জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে অনেক ‘ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত’ চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। জামায়াতে ইসলামীসহ ছয়টি দল সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবিতে যে আন্দোলন করছে, তার সমালোচনা করে তিনি বলেন, পিআর পদ্ধতি নিয়ে আন্দোলনের লক্ষ্যই হচ্ছে ‘নির্বাচন বিলম্বিত করা’; তবে জনগণ এটা গ্রহণ করবে না।
রোববার,(১২ অক্টোবর ২০২৫) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। তার বক্তব্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আগামী পরিকল্পনা ও তার পিতা জিয়াউর রহমানের অবদান, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের অনুপ্রেরণা, অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জনগণের প্রত্যাশার কথাও ওঠে আসে।
ডেমোক্রেটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ মনির দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি এ সভার আয়োজন করে।
আলাদিনের চেরাগ
বিএনপি মহাসচিব বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ১৪ মাসের মধ্যে ‘আলাদিনের চেরাগ দিয়ে রাতারাতি বাংলাদেশকে সুন্দর বানিয়ে ফেলবে’- এই আশা জনগণ করে না। তবে সেই প্রক্রিয়াটা শুরু হোক, সেটাই চায়। তিনি বলেন, ‘জনগণ নির্বাচন দেখতে চায়। সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরে যেতে চায় এবং গণতন্ত্রের মধ্য দিয়েই জনগণের আশা-আকাক্সক্ষাগুলো পূরণ করতে চায়।’ পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবিতে জামায়াতে ইসলামীসহ ছয়টি দলের আন্দোলন প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এর লক্ষ্য একটাই, সেই লক্ষ্য হচ্ছে নির্বাচনকে বিলম্বিত করা, জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেয়ার যে প্রক্রিয়া, সেই প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করা। পিআর পদ্ধতি এ দেশের মানুষ গ্রহণ করবে না। আমাদের দলের পক্ষ থেকে তো আমরা স্পষ্ট করে বলেছি। এখন বলছি, জনগণই এই পদ্ধতি গ্রহণ করবে না, চাপিয়ে দেয়া কোনো কিছু এদেশের মানুষ গ্রহণ করবে না।’
সামনে কঠিন পরীক্ষা
নির্বাচন সামনে রেখে অনেক ‘ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত’ চলছে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সব ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তকে পরাজিত করবার শক্তি বাংলাদেশের মানুষের আছে’। তিনি বলেন, ‘এই সামনের যে পরীক্ষা, সেই পরীক্ষা কঠিন পরীক্ষা। প্রতিদিন আপনাদের এই ইউটিউব, টেলিভিশন, সোশ্যাল মিডিয়া, এগুলোতে বিভিন্ন রকম সত্য-মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আমার বিশ্বাস যে, আপনারা এখান থেকে সঠিক তথ্যটি বেছে নিতে সক্ষম। আমার বিশ্বাস, এই দেশের মানুষ কখনো ভুল করে না, এই দেশের মানুষ সবসময় সঠিক পথে এগিয়ে যায়।’
আগামী নির্বাচনে আবারও জনগণের রায় পাওয়ার আশা প্রকাশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নির্বাচনে যে কোনো দল জয়ী হতে পারে জনগণের ইচ্ছার ওপর দিয়ে। কিন্তু সেই দলকেই জনগণ বেছে নেবে, যে দল পরীক্ষিত, অতীতে যারা পরীক্ষা দিয়েছে, অর্থাৎ সরকারে ছিল, কাজ করেছে। যে দল মানুষকে আশার আলো দেখিয়েছে, যে দল অন্ধকার থেকে আলোতে টেনে নিয়ে এসেছে।’
জিয়ার অবদান
বিএনপি কীভাবে দেশকে এগিয়ে নিতে চায়, সে কথা বলতে গিয়ে সম্প্রতি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দুটি সাক্ষাৎকারের প্রসঙ্গ টানেন মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘বেকার সমস্যাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে বিদ্যমান সমস্যা সমাধানে বিএনপি ইতোমধ্যে কমিটি গঠন করে কাজ শুরু করেছে এবং অনেক কাজ সম্পন্ন করে রাখা হয়েছে।’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানই এই দেশে প্রথম সংবিধানে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ সংযোজন করেছিলেন। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানই প্রথম এই দেশের সংবিধানে আল্লাহর ওপর অবিচল আস্থা ও অবিশ্বাস কথাটি নিয়ে এসেছিলেন। এখন কিছু দল সেগুলোকে বিকৃত করে বিভিন্নভাবে বিএনপিকে চিত্রায়িত করার চেষ্টা করছে।’
একাত্তরের অনুপ্রেরণা
একাত্তর কখনো ‘মুছে ফেলা যাবে না’ মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই কথাটা খুব জরুরি, কিছু সংখ্যক মানুষ চেষ্টা করে আমাদের ১৯৭১ সালের ইতিহাসকে ভুলিয়ে দিতে। এটাও সবসময় মাথায় রাখতে হবে যে, একাত্তরে যুদ্ধ হয়েছিল বলেই আমরা স্বাধীন হয়েছিলাম, স্বাধীন হয়েছিলাম বলেই আজকে আমরা নতুন রাষ্ট্রের নতুন চিন্তা করতে পারছি, স্বাধীন হয়েছিলাম বলেই কিন্তু আমরা আজকে এই বাংলাদেশকে বাংলাদেশের মানুষের অবস্থার পরিবর্তন করবার যে সংগ্রাম সেই সংগ্রামে অংশ নিতে পারছি।’
ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফার সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন- জাগপার খন্দকার লুফুর রহমান, গণদলের এটিএম গোলাম মাওলা চৌধুরী, সাম্যবাদী সৈয়দ নুরুল ইসলাম, বাংলাদেশ ন্যাপের এমএন শাওন সাদিকী প্রমুখ।
ডেমোক্রেটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি ২০২৩ সালের ১২ অক্টোবর মারা যান।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
রোববার, ১২ অক্টোবর ২০২৫
জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে অনেক ‘ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত’ চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। জামায়াতে ইসলামীসহ ছয়টি দল সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবিতে যে আন্দোলন করছে, তার সমালোচনা করে তিনি বলেন, পিআর পদ্ধতি নিয়ে আন্দোলনের লক্ষ্যই হচ্ছে ‘নির্বাচন বিলম্বিত করা’; তবে জনগণ এটা গ্রহণ করবে না।
রোববার,(১২ অক্টোবর ২০২৫) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। তার বক্তব্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আগামী পরিকল্পনা ও তার পিতা জিয়াউর রহমানের অবদান, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের অনুপ্রেরণা, অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জনগণের প্রত্যাশার কথাও ওঠে আসে।
ডেমোক্রেটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ মনির দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি এ সভার আয়োজন করে।
আলাদিনের চেরাগ
বিএনপি মহাসচিব বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ১৪ মাসের মধ্যে ‘আলাদিনের চেরাগ দিয়ে রাতারাতি বাংলাদেশকে সুন্দর বানিয়ে ফেলবে’- এই আশা জনগণ করে না। তবে সেই প্রক্রিয়াটা শুরু হোক, সেটাই চায়। তিনি বলেন, ‘জনগণ নির্বাচন দেখতে চায়। সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরে যেতে চায় এবং গণতন্ত্রের মধ্য দিয়েই জনগণের আশা-আকাক্সক্ষাগুলো পূরণ করতে চায়।’ পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবিতে জামায়াতে ইসলামীসহ ছয়টি দলের আন্দোলন প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এর লক্ষ্য একটাই, সেই লক্ষ্য হচ্ছে নির্বাচনকে বিলম্বিত করা, জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেয়ার যে প্রক্রিয়া, সেই প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করা। পিআর পদ্ধতি এ দেশের মানুষ গ্রহণ করবে না। আমাদের দলের পক্ষ থেকে তো আমরা স্পষ্ট করে বলেছি। এখন বলছি, জনগণই এই পদ্ধতি গ্রহণ করবে না, চাপিয়ে দেয়া কোনো কিছু এদেশের মানুষ গ্রহণ করবে না।’
সামনে কঠিন পরীক্ষা
নির্বাচন সামনে রেখে অনেক ‘ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত’ চলছে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সব ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তকে পরাজিত করবার শক্তি বাংলাদেশের মানুষের আছে’। তিনি বলেন, ‘এই সামনের যে পরীক্ষা, সেই পরীক্ষা কঠিন পরীক্ষা। প্রতিদিন আপনাদের এই ইউটিউব, টেলিভিশন, সোশ্যাল মিডিয়া, এগুলোতে বিভিন্ন রকম সত্য-মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আমার বিশ্বাস যে, আপনারা এখান থেকে সঠিক তথ্যটি বেছে নিতে সক্ষম। আমার বিশ্বাস, এই দেশের মানুষ কখনো ভুল করে না, এই দেশের মানুষ সবসময় সঠিক পথে এগিয়ে যায়।’
আগামী নির্বাচনে আবারও জনগণের রায় পাওয়ার আশা প্রকাশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নির্বাচনে যে কোনো দল জয়ী হতে পারে জনগণের ইচ্ছার ওপর দিয়ে। কিন্তু সেই দলকেই জনগণ বেছে নেবে, যে দল পরীক্ষিত, অতীতে যারা পরীক্ষা দিয়েছে, অর্থাৎ সরকারে ছিল, কাজ করেছে। যে দল মানুষকে আশার আলো দেখিয়েছে, যে দল অন্ধকার থেকে আলোতে টেনে নিয়ে এসেছে।’
জিয়ার অবদান
বিএনপি কীভাবে দেশকে এগিয়ে নিতে চায়, সে কথা বলতে গিয়ে সম্প্রতি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দুটি সাক্ষাৎকারের প্রসঙ্গ টানেন মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘বেকার সমস্যাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে বিদ্যমান সমস্যা সমাধানে বিএনপি ইতোমধ্যে কমিটি গঠন করে কাজ শুরু করেছে এবং অনেক কাজ সম্পন্ন করে রাখা হয়েছে।’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানই এই দেশে প্রথম সংবিধানে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ সংযোজন করেছিলেন। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানই প্রথম এই দেশের সংবিধানে আল্লাহর ওপর অবিচল আস্থা ও অবিশ্বাস কথাটি নিয়ে এসেছিলেন। এখন কিছু দল সেগুলোকে বিকৃত করে বিভিন্নভাবে বিএনপিকে চিত্রায়িত করার চেষ্টা করছে।’
একাত্তরের অনুপ্রেরণা
একাত্তর কখনো ‘মুছে ফেলা যাবে না’ মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই কথাটা খুব জরুরি, কিছু সংখ্যক মানুষ চেষ্টা করে আমাদের ১৯৭১ সালের ইতিহাসকে ভুলিয়ে দিতে। এটাও সবসময় মাথায় রাখতে হবে যে, একাত্তরে যুদ্ধ হয়েছিল বলেই আমরা স্বাধীন হয়েছিলাম, স্বাধীন হয়েছিলাম বলেই আজকে আমরা নতুন রাষ্ট্রের নতুন চিন্তা করতে পারছি, স্বাধীন হয়েছিলাম বলেই কিন্তু আমরা আজকে এই বাংলাদেশকে বাংলাদেশের মানুষের অবস্থার পরিবর্তন করবার যে সংগ্রাম সেই সংগ্রামে অংশ নিতে পারছি।’
ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফার সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন- জাগপার খন্দকার লুফুর রহমান, গণদলের এটিএম গোলাম মাওলা চৌধুরী, সাম্যবাদী সৈয়দ নুরুল ইসলাম, বাংলাদেশ ন্যাপের এমএন শাওন সাদিকী প্রমুখ।
ডেমোক্রেটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি ২০২৩ সালের ১২ অক্টোবর মারা যান।