কুমিল্লা সিটি নির্বাচন
দিন যতই যাচ্ছে ততই জমজমাট হয়ে ওঠছে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের নির্বাচনী মাঠ। তফশিল ঘোষণার পর থেকে প্রচারণা ও লবিংয়ে সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা দীর্ঘ হলেও বর্তমানে তা কমে এসেছে। আওয়ামী লীগ থেকে ১৪ জন মনোনয়ন প্রত্যাশী থাকলেও নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন সদর আসনের এমপি হাজী আ.ক.ম বাহাউদ্দিনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরফানুল হক রিফাত। রাজনৈতিক বিভেদ ভুলে দলীয় প্রার্থীকে জয়লাভে ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগ।
অন্যদিকে বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলেও স্বতন্ত্র পদে থেকে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন কুমিল্লা (দক্ষিণ) জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের দুইবারের মেয়র মনিরুল হক সাক্কু। এ নির্বাচনে তিনি ছাড়াও স্বতন্ত্র ব্যানারে প্রার্থী হতে যাচ্ছেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি নিজাম উদ্দিন কায়সার। বিবদমান দুুটি গ্রুপ থেকে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় বিএনপিতে দেখা দিয়েছে বিভক্তি।
জানা গেছে, ২০১২ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচনে বিএনপি থেকে পদত্যাগ করে নাগরিক কমিটির ব্যানারে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী অধ্যক্ষ আফজল খানকে হারিয়ে প্রথম মেয়র নর্বাচিত হন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক মো. মনিরুল হক সাক্কু। পরে ২০১৭ সালের ৩০ মার্চ বিএনপির মনোনয়নে সাক্কু নৌকার প্রার্থী আঞ্জুম সুলতানা সীমাকে হারিয়ে টানা ২য় বারের মতো মেয়র নির্বাচিত হন।
আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত বলেন, যারা নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন সবাইকে নিয়ে আমি কাজ করব। তারা যেন নৌকার প্রচারণায় অংশ নেয় সেই আহ্বানও জানাব। কোন্দল ও মান-অভিমান ভুলে আশা করি সবাই নৌকার বিজয়ের জন্য মাঠে কাজ করবে। আগামী ১৫ জুন নৌকা প্রতীকেরই বিজয় হবে। মনোনয়ন প্রত্যাশীদের অন্যতম ছিলেন নারী আসনের এমপি ও প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যক্ষ আফজল খানের কন্যা আঞ্জুম সুলতানা সীমা। সদর আসনের এমপি হাজী আ.ক.ম বাহাউদ্দিনের সঙ্গে তাদের পরিবারের রাজনৈতিক বিরোধ দীর্ঘদিনের। তাই নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীকে সমর্থন দেয়ার বিষয়ে আঞ্জুম সুলতানা সীমা বলেন, আমাদের নেত্রী এ মনোনয়ন দিয়েছেন, আমরা নেত্রীর সিদ্ধান্তের বাইরে যেতে পারি না এবং যাবও না। তাই নৌকার বাইরে গিয়ে অন্য কাউকে সমর্থন করার প্রশ্ন আসে না। আমি সংসদ সদস্য হওয়ায় নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করতে পারব না।
দলীয় প্রার্থীকে বিজয়ের লক্ষ্যে তৃণমূল পর্যায়ের সব নেতাকর্মী বিভেদ ভুলে আজ ঐক্যবদ্ধ। নির্বাচনে নৌকারই বিজয় হবে। এদিকে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচনের অংশগ্রহণের বিষয়ে সিটি মেয়র মনিরুল হক সাক্কু বলেন, ২৭টি ওয়ার্ডে আমার অনেক নেতাকর্মী, সমর্থক রয়েছে। এছাড়া নগরবাসী আমাকে ভালোবাসেন। তারা চান আমি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করি। সিটি নির্বাচন স্থানীয় সরকারের নির্বাচন, এটা তো জাতীয় নির্বাচন নয়, এখানে স্বতন্ত্র প্রতীকে আমি নির্বাচন করতেই পারি। নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হলে ইনশাআল্লাহ আমিই বিজয়ী হব। সাক্কু বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাকে নগরীর উন্নয়নে অনেক টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। নগরীর অনেক কাজ এখনো শেষ করতে পারেনি।
তাই নির্বাচিত হয়ে এসব সমস্যার সমাধান করতে চাই। অন্যদিকে বিএনপি থেকে মনিরুল হক সাক্কু ছাড়াও স্বতন্ত্র ব্যানারে প্রার্থী হতে যাচ্ছেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি নিজাম উদ্দিন কায়সার। তিনি দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাজী আমিন উর রশিদ ইয়াছিনের শ্যালক। নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে নিজাম উদ্দিন কায়সার বলেন, দলীয় নেতাকর্মীদের অনুরোধে প্রার্থী হয়েছি। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাজী আমিন উর রশিদ ইয়াছিন বলেন, এ সরকারের অধীনে আমরা (বিএনপি) কোন নির্বাচনেই যাচ্ছি না, কেউ দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে অংশ নিলে বিষয়টি দল সিদ্ধান্ত নিবে। রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শাহেদুন্নবী চৌধুরী বলেন, এ সিটির ২৭টি সাধারণ ও ৯টি সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডে মোট ভোটার ২ লাখ ২৭ হাজার ৭৯২ জন। এদের মধ্যে পুরুষ এক লাখ ১১ হাজার ৬০০ ও নারী এক লাখ ১৬ হাজার ১৯১ জন। ১০৫ ভোটকেন্দ্রের সবকটিতে ইভিএমে ভোট নেয়া হবে। তফশিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ১৭ মে ও মনোনয়নপত্র বাছাই ১৯ মে।
রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের করা যাবে ২০-২২ মে পর্যন্ত। আপিল নিষ্পত্তি করা হবে ২৩-২৫ মে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৬ মে। প্রতীক বরাদ্দ ২৭ মে। আগামী ১৫ জুন ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
কুমিল্লা সিটি নির্বাচন
রোববার, ১৫ মে ২০২২
দিন যতই যাচ্ছে ততই জমজমাট হয়ে ওঠছে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের নির্বাচনী মাঠ। তফশিল ঘোষণার পর থেকে প্রচারণা ও লবিংয়ে সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা দীর্ঘ হলেও বর্তমানে তা কমে এসেছে। আওয়ামী লীগ থেকে ১৪ জন মনোনয়ন প্রত্যাশী থাকলেও নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন সদর আসনের এমপি হাজী আ.ক.ম বাহাউদ্দিনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরফানুল হক রিফাত। রাজনৈতিক বিভেদ ভুলে দলীয় প্রার্থীকে জয়লাভে ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগ।
অন্যদিকে বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলেও স্বতন্ত্র পদে থেকে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন কুমিল্লা (দক্ষিণ) জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের দুইবারের মেয়র মনিরুল হক সাক্কু। এ নির্বাচনে তিনি ছাড়াও স্বতন্ত্র ব্যানারে প্রার্থী হতে যাচ্ছেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি নিজাম উদ্দিন কায়সার। বিবদমান দুুটি গ্রুপ থেকে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় বিএনপিতে দেখা দিয়েছে বিভক্তি।
জানা গেছে, ২০১২ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচনে বিএনপি থেকে পদত্যাগ করে নাগরিক কমিটির ব্যানারে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী অধ্যক্ষ আফজল খানকে হারিয়ে প্রথম মেয়র নর্বাচিত হন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক মো. মনিরুল হক সাক্কু। পরে ২০১৭ সালের ৩০ মার্চ বিএনপির মনোনয়নে সাক্কু নৌকার প্রার্থী আঞ্জুম সুলতানা সীমাকে হারিয়ে টানা ২য় বারের মতো মেয়র নির্বাচিত হন।
আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত বলেন, যারা নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন সবাইকে নিয়ে আমি কাজ করব। তারা যেন নৌকার প্রচারণায় অংশ নেয় সেই আহ্বানও জানাব। কোন্দল ও মান-অভিমান ভুলে আশা করি সবাই নৌকার বিজয়ের জন্য মাঠে কাজ করবে। আগামী ১৫ জুন নৌকা প্রতীকেরই বিজয় হবে। মনোনয়ন প্রত্যাশীদের অন্যতম ছিলেন নারী আসনের এমপি ও প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যক্ষ আফজল খানের কন্যা আঞ্জুম সুলতানা সীমা। সদর আসনের এমপি হাজী আ.ক.ম বাহাউদ্দিনের সঙ্গে তাদের পরিবারের রাজনৈতিক বিরোধ দীর্ঘদিনের। তাই নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীকে সমর্থন দেয়ার বিষয়ে আঞ্জুম সুলতানা সীমা বলেন, আমাদের নেত্রী এ মনোনয়ন দিয়েছেন, আমরা নেত্রীর সিদ্ধান্তের বাইরে যেতে পারি না এবং যাবও না। তাই নৌকার বাইরে গিয়ে অন্য কাউকে সমর্থন করার প্রশ্ন আসে না। আমি সংসদ সদস্য হওয়ায় নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করতে পারব না।
দলীয় প্রার্থীকে বিজয়ের লক্ষ্যে তৃণমূল পর্যায়ের সব নেতাকর্মী বিভেদ ভুলে আজ ঐক্যবদ্ধ। নির্বাচনে নৌকারই বিজয় হবে। এদিকে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচনের অংশগ্রহণের বিষয়ে সিটি মেয়র মনিরুল হক সাক্কু বলেন, ২৭টি ওয়ার্ডে আমার অনেক নেতাকর্মী, সমর্থক রয়েছে। এছাড়া নগরবাসী আমাকে ভালোবাসেন। তারা চান আমি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করি। সিটি নির্বাচন স্থানীয় সরকারের নির্বাচন, এটা তো জাতীয় নির্বাচন নয়, এখানে স্বতন্ত্র প্রতীকে আমি নির্বাচন করতেই পারি। নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হলে ইনশাআল্লাহ আমিই বিজয়ী হব। সাক্কু বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাকে নগরীর উন্নয়নে অনেক টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। নগরীর অনেক কাজ এখনো শেষ করতে পারেনি।
তাই নির্বাচিত হয়ে এসব সমস্যার সমাধান করতে চাই। অন্যদিকে বিএনপি থেকে মনিরুল হক সাক্কু ছাড়াও স্বতন্ত্র ব্যানারে প্রার্থী হতে যাচ্ছেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি নিজাম উদ্দিন কায়সার। তিনি দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাজী আমিন উর রশিদ ইয়াছিনের শ্যালক। নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে নিজাম উদ্দিন কায়সার বলেন, দলীয় নেতাকর্মীদের অনুরোধে প্রার্থী হয়েছি। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাজী আমিন উর রশিদ ইয়াছিন বলেন, এ সরকারের অধীনে আমরা (বিএনপি) কোন নির্বাচনেই যাচ্ছি না, কেউ দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে অংশ নিলে বিষয়টি দল সিদ্ধান্ত নিবে। রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শাহেদুন্নবী চৌধুরী বলেন, এ সিটির ২৭টি সাধারণ ও ৯টি সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডে মোট ভোটার ২ লাখ ২৭ হাজার ৭৯২ জন। এদের মধ্যে পুরুষ এক লাখ ১১ হাজার ৬০০ ও নারী এক লাখ ১৬ হাজার ১৯১ জন। ১০৫ ভোটকেন্দ্রের সবকটিতে ইভিএমে ভোট নেয়া হবে। তফশিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ১৭ মে ও মনোনয়নপত্র বাছাই ১৯ মে।
রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের করা যাবে ২০-২২ মে পর্যন্ত। আপিল নিষ্পত্তি করা হবে ২৩-২৫ মে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৬ মে। প্রতীক বরাদ্দ ২৭ মে। আগামী ১৫ জুন ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।