জন্মদিনে শ্রদ্ধা নিবেদন, আলোচনা সভা ও দুঃস্থদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ
সংবাদ-এর প্রধান সম্পাদক ও দেশের প্রগতিশীল ধারার রাজনীতির পুরোধা ব্যক্তিত্ব আহমদুল কবিরের (মনু মিয়া) শততম জন্মদিন বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) পালন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে মরহুম আহমদুল কবিরের কবরে পুস্পস্তবক অর্পণ, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল, কোরানখানি, দুস্থ-গরিবদের মধ্যে শীতবস্ত্র ও উন্নত খাবার বিতরণ, জন্মদিনের কেট কাটা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। জন্মদিনের অনুষ্ঠানে এলাকার জনপ্রতিধি ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা বলেন, আহমদুল কবির জীবদ্দশায় সব সময় অবহেলিত মানুষের জীবনমান উন্নয়নের চিন্তা করতেন। তার রাজনীতি ছিল প্রগতিশীল আদর্শ এবং মেহনতি মানুষের রাজনীতি। দেশের ক্রান্তিকালে তার মতো আদর্শবাদী রাজনীতিবিদের অত্যন্ত প্রয়োজন। আহমদুল কবিরের শততম জন্মদিনে সকালে তার কবরে পুষ্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন আহমদুল কবিরের বড় ছেলে সংবাদ সম্পাদক আলতামাশ কবির, পাঁচদোনা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ মো. মনির হোসেন প্রধান, পলাশ থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. শাহজাহান, গণতন্ত্রী পার্টির সদস্য মো. বেনু মাস্টার, কমিশনার মো. নূরুল ইসলাম, জিনারদী ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মো. মতিউর রহমান, গণতন্ত্রী পার্টি চরসিন্দুর ইউনিয়নের সভাপতি খোরশেদ আলম, মেহেরপাড়া ইউনিয়নের ছাত্রলীগ সভাপতি মো. শরিফ প্রমুখ।
দুপুরে দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ করেন সংবাদ সম্পাদক আলতামাশ কবির। এছাড়া গরিবদের মাঝে শীতবস্ত্র (কম্বল) বিতরণ করেন তিনি। এছাড়া পারিবারিক মসজিদসহ পাঁচদোনা ইউনিয়ন, আমদিয়া ইউনিয়ন, মেহেরপাড়া ইউনিয়ন, চরসিন্দুর ইউনিয়ন, জিনারদী ইউনিয়ন ও ঘোড়াশাল পৌরসভা এলাকার বিভিন্ন মসজিদ ও এতিমখানায় মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত এবং কোরআন খতম দেয়া হয়।
বিকেলে ঘোড়াশাল বাজারে আহমদুল কবির (মনু মিয়া) স্মৃতিসংসদ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ-এর প্রধান সম্পাদক ও দেশের প্রগতিশীল ধারার রাজনীতির পুরোধা ব্যক্তিত্ব আহমদুল কবিরের (মনু মিয়া) শততম জন্মদিন উপলক্ষে নরসিংদীর ঘোড়াশালে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ঘোড়াশাল পৌরসভার ৭ নংম্ব ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুরুল ইসলাম। আলোচনা সভার আগে সবার উপস্থিতিতে কেক কাটা হয়। আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট শাহজাহান মিয়া ও অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ হানিফ।
দৈনিক সংবাদের প্রধান সম্পাদক ও দেশের প্রগতিশীল ধারার রাজনীতির পুরোধা ব্যক্তিত্ব আহমদুল কবির ১৯২৩ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি ঘোড়াশালের ঐতিহ্যবাহী মিয়া বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মরহুম আবু ইউসুফ লুৎফুল কবির ছিলেন ঘোড়াশালের জমিদার। মায়ের নাম মরহুমা সুফিয়া খাতুন। ২০০৩ সালের ২৪ নভেম্বর কলকাতার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। আহমদুল কবির ছিলেন ব্রিটিশ, পাকিস্তান ও স্বাধীন বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সাংবাদিকতা অঙ্গনের এক প্রতিভাদীপ্ত ব্যক্তিত্ব। আপোষহীন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের জন্য পাকিস্তান আমল থেকে স্বাধীন বাংলাদেশে তিনি ছিলেন একজন ভিন্নমাত্রার রাজনীতিক। মূলত তার রাজনৈতিক দর্শন ছিল এদেশের সাধারণ মানুষের অধিকার আদায়ে কাজ করা। তদানীন্তন পাকিস্তানের রাজনীতিতে অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল যে ধারা এদেশে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বিপুল জনগোষ্ঠীর রাজনৈতিক চেতনাকে নাড়া দিয়েছিল, সেই একই ধারার পুরোধা ব্যক্তিত্ব ছিলেন আহমদুল কবির। পরবর্তী সময়ে স্বাধীন বাংলাদেশে প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক, সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী রাজনীতির নিবেদিতপ্রাণ ব্যক্তি ছিলেন আহমদুল কবির। দেশের রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের কাছে তিনি পরিচিত ছিলেন আদর্শবান এবং নীতিনিষ্ঠ এক নেতা হিসেবে। তিনি সত্তরের দশকে গণতন্ত্রী পার্টি প্রতিষ্ঠা করেন। মৃত্যুকাল পর্যন্ত তিনি পার্টির সভাপতি ছিলেন। আহমদুল কবির ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ডাকসুর প্রথম ভিপি। ১৯৬৫ সালে আহমদুল কবির ন্যাপের প্রার্থী হিসেবে তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। রাজনৈতিক জীবনের পাশাপাশি তিনি সাংবাদিকতার সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করেন। সংবাদপত্রকে তিনি তার রাজনৈতিক আদর্শ প্রচার ও স্বকীয় প্রতিভা প্রকাশের মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করেন। সাংবাদিকতায় তার অসাম্প্রদায়িক, প্রগতিশীল এবং বস্তুনিষ্ঠ চেতনার প্রতিরূপ হলো দৈনিক ‘সংবাদ’। দৈনিক সংবাদ-এ বস্তুনিষ্ঠ খবর ও মতামত প্রকাশের মধ্য দিয়ে তিনি অসাম্প্রদায়িক, প্রগতিশীল ও বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার এক নতুন ধারা সৃষ্টি করেন। আমৃত্যু তিনি তার এই আদর্শ লালন করে গেছেন। কমনওয়েলথ প্রেস ইউনিয়নের বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের সভাপতির পদও অলঙ্কৃত করেছিলেন তিনি। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাক হানাদার বাহিনী তাকে গ্রেপ্তার করে। আহমদুল কবির দেশের একজন বিশিষ্ট শিল্পোদ্যোক্তাও ছিলেন। এদেশের শিল্প-বাণিজ্য প্রসারে তার সক্রিয় অবদান রয়েছে।
জন্মদিনে শ্রদ্ধা নিবেদন, আলোচনা সভা ও দুঃস্থদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ
বৃহস্পতিবার, ০৩ ফেব্রুয়ারী ২০২২
সংবাদ-এর প্রধান সম্পাদক ও দেশের প্রগতিশীল ধারার রাজনীতির পুরোধা ব্যক্তিত্ব আহমদুল কবিরের (মনু মিয়া) শততম জন্মদিন বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) পালন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে মরহুম আহমদুল কবিরের কবরে পুস্পস্তবক অর্পণ, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল, কোরানখানি, দুস্থ-গরিবদের মধ্যে শীতবস্ত্র ও উন্নত খাবার বিতরণ, জন্মদিনের কেট কাটা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। জন্মদিনের অনুষ্ঠানে এলাকার জনপ্রতিধি ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা বলেন, আহমদুল কবির জীবদ্দশায় সব সময় অবহেলিত মানুষের জীবনমান উন্নয়নের চিন্তা করতেন। তার রাজনীতি ছিল প্রগতিশীল আদর্শ এবং মেহনতি মানুষের রাজনীতি। দেশের ক্রান্তিকালে তার মতো আদর্শবাদী রাজনীতিবিদের অত্যন্ত প্রয়োজন। আহমদুল কবিরের শততম জন্মদিনে সকালে তার কবরে পুষ্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন আহমদুল কবিরের বড় ছেলে সংবাদ সম্পাদক আলতামাশ কবির, পাঁচদোনা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ মো. মনির হোসেন প্রধান, পলাশ থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. শাহজাহান, গণতন্ত্রী পার্টির সদস্য মো. বেনু মাস্টার, কমিশনার মো. নূরুল ইসলাম, জিনারদী ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মো. মতিউর রহমান, গণতন্ত্রী পার্টি চরসিন্দুর ইউনিয়নের সভাপতি খোরশেদ আলম, মেহেরপাড়া ইউনিয়নের ছাত্রলীগ সভাপতি মো. শরিফ প্রমুখ।
দুপুরে দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ করেন সংবাদ সম্পাদক আলতামাশ কবির। এছাড়া গরিবদের মাঝে শীতবস্ত্র (কম্বল) বিতরণ করেন তিনি। এছাড়া পারিবারিক মসজিদসহ পাঁচদোনা ইউনিয়ন, আমদিয়া ইউনিয়ন, মেহেরপাড়া ইউনিয়ন, চরসিন্দুর ইউনিয়ন, জিনারদী ইউনিয়ন ও ঘোড়াশাল পৌরসভা এলাকার বিভিন্ন মসজিদ ও এতিমখানায় মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত এবং কোরআন খতম দেয়া হয়।
বিকেলে ঘোড়াশাল বাজারে আহমদুল কবির (মনু মিয়া) স্মৃতিসংসদ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ-এর প্রধান সম্পাদক ও দেশের প্রগতিশীল ধারার রাজনীতির পুরোধা ব্যক্তিত্ব আহমদুল কবিরের (মনু মিয়া) শততম জন্মদিন উপলক্ষে নরসিংদীর ঘোড়াশালে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ঘোড়াশাল পৌরসভার ৭ নংম্ব ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুরুল ইসলাম। আলোচনা সভার আগে সবার উপস্থিতিতে কেক কাটা হয়। আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট শাহজাহান মিয়া ও অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ হানিফ।
দৈনিক সংবাদের প্রধান সম্পাদক ও দেশের প্রগতিশীল ধারার রাজনীতির পুরোধা ব্যক্তিত্ব আহমদুল কবির ১৯২৩ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি ঘোড়াশালের ঐতিহ্যবাহী মিয়া বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মরহুম আবু ইউসুফ লুৎফুল কবির ছিলেন ঘোড়াশালের জমিদার। মায়ের নাম মরহুমা সুফিয়া খাতুন। ২০০৩ সালের ২৪ নভেম্বর কলকাতার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। আহমদুল কবির ছিলেন ব্রিটিশ, পাকিস্তান ও স্বাধীন বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সাংবাদিকতা অঙ্গনের এক প্রতিভাদীপ্ত ব্যক্তিত্ব। আপোষহীন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের জন্য পাকিস্তান আমল থেকে স্বাধীন বাংলাদেশে তিনি ছিলেন একজন ভিন্নমাত্রার রাজনীতিক। মূলত তার রাজনৈতিক দর্শন ছিল এদেশের সাধারণ মানুষের অধিকার আদায়ে কাজ করা। তদানীন্তন পাকিস্তানের রাজনীতিতে অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল যে ধারা এদেশে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বিপুল জনগোষ্ঠীর রাজনৈতিক চেতনাকে নাড়া দিয়েছিল, সেই একই ধারার পুরোধা ব্যক্তিত্ব ছিলেন আহমদুল কবির। পরবর্তী সময়ে স্বাধীন বাংলাদেশে প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক, সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী রাজনীতির নিবেদিতপ্রাণ ব্যক্তি ছিলেন আহমদুল কবির। দেশের রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের কাছে তিনি পরিচিত ছিলেন আদর্শবান এবং নীতিনিষ্ঠ এক নেতা হিসেবে। তিনি সত্তরের দশকে গণতন্ত্রী পার্টি প্রতিষ্ঠা করেন। মৃত্যুকাল পর্যন্ত তিনি পার্টির সভাপতি ছিলেন। আহমদুল কবির ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ডাকসুর প্রথম ভিপি। ১৯৬৫ সালে আহমদুল কবির ন্যাপের প্রার্থী হিসেবে তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। রাজনৈতিক জীবনের পাশাপাশি তিনি সাংবাদিকতার সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করেন। সংবাদপত্রকে তিনি তার রাজনৈতিক আদর্শ প্রচার ও স্বকীয় প্রতিভা প্রকাশের মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করেন। সাংবাদিকতায় তার অসাম্প্রদায়িক, প্রগতিশীল এবং বস্তুনিষ্ঠ চেতনার প্রতিরূপ হলো দৈনিক ‘সংবাদ’। দৈনিক সংবাদ-এ বস্তুনিষ্ঠ খবর ও মতামত প্রকাশের মধ্য দিয়ে তিনি অসাম্প্রদায়িক, প্রগতিশীল ও বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার এক নতুন ধারা সৃষ্টি করেন। আমৃত্যু তিনি তার এই আদর্শ লালন করে গেছেন। কমনওয়েলথ প্রেস ইউনিয়নের বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের সভাপতির পদও অলঙ্কৃত করেছিলেন তিনি। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাক হানাদার বাহিনী তাকে গ্রেপ্তার করে। আহমদুল কবির দেশের একজন বিশিষ্ট শিল্পোদ্যোক্তাও ছিলেন। এদেশের শিল্প-বাণিজ্য প্রসারে তার সক্রিয় অবদান রয়েছে।