নারী কোপা আমেরিকার রোমাঞ্চকর ফাইনালে কলম্বিয়াকে টাইব্রেকারে ৫-৪ গোলে হারিয়ে শিরোপা ধরে রেখেছে ব্রাজিলের মেয়েরা। এনিয়ে নবম বারের মত মহাদেশীয় এই টুর্নামেন্টের শিরোপা জেতার কৃতিত্ব দেখালো সেলেসাওরা।
ইকুয়েডরে অনুষ্ঠিত ফাইনালে কলম্বিয়া তিনবার লিড নিয়েও তা ধরে রাখতে পারেনি। প্রতিবারই দারুণভাবে ব্রাজিল ম্যাচে ফিরে আসে। ব্রাজিলিয়ান লিজেন্ড মার্তার ইনজুরি টাইমের গোলে ব্রাজিল সমতায় ফিরে। এরপর আবারও ১০৫ মিনিটে মার্তা গোল করে ব্রাজিলকে জয়ের পথে নিয়ে যান। কিন্তু ১১৫ মিনিটে কলম্বিয়ার হয়ে সমতাসূচক গোলটি করেন লেইসি সান্তোস। অতিরিক্ত সময়ের খেলা ৪-৪ গোলে শেষ হলে ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণে টাইব্রেকারের প্রয়োজন হয়।
উভয় দলই ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল উপহার দিয়েছে। ২৫ মিনিটে কলম্বিয়ার লিন্ডা কেইসেডো লো ফিনিশিংয়ে দলকে এগিয়ে দেন। প্রথমার্ধের একেবারে শেষ মুহূর্তে পেনাল্টি থেকে এ্যাঞ্জেলিনা ব্রাজিলকে সমতায় ফেরান। ৬৯ মিনিটে ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার টারকিয়ানের আত্মঘাতি গোলে কলম্বিয়া আবারও এগিয়ে যায়। ম্যাচ শেষের ১০ মিনিট আগে গুটিয়ারেস ব্রাজিলকে সমতায় ফেরান। টুর্নামেন্টে এটি তার ষষ্ঠ গোল। ৮ মিনিট পর দ্রুতগতির একটি কাউন্টার এ্যাটাক থেকে মাইরা রামিরেজ কলম্বিয়াকে আবারও লিড এনে দেন। ম্যাচের শেষভাগে বদলী বেঞ্চ থেকে উঠে এসে মার্তা ব্রাজিলকে রক্ষা করেছেন। স্টপেজ টাইমের ষষ্ঠ মিনিটে দুর্দান্ত এক গোলে তিনি ব্রাজিলকে সমতায় ফেরান। যে কারণে ম্যাচটি অতিরিক্ত সময়ে গড়ায়। ১০৫ মিনিটে এ্যাঞ্জেলিনার অসাধারণ ক্রসে মার্তা ব্রাজিলকে এগিয়ে দেন। তবে ম্যাচের নাটকীয়তা তখনও বাকি। সান্তোসের দুর্দান্ত ফ্রি-কিক কোনাকুনিভাবে জালে জড়ালে কলম্বিয়ান শিবিরে স্বস্তি ফিরে আসে।
অ্যাঞ্জেলিনার শুরুর মিসে কলম্বিয়া পেনাল্টি শ্যুট আউটে লিড পায়। কিন্তু ম্যানুয়েলা পাভি গোল করতে ব্যর্থ হবার পর সান্তোসের শটটি রুকে দেন ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষক লোরেনা। মার্তার সামনে সুযোগ এসেছিল জয় নিশ্চিত করার। কিন্তু তার শটটি রুখে দেন ক্যাথরিন টাপিয়া। সাডেন ডেথে কারাবালির মিসে ব্রাজিলের শিরোপা নিশ্চিত হয়।
ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড আমান্ডা গুটিয়ারেস ম্যাচ শেষে বলেন, ‘আমি মনে করি নারী ফুটবল অনেকটাই এগিয়ে গেছে। প্রতিদিনই এখানে প্রতিযোগিতা বাড়ছে। আজকেরও ম্যাচটিও তারই প্রমাণ। সবাই দিনের শেষে এই ধরনের একটি ম্যাচ আশা করে। কলম্বিয়াকেও অভিনন্দন। এই শিরোপা আমাদের জন্য বিশেষ কিছু।
আমি বিশ্বাস করি, ব্রাজিলের নারী ফুটবল এর মাধ্যমে আরও একধাপ এগিয়ে যাবে। আমরা কখনই ম্যাচ ছেড়ে দেইনি। এটাই ব্রাজিল। এটাই ব্রাজিলের গর্ব করার জায়গা।’