alt

জাতীয়

জনগণ বিএনপি-জামায়াত জোটকে আর তাদের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে দেবে না : প্রধানমন্ত্রী

বাসস : রোববার, ১৯ মার্চ ২০২৩

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আওয়ামী লীগের সভায় প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য রাখেন

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের জনগণ কখনই বিএনপি-জামায়াত জোটকে আর ক্ষমতায় আসতে এবং তাদের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে দেবে না।

তিনি বলেন, ‘বোমাবাজি, গুলি, গ্রেনেড হামলাকারী, ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাকারবারি, মানুষের অর্থ আত্মসাৎকারী, এতিমের অর্থ আত্মসাৎকারী এরা কোনদিন এ দেশে ক্ষমতায় আসতে পারবে না। বাংলাদেশের মানুষ তাদের কখনো মেনে নেবে না।’

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা রোববার (১৯ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির ভাষণে এ কথা বলেন।

তার সরকার যে দেশের উন্নয়নে যে কাজগুলো করেছে সেগুলো ঘরে ঘরে মানুষের মাঝে তুলে ধরার জন্য তিনি দলের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান। কারণ, তারা (বিএনপি-জামায়াত) মানুষের কাছে বার বার মিথ্যা বলে সেই মিথ্যাটাকেই সত্য করতে চায়। কিন্তু তাদের আমলে মানুষ কি পেয়েছে খাবার জন্য হাহাকার, বিদ্যুৎ চাইতে গিয়ে গুলি খেয়ে মানুষ মারা গেছে, শ্রমিকরা ন্যায্য মজুরি চেয়েছিল বলে রমজান মাসে ২৭ জন শ্রমিককে গুলি করে হত্যা করেছিল খালেদা জিয়া, ১৮ জন কৃষক সার চেয়েছিল বলে তাদের হত্যা করেছিল।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের এগুলোই রেকর্ড, তারা এগুলোই করে গেছে। আর আজকে সারও কারো কাছে চাইতে হয় না। আমরা ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছি, মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছি। গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত সুপেয় পানি ও স্যানিটারি ল্যাট্রিনের ব্যবস্থা করেছি। কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে ৩০ প্রকারের ওষুধ দিচ্ছি, এখন থেকে কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে দরিদ্র ডায়বেটিস রোগীদের বিনামূল্যে ইনসুলিনও প্রদানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

তবে মানুষ ভালো থাকলে বিএনপি-জামায়াতিদের মনে কষ্ট হয় বলে তার মনে হয় উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, মনে রাখতে হবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এই মাটিতেই জন্মগ্রহণ করেছেন এবং তিনিই এই দেশ স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন। কাজেই, তার বাংলাদেশে কোন মানুষ অন্ন কষ্ট পাবে না, গৃহহীন থাকবে না, শিক্ষার আলো বঞ্চিত থাকবে না- প্রত্যেকটি মানুষের জীবন মান উন্নত হবে, বলেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, এই বাংলাদেশ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের বাংলাদেশ এবং তিনি যেভাবে চেয়েছিলেন তার বাংলাদেশ সেভাবেই বিশ^ দরবারে সম্মানের সঙ্গে মাথা উঁচু করে চলবে। জাতির পিতার জন্মদিনে এটাই আমাদের প্রতিজ্ঞা। এই প্রতিজ্ঞা নিয়েই আওয়ামী লীগ এবং এর প্রতিটি সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করতে হবে ।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সভায় প্রারম্ভিক বকক্তৃতা করেন।

দলের সভাপতিম-লীর সদস্য ও জাতীয় সংসদের উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন ও অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন সভায় বক্তৃতা করেন। আরও বক্তৃতা করেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নুরুল ইসলাম ঠা-ু, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য অধ্যাপক মেরিনা জাহান কবিতা, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর ও দক্ষিণের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান ও আবু আহমেদ মান্নাফী। দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ এবং উপপ্রচার সম্পাদক সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম সভাটি সঞ্চালনা করেন। বিএনপির অপপ্রচারের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, তারা ভাঙা রেকর্ডের মতো সম্পূর্ণ মিথ্যাচার করে অপপ্রচার চালিয়েই যাচ্ছে। এত মিথ্যা কথা তারা পায় কোথা থেকে? আমরা নাকি দেশের কোনই উন্নয়ন করিনি, সবকিছু ফোকলা ও ধ্বংস করে দিয়েছি! আমরা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছি। মেট্রোরেল করেছি, কর্ণফুলী টানেল নির্মাণ করছি। একদিনে একশ’ সেতু, একশ সড়ক নির্মাণ কোন সরকার করতে পেরেছে? এসব কি উন্নয়ন না। চোখ থাকতেও কেউ অন্ধ হয়ে থাকলে তাদের কিছুই চোখে পড়ে না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়ার আমলে দেশের বাজেট ছিল মাত্র ৬২ হাজার কোটি টাকা। আর আমরা ৬ লাখ কোটি টাকার ওপরে বাজেট দিয়েছি। দেশের উন্নয়ন না হলে এত বড় বাজেট কিভাবে দিলাম? গত ১৪ বছরে শিক্ষার হার ৭৫ ভাগে উন্নীত করেছি, ২ লাখ ৫৩ হাজার শিক্ষার্থীকে বৃত্তি-উপবৃত্তি দিচ্ছি, বিনামূল্যে শিক্ষার্থীদের বই দিচ্ছি। বাংলাদেশে কোন মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ছিল না, আমরাই প্রথম দেশে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় করেছি এবং আরও চারটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় করেছি। প্রত্যেক বিভাগেই আমরা একটি করে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় করবো। দেশের যদি উন্নতি না হয় তবে এসব আমরা করছি কিভাবে?

তিনি বলেন, বাংলাদেশ আজ ডিজিটাল বাংলাদেশ। সারাদেশে ইন্টারনেট, ওয়াইফাই হয়েছে। নিজস্ব স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের পর এখন দ্বিতীয় স্যাটেলাইট উৎক্ষেপনের প্রস্তুতি চলছে। আমরা দেশকে খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছি। এ কারণে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও মহামারীর কারণে সারাবিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দা ও খাদ্যাভাব দেখা দিলেও বাংলাদেশে কোন মানুষের খাদ্যের কোন অভাব আমরা হতে দেইনি। এসব কি উন্নয়ন নয়?

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই বিএনপিই আমরা যখন দেশকে খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণ করলাম, তখন বলেছিল এটা ভালো না বিদেশ থেকে খাদ্য সাহায্য পাওয়া যাবে না। আসলে তারা দেশকে ভিক্ষুকের জাতি ও ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চেয়েছিল। কারণ, তাদের নীতিই হচ্ছে দুর্নীতি, মানুষের অর্থ-সম্পদ লুটেপুটে খাওয়া।

’৭৫ পর থেকে ৯৬ পর্যন্ত এবং ২০০১ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ’৯৬-তে আমরা যা অর্জন করেছিলাম, ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে বিএনপি-জামায়াত শুধু তা ধ্বংসই করেনি, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ সারাদেশে নৃশংস হত্যাকা-, বাড়িঘর ভাঙচুর, নির্যাতন করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াত আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে অসংখ্য সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করেছে, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের অত্যাচার-নির্যাতন করেছে। কিন্তু এত অত্যাচার করেও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের তারা দমাতে পারেনি। আওয়ামী লীগকে কেউ নিঃশেষ করতে পারেনি। আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও চিন্তা-চেতনা নিয়ে এগিয়ে গেছে। যে দল মাটি ও মানুষ থেকে গড়ে ওঠে, তাকে উপড়ে ফেলা যায় না। তিনি বলেন, এ দেশের সংবিধানে যুদ্ধাপরাধীদের রাজনীতি করা নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে সংবিধান আংশিক সংশোধন করে নিয়ে মার্শাল ল’অর্ডিন্যান্স দিয়ে তাদের রাজনীতি করার সুযোগ করে দেয়। যারা যুদ্ধাপরাধী, যাদের বিচার শুরু হয়েছিল, তাদেরকেও জিয়াউর রহমান মুক্তি দিয়েছিল।

উৎপাদনে বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের তৃতীয় ইউনিট

ছবি

সাবেক মন্ত্রী মুজিবুল হকের বিছানায় বান্ডেল টাকার ছড়াছড়ি, ছবি ভাইরাল

ছবি

বাংলাদেশ ‘পুনর্গঠন, সংস্কারে’ সহযোগিতায় ‘আগ্রহী’ যুক্তরাষ্ট্র

ছবি

মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি পাওয়া ব্যক্তিদের তালিকা তৈরি হচ্ছে: উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম

বিমানবন্দর থেকে গাজীপুর-২ আসনের স্বতন্ত্র এমপি প্রার্থী আ:লীগ নেতা বুদ্দিন আটক

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় ভালুকায় রাজমিস্ত্রী তফাজ্জল হত্যার ঘটনায় শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদেরকে আসামী করে মামলার আবেদন

ছবি

মুক্তিযোদ্ধা কোটায় কতজন চাকরি হয়েছে তার তালিকা প্রস্তুত হচ্ছে: মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা

ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস

ছবি

ডেঙ্গুতে আরও ৪৮৬ জন হাসপাতালে ভর্তি, চট্টগ্রামে ১ জনের মৃত্যু

ছবি

মাজারে শান্তি বজায় রাখতে ডিসিদের ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ

ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অর্থনৈতিক সংস্কারে সহযোগিতা নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের আলোচনা

ছবি

দেশ পুনর্গঠনে মার্কিন সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা

ছবি

ছাত্রদের উপর অস্ত্র ও রাম দা নিয়ে গুলি,হামলা, ভিডিও ফুটেজ দেখে শনাক্ত

ছবি

পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চেয়েছেন মুহাম্মদ ইউনূস

ছবি

সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ ৫ দিনের রিমান্ডে

ছবি

অগ্রাধিকার খাতে ২০০ মিলিয়ন ডলার দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

ছবি

নিম্নচাপের প্রভাবে আজ সারাদিন বৃষ্টির পূর্বাভাস

ছবি

বিকেল থেকে কমতে পারে বৃষ্টি

ছবি

বাংলাদেশকে ২০২.২৫ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেবে যুক্তরাষ্ট্র

ছবি

পরিস্থিতির উন্নতি, খুলেছে আরও ২৯ পোশাক কারখানা

ছবি

বাংলাদেশকে ‘সহায়তা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’ যুক্তরাষ্ট্র : দুতাবাস

ছবি

সাংবাদিক ঊর্মি রহমান আর নেই

ছবি

সাবেক মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন গ্রেপ্তার, জানালো র‍্যাব

ছবি

পানিবন্দী ৩৪ লাখ, আশ্রয় কেন্দ্রে ৭০ হাজার মানুষ

ছবি

মাতারবাড়ি কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে সুখবর দিলেন জ্বালানি উপদেষ্টা

ছবি

বৈরী আবহাওয়া : ঢাকার সঙ্গে উপকূলীয় এলাকার লঞ্চ চলাচল বন্ধ

ছবি

গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে ভারি বৃষ্টি, রোববার থেকে কমার সম্ভাবনা

ছবি

সেই এপিবিএন সদস্য পুলিশ হেফাজতে

ছবি

ঢাকায় এসেছেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু

ছবি

মাজারে হামলার নিন্দা সরকারের, কঠোর পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি

ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল ঢাকায় , দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ওপর গুরুত্ব

ছবি

প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে নির্বাচন কমিশন নিয়োগ বাতিলের পরামর্শ

ছবি

মোটরসাইকেলে ঘুরতে গিয়ে প্রাণ গেলো স্ত্রীসহ সেনা সদস্যের

ছবি

ছাত্র আন্দোলনে নিহত ৮৭৫, আহত ৩০ হাজারের বেশি: এইচআরএসএস

ছবি

আজ ডোনাল্ড লুর নের্তৃত্বে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে মার্কিন প্রতিনিধিদল

রাজনীতি নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত ক্লাসে না ফেরার ঘোষণা ঢাবি শিক্ষার্থীদের

tab

জাতীয়

জনগণ বিএনপি-জামায়াত জোটকে আর তাদের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে দেবে না : প্রধানমন্ত্রী

বাসস

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আওয়ামী লীগের সভায় প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য রাখেন

রোববার, ১৯ মার্চ ২০২৩

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের জনগণ কখনই বিএনপি-জামায়াত জোটকে আর ক্ষমতায় আসতে এবং তাদের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে দেবে না।

তিনি বলেন, ‘বোমাবাজি, গুলি, গ্রেনেড হামলাকারী, ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাকারবারি, মানুষের অর্থ আত্মসাৎকারী, এতিমের অর্থ আত্মসাৎকারী এরা কোনদিন এ দেশে ক্ষমতায় আসতে পারবে না। বাংলাদেশের মানুষ তাদের কখনো মেনে নেবে না।’

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা রোববার (১৯ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির ভাষণে এ কথা বলেন।

তার সরকার যে দেশের উন্নয়নে যে কাজগুলো করেছে সেগুলো ঘরে ঘরে মানুষের মাঝে তুলে ধরার জন্য তিনি দলের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান। কারণ, তারা (বিএনপি-জামায়াত) মানুষের কাছে বার বার মিথ্যা বলে সেই মিথ্যাটাকেই সত্য করতে চায়। কিন্তু তাদের আমলে মানুষ কি পেয়েছে খাবার জন্য হাহাকার, বিদ্যুৎ চাইতে গিয়ে গুলি খেয়ে মানুষ মারা গেছে, শ্রমিকরা ন্যায্য মজুরি চেয়েছিল বলে রমজান মাসে ২৭ জন শ্রমিককে গুলি করে হত্যা করেছিল খালেদা জিয়া, ১৮ জন কৃষক সার চেয়েছিল বলে তাদের হত্যা করেছিল।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের এগুলোই রেকর্ড, তারা এগুলোই করে গেছে। আর আজকে সারও কারো কাছে চাইতে হয় না। আমরা ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছি, মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছি। গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত সুপেয় পানি ও স্যানিটারি ল্যাট্রিনের ব্যবস্থা করেছি। কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে ৩০ প্রকারের ওষুধ দিচ্ছি, এখন থেকে কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে দরিদ্র ডায়বেটিস রোগীদের বিনামূল্যে ইনসুলিনও প্রদানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

তবে মানুষ ভালো থাকলে বিএনপি-জামায়াতিদের মনে কষ্ট হয় বলে তার মনে হয় উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, মনে রাখতে হবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এই মাটিতেই জন্মগ্রহণ করেছেন এবং তিনিই এই দেশ স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন। কাজেই, তার বাংলাদেশে কোন মানুষ অন্ন কষ্ট পাবে না, গৃহহীন থাকবে না, শিক্ষার আলো বঞ্চিত থাকবে না- প্রত্যেকটি মানুষের জীবন মান উন্নত হবে, বলেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, এই বাংলাদেশ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের বাংলাদেশ এবং তিনি যেভাবে চেয়েছিলেন তার বাংলাদেশ সেভাবেই বিশ^ দরবারে সম্মানের সঙ্গে মাথা উঁচু করে চলবে। জাতির পিতার জন্মদিনে এটাই আমাদের প্রতিজ্ঞা। এই প্রতিজ্ঞা নিয়েই আওয়ামী লীগ এবং এর প্রতিটি সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করতে হবে ।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সভায় প্রারম্ভিক বকক্তৃতা করেন।

দলের সভাপতিম-লীর সদস্য ও জাতীয় সংসদের উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন ও অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন সভায় বক্তৃতা করেন। আরও বক্তৃতা করেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নুরুল ইসলাম ঠা-ু, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য অধ্যাপক মেরিনা জাহান কবিতা, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর ও দক্ষিণের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান ও আবু আহমেদ মান্নাফী। দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ এবং উপপ্রচার সম্পাদক সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম সভাটি সঞ্চালনা করেন। বিএনপির অপপ্রচারের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, তারা ভাঙা রেকর্ডের মতো সম্পূর্ণ মিথ্যাচার করে অপপ্রচার চালিয়েই যাচ্ছে। এত মিথ্যা কথা তারা পায় কোথা থেকে? আমরা নাকি দেশের কোনই উন্নয়ন করিনি, সবকিছু ফোকলা ও ধ্বংস করে দিয়েছি! আমরা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছি। মেট্রোরেল করেছি, কর্ণফুলী টানেল নির্মাণ করছি। একদিনে একশ’ সেতু, একশ সড়ক নির্মাণ কোন সরকার করতে পেরেছে? এসব কি উন্নয়ন না। চোখ থাকতেও কেউ অন্ধ হয়ে থাকলে তাদের কিছুই চোখে পড়ে না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়ার আমলে দেশের বাজেট ছিল মাত্র ৬২ হাজার কোটি টাকা। আর আমরা ৬ লাখ কোটি টাকার ওপরে বাজেট দিয়েছি। দেশের উন্নয়ন না হলে এত বড় বাজেট কিভাবে দিলাম? গত ১৪ বছরে শিক্ষার হার ৭৫ ভাগে উন্নীত করেছি, ২ লাখ ৫৩ হাজার শিক্ষার্থীকে বৃত্তি-উপবৃত্তি দিচ্ছি, বিনামূল্যে শিক্ষার্থীদের বই দিচ্ছি। বাংলাদেশে কোন মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ছিল না, আমরাই প্রথম দেশে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় করেছি এবং আরও চারটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় করেছি। প্রত্যেক বিভাগেই আমরা একটি করে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় করবো। দেশের যদি উন্নতি না হয় তবে এসব আমরা করছি কিভাবে?

তিনি বলেন, বাংলাদেশ আজ ডিজিটাল বাংলাদেশ। সারাদেশে ইন্টারনেট, ওয়াইফাই হয়েছে। নিজস্ব স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের পর এখন দ্বিতীয় স্যাটেলাইট উৎক্ষেপনের প্রস্তুতি চলছে। আমরা দেশকে খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছি। এ কারণে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও মহামারীর কারণে সারাবিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দা ও খাদ্যাভাব দেখা দিলেও বাংলাদেশে কোন মানুষের খাদ্যের কোন অভাব আমরা হতে দেইনি। এসব কি উন্নয়ন নয়?

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই বিএনপিই আমরা যখন দেশকে খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণ করলাম, তখন বলেছিল এটা ভালো না বিদেশ থেকে খাদ্য সাহায্য পাওয়া যাবে না। আসলে তারা দেশকে ভিক্ষুকের জাতি ও ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চেয়েছিল। কারণ, তাদের নীতিই হচ্ছে দুর্নীতি, মানুষের অর্থ-সম্পদ লুটেপুটে খাওয়া।

’৭৫ পর থেকে ৯৬ পর্যন্ত এবং ২০০১ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ’৯৬-তে আমরা যা অর্জন করেছিলাম, ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে বিএনপি-জামায়াত শুধু তা ধ্বংসই করেনি, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ সারাদেশে নৃশংস হত্যাকা-, বাড়িঘর ভাঙচুর, নির্যাতন করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াত আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে অসংখ্য সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করেছে, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের অত্যাচার-নির্যাতন করেছে। কিন্তু এত অত্যাচার করেও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের তারা দমাতে পারেনি। আওয়ামী লীগকে কেউ নিঃশেষ করতে পারেনি। আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও চিন্তা-চেতনা নিয়ে এগিয়ে গেছে। যে দল মাটি ও মানুষ থেকে গড়ে ওঠে, তাকে উপড়ে ফেলা যায় না। তিনি বলেন, এ দেশের সংবিধানে যুদ্ধাপরাধীদের রাজনীতি করা নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে সংবিধান আংশিক সংশোধন করে নিয়ে মার্শাল ল’অর্ডিন্যান্স দিয়ে তাদের রাজনীতি করার সুযোগ করে দেয়। যারা যুদ্ধাপরাধী, যাদের বিচার শুরু হয়েছিল, তাদেরকেও জিয়াউর রহমান মুক্তি দিয়েছিল।

back to top