২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের জুন, এই সময়টাতে যতগুলো ম্যাচ তিনি খেলেছেন তার মধ্যে হেরেছেন মাত্র ৪টি ম্যাচ। এই সময়ে জিতেছেন ৮টি শিরোপা, জিতেছেন ৪টি টুর্নামেন্টে সেরা খেলোয়াড়ের পুরষ্কার। মানে যতগুলো ম্যাচ হেরেছেন তার দ্বিগুন শিরোপা জিতেছেন।
বলছি স্প্যানিশ ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার রদ্রিগো হার্নান্দেজ এর কথা, সংক্ষেপে আমরা যাকে চিনি রদ্রি নামে। সদ্য শেষ হওয়া ২০২৪ ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ শিরোপা জিতেছেন তার দেশের হয়ে। রেকর্ড গড়েছে স্পেন, সেই সাথে রেকর্ড গড়েছেন তিনিও। ফুটবলের পরাশক্তি জার্মানিকে পিছনে ফেলে স্পেন এখন সর্বোচ্চ ইউরো জয়ী দেশ। সেই সাথে এবারের আসরের খেলোয়াড়দের ব্যাক্তিগত সব পুরষ্কারও তুলে নিয়েছে স্পেন।
ফাইনালের ম্যাচ সেরা হয়েছেন নিকো উইলিয়ামস, টুর্নামেন্টের সেরা তরুণ খেলোয়াড় হয়েছেন লামিনে ইয়ামাল, সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছেন যৌথভাবে দানি ওলমো, এবং টুর্নামেন্ট সেরা খেলোয়াড় পুরষ্কারটি পেয়েছেন রদ্রি নিজে।
নিজের দেশকে ইউরোপ সেরা করার আগে নিজের ক্লাবকে করে এসেছেন ইংল্যান্ড সেরা। তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা শেষে লীগের শেষ রাউন্ডে গিয়ে শিরোপা নিশ্চিত করে তার ক্লাব ম্যাঞ্চেষ্টার সিটি। পেপ গার্দিওলার শিষ্যরা শেষ ম্যাচটি হারলে শিরোপাও হাতছাড়া করে ফেলতো। কিন্তু ওয়েস্টহ্যামের বিপক্ষে ৩-১ এর জয় তুলে নেয়, যেখানে একটি গোল আসে রদ্রির পা থেকেই।
একজন ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডারের কাজ হচ্ছে দলের রক্ষণে ভারসাম্য রাখা, প্রতিপক্ষের গোল স্কোরারকে সব সময় নজড়ে রাখা, ডিফেন্ডারদের অবর্তমানে তাদের পজিশনকে রিপ্লেস করা, মধ্যমাঠকে নিয়ন্ত্রণ করা, কাউন্টার অ্যাটাককে মাঝমাঠেই রুখে দেয়া।
রদ্রি এমন একজন খেলোয়াড়, যিনি তার ডিফেন্সের পাশাপাশি বল ক্যারি করেন, পসেশন ওন করে, বিল্ডাপে সহযোগীতা করে, বল ডিস্ট্রিবিউট করে। সে একজন ফিজিক্যালি স্ট্রং, ট্যাকেল এবং ডুয়েলেও স্ট্রং। পাশাপাশি তার পাসিং এবং ভিশনও অত্যন্ত স্ট্রং, ডিপ্লায়িং প্লে মেকার হিসেবেও অপারেট করতে পারে।
এখানেই শেষ নয়, বর্তমানে রদ্রি গোল করেও দলকে জয় তুলে দিতে পারেন। গত মৌসুমে দলের হয়ে লীগে করেছেন ৮ গোল, ৯ এসিস্ট। দলের প্রিমিয়ার লীগ জয়ে তার ভূমিকা ছিলো অনবদ্য।
ইঞ্জুরি নামক এক ভয়ংকর দানব অসংখ্য খেলোয়াড়ের ক্যারিয়ার নষ্ট করে দিয়েছে। বারবার ইঞ্জুরির জন্য রিদম ধরে রাখাটাও কষ্টকর। ফুটবলে ইঞ্জুরি একটা সাধারণ ব্যাপার। এর মধ্যে যারা নিজেদের সচেতনতার সাথে ফিট রাখতে পারেন, রদ্রি তাদের একজন। তার ফিজিক্যাল ফিটনেস অসাধারণ। গত মৌসুমে লীগে ৩৮ ম্যাচের মধ্যে মাত্র ৪ টি ম্যাচ মিস করেছেন, যার মধ্যে ১ টি ছিলো আবার কার্ড সাসপেশন। ৩৪ টি ম্যাচেই তাকে মাঠে পাওয়া গেছে। তার আগের সিজনেও ৩৮ টির মধ্যে ৩৬ ম্যাচ মাঠে ছিলেন।
শুধু যে লীগেই ভালো তা নয়, ইউরোপের ক্লাব ফুটবলের সর্বোচ্চ আসর চ্যাম্পিয়ন্স লীগেও রদ্রি থাকেন সর্বদা ফ্রন্ট লাইনার। করেছেন ১ গোল, ২ এসিস্ট।
গত মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্সলীগের ফাইনালের একমাত্র গোলটিও আসে তার পা থেকে, এবং ম্যাঞ্চেষ্টার সিটি জিতে ক্লাব ইতিহাসের প্রথম ইউসিএল শিরোপা, একই সাথে সম্পন্ন করে ট্রেবল। উয়েফা সুপার কাপের ফাইনালে একমাত্র গোলের সহযোগী ছিলো রদ্রি।
পেপ গার্দিওলার মতে বর্তমান বিশ্বের ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডারদের তালিকা করলে সর্বপ্রথম নামটাই আসবে রদ্রির। লিজেন্ড রিও ফার্দিনান্দ এর মতে রদ্রি প্রিমিয়ার লীগ ইতিহাসের সেরা ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার।
২৮ বছর বয়সি এই ভার্সেটাইল মিডফিল্ডারের জন্ম স্পেনের রাজধানি মাদ্রিদে। ফুটবলের শুরুটাও লোকাল ক্লাব আথলেতিকো মাদ্রিদের যুব একাডেমি থেকে। ল্যাক অব ফিজিক্যাল স্ট্রেংথ অর্থাৎ শারীরিক শক্তির ঘাটতির অজুহাতে ২০১৩ সালে আথলেতিকো রদ্রিকে ছেড়ে দেয় ভিয়ারিয়ালের কাছে।
পরবর্তিতে তার উন্নতি দেখে আথলেতিকো মাদ্রিদ আবারও বাই ব্যাক অপশন দিয়ে ফেরত আনে তাকে। এক বছর পরেই পেপ গার্দিওলা তাকে সাড়ে ৬২ মিলিয়ন পাউন্ড খরচ করে ম্যাঞ্চেষ্টারে নিয়ে আসেন।
রদ্রিগোর স্ট্যাট, শিরোপা, ব্যাক্তিগত অর্জনের রেকর্ড দিয়ে অনেকেরই ধারণা এবছরের ব্যালন ডি অর পুরষ্কারও হয়তো তার হাতে উঠতে যাচ্ছে।
অভিনন্দন রদ্রিগো হার্নান্দেজ, অভিনন্দন স্পেন।
সোমবার, ১৫ জুলাই ২০২৪
২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের জুন, এই সময়টাতে যতগুলো ম্যাচ তিনি খেলেছেন তার মধ্যে হেরেছেন মাত্র ৪টি ম্যাচ। এই সময়ে জিতেছেন ৮টি শিরোপা, জিতেছেন ৪টি টুর্নামেন্টে সেরা খেলোয়াড়ের পুরষ্কার। মানে যতগুলো ম্যাচ হেরেছেন তার দ্বিগুন শিরোপা জিতেছেন।
বলছি স্প্যানিশ ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার রদ্রিগো হার্নান্দেজ এর কথা, সংক্ষেপে আমরা যাকে চিনি রদ্রি নামে। সদ্য শেষ হওয়া ২০২৪ ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ শিরোপা জিতেছেন তার দেশের হয়ে। রেকর্ড গড়েছে স্পেন, সেই সাথে রেকর্ড গড়েছেন তিনিও। ফুটবলের পরাশক্তি জার্মানিকে পিছনে ফেলে স্পেন এখন সর্বোচ্চ ইউরো জয়ী দেশ। সেই সাথে এবারের আসরের খেলোয়াড়দের ব্যাক্তিগত সব পুরষ্কারও তুলে নিয়েছে স্পেন।
ফাইনালের ম্যাচ সেরা হয়েছেন নিকো উইলিয়ামস, টুর্নামেন্টের সেরা তরুণ খেলোয়াড় হয়েছেন লামিনে ইয়ামাল, সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছেন যৌথভাবে দানি ওলমো, এবং টুর্নামেন্ট সেরা খেলোয়াড় পুরষ্কারটি পেয়েছেন রদ্রি নিজে।
নিজের দেশকে ইউরোপ সেরা করার আগে নিজের ক্লাবকে করে এসেছেন ইংল্যান্ড সেরা। তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা শেষে লীগের শেষ রাউন্ডে গিয়ে শিরোপা নিশ্চিত করে তার ক্লাব ম্যাঞ্চেষ্টার সিটি। পেপ গার্দিওলার শিষ্যরা শেষ ম্যাচটি হারলে শিরোপাও হাতছাড়া করে ফেলতো। কিন্তু ওয়েস্টহ্যামের বিপক্ষে ৩-১ এর জয় তুলে নেয়, যেখানে একটি গোল আসে রদ্রির পা থেকেই।
একজন ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডারের কাজ হচ্ছে দলের রক্ষণে ভারসাম্য রাখা, প্রতিপক্ষের গোল স্কোরারকে সব সময় নজড়ে রাখা, ডিফেন্ডারদের অবর্তমানে তাদের পজিশনকে রিপ্লেস করা, মধ্যমাঠকে নিয়ন্ত্রণ করা, কাউন্টার অ্যাটাককে মাঝমাঠেই রুখে দেয়া।
রদ্রি এমন একজন খেলোয়াড়, যিনি তার ডিফেন্সের পাশাপাশি বল ক্যারি করেন, পসেশন ওন করে, বিল্ডাপে সহযোগীতা করে, বল ডিস্ট্রিবিউট করে। সে একজন ফিজিক্যালি স্ট্রং, ট্যাকেল এবং ডুয়েলেও স্ট্রং। পাশাপাশি তার পাসিং এবং ভিশনও অত্যন্ত স্ট্রং, ডিপ্লায়িং প্লে মেকার হিসেবেও অপারেট করতে পারে।
এখানেই শেষ নয়, বর্তমানে রদ্রি গোল করেও দলকে জয় তুলে দিতে পারেন। গত মৌসুমে দলের হয়ে লীগে করেছেন ৮ গোল, ৯ এসিস্ট। দলের প্রিমিয়ার লীগ জয়ে তার ভূমিকা ছিলো অনবদ্য।
ইঞ্জুরি নামক এক ভয়ংকর দানব অসংখ্য খেলোয়াড়ের ক্যারিয়ার নষ্ট করে দিয়েছে। বারবার ইঞ্জুরির জন্য রিদম ধরে রাখাটাও কষ্টকর। ফুটবলে ইঞ্জুরি একটা সাধারণ ব্যাপার। এর মধ্যে যারা নিজেদের সচেতনতার সাথে ফিট রাখতে পারেন, রদ্রি তাদের একজন। তার ফিজিক্যাল ফিটনেস অসাধারণ। গত মৌসুমে লীগে ৩৮ ম্যাচের মধ্যে মাত্র ৪ টি ম্যাচ মিস করেছেন, যার মধ্যে ১ টি ছিলো আবার কার্ড সাসপেশন। ৩৪ টি ম্যাচেই তাকে মাঠে পাওয়া গেছে। তার আগের সিজনেও ৩৮ টির মধ্যে ৩৬ ম্যাচ মাঠে ছিলেন।
শুধু যে লীগেই ভালো তা নয়, ইউরোপের ক্লাব ফুটবলের সর্বোচ্চ আসর চ্যাম্পিয়ন্স লীগেও রদ্রি থাকেন সর্বদা ফ্রন্ট লাইনার। করেছেন ১ গোল, ২ এসিস্ট।
গত মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্সলীগের ফাইনালের একমাত্র গোলটিও আসে তার পা থেকে, এবং ম্যাঞ্চেষ্টার সিটি জিতে ক্লাব ইতিহাসের প্রথম ইউসিএল শিরোপা, একই সাথে সম্পন্ন করে ট্রেবল। উয়েফা সুপার কাপের ফাইনালে একমাত্র গোলের সহযোগী ছিলো রদ্রি।
পেপ গার্দিওলার মতে বর্তমান বিশ্বের ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডারদের তালিকা করলে সর্বপ্রথম নামটাই আসবে রদ্রির। লিজেন্ড রিও ফার্দিনান্দ এর মতে রদ্রি প্রিমিয়ার লীগ ইতিহাসের সেরা ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার।
২৮ বছর বয়সি এই ভার্সেটাইল মিডফিল্ডারের জন্ম স্পেনের রাজধানি মাদ্রিদে। ফুটবলের শুরুটাও লোকাল ক্লাব আথলেতিকো মাদ্রিদের যুব একাডেমি থেকে। ল্যাক অব ফিজিক্যাল স্ট্রেংথ অর্থাৎ শারীরিক শক্তির ঘাটতির অজুহাতে ২০১৩ সালে আথলেতিকো রদ্রিকে ছেড়ে দেয় ভিয়ারিয়ালের কাছে।
পরবর্তিতে তার উন্নতি দেখে আথলেতিকো মাদ্রিদ আবারও বাই ব্যাক অপশন দিয়ে ফেরত আনে তাকে। এক বছর পরেই পেপ গার্দিওলা তাকে সাড়ে ৬২ মিলিয়ন পাউন্ড খরচ করে ম্যাঞ্চেষ্টারে নিয়ে আসেন।
রদ্রিগোর স্ট্যাট, শিরোপা, ব্যাক্তিগত অর্জনের রেকর্ড দিয়ে অনেকেরই ধারণা এবছরের ব্যালন ডি অর পুরষ্কারও হয়তো তার হাতে উঠতে যাচ্ছে।
অভিনন্দন রদ্রিগো হার্নান্দেজ, অভিনন্দন স্পেন।