২০১০ বিশ্বকাপের স্পেন টিমটা ছিলো তাদের ইতিহাসেরই সেরা টিম। ওই টিমের ফুটবলারদের মধ্যে খুব বেশি একটা হাইলাইটেড ছিলেন না তিনি। কিন্তু ২০১০ বিশ্বকাপে স্পেনের সেরা পারফর্মার কে ছিলো এই প্রশ্নের উত্তর একটাই হবে, ডেভিড ভিয়া।
যখন তার বয়স মাত্র ৪, তখন স্ট্রং রাইট ফুটের ইঞ্জুরিতে স্পেনের সর্বোচ্চ গোলস্কোরারের ফুটবলার হওয়াটাই হুমকির মুখে পড়ে গিয়েছিলো। ঐ সময়েই তার বাবার সহায়তায় তিনি মূলত তার উইক লেফট ফুট একুরেসি বাড়িয়েছিলেন যা তাকে পরবর্তীতে ক্যারিয়ারে অনেক সাহায্য করেছিলো।
ক্লাব ক্যারিয়ারের শুরুতে তিনি কাটিয়েছিলেন স্পোর্টিং গিজনে। ২০০৩-০৪ সালে রিয়াল জারাগোজার হয়ে তার লা লিগায় অভিষেক ঘটে। প্রথম সিজনেই জিতে নেন কোপা ডেল রে। ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে ৩-২ জয়ে তিনি করেন ২য় গোল।
২০০৫ সালে তিনি ভ্যালেন্সিয়ায় যোগ দেন, যেখানে তিনি ক্যারিয়ারে সর্বোচ্চ ৫ বছর কাটিয়েছেন।
প্রথম সিজনেই তিনি লীগে ৩৫ ম্যাচে করেন ২৫ গোল, যা ছিলো লীগে স্যামুয়েল ইতোর পর সর্বোচ্চ। এই পারফরম্যান্স এর কারণে তিনি স্পেনের ২০০৬ বিশ্বকাপ দলে সুযোগ পান, বিশ্বকাপে তার দল খুব বেশি দূর যেতে না পারলেও তিনি ৩ গোল করেন, যা ছিলো ফার্নান্দো তোরেসের সাথে যুগ্মভাবে দলীয় সর্বোচ্চ।
বিশ্বদরবারে তার নিজেকে উপস্থাপন এর মঞ্চ ছিলো ২০০৮ ইউরো। ঐ টুর্নামেন্টে তিনি ৬ গোল করেন, জিতে নেন গোল্ডেন বুট। এই ৬ গোলের মধ্যে রাশিয়ার বিপক্ষে একটি হ্যাট্রিকও ছিলো। ঐ সিজনে তিনি ভ্যালেন্সিয়ার হয়ে কোপা ডেল রে ও জিতেন। তার ২০০৮ সালের পারফরম্যান্স এর কারণে ব্যালন ডি অর র্যাংকিং এ তিনি হন ৭ম এবং ফিফা বেস্ট প্লেয়ার অব দা ইয়ার র্যাংকিং এ হন ৯ম।
এরপরের সিজনে তিনি ভ্যালেন্সিয়ার হয়ে লীগে ৩৩ ম্যাচে করেন ২৮ গোল, যা ভ্যালেন্সিয়ার ফুটবলারদের মধ্যে মারিও কেম্পেস ও মিজাতোভিচের সাথে কোন এক বছরে যৌথ সর্বোচ্চ। যদিও ভিয়া থেকে তাদের বেশি ম্যাচ খেলতে হয়েছিলো।
এরপর এলো ২০১০ বিশ্বকাপ, যে বিশ্বকাপকেই ভিয়া বেছে নিয়েছিলেন নিজের সর্বোচ্চটা দেওয়ার জন্য। বিশ্বকাপ শুরুর আগে ঐ বিশ্বকাপ কোন ফুটবলার মাতাবেন অথবা কে হবেন সর্বোচ্চ গোলস্কোরার এই ধরণের ভবিষ্যৎ বাণীগুলোর কোনটাতে ডেভিড ভিয়ার নাম সবার উপরে ছিলো বলে মনে হয় না। যদিও ঐ বিশ্বকাপ স্পেন একটি দল হয়ে খেলেছিলো, তাও গোল স্কোরিং এ নেতৃত্বটা দিয়েছিলেন ভিয়াই। ঐ বিশ্বকাপে স্পেনের ৭৫% গোলেই ছিলো তার কন্ট্রিবিউশন। তিনি বিশ্বকাপে টোটাল ৫ টি গোল করেন। ম্যান অব দা ম্যাচ হন হন্ডুরাস ও রাউন্ড অব সিক্সটিনে পর্তুগালের বিপক্ষে ম্যাচ দুটিতে। গোল্ডেন শু জয়ী মুলারের সমান গোল করে জিতে নেন সিলভার বুট ও ব্রোঞ্জ বল। এবং মোস্ট ইম্পর্ট্যান্টলি জিতে নেন বিশ্বকাপ।
২০১০ বিশ্বকাপের আগেই তিনি বার্সেলোনায় যোগ দিয়েছিলেন। প্রথম সিজনেই জিতেন ক্যারিয়ারের একমাত্র উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ ও প্রথম লা লিগা শিরোপা। চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে বার্সার ৩-১ জয়ে করেন ৩য় গোল।
২০১১-১২ সিজনে ইঞ্জুরির জন্য তিনি বেশিরভাগই ম্যাচই মিস করেন, মিস করেন ২০১২ ইউরো। ২০১২-১৩ সিজনে জিতেন আরেকটি লা লিগা।
২০১৩ সালে বার্সা ছেড়ে যোগ দেন অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদে। ২০১৩-১৪ সিজনে জিতেন ক্যারিয়ারের ৩য় লা লিগা।
এরপর নিউ ইয়র্ক সিটি, ভিসেল কোবে হয়ে ২০১৯ এ অবসর নেন তিনি।
জাতীয় দল থেকেও ২০১৪ বিশ্বকাপের পর অবসর নেন তিনি। যদিও পরে একবার তিনি অবসর ভেঙে ব্যাক করেছিলেন কিন্তু সেটা বেশিদিনের জন্য না।
তিনি জাতীয় দলের হয়ে যে কয়টি বড় টুর্নামেন্টে খেলেছেন, ২০১৩ কনফেডারেশন কাপ আর ২০১৪ বিশ্বকাপ বাদে প্রতিটি টুর্নামেন্টেই ছিলেন দলের সর্বোচ্চ গোল স্কোরার। জাতীয় দলের হয়ে তিনি ৯৮ ম্যাচে করেন ৫৯ গোল, যা স্পেনের ফুটবল ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
একটা সময় ছিলো যখন স্ট্রাইকারের কাজ ছিলো শুধু গোল করা। স্ট্রাইকারের রোলটি পাল্টে দিয়েছিলেন যে কয়জন স্ট্রাইকার, তাদের মধ্যে ভিয়া একজন। তিনি স্ট্রাইকার ছাড়াও উইঙ্গার হিসেবেও খেলতে পারতেন। এছাড়াও সতীর্থদের জন্য স্পেস ক্রিয়েট করতে কিংবা ডিপে নেমে প্লে মেকিং এ সাহায্য করতেন।
শুভ জন্মদিন ডেভিড ভিয়া ।
শুক্রবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২১
২০১০ বিশ্বকাপের স্পেন টিমটা ছিলো তাদের ইতিহাসেরই সেরা টিম। ওই টিমের ফুটবলারদের মধ্যে খুব বেশি একটা হাইলাইটেড ছিলেন না তিনি। কিন্তু ২০১০ বিশ্বকাপে স্পেনের সেরা পারফর্মার কে ছিলো এই প্রশ্নের উত্তর একটাই হবে, ডেভিড ভিয়া।
যখন তার বয়স মাত্র ৪, তখন স্ট্রং রাইট ফুটের ইঞ্জুরিতে স্পেনের সর্বোচ্চ গোলস্কোরারের ফুটবলার হওয়াটাই হুমকির মুখে পড়ে গিয়েছিলো। ঐ সময়েই তার বাবার সহায়তায় তিনি মূলত তার উইক লেফট ফুট একুরেসি বাড়িয়েছিলেন যা তাকে পরবর্তীতে ক্যারিয়ারে অনেক সাহায্য করেছিলো।
ক্লাব ক্যারিয়ারের শুরুতে তিনি কাটিয়েছিলেন স্পোর্টিং গিজনে। ২০০৩-০৪ সালে রিয়াল জারাগোজার হয়ে তার লা লিগায় অভিষেক ঘটে। প্রথম সিজনেই জিতে নেন কোপা ডেল রে। ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে ৩-২ জয়ে তিনি করেন ২য় গোল।
২০০৫ সালে তিনি ভ্যালেন্সিয়ায় যোগ দেন, যেখানে তিনি ক্যারিয়ারে সর্বোচ্চ ৫ বছর কাটিয়েছেন।
প্রথম সিজনেই তিনি লীগে ৩৫ ম্যাচে করেন ২৫ গোল, যা ছিলো লীগে স্যামুয়েল ইতোর পর সর্বোচ্চ। এই পারফরম্যান্স এর কারণে তিনি স্পেনের ২০০৬ বিশ্বকাপ দলে সুযোগ পান, বিশ্বকাপে তার দল খুব বেশি দূর যেতে না পারলেও তিনি ৩ গোল করেন, যা ছিলো ফার্নান্দো তোরেসের সাথে যুগ্মভাবে দলীয় সর্বোচ্চ।
বিশ্বদরবারে তার নিজেকে উপস্থাপন এর মঞ্চ ছিলো ২০০৮ ইউরো। ঐ টুর্নামেন্টে তিনি ৬ গোল করেন, জিতে নেন গোল্ডেন বুট। এই ৬ গোলের মধ্যে রাশিয়ার বিপক্ষে একটি হ্যাট্রিকও ছিলো। ঐ সিজনে তিনি ভ্যালেন্সিয়ার হয়ে কোপা ডেল রে ও জিতেন। তার ২০০৮ সালের পারফরম্যান্স এর কারণে ব্যালন ডি অর র্যাংকিং এ তিনি হন ৭ম এবং ফিফা বেস্ট প্লেয়ার অব দা ইয়ার র্যাংকিং এ হন ৯ম।
এরপরের সিজনে তিনি ভ্যালেন্সিয়ার হয়ে লীগে ৩৩ ম্যাচে করেন ২৮ গোল, যা ভ্যালেন্সিয়ার ফুটবলারদের মধ্যে মারিও কেম্পেস ও মিজাতোভিচের সাথে কোন এক বছরে যৌথ সর্বোচ্চ। যদিও ভিয়া থেকে তাদের বেশি ম্যাচ খেলতে হয়েছিলো।
এরপর এলো ২০১০ বিশ্বকাপ, যে বিশ্বকাপকেই ভিয়া বেছে নিয়েছিলেন নিজের সর্বোচ্চটা দেওয়ার জন্য। বিশ্বকাপ শুরুর আগে ঐ বিশ্বকাপ কোন ফুটবলার মাতাবেন অথবা কে হবেন সর্বোচ্চ গোলস্কোরার এই ধরণের ভবিষ্যৎ বাণীগুলোর কোনটাতে ডেভিড ভিয়ার নাম সবার উপরে ছিলো বলে মনে হয় না। যদিও ঐ বিশ্বকাপ স্পেন একটি দল হয়ে খেলেছিলো, তাও গোল স্কোরিং এ নেতৃত্বটা দিয়েছিলেন ভিয়াই। ঐ বিশ্বকাপে স্পেনের ৭৫% গোলেই ছিলো তার কন্ট্রিবিউশন। তিনি বিশ্বকাপে টোটাল ৫ টি গোল করেন। ম্যান অব দা ম্যাচ হন হন্ডুরাস ও রাউন্ড অব সিক্সটিনে পর্তুগালের বিপক্ষে ম্যাচ দুটিতে। গোল্ডেন শু জয়ী মুলারের সমান গোল করে জিতে নেন সিলভার বুট ও ব্রোঞ্জ বল। এবং মোস্ট ইম্পর্ট্যান্টলি জিতে নেন বিশ্বকাপ।
২০১০ বিশ্বকাপের আগেই তিনি বার্সেলোনায় যোগ দিয়েছিলেন। প্রথম সিজনেই জিতেন ক্যারিয়ারের একমাত্র উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ ও প্রথম লা লিগা শিরোপা। চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে বার্সার ৩-১ জয়ে করেন ৩য় গোল।
২০১১-১২ সিজনে ইঞ্জুরির জন্য তিনি বেশিরভাগই ম্যাচই মিস করেন, মিস করেন ২০১২ ইউরো। ২০১২-১৩ সিজনে জিতেন আরেকটি লা লিগা।
২০১৩ সালে বার্সা ছেড়ে যোগ দেন অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদে। ২০১৩-১৪ সিজনে জিতেন ক্যারিয়ারের ৩য় লা লিগা।
এরপর নিউ ইয়র্ক সিটি, ভিসেল কোবে হয়ে ২০১৯ এ অবসর নেন তিনি।
জাতীয় দল থেকেও ২০১৪ বিশ্বকাপের পর অবসর নেন তিনি। যদিও পরে একবার তিনি অবসর ভেঙে ব্যাক করেছিলেন কিন্তু সেটা বেশিদিনের জন্য না।
তিনি জাতীয় দলের হয়ে যে কয়টি বড় টুর্নামেন্টে খেলেছেন, ২০১৩ কনফেডারেশন কাপ আর ২০১৪ বিশ্বকাপ বাদে প্রতিটি টুর্নামেন্টেই ছিলেন দলের সর্বোচ্চ গোল স্কোরার। জাতীয় দলের হয়ে তিনি ৯৮ ম্যাচে করেন ৫৯ গোল, যা স্পেনের ফুটবল ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
একটা সময় ছিলো যখন স্ট্রাইকারের কাজ ছিলো শুধু গোল করা। স্ট্রাইকারের রোলটি পাল্টে দিয়েছিলেন যে কয়জন স্ট্রাইকার, তাদের মধ্যে ভিয়া একজন। তিনি স্ট্রাইকার ছাড়াও উইঙ্গার হিসেবেও খেলতে পারতেন। এছাড়াও সতীর্থদের জন্য স্পেস ক্রিয়েট করতে কিংবা ডিপে নেমে প্লে মেকিং এ সাহায্য করতেন।
শুভ জন্মদিন ডেভিড ভিয়া ।