরাই গ্রাহক খুঁজছেন ও প্রচারণা চালাচ্ছেন। যার কারণে বিটিসিএল প্রতিষ্ঠানটি লোকসান কাটিয়ে লাভের মুখ দেখছে বলে গ্রাহকরা মন্তব্য করেন।
বিটিসিএল থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, ২০০৭-২০০৮ অর্থবছরে বিটিসিএলের লোকসান ছিল প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা। এর আগে লোকসানের পরিমাণ ছিল ৫শ কোটি টাকা। সর্বশেষ ২০২০-২০২১ অর্থবছরে বিটিসিএলের লোকসান হয়েছে ২৪৭ কোটি টাকা। অবশেষে প্রতিষ্ঠানটি ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছে। যার জন্য ২০২১- ২০২২ অর্থবছরে ৬ কোটি ৭২ লাখ লাভ করতে সক্ষম হয়েছেন।
সম্প্রতি টেলিযোগাযোগ ভবনে বার্ষিক সাধারণ সভায় ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তফা জব্বার এই তথ্য জানিয়েছেন।
বিটিসিএলের বোর্ড চেয়ারম্যান ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব মো. খলিলুর রহমান এবং বিটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. রফিকুল মতিনসহ বোর্ডের অন্য সদস্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
বিটিসিএল অফিস থেকে জানানো হয়েছে, বিটিসিএলকে প্রতিযোগিতার জায়গায় আনতে নতুন নতুন প্রযুক্তি হাতে নেয়া হয়েছে। তা কাজে লাগিয়ে বিটিসিএল আজ ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
বিটিসিএল বাণিজ্যের চেয়েও জনগণের জন্য আধুনিক সেবার মান আরও উন্নত করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। চলতি অর্থবছর বিটিসিএল লাভও করছে আবার সেবাও দিচ্ছে। লাভের অঙ্ক ধরে রাখতে নতুন নতুন প্রকল্প হাতে নেয়া হচ্ছে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, স্বাধীনতার পর বেসরকারি খাত বলতে কিছুই ছিল না। এমনকি প্রতিষ্ঠান বলতেও কিছুই ছিল না। পর্যায়ক্রমে শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠতে থাকে। আর রাষ্ট্রায়াত্ত সেবা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠে। আজ শিল্প বাণিজ্যসহ সব ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।
করোনা ভাইরাসের সময় প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা, ৫৮৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক সেবা দেয়া হয়েছে। এভাবে আস্তে আস্তে বিটিসিএল লাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নতুন প্রযুক্তি গ্রহণ ও বাস্তবায়নের কারণে যে প্রতিষ্ঠানটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে, তার পেছনে অনেকগুলো বিষয় জড়িত। আগামী ২০২৩ সালে বিটিসিএল লাভজনক রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।
অন্যদিকে ভুক্তভোগী গ্রাহকদের অভিযোগ, এক সময়ে বিটিসিএলের টেলিফোনসহ অন্যান্য সেবা পাওয়া সোনার হরিণ ছিল। বিটিসিএলের কিছু অসাধু কর্মকর্তার গাফিলতির কারণে গ্রাহকরা পদে পদে ভোগান্তির শিকার হয়েছেন। টেলিফোন সংযোগ আনতে গেলে ডিমান্ড নোট থেকে সংযোগ লাগানো পর্যন্ত পদে পদে হয়রানি ছিল।
ক্যাম্প ইনচার্জ ও লাইনম্যান, ডিভিশনার অফিসগুলোতে বাজে আচরণ করত। এরপরও মানুষ নানাভাবে তদবির করে টেলিফোন সংযোগ পাওয়ার চেষ্টা করেছে।
বর্তমানে তথ্যপ্রযুক্তি ও মোবাইল ফোনের যুগে বিটিসিএল (টিএন্ডটি ফোন) এখন আর ঘরে থাকলেও অনেকেই ব্যবহার করতে চায় না। আবার অনেকেই টেলিফোন লাইন হস্তান্তর করেছেন। এ কারণে টিএন্ডটি ফোনের চাহিদা যেমন কমছে, তেমনি লাইনম্যানদের এখন আর চাহিদা নেই। ফোন নষ্ট হয়ে থাকলেও কেউ অভিযোগও করে না। এরপর বিটিসিএলের বর্তমান প্রশাসক টেলিফোন সংযোগকে নতুন করে জনপ্রিয় করতে নানাভাবে প্রচারণা চালাচ্ছেন। যার কারণে সেবার মান আগের থেকে বাড়ছে। এখন ম্যাসেজ পাঠিয়ে অভিযোগ করলে ফোন সচল হয়ে যায়। আবার নতুন নতুন এলাকায় ফোন চালু করতে উদ্যোগ নিয়েছে। সম্প্রতি উত্তরা একটি মেলার আয়োজন করা হয়েছে। সেখান থেকে অনেকেই বাসা বাড়িতে ফোন নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
সূত্র মতে, বিটিসিএলের ইন্টারনেট সেবা, ওয়াইফাইসহ অন্যান্য প্রযুক্তিগত সেবার মান আরও বাড়ানো হয়েছে। দেশের ইউনিয়ন ও গ্রাম পর্যায়ে ইন্টারনেট সেবার আওতায় আনা হচ্ছে। এমনকি জেলা ও উপজেলায় টেলিফোনসহ বিটিসিএলের সব সেবা পৌঁছে দিতে কাজ করছেন।
বিটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. রফিকুল মতিন সম্প্রতি তার কার্যালয়ে সংবাদকে জানিয়েছেন, দেশের ১২শ’র বেশি ইউনিয়ন ওয়াইফাই হটস্পট ইন্টারনেট সুবিধার আওতায় আনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এর ফলে গ্রামগঞ্জের মানুষ সহজে আধুনিক সুবিধা ভোগ করতে পারবে। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এই প্রক্রিয়া চালু করা হবে। এভাবে নতুন নতুন প্রকল্পের মাধ্যমে বিটিসিএলকে লাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে নিরলসভাবে কাজ করছেন।
এ বছর লাভ ৬ কোটি ৭২ লাখ টাকা
শনিবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২২
টেলিযোগাযোগ কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল) পনেরো বছর একটানা লোকসান দিয়েছে। অবশেষে লাভের মুখ দেখলো। এ বছর প্রতিষ্ঠানটির লাভ হয়েছে ৬ কোটি ৭২ লাখ টাকা।
প্রতিষ্ঠানটিকে আরও লাভজনক করতে বিটিসিএল কর্তৃপক্ষ নানা উদ্যোগ নিয়েছে। বিটিসিসিএলের ইস্কাটনস্থ প্রধান কার্যালয় থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত বিটিসিএলের ওয়াইফাই ইন্টারনেট সেবাসহ অন্যান্য সুবিধা গ্রাহকদেরকে পৌঁছে দিতে প্রকল্প হাতে নিয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, আগে গ্রাহকরা বিটিসিএলের ডিভিশন অফিসগুলোতে গিয়ে টেলিফোন সংযোগের জন্য নানাভাবে তদবির করেছেন। আর হয়রানি ও বাজে আচরণের শিকার হয়েছেন। এখন বিটিসিএল কর্তৃপক্ষ উল্টো গ্রাহক ধরে রাখতে ও নতুন গ্রাহক সৃষ্টি করতে নিজেরাই গ্রাহক খুঁজছেন ও প্রচারণা চালাচ্ছেন। যার কারণে বিটিসিএল প্রতিষ্ঠানটি লোকসান কাটিয়ে লাভের মুখ দেখছে বলে গ্রাহকরা মন্তব্য করেন।
বিটিসিএল থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, ২০০৭-২০০৮ অর্থবছরে বিটিসিএলের লোকসান ছিল প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা। এর আগে লোকসানের পরিমাণ ছিল ৫শ কোটি টাকা। সর্বশেষ ২০২০-২০২১ অর্থবছরে বিটিসিএলের লোকসান হয়েছে ২৪৭ কোটি টাকা। অবশেষে প্রতিষ্ঠানটি ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছে। যার জন্য ২০২১- ২০২২ অর্থবছরে ৬ কোটি ৭২ লাখ লাভ করতে সক্ষম হয়েছেন।
সম্প্রতি টেলিযোগাযোগ ভবনে বার্ষিক সাধারণ সভায় ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তফা জব্বার এই তথ্য জানিয়েছেন।
বিটিসিএলের বোর্ড চেয়ারম্যান ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব মো. খলিলুর রহমান এবং বিটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. রফিকুল মতিনসহ বোর্ডের অন্য সদস্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
বিটিসিএল অফিস থেকে জানানো হয়েছে, বিটিসিএলকে প্রতিযোগিতার জায়গায় আনতে নতুন নতুন প্রযুক্তি হাতে নেয়া হয়েছে। তা কাজে লাগিয়ে বিটিসিএল আজ ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
বিটিসিএল বাণিজ্যের চেয়েও জনগণের জন্য আধুনিক সেবার মান আরও উন্নত করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। চলতি অর্থবছর বিটিসিএল লাভও করছে আবার সেবাও দিচ্ছে। লাভের অঙ্ক ধরে রাখতে নতুন নতুন প্রকল্প হাতে নেয়া হচ্ছে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, স্বাধীনতার পর বেসরকারি খাত বলতে কিছুই ছিল না। এমনকি প্রতিষ্ঠান বলতেও কিছুই ছিল না। পর্যায়ক্রমে শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠতে থাকে। আর রাষ্ট্রায়াত্ত সেবা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠে। আজ শিল্প বাণিজ্যসহ সব ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।
করোনা ভাইরাসের সময় প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা, ৫৮৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক সেবা দেয়া হয়েছে। এভাবে আস্তে আস্তে বিটিসিএল লাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নতুন প্রযুক্তি গ্রহণ ও বাস্তবায়নের কারণে যে প্রতিষ্ঠানটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে, তার পেছনে অনেকগুলো বিষয় জড়িত। আগামী ২০২৩ সালে বিটিসিএল লাভজনক রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।
অন্যদিকে ভুক্তভোগী গ্রাহকদের অভিযোগ, এক সময়ে বিটিসিএলের টেলিফোনসহ অন্যান্য সেবা পাওয়া সোনার হরিণ ছিল। বিটিসিএলের কিছু অসাধু কর্মকর্তার গাফিলতির কারণে গ্রাহকরা পদে পদে ভোগান্তির শিকার হয়েছেন। টেলিফোন সংযোগ আনতে গেলে ডিমান্ড নোট থেকে সংযোগ লাগানো পর্যন্ত পদে পদে হয়রানি ছিল।
ক্যাম্প ইনচার্জ ও লাইনম্যান, ডিভিশনার অফিসগুলোতে বাজে আচরণ করত। এরপরও মানুষ নানাভাবে তদবির করে টেলিফোন সংযোগ পাওয়ার চেষ্টা করেছে।
বর্তমানে তথ্যপ্রযুক্তি ও মোবাইল ফোনের যুগে বিটিসিএল (টিএন্ডটি ফোন) এখন আর ঘরে থাকলেও অনেকেই ব্যবহার করতে চায় না। আবার অনেকেই টেলিফোন লাইন হস্তান্তর করেছেন। এ কারণে টিএন্ডটি ফোনের চাহিদা যেমন কমছে, তেমনি লাইনম্যানদের এখন আর চাহিদা নেই। ফোন নষ্ট হয়ে থাকলেও কেউ অভিযোগও করে না। এরপর বিটিসিএলের বর্তমান প্রশাসক টেলিফোন সংযোগকে নতুন করে জনপ্রিয় করতে নানাভাবে প্রচারণা চালাচ্ছেন। যার কারণে সেবার মান আগের থেকে বাড়ছে। এখন ম্যাসেজ পাঠিয়ে অভিযোগ করলে ফোন সচল হয়ে যায়। আবার নতুন নতুন এলাকায় ফোন চালু করতে উদ্যোগ নিয়েছে। সম্প্রতি উত্তরা একটি মেলার আয়োজন করা হয়েছে। সেখান থেকে অনেকেই বাসা বাড়িতে ফোন নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
সূত্র মতে, বিটিসিএলের ইন্টারনেট সেবা, ওয়াইফাইসহ অন্যান্য প্রযুক্তিগত সেবার মান আরও বাড়ানো হয়েছে। দেশের ইউনিয়ন ও গ্রাম পর্যায়ে ইন্টারনেট সেবার আওতায় আনা হচ্ছে। এমনকি জেলা ও উপজেলায় টেলিফোনসহ বিটিসিএলের সব সেবা পৌঁছে দিতে কাজ করছেন।
বিটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. রফিকুল মতিন সম্প্রতি তার কার্যালয়ে সংবাদকে জানিয়েছেন, দেশের ১২শ’র বেশি ইউনিয়ন ওয়াইফাই হটস্পট ইন্টারনেট সুবিধার আওতায় আনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এর ফলে গ্রামগঞ্জের মানুষ সহজে আধুনিক সুবিধা ভোগ করতে পারবে। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এই প্রক্রিয়া চালু করা হবে। এভাবে নতুন নতুন প্রকল্পের মাধ্যমে বিটিসিএলকে লাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে নিরলসভাবে কাজ করছেন।