অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছরের অর্জন ও সাফল্য তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বৃহস্পতিবার বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক আলোচনা সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে এবং দেশের অর্থনীতি, আইনশৃঙ্খলা ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে দীর্ঘ এক শাসনপর্বের অবসান ঘটে। এরপর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠন হয় অন্তর্বর্তী সরকার, যা দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতার মূল চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করেছে। শফিকুল আলম বলেন, “মুহাম্মদ ইউনূসের নৈতিক নেতৃত্বে সহিংসতার চক্র ভাঙিয়ে পুনর্মিলন ও গণতন্ত্রের পথে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।”
অর্থনীতির দৃঢ় পুনরুদ্ধার সম্পর্কে তিনি জানান, “খাদ্যের মূল্যস্ফীতি প্রায় ১৪ শতাংশ থেকে কমে প্রায় অর্ধেকে নেমেছে। সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি ৮.৪৮ শতাংশে এসেছে, যা গত ৩৫ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। রেমিটেন্স রেকর্ড ৩০.৩৩ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, রপ্তানি বেড়েছে ৯ শতাংশ, টাকার মান ডলারের বিপরীতে শক্তিশালী হয়েছে এবং ব্যাংক খাত স্থিতিশীল রয়েছে।”
বাণিজ্য-বিনিয়োগ ক্ষেত্রে শফিকুল আলম বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সফল শুল্ক আলোচনা সম্পন্ন হয়েছে, যা অনেকে অসম্ভব মনে করেছিল। এছাড়াও হান্দা গ্রুপের ২৫ কোটি ডলারের বিনিয়োগে প্রায় ২৫ হাজার নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। চীনা বিনিয়োগকারীরাও বাংলাদেশে ব্যাপক আগ্রহ দেখাচ্ছেন।”
রাষ্ট্র কাঠামোর সংস্কারে তিনি জানান, “সংস্কার কমিশন গঠন, রাজনৈতিক দলের মধ্যে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা এবং ঐতিহাসিক ‘জুলাই সনদ’ চূড়ান্ত করার মাধ্যমে গণতন্ত্রের নতুন যুগের সূচনা করা হয়েছে। এই সনদ ভবিষ্যতে ফ্যাসিবাদের পুনরুত্থান রোধ করবে।”
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হতাহতদের বিচারে তিনি বলেন, “মানবতাবিরোধী অপরাধের স্বচ্ছ বিচার শুরু হয়েছে। এখন পর্যন্ত চারটি প্রধান মামলা চলছে এবং শেখ হাসিনার বিচার প্রক্রিয়াও এগিয়ে চলছে।”
নির্বাচন প্রস্তুতির বিষয়ে শফিকুল আলম জানান, “২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। প্রবাসী, নতুন ভোটার ও নারীদের ভোটাধিকারের বিষয়গুলো নিশ্চিত করতে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম চালু করা হবে। প্রায় ৮ লাখ পুলিশ, আনসার ও সেনা মোতায়েনের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করা হবে।”
আইন-আদালতের সংস্কারে তিনি বলেন, “বিচার বিভাগের স্বাধীনতা শক্তিশালী করা হয়েছে। পুলিশের মানবাধিকার সেল, বডিক্যাম ও স্বচ্ছ জিজ্ঞাসাবদ কক্ষ স্থাপন করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের ১২ ঘণ্টার মধ্যে পরিবারের অবহিতকরণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। অনলাইন জিডি চালু হয়েছে।”
সংবাদপত্র ও ইন্টারনেট স্বাধীনতার বিষয়ে তিনি বলেন, “সাইবার নিরাপত্তা আইনের দমনমূলক ধারাগুলো বাতিল করা হয়েছে। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলাগুলো প্রত্যাহার করা হয়েছে এবং ইন্টারনেট অধিকারকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।”
পররাষ্ট্র নীতি সম্পর্কে তিনি জানান, “একদেশ নির্ভরতা থেকে বহুমুখী কূটনীতিতে রূপান্তর হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন অংশীদারের সঙ্গে সহযোগিতা বৃদ্ধি পেয়েছে। সার্ক পুনরুজ্জীবন এবং আসিয়ান সদস্যপদ অর্জনে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।”
শ্রমিক ও প্রবাসী কর্মীদের জন্য তিনি বলেন, “সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা পুনরায় চালু হয়েছে। মালয়েশিয়ায় মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা নিশ্চিত হয়েছে। উপসাগরীয় অঞ্চলের অনিবন্ধিত শ্রমিকদের বৈধকরণ, জাপানে তরুণদের কর্মসংস্থান এবং অন্যান্য দেশে শ্রমিক পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে।”
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ ও আহতদের জন্য তিনি জানান, “৭৭৫ শহীদ পরিবারের জন্য প্রায় ১০০ কোটি টাকা সঞ্চয়পত্র ও ভাতা এবং ১৩,৮০০ আহত বিপ্লবীর জন্য ১৫৩ কোটি টাকা সহায়তা দেওয়া হয়েছে। গুরুতর আহতদের বিদেশে উন্নত চিকিৎসা ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করা হয়েছে।”
সমুদ্র ও অবকাঠামো উন্নয়নে তিনি জানান, “বঙ্গোপসাগরকে জাতীয় সম্পদ ঘোষণা করে পানিভিত্তিক অর্থনীতি গড়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে এবং উপকূলীয় উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।”
বৃহস্পতিবার, ০৭ আগস্ট ২০২৫
অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছরের অর্জন ও সাফল্য তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বৃহস্পতিবার বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক আলোচনা সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে এবং দেশের অর্থনীতি, আইনশৃঙ্খলা ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে দীর্ঘ এক শাসনপর্বের অবসান ঘটে। এরপর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠন হয় অন্তর্বর্তী সরকার, যা দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতার মূল চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করেছে। শফিকুল আলম বলেন, “মুহাম্মদ ইউনূসের নৈতিক নেতৃত্বে সহিংসতার চক্র ভাঙিয়ে পুনর্মিলন ও গণতন্ত্রের পথে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।”
অর্থনীতির দৃঢ় পুনরুদ্ধার সম্পর্কে তিনি জানান, “খাদ্যের মূল্যস্ফীতি প্রায় ১৪ শতাংশ থেকে কমে প্রায় অর্ধেকে নেমেছে। সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি ৮.৪৮ শতাংশে এসেছে, যা গত ৩৫ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। রেমিটেন্স রেকর্ড ৩০.৩৩ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, রপ্তানি বেড়েছে ৯ শতাংশ, টাকার মান ডলারের বিপরীতে শক্তিশালী হয়েছে এবং ব্যাংক খাত স্থিতিশীল রয়েছে।”
বাণিজ্য-বিনিয়োগ ক্ষেত্রে শফিকুল আলম বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সফল শুল্ক আলোচনা সম্পন্ন হয়েছে, যা অনেকে অসম্ভব মনে করেছিল। এছাড়াও হান্দা গ্রুপের ২৫ কোটি ডলারের বিনিয়োগে প্রায় ২৫ হাজার নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। চীনা বিনিয়োগকারীরাও বাংলাদেশে ব্যাপক আগ্রহ দেখাচ্ছেন।”
রাষ্ট্র কাঠামোর সংস্কারে তিনি জানান, “সংস্কার কমিশন গঠন, রাজনৈতিক দলের মধ্যে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা এবং ঐতিহাসিক ‘জুলাই সনদ’ চূড়ান্ত করার মাধ্যমে গণতন্ত্রের নতুন যুগের সূচনা করা হয়েছে। এই সনদ ভবিষ্যতে ফ্যাসিবাদের পুনরুত্থান রোধ করবে।”
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হতাহতদের বিচারে তিনি বলেন, “মানবতাবিরোধী অপরাধের স্বচ্ছ বিচার শুরু হয়েছে। এখন পর্যন্ত চারটি প্রধান মামলা চলছে এবং শেখ হাসিনার বিচার প্রক্রিয়াও এগিয়ে চলছে।”
নির্বাচন প্রস্তুতির বিষয়ে শফিকুল আলম জানান, “২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। প্রবাসী, নতুন ভোটার ও নারীদের ভোটাধিকারের বিষয়গুলো নিশ্চিত করতে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম চালু করা হবে। প্রায় ৮ লাখ পুলিশ, আনসার ও সেনা মোতায়েনের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করা হবে।”
আইন-আদালতের সংস্কারে তিনি বলেন, “বিচার বিভাগের স্বাধীনতা শক্তিশালী করা হয়েছে। পুলিশের মানবাধিকার সেল, বডিক্যাম ও স্বচ্ছ জিজ্ঞাসাবদ কক্ষ স্থাপন করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের ১২ ঘণ্টার মধ্যে পরিবারের অবহিতকরণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। অনলাইন জিডি চালু হয়েছে।”
সংবাদপত্র ও ইন্টারনেট স্বাধীনতার বিষয়ে তিনি বলেন, “সাইবার নিরাপত্তা আইনের দমনমূলক ধারাগুলো বাতিল করা হয়েছে। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলাগুলো প্রত্যাহার করা হয়েছে এবং ইন্টারনেট অধিকারকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।”
পররাষ্ট্র নীতি সম্পর্কে তিনি জানান, “একদেশ নির্ভরতা থেকে বহুমুখী কূটনীতিতে রূপান্তর হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন অংশীদারের সঙ্গে সহযোগিতা বৃদ্ধি পেয়েছে। সার্ক পুনরুজ্জীবন এবং আসিয়ান সদস্যপদ অর্জনে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।”
শ্রমিক ও প্রবাসী কর্মীদের জন্য তিনি বলেন, “সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা পুনরায় চালু হয়েছে। মালয়েশিয়ায় মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা নিশ্চিত হয়েছে। উপসাগরীয় অঞ্চলের অনিবন্ধিত শ্রমিকদের বৈধকরণ, জাপানে তরুণদের কর্মসংস্থান এবং অন্যান্য দেশে শ্রমিক পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে।”
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ ও আহতদের জন্য তিনি জানান, “৭৭৫ শহীদ পরিবারের জন্য প্রায় ১০০ কোটি টাকা সঞ্চয়পত্র ও ভাতা এবং ১৩,৮০০ আহত বিপ্লবীর জন্য ১৫৩ কোটি টাকা সহায়তা দেওয়া হয়েছে। গুরুতর আহতদের বিদেশে উন্নত চিকিৎসা ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করা হয়েছে।”
সমুদ্র ও অবকাঠামো উন্নয়নে তিনি জানান, “বঙ্গোপসাগরকে জাতীয় সম্পদ ঘোষণা করে পানিভিত্তিক অর্থনীতি গড়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে এবং উপকূলীয় উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।”