গোল্ডেন ফুটবল কেরিয়ারে আজ পর্যন্ত চারটে বিশ্বকাপ খেলে ফেলেছেন। কাতারে নামবেন পঞ্চম বিশ্বকাপ খেলতে, যা কি না তার জীবনের শেষ বিশ্বকাপও বটে এবং কাপ অভিযানে নামার আগে নিজের স্বপ্ন থেকে শুরু করে টিমের কাপ জয়ের সম্ভাবনা-সব কিছু নিয়ে আর্জেন্টিনার এক সংবাদপত্রে দীর্ঘ সাক্ষাৎকার দিলেন লিওনেল মেসি
প্রশ্ন : চারটি বিশ্বকাপ খেলেছেন। সেই ২০০৬ বিশ্বকাপ থেকে খেলছেন। কী কী শিক্ষা নিয়েছেন গত চার বিশ্বকাপ থেকে?
মেসি : দেখুন, ২০০৬ বিশ্বকাপের সময় আমার বয়স খুব কম ছিল। প্রথম বিশ্বকাপ একদিকে যেমন উপভোগ করেছিলাম, তেমনই ভেতরে ভেতরে একটা আগুন কাজ করত, সারল্য কাজ করত। আরও বেশি করে খেলতে চাইতাম আমি। আরও সাফল্য পেতে চাইতাম। একদিক থেকে সেটা ভালো। কিন্তু আপনার তাড়না বেশি হলে, সব কিছু নিয়ে ভাবতে শুরু করলে, খেলাটা থেকে প্রাপ্ত আনন্দটা কমে যায়। ২০১৪ বিশ্বকাপ আমরা সত্যি ভালো খেলছিলাম। জীবনে ভুলতে পারব না ব্রাজিল বিশ্বকাপের সেই অভিজ্ঞতা। ব্রাজিল বিশ্বকাপই আমাকে শেখায় যে, একটা শক্তিশালী টিমই আসল। সেটাই টুর্নামেন্ট জেতায়। আপনি যদি বড় লক্ষ্যকে টার্গেটবোর্ড করে ছোটেন, তা হলে আপনার একটা শক্তিশালী টিম লাগবে। বলতে পারেন, আর্জেন্টিনার এবারের টিমটার সঙ্গে ২০১৪-র টিমটার প্রচুর মিল আছে। এই টিমের যা মানসিকতা, যে ভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে টিমটা চলে, সেটা ২০১৪ বিশ্বকাপের আর্জেন্টিনা টিমেও ছিল। আর চারটে বিশ্বকাপ খেলে শিক্ষা আমি বলব, চারটি বিশ্বকাপ খেলে একটা জিনিস বুঝেছি। টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচটা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। প্রথম ম্যাচটা যদি ভালো খেলতে পারেন, তা হলে আপনা আপনি বাকি টুর্নামেন্টের জন্য টোন সেট হয়ে যাবে।
প্রশ্ন : কাতারে শেষ ষোলোর খেলাতেই হয় ডেনমার্ক বা ফ্রান্সকে খেলতে হবে আর্জেন্টিনাকে।
মেসি : হ্যাঁ। কিন্তু এই মুহূর্তে শেষ ষোলোর ম্যাচ নিয়ে ভাবাটাই অপরাধ। উচিত, গ্রুপের প্রথম ম্যাচটা নিয়ে ভাবা। আগেই বললাম, বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমার মন্ত্র হল-শুরুটা ভালো করো। তিনটে পয়েন্ট নাও। তার পর রিল্যাক্সড ভাবে পরের ম্যাচটা নিয়ে ভাবো। আগেভাগে ভেবে তো অনেক কিছুই বলা যেতে পারে যে, অমুকের সঙ্গে খেলা পড়বে বা তমুকের সঙ্গে। কিন্তু সময় এলে দেখবেন, সব বদলে গিয়েছে। আমরাও যদি ভাবতে শুরু করি যে, শেষ ষোলোয় পৌঁছেই গিয়েছি, তাহলে আমাদেরও বিপদে পড়তে হবে। পরিষ্কার বলছি, বিশ্বকাপ এমন এমন অপ্রত্যাশিত সব চমক নিয়ে হাজির হয়, যা আপনি ভাবতেও পারবেন না।
প্রশ্ন : আর্জেন্টিনা ৩৫ ম্যাচ অপরাজিত থেকে বিশ্বকাপ খেলতে যাচ্ছে, এটা তো দারুণ সুখের।
মেসি : না। এটা নিছকই একটা পরিসংখ্যান। আমরা এটা নিয়ে ভাবছিই না। কারণ আমরা জানি, ভালো সময় আসে যেমন, তেমন খারাপ সময়ও আসে। তবে এটুকু বিশ্বাস আছে যে, সেই খারাপ সময় কাটিয়ে উঠতে পারব আমরা। ইনফ্যাক্ট এই টিমটা গঠনই হয়েছিল একটা খারাপ অভিজ্ঞতা দিয়ে। ২০১৯ কোপা আমেরিকায় ব্রাজিলের কাছে হেরে। কিন্তু তার পর সেই ছাইগাদা থেকেই এই টিমটা উঠে দাঁড়িয়েছে। আজকের আর্জেন্টিনা হয়েছে। তাই বিশ্বকাপে নামার সময় ভাবনা যে, আমরা ৩৫-টা ম্যাচ টানা জিতে এসেছি।
প্রশ্ন : বিশ্বকাপ নিয়ে আর্জেন্টিনা সমর্থকদের কী বার্তা দেবেন লিওনেল মেসি?
মেসি : একই কথা বলব। আপনাদের ভালোবাসা পেয়ে আমরা ধন্য। আপনাদের মতো আমরাও ফুটছি। আর হ্যাঁ, প্রার্থনা করুন যাতে আমরা লড়তে পারি। আর লড়বও আমরা। কারণ, এই আর্জেন্টিনা লড়তে জানে।
রোববার, ২০ নভেম্বর ২০২২
গোল্ডেন ফুটবল কেরিয়ারে আজ পর্যন্ত চারটে বিশ্বকাপ খেলে ফেলেছেন। কাতারে নামবেন পঞ্চম বিশ্বকাপ খেলতে, যা কি না তার জীবনের শেষ বিশ্বকাপও বটে এবং কাপ অভিযানে নামার আগে নিজের স্বপ্ন থেকে শুরু করে টিমের কাপ জয়ের সম্ভাবনা-সব কিছু নিয়ে আর্জেন্টিনার এক সংবাদপত্রে দীর্ঘ সাক্ষাৎকার দিলেন লিওনেল মেসি
প্রশ্ন : চারটি বিশ্বকাপ খেলেছেন। সেই ২০০৬ বিশ্বকাপ থেকে খেলছেন। কী কী শিক্ষা নিয়েছেন গত চার বিশ্বকাপ থেকে?
মেসি : দেখুন, ২০০৬ বিশ্বকাপের সময় আমার বয়স খুব কম ছিল। প্রথম বিশ্বকাপ একদিকে যেমন উপভোগ করেছিলাম, তেমনই ভেতরে ভেতরে একটা আগুন কাজ করত, সারল্য কাজ করত। আরও বেশি করে খেলতে চাইতাম আমি। আরও সাফল্য পেতে চাইতাম। একদিক থেকে সেটা ভালো। কিন্তু আপনার তাড়না বেশি হলে, সব কিছু নিয়ে ভাবতে শুরু করলে, খেলাটা থেকে প্রাপ্ত আনন্দটা কমে যায়। ২০১৪ বিশ্বকাপ আমরা সত্যি ভালো খেলছিলাম। জীবনে ভুলতে পারব না ব্রাজিল বিশ্বকাপের সেই অভিজ্ঞতা। ব্রাজিল বিশ্বকাপই আমাকে শেখায় যে, একটা শক্তিশালী টিমই আসল। সেটাই টুর্নামেন্ট জেতায়। আপনি যদি বড় লক্ষ্যকে টার্গেটবোর্ড করে ছোটেন, তা হলে আপনার একটা শক্তিশালী টিম লাগবে। বলতে পারেন, আর্জেন্টিনার এবারের টিমটার সঙ্গে ২০১৪-র টিমটার প্রচুর মিল আছে। এই টিমের যা মানসিকতা, যে ভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে টিমটা চলে, সেটা ২০১৪ বিশ্বকাপের আর্জেন্টিনা টিমেও ছিল। আর চারটে বিশ্বকাপ খেলে শিক্ষা আমি বলব, চারটি বিশ্বকাপ খেলে একটা জিনিস বুঝেছি। টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচটা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। প্রথম ম্যাচটা যদি ভালো খেলতে পারেন, তা হলে আপনা আপনি বাকি টুর্নামেন্টের জন্য টোন সেট হয়ে যাবে।
প্রশ্ন : কাতারে শেষ ষোলোর খেলাতেই হয় ডেনমার্ক বা ফ্রান্সকে খেলতে হবে আর্জেন্টিনাকে।
মেসি : হ্যাঁ। কিন্তু এই মুহূর্তে শেষ ষোলোর ম্যাচ নিয়ে ভাবাটাই অপরাধ। উচিত, গ্রুপের প্রথম ম্যাচটা নিয়ে ভাবা। আগেই বললাম, বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমার মন্ত্র হল-শুরুটা ভালো করো। তিনটে পয়েন্ট নাও। তার পর রিল্যাক্সড ভাবে পরের ম্যাচটা নিয়ে ভাবো। আগেভাগে ভেবে তো অনেক কিছুই বলা যেতে পারে যে, অমুকের সঙ্গে খেলা পড়বে বা তমুকের সঙ্গে। কিন্তু সময় এলে দেখবেন, সব বদলে গিয়েছে। আমরাও যদি ভাবতে শুরু করি যে, শেষ ষোলোয় পৌঁছেই গিয়েছি, তাহলে আমাদেরও বিপদে পড়তে হবে। পরিষ্কার বলছি, বিশ্বকাপ এমন এমন অপ্রত্যাশিত সব চমক নিয়ে হাজির হয়, যা আপনি ভাবতেও পারবেন না।
প্রশ্ন : আর্জেন্টিনা ৩৫ ম্যাচ অপরাজিত থেকে বিশ্বকাপ খেলতে যাচ্ছে, এটা তো দারুণ সুখের।
মেসি : না। এটা নিছকই একটা পরিসংখ্যান। আমরা এটা নিয়ে ভাবছিই না। কারণ আমরা জানি, ভালো সময় আসে যেমন, তেমন খারাপ সময়ও আসে। তবে এটুকু বিশ্বাস আছে যে, সেই খারাপ সময় কাটিয়ে উঠতে পারব আমরা। ইনফ্যাক্ট এই টিমটা গঠনই হয়েছিল একটা খারাপ অভিজ্ঞতা দিয়ে। ২০১৯ কোপা আমেরিকায় ব্রাজিলের কাছে হেরে। কিন্তু তার পর সেই ছাইগাদা থেকেই এই টিমটা উঠে দাঁড়িয়েছে। আজকের আর্জেন্টিনা হয়েছে। তাই বিশ্বকাপে নামার সময় ভাবনা যে, আমরা ৩৫-টা ম্যাচ টানা জিতে এসেছি।
প্রশ্ন : বিশ্বকাপ নিয়ে আর্জেন্টিনা সমর্থকদের কী বার্তা দেবেন লিওনেল মেসি?
মেসি : একই কথা বলব। আপনাদের ভালোবাসা পেয়ে আমরা ধন্য। আপনাদের মতো আমরাও ফুটছি। আর হ্যাঁ, প্রার্থনা করুন যাতে আমরা লড়তে পারি। আর লড়বও আমরা। কারণ, এই আর্জেন্টিনা লড়তে জানে।