গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন সংক্রান্ত সাম্প্রতিক আলোচনায় বিএনপির দাবির পক্ষে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ব্যক্তিগত অবস্থান নিয়েছেন— এমন অভিযোগে উদ্বেগ জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
রোববার পাঠানো এক চিঠিতে দলটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন আইন উপদেষ্টার উদ্দেশে লিখেছেন, একজন উপদেষ্টা হিসেবে তিনি রাষ্ট্রের নিরপেক্ষ আইন উপদেষ্টা, কোনো রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি নন। নির্বাচনি আইন সংশোধনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলকে এককভাবে আশ্বাস দেওয়া জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পদের নিরপেক্ষতা ও দায়িত্ববোধের পরিপন্থী।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ২৩ অক্টোবর উপদেষ্টা পরিষদ সংশোধিত আরপিও অনুমোদন করে, যার মাধ্যমে জোটবদ্ধ হয়ে অন্য দলের প্রতীকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ বাতিল করা হয়। অধ্যাদেশ আকারে জারি হলে দলগুলোকে নিজেদের প্রতীকেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে।
এই সংশোধনের বিরোধিতা করে বিএনপিসহ কয়েকটি দল নির্বাচন কমিশন ও আইন মন্ত্রণালয়ে আপত্তি জানায়। পরবর্তীতে সরকার আরপিও অধ্যাদেশের খসড়ায় আবার পরিবর্তন আনবে বলে একটি জাতীয় দৈনিকের প্রতিবেদনে জানানো হয়।
এই প্রেক্ষাপটে আইন উপদেষ্টাকে লেখা চিঠিতে এনসিপি জানায়, আসিফ নজরুলের ব্যক্তিগত আশ্বাস ও অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। দলটি মনে করে, একজন উপদেষ্টা হিসেবে তার দায়িত্ব রাষ্ট্রের প্রতি নিরপেক্ষতা বজায় রাখা, কোনো রাজনৈতিক দলকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া নয়।
চিঠিতে আখতার হোসেন আরও লিখেছেন, “গণতন্ত্রের মূলনীতি রাজনৈতিক দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহিতা। জনগণ যে দলের প্রতীকে ভোট দেয়, সেই দলই নির্বাচনের পর তাদের কাছে দায়বদ্ধ থাকে। কিন্তু একাধিক দল বড় দলের প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে ভোটার বুঝতে পারে না, কাকে ভোট দিচ্ছেন বা কোন নীতিকে সমর্থন করছেন।”
তার ভাষায়, এতে ভোটার-দায়বদ্ধতার সম্পর্ক দুর্বল হয় এবং গণতান্ত্রিক স্বচ্ছতা ক্ষুণ্ন হয়।
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন ও নির্বাচন কমিশনের অবস্থানকে সমর্থন জানিয়ে চিঠিতে বলা হয়, “গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২-এর ২০ অনুচ্ছেদ সংশোধন করে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা প্রয়োজন— কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল অন্য দলের প্রতীকে নির্বাচন করতে পারবে না।”
এনসিপি প্রস্তাব করেছে, যদি কোনো দল জোটবদ্ধ হয়ে প্রার্থী দিতে চায়, তাহলে তাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে নতুন রাজনৈতিক সত্তা হিসেবে নিবন্ধন নিতে হবে।
দলটির মতে, “এই সংশোধন রাজনৈতিক বহুত্ববাদকে সংকুচিত করবে না, বরং প্রকৃত গণতান্ত্রিক বহুত্ববাদকে শক্তিশালী করবে। এতে প্রতিটি দলকে নিজ নিজ নীতি, নাম ও নেতৃত্বের দায় নিজেরা বহন করতে হবে— যা ভোটারের অধিকার ও সাংবিধানিক ভারসাম্য রক্ষায় জরুরি।”
চিঠির শেষে সরকারকে দুটি বিষয়ে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করার অনুরোধ জানিয়েছে এনসিপি।
আইন উপদেষ্টার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি বলে জানা গেছে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
রোববার, ০২ নভেম্বর ২০২৫
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন সংক্রান্ত সাম্প্রতিক আলোচনায় বিএনপির দাবির পক্ষে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ব্যক্তিগত অবস্থান নিয়েছেন— এমন অভিযোগে উদ্বেগ জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
রোববার পাঠানো এক চিঠিতে দলটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন আইন উপদেষ্টার উদ্দেশে লিখেছেন, একজন উপদেষ্টা হিসেবে তিনি রাষ্ট্রের নিরপেক্ষ আইন উপদেষ্টা, কোনো রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি নন। নির্বাচনি আইন সংশোধনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলকে এককভাবে আশ্বাস দেওয়া জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পদের নিরপেক্ষতা ও দায়িত্ববোধের পরিপন্থী।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ২৩ অক্টোবর উপদেষ্টা পরিষদ সংশোধিত আরপিও অনুমোদন করে, যার মাধ্যমে জোটবদ্ধ হয়ে অন্য দলের প্রতীকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ বাতিল করা হয়। অধ্যাদেশ আকারে জারি হলে দলগুলোকে নিজেদের প্রতীকেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে।
এই সংশোধনের বিরোধিতা করে বিএনপিসহ কয়েকটি দল নির্বাচন কমিশন ও আইন মন্ত্রণালয়ে আপত্তি জানায়। পরবর্তীতে সরকার আরপিও অধ্যাদেশের খসড়ায় আবার পরিবর্তন আনবে বলে একটি জাতীয় দৈনিকের প্রতিবেদনে জানানো হয়।
এই প্রেক্ষাপটে আইন উপদেষ্টাকে লেখা চিঠিতে এনসিপি জানায়, আসিফ নজরুলের ব্যক্তিগত আশ্বাস ও অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। দলটি মনে করে, একজন উপদেষ্টা হিসেবে তার দায়িত্ব রাষ্ট্রের প্রতি নিরপেক্ষতা বজায় রাখা, কোনো রাজনৈতিক দলকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া নয়।
চিঠিতে আখতার হোসেন আরও লিখেছেন, “গণতন্ত্রের মূলনীতি রাজনৈতিক দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহিতা। জনগণ যে দলের প্রতীকে ভোট দেয়, সেই দলই নির্বাচনের পর তাদের কাছে দায়বদ্ধ থাকে। কিন্তু একাধিক দল বড় দলের প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে ভোটার বুঝতে পারে না, কাকে ভোট দিচ্ছেন বা কোন নীতিকে সমর্থন করছেন।”
তার ভাষায়, এতে ভোটার-দায়বদ্ধতার সম্পর্ক দুর্বল হয় এবং গণতান্ত্রিক স্বচ্ছতা ক্ষুণ্ন হয়।
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন ও নির্বাচন কমিশনের অবস্থানকে সমর্থন জানিয়ে চিঠিতে বলা হয়, “গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২-এর ২০ অনুচ্ছেদ সংশোধন করে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা প্রয়োজন— কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল অন্য দলের প্রতীকে নির্বাচন করতে পারবে না।”
এনসিপি প্রস্তাব করেছে, যদি কোনো দল জোটবদ্ধ হয়ে প্রার্থী দিতে চায়, তাহলে তাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে নতুন রাজনৈতিক সত্তা হিসেবে নিবন্ধন নিতে হবে।
দলটির মতে, “এই সংশোধন রাজনৈতিক বহুত্ববাদকে সংকুচিত করবে না, বরং প্রকৃত গণতান্ত্রিক বহুত্ববাদকে শক্তিশালী করবে। এতে প্রতিটি দলকে নিজ নিজ নীতি, নাম ও নেতৃত্বের দায় নিজেরা বহন করতে হবে— যা ভোটারের অধিকার ও সাংবিধানিক ভারসাম্য রক্ষায় জরুরি।”
চিঠির শেষে সরকারকে দুটি বিষয়ে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করার অনুরোধ জানিয়েছে এনসিপি।
আইন উপদেষ্টার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি বলে জানা গেছে।