শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে বরাবরই স্পিনিং উইকেটে খেলে থাকে বাংলাদেশ। দেশের মাটিতে, উপমহাদেশে কিংবা বিদেশে, চেনা পরিবেশ কিংবা অচেনা, পেস উইকেট কিংবা স্পিন উইকেট, সাদাপোশাকে বাংলাদেশ দল যেখানেই খেলতে নামুক না কেন চিত্র একটাই- হতশ্রী পারফরম্যান্স। বিব্রতকর ব্যাটিংয়ের সঙ্গে নির্বিষ বোলিং, ফলাফল বড় ব্যবধানে হার। ২১ বছর ধরে ক্রিকেটের অভিজাত সংস্করণ টেস্ট খেলছে বাংলাদেশ। কিন্তু যেন পেশাদারিত্বের অভাব ক্রিকেটারদের মধ্যে। পাকিস্তানের বিপক্ষে চলমান সিরিজের প্রথম টেস্টেও দেখা গেছে একই চিত্র, দুই ইনিংসের শুরতেই বাজে ব্যাটিং। প্রথম ইনিংসে ৪৯ রান স্কোরবোর্ডে জমা না হতেই নেই চার উইকেট, আর দ্বিতীয় ইনিংসে আরো বাজে অবস্থা। ২৫ রানে প্রথম চার ব্যাটসম্যানকে হারায় বাংলাদেশ। আজ থেকে শুরু হবে দ্বিতীয় টেস্ট। এই ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক মোমিনুল হককে পেশাদারিত্ব নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে। তখনই দলনেতা জানালেন, ধানক্ষেতেও পেশাদার ক্রিকেটারদের ভালো খেলতে হবে। মোমিনুল বলেন, ‘পেশাদার খেলোয়াড় হিসেবে উইকেট কিংবা এগুলো নিয়ে অজুহাত দেয়া কাম্য নয়। এটাতে আমি নিজেও একমত নই। যদি ধানক্ষেতেও খেলতে দেয়া হয়, পেশাদার খেলোয়াড় হিসেবে সেখানেও আপনাকে ভালো খেলতে হবে। আমার মনে হয়, এসব নিয়ে অজুহাত না দিয়ে জেতার জন্য আরেকটু পেশাদারিত্ব দেখালেই ভালো হয়।’
পরিসংখ্যানে চোখ বুলালেই দেখা মিলবে করুণ চিত্রের। এখন পর্যন্ত ১২৫টি ম্যাচ খেলে বাংলাদেশ জিতেছে মাত্র ১৫টিতে। ড্র করেছে ১৭টি ম্যাচে। আর বাকি ৯৩ ম্যাচে হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয়েছে। আর শেষ ১০টি টেস্টে বাংলাদেশ জয় পেয়েছে মাত্র দুটিতে আর ড্র একটি। এই ১০ ম্যাচ বাংলাদেশ উপমহাদেশে নিজেদের কন্ডিশনে খেলেছে। ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার মতো দলগুলোর বিপক্ষে নিজেদের মতো কন্ডিশন হওয়া সত্বেও লড়াই জমিয়ে তুলতে পারেনি।
এদিকে চোট থেকে ফিরে এসে ব্যক্তিগত অনুশীলন শেষে সাকিব এখন পুরোদমে অনুশীলন করছে। গতকাল অনুশীলন শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে অধিনায়ক মোমিনুল জানালেন, সাকিবকে নিয়েই ঢাকা টেস্টে নামার পরিকল্পনা করছে দল। সেক্ষেত্রে টিম কম্বিনেশন কেমন হবে সেটিও বলেছেন অধিনায়ক। মোমিনুলের ভাষ্য মতে বাংলাদেশ ৪ জন বোলার ও ৭ জন ব্যাটসম্যান নিয়ে খেলবে। অধিনায়ক বলেন, ‘সাকিব দলে আসলে একটু সহজ হয়। এখন পর্যন্ত সাকিবের সবকিছু ঠিকঠাক আছে, ঠিকঠাক দেখেছি। ও আসায় আমরা ৪ বোলার ৭ ব্যাটসম্যান নিয়ে খেলব।‘
প্রথম টেস্টে বাংলাদেশ দুই পেসার আর দুই স্পিনার নিয়ে খেলেছে। এই ম্যাচেও বাংলাদেশের দুই পেসার ও দুই স্পিনার থাকবেন, আর সঙ্গে তো সাকিব আছেনই। তিনি ব্যাটিং-বোলিং দুই বিভাগেই পারদর্শী। কেমন হতে পারে দ্বিতীয় টেস্টের একাদশ। মোমিনুল জানিয়েছেন ওপেনিংয়ে ডানহাতি-বাঁহাতি কম্বিনেশন নিয়ে নামবে দল। সেক্ষেত্রে অভিষেক হতে পারে মাহমুদুল হাসান জয়ের। তাকে নিয়ে গতকাল অনুশীলনে বেশ সময় দিয়েছেন কোচরা। শুরুতে ব্যাটিংও করেছেন তিনি। তিন নম্বরে নাজমুল হোসেন শান্ত, চারে মোমিনুল, পাঁচে মুশফিকুর রহিম, ছয়ে সাকিব, সাতে লিটন দাস। বাদ পড়তে পারেন ইয়াসির আলী রাব্বি। মোমিনুল যে আভাস দিলেন, তাতে কপাল পুড়তে পারে চট্টগ্রামে অভিষেক হওয়া এই ডানহাতি ব্যাটসম্যানের। যদি জয়ের অভিষেক না হয় আর শান্ত ওপেনিং করেন তাহলে ইয়াসিরকে দেখা যেতে পারে একাদশে। কিন্তু মোমিনুল ডানহাতি-বাঁহাতি ওপেনারের কথা বলায় সেই সম্ভাবনাও কম। অর্থাৎ বাদ পড়তে যাচ্ছেন ইয়াসির।
ঢাকা টেস্টে তাসকিনের খেলার সম্ভাবনা নিয়ে মোমিনুল বলেন, ‘তাসকিনের অবস্থা যদি বলেন, ওর এই ম্যাচ খেলার জন্য হয়তো কালকে পর্যন্ত অপেক্ষা করা লাগবে। তখন হয়তো সিদ্ধান্ত নিলে ভালো হবে। কিন্তু আমার মনে হয়, নিউজিল্যান্ডেই ওর ম্যাচ খেলার সম্ভবনা বেশি।’
এদিকে টাইফয়েডে টেস্ট স্কোয়াড থেকে ছিটকে গেছেন সাইফ হাসান। চট্টগ্রামের মতো ঢাকাতেও ব্যাকআপ ওপেনার হিসেবে সুযোগ পেয়েছেন যুব বিশ্বকাপজয়ী দলের টপ অর্ডার ব্যাটার মাহমুদুল হাসান জয়।
অধিনায়ক বলেন, ‘ওপেনিং কম্বিনেশন বাঁহাতি-ডানহাতি হতে পারে। দুজন বাঁহাতিও হতে পারে। তবে বাঁহাতি-ডানহাতি হওয়ার চান্সই বেশি।’ তাঁর কথা অনুযায়ী বাঁহাতি সাদমান ইসলামের সঙ্গে ডানহাতি জয়ের সুযোগ রয়েছে।
অধিনায়ক বলেন, ‘আমার কাছে টেস্ট ম্যাচে সবসময় গুরুত্বপূর্ণ যেটা হলো, আপনার প্রথম একঘণ্টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যদি একটা ভালো শুরু করি তাহলে ভালো। আর সবাই জানে আমাদের শক্তির জায়গা হলো ব্যাটিং। ব্যাটিং শক্তিতে আমরা যদি ছয় সেশন ব্যাট করতে পারি, তাহলে গেমে ফিরতে পারবো। অবশ্যই আশা করি। কেউ তো ম্যাচ হারার জন্য নামে না। জেতার জন্যই নামে।’
বাংলাদেশ দল : মোমিনুল হক (অধিনায়ক), সাদমান ইসলাম, নাজমুল হোসেন শান্ত, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, লিটন দাস, ইয়াসির আলী রাব্বি, নুরুল হাসান সোহান, মেহেদি হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, তাসকিন আহমেদ, এবাদত হোসেন, আবু জায়েদ রাহি, নাইম হাসান, মাহমুদুল হাসান জয়, রেজাউর রহমান রাজা, খালেদ আহমেদ, শহিদুল ইসলাম ও নাইম শেখ।
শুক্রবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২১
শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে বরাবরই স্পিনিং উইকেটে খেলে থাকে বাংলাদেশ। দেশের মাটিতে, উপমহাদেশে কিংবা বিদেশে, চেনা পরিবেশ কিংবা অচেনা, পেস উইকেট কিংবা স্পিন উইকেট, সাদাপোশাকে বাংলাদেশ দল যেখানেই খেলতে নামুক না কেন চিত্র একটাই- হতশ্রী পারফরম্যান্স। বিব্রতকর ব্যাটিংয়ের সঙ্গে নির্বিষ বোলিং, ফলাফল বড় ব্যবধানে হার। ২১ বছর ধরে ক্রিকেটের অভিজাত সংস্করণ টেস্ট খেলছে বাংলাদেশ। কিন্তু যেন পেশাদারিত্বের অভাব ক্রিকেটারদের মধ্যে। পাকিস্তানের বিপক্ষে চলমান সিরিজের প্রথম টেস্টেও দেখা গেছে একই চিত্র, দুই ইনিংসের শুরতেই বাজে ব্যাটিং। প্রথম ইনিংসে ৪৯ রান স্কোরবোর্ডে জমা না হতেই নেই চার উইকেট, আর দ্বিতীয় ইনিংসে আরো বাজে অবস্থা। ২৫ রানে প্রথম চার ব্যাটসম্যানকে হারায় বাংলাদেশ। আজ থেকে শুরু হবে দ্বিতীয় টেস্ট। এই ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক মোমিনুল হককে পেশাদারিত্ব নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে। তখনই দলনেতা জানালেন, ধানক্ষেতেও পেশাদার ক্রিকেটারদের ভালো খেলতে হবে। মোমিনুল বলেন, ‘পেশাদার খেলোয়াড় হিসেবে উইকেট কিংবা এগুলো নিয়ে অজুহাত দেয়া কাম্য নয়। এটাতে আমি নিজেও একমত নই। যদি ধানক্ষেতেও খেলতে দেয়া হয়, পেশাদার খেলোয়াড় হিসেবে সেখানেও আপনাকে ভালো খেলতে হবে। আমার মনে হয়, এসব নিয়ে অজুহাত না দিয়ে জেতার জন্য আরেকটু পেশাদারিত্ব দেখালেই ভালো হয়।’
পরিসংখ্যানে চোখ বুলালেই দেখা মিলবে করুণ চিত্রের। এখন পর্যন্ত ১২৫টি ম্যাচ খেলে বাংলাদেশ জিতেছে মাত্র ১৫টিতে। ড্র করেছে ১৭টি ম্যাচে। আর বাকি ৯৩ ম্যাচে হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয়েছে। আর শেষ ১০টি টেস্টে বাংলাদেশ জয় পেয়েছে মাত্র দুটিতে আর ড্র একটি। এই ১০ ম্যাচ বাংলাদেশ উপমহাদেশে নিজেদের কন্ডিশনে খেলেছে। ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার মতো দলগুলোর বিপক্ষে নিজেদের মতো কন্ডিশন হওয়া সত্বেও লড়াই জমিয়ে তুলতে পারেনি।
এদিকে চোট থেকে ফিরে এসে ব্যক্তিগত অনুশীলন শেষে সাকিব এখন পুরোদমে অনুশীলন করছে। গতকাল অনুশীলন শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে অধিনায়ক মোমিনুল জানালেন, সাকিবকে নিয়েই ঢাকা টেস্টে নামার পরিকল্পনা করছে দল। সেক্ষেত্রে টিম কম্বিনেশন কেমন হবে সেটিও বলেছেন অধিনায়ক। মোমিনুলের ভাষ্য মতে বাংলাদেশ ৪ জন বোলার ও ৭ জন ব্যাটসম্যান নিয়ে খেলবে। অধিনায়ক বলেন, ‘সাকিব দলে আসলে একটু সহজ হয়। এখন পর্যন্ত সাকিবের সবকিছু ঠিকঠাক আছে, ঠিকঠাক দেখেছি। ও আসায় আমরা ৪ বোলার ৭ ব্যাটসম্যান নিয়ে খেলব।‘
প্রথম টেস্টে বাংলাদেশ দুই পেসার আর দুই স্পিনার নিয়ে খেলেছে। এই ম্যাচেও বাংলাদেশের দুই পেসার ও দুই স্পিনার থাকবেন, আর সঙ্গে তো সাকিব আছেনই। তিনি ব্যাটিং-বোলিং দুই বিভাগেই পারদর্শী। কেমন হতে পারে দ্বিতীয় টেস্টের একাদশ। মোমিনুল জানিয়েছেন ওপেনিংয়ে ডানহাতি-বাঁহাতি কম্বিনেশন নিয়ে নামবে দল। সেক্ষেত্রে অভিষেক হতে পারে মাহমুদুল হাসান জয়ের। তাকে নিয়ে গতকাল অনুশীলনে বেশ সময় দিয়েছেন কোচরা। শুরুতে ব্যাটিংও করেছেন তিনি। তিন নম্বরে নাজমুল হোসেন শান্ত, চারে মোমিনুল, পাঁচে মুশফিকুর রহিম, ছয়ে সাকিব, সাতে লিটন দাস। বাদ পড়তে পারেন ইয়াসির আলী রাব্বি। মোমিনুল যে আভাস দিলেন, তাতে কপাল পুড়তে পারে চট্টগ্রামে অভিষেক হওয়া এই ডানহাতি ব্যাটসম্যানের। যদি জয়ের অভিষেক না হয় আর শান্ত ওপেনিং করেন তাহলে ইয়াসিরকে দেখা যেতে পারে একাদশে। কিন্তু মোমিনুল ডানহাতি-বাঁহাতি ওপেনারের কথা বলায় সেই সম্ভাবনাও কম। অর্থাৎ বাদ পড়তে যাচ্ছেন ইয়াসির।
ঢাকা টেস্টে তাসকিনের খেলার সম্ভাবনা নিয়ে মোমিনুল বলেন, ‘তাসকিনের অবস্থা যদি বলেন, ওর এই ম্যাচ খেলার জন্য হয়তো কালকে পর্যন্ত অপেক্ষা করা লাগবে। তখন হয়তো সিদ্ধান্ত নিলে ভালো হবে। কিন্তু আমার মনে হয়, নিউজিল্যান্ডেই ওর ম্যাচ খেলার সম্ভবনা বেশি।’
এদিকে টাইফয়েডে টেস্ট স্কোয়াড থেকে ছিটকে গেছেন সাইফ হাসান। চট্টগ্রামের মতো ঢাকাতেও ব্যাকআপ ওপেনার হিসেবে সুযোগ পেয়েছেন যুব বিশ্বকাপজয়ী দলের টপ অর্ডার ব্যাটার মাহমুদুল হাসান জয়।
অধিনায়ক বলেন, ‘ওপেনিং কম্বিনেশন বাঁহাতি-ডানহাতি হতে পারে। দুজন বাঁহাতিও হতে পারে। তবে বাঁহাতি-ডানহাতি হওয়ার চান্সই বেশি।’ তাঁর কথা অনুযায়ী বাঁহাতি সাদমান ইসলামের সঙ্গে ডানহাতি জয়ের সুযোগ রয়েছে।
অধিনায়ক বলেন, ‘আমার কাছে টেস্ট ম্যাচে সবসময় গুরুত্বপূর্ণ যেটা হলো, আপনার প্রথম একঘণ্টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যদি একটা ভালো শুরু করি তাহলে ভালো। আর সবাই জানে আমাদের শক্তির জায়গা হলো ব্যাটিং। ব্যাটিং শক্তিতে আমরা যদি ছয় সেশন ব্যাট করতে পারি, তাহলে গেমে ফিরতে পারবো। অবশ্যই আশা করি। কেউ তো ম্যাচ হারার জন্য নামে না। জেতার জন্যই নামে।’
বাংলাদেশ দল : মোমিনুল হক (অধিনায়ক), সাদমান ইসলাম, নাজমুল হোসেন শান্ত, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, লিটন দাস, ইয়াসির আলী রাব্বি, নুরুল হাসান সোহান, মেহেদি হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, তাসকিন আহমেদ, এবাদত হোসেন, আবু জায়েদ রাহি, নাইম হাসান, মাহমুদুল হাসান জয়, রেজাউর রহমান রাজা, খালেদ আহমেদ, শহিদুল ইসলাম ও নাইম শেখ।