জার্মান বুন্দেসলিগা
ম্যাচের শুরুতেই বায়ার্ন মিউনিখের জালে বল! প্রতিপক্ষের ছোট্ট ভুলে তারা পাল্টা জবাব দিল খানিক বাদেই। রোমাঞ্চকর শুরুর পর এভাবেই চলল আক্রমণ-প্রতি আক্রমণ, গোল-পাল্টা গোল। গতিময় ফুটবলে বরুশিয়া ডর্টমুন্ড সম্ভাবনা জাগাল বটে, তবে নিজেদের ভুলে পেরে উঠল না। দারুণ জয়ে লিগ টেবিলে ব্যবধান বাড়াল ইউলিয়ান নাগেলসমানের দল।
সিগনাল ইদুনা পার্কে শনিবার বুন্ডেসলিগায় দুই শিরোপাপ্রত্যাশীর লড়াইয়ে ৩-২ গোলে জিতেছে বায়ার্ন।
ইউলিয়ান ব্রান্ডটের গোলে ডর্টমুন্ড এগিয়ে যাওয়ার পর সমতা টানেন রবের্ত লেভানদোভস্কি। বিরতির ঠিক আগে কিংসলে কোমানের লক্ষ্যভেদে এগিয়ে যায় বায়ার্ন। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই আর্লিং হলান্ডের নৈপুণ্যে সমতায় ফেরে স্বাগতিকরা। শেষ পর্যন্ত লেভানদোভস্কির দ্বিতীয় গোলে জয় পায় টানা ৯ বারের চ্যাম্পিয়নরা।
দুই রক্ষণের একাধিক ভুল, রেফারির সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্কের অবকাশ, ডর্টমুন্ড কোচের লাল কার্ড-এমন নানা ঘটনায় ভরপুর ম্যাচে বল দখলে একটু এগিয়ে থাকার পাশাপাশি আক্রমণেও আধিপত্য করে বায়ার্ন। তাদের ১৭ শটের ৬টি ছিল লক্ষ্যে, ডর্টমুন্ডের ১২ শটের চারটি।
ম্যাচের পঞ্চম মিনিটে দারুণ এক গোলে এগিয়ে যায় ডর্টমুন্ড। বাঁ দিক থেকে সতীর্থের বাড়ানো ক্রস ডান পায়ে নিয়ন্ত্রনে নিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে একজনকে কাটিয়ে ও আরেকজনকে এড়িয়ে জোরালো শটে গোলটি করেন ব্রান্ডট। ১০ গজ দূর থেকে তার নেওয়া শট ঠেকানোর সুযোগই পাননি মানুয়েল নয়ার।
পাল্টা জবাব দিতে একটুও দেরি করেনি বায়ার্ন। মাঝমাঠে একটু আয়েশিভাবে বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে ভুলটা করে বসেন মাটস হুমেলস। তার শটে বল সামনে দাঁড়ানো টমাস মুলারের পায়ে লেগে চলে যায় ডর্টমুন্ডের সীমানায়। দারুণ ক্ষিপ্রতায় এগিয়ে উঁচু বলে হেড করেন মুলার। তিনি নিয়ন্ত্রণে নিতে না পারলেও পেছনে ছুটে আসা লেভানদোভস্কি বল ধরে কাছের পোস্ট ধরে জালে পাঠান।
আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণের জমজমাট লড়াইয়ের ২৯তম মিনিটে আবারও এগিয়ে যেতে পারতো ডর্টমুন্ড। তবে প্রতি-আক্রমণে সবাইকে পেছনে ফেলে বক্সে ঢোকা হলান্ডের কোনাকুনি শটে বল দূরের পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়।
বল দখলের পাশাপাশি প্রথমার্ধে আক্রমণে এগিয়ে থাকা বায়ার্ন ৪৪তম মিনিটে এগিয়ে যায়। এই গোলেও দায় আছে স্বাগতিক রক্ষণের। দলকে বিপদমুক্ত করতে গিয়ে ডিফেন্ডার মানুয়েল আকানজির নেওয়া শট তার সতীর্থের পায়ে লেগে চলে যায় কোমানের পায়ে। ডান পায়ের জোরালো শটে গোলটি করেন ফরাসি এই ফরোয়ার্ড।
দ্বিতীয়ার্ধে তৃতীয় মিনিটে বড় ভুল করে বসেন বায়ার্নের ডিফেন্ডার উপামেকানো। ডি-বক্সে তিনি বুক দিয়ে বল নিয়ন্ত্রণে নিতে গিয়ে উল্টো জুড বেলিংহ্যামের পায়ে তুলে দেন। তার পাস ধরে উঁচু কোনাকুনি দূরের পোস্ট দিয়ে স্কোরলাইন ২-২ করেন হলান্ড।
আসরে নরওয়ের তরুণ এই ফরোয়ার্ডের গোল হলো ১১টি, আট ম্যাচে।
সমতায় ফিরে প্রবল চাপ বাড়ায় ডর্টমুন্ড। অনেকটা সময় রক্ষণ সামলাতেই ব্যস্ত থাকে বায়ার্ন। তবে এর মাঝেই তাদের এক পাল্টা আক্রমণে ডর্টমুন্ডের ডি-বক্সে হুমেলসের হাতে বল লাগলে ভিএআরের সাহায্যে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। সফল স্পট কিকে দলকে আবারও এগিয়ে নেন লেভানদোভস্কি।
আসরে সর্বোচ্চ গোলদাতা লেভানদোভস্কির এটি ১৬তম গোল, ১৪ ম্যাচে। এরই সঙ্গে জার্মানির শীর্ষ লিগের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি অ্যাওয়ে গোলের রেকর্ডটি নিজের করে নিলেন পোলিশ তারকা, ১১৮টি। ১১৭ গোল নিয়ে রেকর্ডটি এতদিন ছিল সাবেক জার্মান ফরোয়ার্ড ক্লাউস ফিশারের।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে বায়ার্নের ডি-বক্সে প্রতিপক্ষের চ্যালেঞ্জে মার্কো রয়েস পড়ে গেলে পেনাল্টির জোরালো আবেদন করে ডর্টমুন্ডের কোচ-খেলোয়াড়রা। ধারাভাষ্যকারও বারবার বলতে থাকেন, পেনাল্টি হতে পারে। তবে ভিএআরে দ্বিতীয়বার যাচাইও করা হয়নি তখন, তাদের চোখেমুখে ছিল অসন্তোষ। সেখানে এ যাত্রায় ভিএআরে দেখেই পেনাল্টি দেওয়ায় ডাগআউটে ক্ষোভ ঝাড়েন ডর্টমুন্ড কোচ। তাকে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখিয়ে বের করে দেন রেফারি।
কয়েক দফায় খেলা বন্ধ থাকায় নির্ধারিত ৯০ মিনিটের পরও ১১ মিনিট যোগ করা সময খেলা চলে। সেখানে ম্যাচের গতি যেন আরও বেড়ে যায়। দেড় মিনিটের মতো বাকি থাকতে একটি কর্নারের সময় ডর্টমুন্ডের গোলরক্ষকও উঠে আসেন আক্রমণে, সেই সুযোগে মাঝমাঠে বল পেয়ে প্রায় ৩৫ গজ দূর থেকে ফাঁকা পোস্টে শট নেন তোলিসো। কিন্তু বল লক্ষ্যে রাখতে পারেননি তিনি।
১৪ ম্যাচে ১১ জয় ও এক ড্রয়ে ৩৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে বায়ার্ন। ১০ জয়ে ৪ পয়েন্ট কম নিয়ে দুইয়ে বরুশিয়া ডর্টমুন্ড।
জার্মান বুন্দেসলিগা
রোববার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২১
ম্যাচের শুরুতেই বায়ার্ন মিউনিখের জালে বল! প্রতিপক্ষের ছোট্ট ভুলে তারা পাল্টা জবাব দিল খানিক বাদেই। রোমাঞ্চকর শুরুর পর এভাবেই চলল আক্রমণ-প্রতি আক্রমণ, গোল-পাল্টা গোল। গতিময় ফুটবলে বরুশিয়া ডর্টমুন্ড সম্ভাবনা জাগাল বটে, তবে নিজেদের ভুলে পেরে উঠল না। দারুণ জয়ে লিগ টেবিলে ব্যবধান বাড়াল ইউলিয়ান নাগেলসমানের দল।
সিগনাল ইদুনা পার্কে শনিবার বুন্ডেসলিগায় দুই শিরোপাপ্রত্যাশীর লড়াইয়ে ৩-২ গোলে জিতেছে বায়ার্ন।
ইউলিয়ান ব্রান্ডটের গোলে ডর্টমুন্ড এগিয়ে যাওয়ার পর সমতা টানেন রবের্ত লেভানদোভস্কি। বিরতির ঠিক আগে কিংসলে কোমানের লক্ষ্যভেদে এগিয়ে যায় বায়ার্ন। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই আর্লিং হলান্ডের নৈপুণ্যে সমতায় ফেরে স্বাগতিকরা। শেষ পর্যন্ত লেভানদোভস্কির দ্বিতীয় গোলে জয় পায় টানা ৯ বারের চ্যাম্পিয়নরা।
দুই রক্ষণের একাধিক ভুল, রেফারির সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্কের অবকাশ, ডর্টমুন্ড কোচের লাল কার্ড-এমন নানা ঘটনায় ভরপুর ম্যাচে বল দখলে একটু এগিয়ে থাকার পাশাপাশি আক্রমণেও আধিপত্য করে বায়ার্ন। তাদের ১৭ শটের ৬টি ছিল লক্ষ্যে, ডর্টমুন্ডের ১২ শটের চারটি।
ম্যাচের পঞ্চম মিনিটে দারুণ এক গোলে এগিয়ে যায় ডর্টমুন্ড। বাঁ দিক থেকে সতীর্থের বাড়ানো ক্রস ডান পায়ে নিয়ন্ত্রনে নিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে একজনকে কাটিয়ে ও আরেকজনকে এড়িয়ে জোরালো শটে গোলটি করেন ব্রান্ডট। ১০ গজ দূর থেকে তার নেওয়া শট ঠেকানোর সুযোগই পাননি মানুয়েল নয়ার।
পাল্টা জবাব দিতে একটুও দেরি করেনি বায়ার্ন। মাঝমাঠে একটু আয়েশিভাবে বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে ভুলটা করে বসেন মাটস হুমেলস। তার শটে বল সামনে দাঁড়ানো টমাস মুলারের পায়ে লেগে চলে যায় ডর্টমুন্ডের সীমানায়। দারুণ ক্ষিপ্রতায় এগিয়ে উঁচু বলে হেড করেন মুলার। তিনি নিয়ন্ত্রণে নিতে না পারলেও পেছনে ছুটে আসা লেভানদোভস্কি বল ধরে কাছের পোস্ট ধরে জালে পাঠান।
আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণের জমজমাট লড়াইয়ের ২৯তম মিনিটে আবারও এগিয়ে যেতে পারতো ডর্টমুন্ড। তবে প্রতি-আক্রমণে সবাইকে পেছনে ফেলে বক্সে ঢোকা হলান্ডের কোনাকুনি শটে বল দূরের পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়।
বল দখলের পাশাপাশি প্রথমার্ধে আক্রমণে এগিয়ে থাকা বায়ার্ন ৪৪তম মিনিটে এগিয়ে যায়। এই গোলেও দায় আছে স্বাগতিক রক্ষণের। দলকে বিপদমুক্ত করতে গিয়ে ডিফেন্ডার মানুয়েল আকানজির নেওয়া শট তার সতীর্থের পায়ে লেগে চলে যায় কোমানের পায়ে। ডান পায়ের জোরালো শটে গোলটি করেন ফরাসি এই ফরোয়ার্ড।
দ্বিতীয়ার্ধে তৃতীয় মিনিটে বড় ভুল করে বসেন বায়ার্নের ডিফেন্ডার উপামেকানো। ডি-বক্সে তিনি বুক দিয়ে বল নিয়ন্ত্রণে নিতে গিয়ে উল্টো জুড বেলিংহ্যামের পায়ে তুলে দেন। তার পাস ধরে উঁচু কোনাকুনি দূরের পোস্ট দিয়ে স্কোরলাইন ২-২ করেন হলান্ড।
আসরে নরওয়ের তরুণ এই ফরোয়ার্ডের গোল হলো ১১টি, আট ম্যাচে।
সমতায় ফিরে প্রবল চাপ বাড়ায় ডর্টমুন্ড। অনেকটা সময় রক্ষণ সামলাতেই ব্যস্ত থাকে বায়ার্ন। তবে এর মাঝেই তাদের এক পাল্টা আক্রমণে ডর্টমুন্ডের ডি-বক্সে হুমেলসের হাতে বল লাগলে ভিএআরের সাহায্যে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। সফল স্পট কিকে দলকে আবারও এগিয়ে নেন লেভানদোভস্কি।
আসরে সর্বোচ্চ গোলদাতা লেভানদোভস্কির এটি ১৬তম গোল, ১৪ ম্যাচে। এরই সঙ্গে জার্মানির শীর্ষ লিগের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি অ্যাওয়ে গোলের রেকর্ডটি নিজের করে নিলেন পোলিশ তারকা, ১১৮টি। ১১৭ গোল নিয়ে রেকর্ডটি এতদিন ছিল সাবেক জার্মান ফরোয়ার্ড ক্লাউস ফিশারের।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে বায়ার্নের ডি-বক্সে প্রতিপক্ষের চ্যালেঞ্জে মার্কো রয়েস পড়ে গেলে পেনাল্টির জোরালো আবেদন করে ডর্টমুন্ডের কোচ-খেলোয়াড়রা। ধারাভাষ্যকারও বারবার বলতে থাকেন, পেনাল্টি হতে পারে। তবে ভিএআরে দ্বিতীয়বার যাচাইও করা হয়নি তখন, তাদের চোখেমুখে ছিল অসন্তোষ। সেখানে এ যাত্রায় ভিএআরে দেখেই পেনাল্টি দেওয়ায় ডাগআউটে ক্ষোভ ঝাড়েন ডর্টমুন্ড কোচ। তাকে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখিয়ে বের করে দেন রেফারি।
কয়েক দফায় খেলা বন্ধ থাকায় নির্ধারিত ৯০ মিনিটের পরও ১১ মিনিট যোগ করা সময খেলা চলে। সেখানে ম্যাচের গতি যেন আরও বেড়ে যায়। দেড় মিনিটের মতো বাকি থাকতে একটি কর্নারের সময় ডর্টমুন্ডের গোলরক্ষকও উঠে আসেন আক্রমণে, সেই সুযোগে মাঝমাঠে বল পেয়ে প্রায় ৩৫ গজ দূর থেকে ফাঁকা পোস্টে শট নেন তোলিসো। কিন্তু বল লক্ষ্যে রাখতে পারেননি তিনি।
১৪ ম্যাচে ১১ জয় ও এক ড্রয়ে ৩৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে বায়ার্ন। ১০ জয়ে ৪ পয়েন্ট কম নিয়ে দুইয়ে বরুশিয়া ডর্টমুন্ড।