alt

রাজনীতি

ভারতে সামরিক প্রশিক্ষণ না পাঠানোর অনুরোধ অলি আহমদের

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫

দেশের সশস্ত্র বাহিনীর কোনো সদস্যকে প্রশিক্ষণের জন্য ভারতে না পাঠানোর ‘অনুরোধ’ জানিয়েছেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) চেয়ারম্যান অলি আহমদ।

শনিবার রাজধানীর মহাখালীর রাওয়া কনভেশন সেন্টারে এক সেমিনারে তিনি বলেন, “আমাদের বুঝতে হবে, ভারত কখনো বাংলাদেশের উন্নয়ন চায় না। বাংলাদেশের মানুষ শান্তিতে থাকুক, তা তারা চায় না। তারা এ দেশকে শোষণ ও শাসন করতে চায়। এ ব্যাপারে কারো দ্বিধা-দ্বন্দ্ব থাকার অবকাশ নাই।”

তিনি বলেন, “প্রশিক্ষণের জন্য সশস্ত্র বাহিনীর কোনো সদস্য যেন ভারতে পাঠানো না হয়, এটার জন্য সেনাপ্রধানকে বা অন্যান্য প্রধানদের অনুরোধ করব। কারণ ওখানে যাওয়ার পর অনেকে অনৈতিক সমস্যায় জড়িয়ে পড়তে পারেন।

“অতীতে অনেকে জড়িয়ে পড়েছেন, যেমন হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদ। বিস্তারিত আমি বলতে চাই না, কারণ আমি জানি ঘটনাগুলো।”

অলি আহমদ বলেন, “সেনাপ্রধান হওয়ার আগে অনেকে ভারতের দেওয়া ১৮-২০টা শর্তের ওপর দস্তখত করেছে। এ কথা সকলে জানে, কিন্তু বলে না। এছাড়া বিভিন্ন সময় সশস্ত্র বাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত হওয়া বা প্রমোশনের জন্য ভারতের শরণাপন্ন হয়েছেন।”

সাবেক এ সেনা কর্মকর্তা বলেন, “সর্বপ্রথম এরশাদই ভারতের সাহায্য নিয়ে ক্ষমতা দখল করে। ২০০৮ সালে জেনারেল মঈন ইউ আহমদ নিজের এবং নিজের পরিবারের নিরাপত্তার জন্য ভারতের কাছে আত্মসমর্পণ করেন।”

‘রাষ্ট্র সংস্কার-রাজনীতির প্রভাবমুক্ত সশস্ত্র বাহিনী’ শিরোনামে এ সেমিনার আয়োজন করে অবসরে যাওয়া সেনা কর্মকর্তাদের সংগঠন রিটায়ার্ড আর্মড ফোর্সেস অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন-রাওয়া।

অলি আহমদ বলেন, “ভারত হল আমাদের মূল সমস্যা, এটা বুঝতে হবে আপনাদের। তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। আপনারা দেখেছেন, হাসিনাকে পাহাড়া দেওয়ার জন্য, বিডিআরের অভ্যন্তরে যেসব ঘটনা ঘটেছে, সেখানে ব্ল্যাক ক্যাট জড়িত ছিল ভারতের। আমাদের ক্যাটগুলো তো জড়িত ছিলই, কিন্তু ভারতের ব্ল্যাক ক্যাট জড়িত ছিল।”

৫ অগাস্ট গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি বলেন, “এবার আপনারা দেখেন ভারতের ব্ল্যাক ক্যাটগুলো তিনটা কালো বাসে করে ক্যান্টনমেন্ট থেকে তারা বের হয়েছিল, এবং এয়ারপোর্টে কীভাবে তারা পালাচ্ছিল, এটাতো কারো অজানা নয়। ভারতের ব্ল্যাক ক্যাটই ছিল হাসিনার পাহাড়াদার ও আমাদের জনগণকে হত্যার জন্য মুখ্য ভূমিকা পালনকারী। তাদের ব্যাপারে আমাদের সব সময় সতর্ক থাকতে হবে।”

দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে তিনি বলেন, “আপনি যদি অর্থনৈতিক অবস্থা দেখেন খুবই খারাপ। বর্তমানে উনারা ভালো ভালো লেকচার দিচ্ছেন, নাটক করতেসেন, আমরাও দেখতেসি। নাটকগুলো কিন্তু সাজানো। আসলে ব্যাংকে কোনো টাকা নাই, অবস্থা ভালো না, আমাদের দেখাচ্ছে ওখান থেকে পাঁচ আসছে, ওখান থেকে হাজার আসছে।”

দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা সশস্ত্র বাহিনীর মূল দায়িত্ব বলে তুলে ধরে তিনি বলেন, “কোন অবস্থাতেই রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত হওয়া উচিত হবে না। তাহলে সশস্ত্র বাহিনী একটি শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান হিসাবে সবার কাছে সম্মানের আসনে অধীষ্ঠ হবে।”

৮৭ বছর বয়স হলেও নিজেকে ২৫ বছরের যুবক মনে করেন বলে তুলে ধরে অলি আহমদ বলেন, “আই ক্যান ডু এনাদার ক্যু এগেইনস্ট পাকিস্তান আর্মি।”

১৯৭৫ সালে ১৫ অগাস্ট সংগঠিত হওয়ার জন্য অনেকগুলো কারণ রয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “আমি চাকরিতে ছিলাম। সংক্ষেপে যেমন, স্বশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের এবং মুক্তিযোদ্ধাদের অবমূল্যায়ন। অন্যদিকে ভারতের তত্ত্বাবধানে রক্ষী বাহিনীর মাধ্যমে সব কিছুর নিয়ন্ত্রণ। একদলীয় শাসন কায়েম করার অপচেষ্টা, যেটা স্বশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা মেনে নিতে পারেন নাই। এটারই ফলশ্রুতি ছিল ১৫ অগাস্ট।”

অনুষ্ঠানের মূল প্রবন্ধে অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহ আল ইউসুফ বলেন, “সশস্ত্র বাহিনীর দায়িত্ব, কর্তব্য ও ভূমিকার বিষয়টি স্পষ্ট করা প্রয়োজন। সশস্ত্র বাহিনী কি শুধুই বহিঃস্থ স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষার দায়িত্বে থাকবে, নাকি আভ্যন্তরীণ স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষায়ও তাদের অংশগ্রহণ থাকবে?

“এ বিষয়টি স্পষ্ট না থাকার কারণেই রাজনৈতিক দলগুলো সামরিক বাহিনীকে নিজেদের ক্ষমতাকে সুসংহত করার লক্ষ্যে ব্যবহার করেছে। তারা নিজেদের প্রয়োজনেই কখনও জনগণকে নির্যাতনের হাতিয়ার হিসেবে সামরিক বাহিনীকে ব্যবহার করেছে, সামরিক বাহিনীকে জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। আবার যখন সামরিক বাহিনীর উচিৎ ছিল জনগণের পাশে এসে দাড়ানোর, তখন তাদেরকে ব্যারাকে ফিরে যেতে বলা হয়েছে।”

তিনি বলেন, “কখনও পুরস্কারের আশায়, আবার কখনও তিরস্কারের ভয়ে সামরিক নেতৃত্ব দলীয় অপরাজনীতির লেজুড়বৃত্তি করেছে। তাই, যথাযথ ভূমিকা পালনের জন্য সামরিক বাহিনীকে রাজনীতিমুক্ত নয়, বরং দলীয় অপরাজনীতির প্রভাবমুক্ত রাখা প্রয়োজন।”

আরেক প্রবন্ধে আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেন, “ইতিহাস সাক্ষ্য দিচ্ছে, স্বাধীনতার পর থেকে বিভিন্ন আমলে সামরিক বাহিনীতে যে রাজনীতিকরণ হয়েছে, তার জন্য কোনো একপক্ষ দায়ী নয়।

“কখনো ঊর্ধ্বতন সামরিক অফিসাররা ব্যক্তিস্বার্থে রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করেছেন, আবার কখনো রাজনীতিবিদরাও নিজেদের অবৈধ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে সামরিক বাহিনীকে ব্যবহার করেছেন। দেশের জন্য ক্ষতিকর এই অশুভ পরিস্থিতির অবসান হওয়া জরুরি।”

ছবি

‘ধর্মীয় মূল্যবোধের ওপর আঘাত’—নারীবিষয়ক সুপারিশমালা বাতিলের দাবি জামায়াতের

ছবি

নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণার আগেই ইসির তৎপরতায় সন্দেহ এনসিপির

ছবি

সংস্কার প্রস্তাবে বিএনপির সঙ্গে দ্বিতীয় দিনের আলোচনায় ঐকমত্য কমিশন

ছবি

সিইসির সঙ্গে বৈঠকে এনসিপির পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদল

ছবি

সংবিধানে মূলনীতি রাখা উচিত কি না, প্রশ্ন এনসিপির

ছবি

নির্বাচন নিয়ে করণীয় ঠিক করতে শরিকদের সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি

ছবি

‘দেশটা আমাদের, বিদেশের কেউ এসে ভবিষ্যৎ গড়ে দেবে না’—মির্জা ফখরুল

ছবি

বিচার ও সংস্কার দৃশ্যমান করার পরই নির্বাচনের পক্ষে এনসিপি

তরুণদের দল এনসিপির আঞ্চলিক নেতৃত্বে ‘চল্লিশোর্ধরা’

ছবি

নতুন বাংলাদেশ গঠনে সংলাপ, ভিন্নমতের জায়গাগুলোতে আলোচনা চলবে: আলী রীয়াজ

ছবি

‘রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করতে বিএনপির বিরুদ্ধে এনসিপি ভুল তথ্য প্রচার করছে’

ছবি

বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে থাইল্যান্ডের এনফ্রেল প্রতিনিধি দলের বৈঠক

ছবি

নারায়ণগঞ্জে ‘মার্চ ফর ইউনূস’ কর্মসূচি: আগে সংস্কার তারপর নির্বাচন দাবি

ছবি

নির্বাচনের সময় নিয়ে ‘ফাইজলামি’ বন্ধ করতে বললেন বিএনপি নেতা দুদু

ছবি

সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য স্পষ্ট হচ্ছে : মান্না

ছবি

নতুন দলের নিবন্ধনে সময় বাড়ানোর অনুরোধ এনসিপির

ছবি

তিনটি বাধ্যতামূলক দাবি পূরণ হলে রমজানের আগেই নির্বাচন সম্ভব: জামায়াত আমির

ছবি

ঝটিকা মিছিলের অভিযোগে আওয়ামী লীগ নেতা শাহে আলম মুরাদ গ্রেপ্তার

ছবি

‘স্প্রেডশিটে বিভ্রান্তি’, সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা চায় বিএনপি

ছবি

ডেসটিনির রফিকুলের রাজনৈতিক দল ‘বাংলাদেশ আ-আম জনতা পার্টি’র আত্মপ্রকাশ

ছবি

রাষ্ট্র সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরলেন নজরুল ইসলাম খান

ছবি

ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে বসেছে বিএনপি

ছবি

সংস্কারে বিএনপি সম্মত, সবকিছুর মূলে জনগণ: নজরুল ইসলাম খান

ছবি

গণতন্ত্র বারবার হোঁচট খেয়েছে, জাতীয় সনদে গুরুত্বারোপ আলী রীয়াজের

ছবি

প্রধান উপদেষ্টাকে বিএনপি মহাসচিবের চিঠিঃ ‘উন্নয়ন ও সংস্কারের নামে গণতন্ত্রকে পিছিয়ে রাখার তত্ত্ব একটি ভ্রান্ত ধারণা’

ছবি

ফখরুল-চুলিক বৈঠকে নির্বাচন ও দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা: আমীর খসরু

ছবি

প্রশাসন বিএনপির পক্ষে কাজ করছে, এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচন সম্ভব নয়: এনসিপি

ছবি

জুলাইয়ে কর্মপরিকল্পনা প্রকাশের প্রস্তুতিতে নির্বাচন কমিশন

ছবি

রমজানের আগেই ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন চায় জামায়াত

ছবি

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক, ‘একেবারেই সন্তুষ্ট নয়’ বিএনপি

ছবি

ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে যমুনায় বিএনপি নেতারা, চাইবেন ‘নির্বাচনের রোডম্যাপ’

ছবি

লন্ডনে খালেদা জিয়ার সঙ্গে জামায়াত আমিরের সাক্ষাৎ

ছবি

আওয়ামী লীগ নিয়ে সিদ্ধান্তে না এলে ‘শিষ্টাচারবহির্ভূত আচরণ’ করার হুঁশিয়ারি হাসনাত আবদুল্লাহর

ছবি

খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলা: ৯ বছর পর আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেপ্তার

আলোচনা ও ঐক্যের মধ্য দিয়ে সহ সব সমস্যার সমাধান হবে: মির্জা ফখরুল

ছবি

‘নির্বাচিত সরকারের বিকল্প হতে পারে না অন্তর্বর্তী সরকার’—সালাহ উদ্দিন আহমদ

tab

রাজনীতি

ভারতে সামরিক প্রশিক্ষণ না পাঠানোর অনুরোধ অলি আহমদের

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫

দেশের সশস্ত্র বাহিনীর কোনো সদস্যকে প্রশিক্ষণের জন্য ভারতে না পাঠানোর ‘অনুরোধ’ জানিয়েছেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) চেয়ারম্যান অলি আহমদ।

শনিবার রাজধানীর মহাখালীর রাওয়া কনভেশন সেন্টারে এক সেমিনারে তিনি বলেন, “আমাদের বুঝতে হবে, ভারত কখনো বাংলাদেশের উন্নয়ন চায় না। বাংলাদেশের মানুষ শান্তিতে থাকুক, তা তারা চায় না। তারা এ দেশকে শোষণ ও শাসন করতে চায়। এ ব্যাপারে কারো দ্বিধা-দ্বন্দ্ব থাকার অবকাশ নাই।”

তিনি বলেন, “প্রশিক্ষণের জন্য সশস্ত্র বাহিনীর কোনো সদস্য যেন ভারতে পাঠানো না হয়, এটার জন্য সেনাপ্রধানকে বা অন্যান্য প্রধানদের অনুরোধ করব। কারণ ওখানে যাওয়ার পর অনেকে অনৈতিক সমস্যায় জড়িয়ে পড়তে পারেন।

“অতীতে অনেকে জড়িয়ে পড়েছেন, যেমন হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদ। বিস্তারিত আমি বলতে চাই না, কারণ আমি জানি ঘটনাগুলো।”

অলি আহমদ বলেন, “সেনাপ্রধান হওয়ার আগে অনেকে ভারতের দেওয়া ১৮-২০টা শর্তের ওপর দস্তখত করেছে। এ কথা সকলে জানে, কিন্তু বলে না। এছাড়া বিভিন্ন সময় সশস্ত্র বাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত হওয়া বা প্রমোশনের জন্য ভারতের শরণাপন্ন হয়েছেন।”

সাবেক এ সেনা কর্মকর্তা বলেন, “সর্বপ্রথম এরশাদই ভারতের সাহায্য নিয়ে ক্ষমতা দখল করে। ২০০৮ সালে জেনারেল মঈন ইউ আহমদ নিজের এবং নিজের পরিবারের নিরাপত্তার জন্য ভারতের কাছে আত্মসমর্পণ করেন।”

‘রাষ্ট্র সংস্কার-রাজনীতির প্রভাবমুক্ত সশস্ত্র বাহিনী’ শিরোনামে এ সেমিনার আয়োজন করে অবসরে যাওয়া সেনা কর্মকর্তাদের সংগঠন রিটায়ার্ড আর্মড ফোর্সেস অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন-রাওয়া।

অলি আহমদ বলেন, “ভারত হল আমাদের মূল সমস্যা, এটা বুঝতে হবে আপনাদের। তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। আপনারা দেখেছেন, হাসিনাকে পাহাড়া দেওয়ার জন্য, বিডিআরের অভ্যন্তরে যেসব ঘটনা ঘটেছে, সেখানে ব্ল্যাক ক্যাট জড়িত ছিল ভারতের। আমাদের ক্যাটগুলো তো জড়িত ছিলই, কিন্তু ভারতের ব্ল্যাক ক্যাট জড়িত ছিল।”

৫ অগাস্ট গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি বলেন, “এবার আপনারা দেখেন ভারতের ব্ল্যাক ক্যাটগুলো তিনটা কালো বাসে করে ক্যান্টনমেন্ট থেকে তারা বের হয়েছিল, এবং এয়ারপোর্টে কীভাবে তারা পালাচ্ছিল, এটাতো কারো অজানা নয়। ভারতের ব্ল্যাক ক্যাটই ছিল হাসিনার পাহাড়াদার ও আমাদের জনগণকে হত্যার জন্য মুখ্য ভূমিকা পালনকারী। তাদের ব্যাপারে আমাদের সব সময় সতর্ক থাকতে হবে।”

দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে তিনি বলেন, “আপনি যদি অর্থনৈতিক অবস্থা দেখেন খুবই খারাপ। বর্তমানে উনারা ভালো ভালো লেকচার দিচ্ছেন, নাটক করতেসেন, আমরাও দেখতেসি। নাটকগুলো কিন্তু সাজানো। আসলে ব্যাংকে কোনো টাকা নাই, অবস্থা ভালো না, আমাদের দেখাচ্ছে ওখান থেকে পাঁচ আসছে, ওখান থেকে হাজার আসছে।”

দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা সশস্ত্র বাহিনীর মূল দায়িত্ব বলে তুলে ধরে তিনি বলেন, “কোন অবস্থাতেই রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত হওয়া উচিত হবে না। তাহলে সশস্ত্র বাহিনী একটি শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান হিসাবে সবার কাছে সম্মানের আসনে অধীষ্ঠ হবে।”

৮৭ বছর বয়স হলেও নিজেকে ২৫ বছরের যুবক মনে করেন বলে তুলে ধরে অলি আহমদ বলেন, “আই ক্যান ডু এনাদার ক্যু এগেইনস্ট পাকিস্তান আর্মি।”

১৯৭৫ সালে ১৫ অগাস্ট সংগঠিত হওয়ার জন্য অনেকগুলো কারণ রয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “আমি চাকরিতে ছিলাম। সংক্ষেপে যেমন, স্বশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের এবং মুক্তিযোদ্ধাদের অবমূল্যায়ন। অন্যদিকে ভারতের তত্ত্বাবধানে রক্ষী বাহিনীর মাধ্যমে সব কিছুর নিয়ন্ত্রণ। একদলীয় শাসন কায়েম করার অপচেষ্টা, যেটা স্বশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা মেনে নিতে পারেন নাই। এটারই ফলশ্রুতি ছিল ১৫ অগাস্ট।”

অনুষ্ঠানের মূল প্রবন্ধে অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহ আল ইউসুফ বলেন, “সশস্ত্র বাহিনীর দায়িত্ব, কর্তব্য ও ভূমিকার বিষয়টি স্পষ্ট করা প্রয়োজন। সশস্ত্র বাহিনী কি শুধুই বহিঃস্থ স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষার দায়িত্বে থাকবে, নাকি আভ্যন্তরীণ স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষায়ও তাদের অংশগ্রহণ থাকবে?

“এ বিষয়টি স্পষ্ট না থাকার কারণেই রাজনৈতিক দলগুলো সামরিক বাহিনীকে নিজেদের ক্ষমতাকে সুসংহত করার লক্ষ্যে ব্যবহার করেছে। তারা নিজেদের প্রয়োজনেই কখনও জনগণকে নির্যাতনের হাতিয়ার হিসেবে সামরিক বাহিনীকে ব্যবহার করেছে, সামরিক বাহিনীকে জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। আবার যখন সামরিক বাহিনীর উচিৎ ছিল জনগণের পাশে এসে দাড়ানোর, তখন তাদেরকে ব্যারাকে ফিরে যেতে বলা হয়েছে।”

তিনি বলেন, “কখনও পুরস্কারের আশায়, আবার কখনও তিরস্কারের ভয়ে সামরিক নেতৃত্ব দলীয় অপরাজনীতির লেজুড়বৃত্তি করেছে। তাই, যথাযথ ভূমিকা পালনের জন্য সামরিক বাহিনীকে রাজনীতিমুক্ত নয়, বরং দলীয় অপরাজনীতির প্রভাবমুক্ত রাখা প্রয়োজন।”

আরেক প্রবন্ধে আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেন, “ইতিহাস সাক্ষ্য দিচ্ছে, স্বাধীনতার পর থেকে বিভিন্ন আমলে সামরিক বাহিনীতে যে রাজনীতিকরণ হয়েছে, তার জন্য কোনো একপক্ষ দায়ী নয়।

“কখনো ঊর্ধ্বতন সামরিক অফিসাররা ব্যক্তিস্বার্থে রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করেছেন, আবার কখনো রাজনীতিবিদরাও নিজেদের অবৈধ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে সামরিক বাহিনীকে ব্যবহার করেছেন। দেশের জন্য ক্ষতিকর এই অশুভ পরিস্থিতির অবসান হওয়া জরুরি।”

back to top