alt

সম্পাদকীয়

পাঠ্যবই বিতরণে বিলম্ব : শিক্ষাব্যবস্থার প্রতি আঘাত

: বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫

শিক্ষাবর্ষের প্রায় দুই সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও দেশের অনেক শিক্ষার্থী এখনও পাঠ্যবই পায়নি। এনসিটিবির তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারি মাসের ১৩ দিন পার হয়ে গেলেও ৪০ কোটির বেশি বইয়ের মধ্যে মাত্র ১২ কোটি বই বিতরণ করা সম্ভব হয়েছে। পরিস্থিতি এতটাই উদ্বেগজনক যে, মার্চের আগে সব শিক্ষার্থীর হাতে বই পৌঁছানো সম্ভব নয় বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এনসিটিবির শীর্ষ কর্মকর্তারা দেরির জন্য ছাপাখানা মালিক এবং কাগজ মিলগুলোর ওপর দায় চাপালেও বিষয়টির গভীরে আরও বৃহত্তর ব্যবস্থাপনা ত্রুটি বিদ্যমান। ছাপাখানাগুলো তাদের সক্ষমতার চেয়ে বেশি কাজ নেয়ার পর তা সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হয়েছে। অপরদিকে, কাগজ মিল মালিকরাও নির্ধারিত পরিমাণ কাগজ সরবরাহ করতে পারেনি। ফলে পাঠ্যবই ছাপা ও বিতরণের পুরো প্রক্রিয়াটি ভেঙে পড়ার উপক্রম।

এ সংকটের একটি বড় কারণ হলো কাগজের অপ্রতুলতা ও দাম বৃদ্ধি। ছাপাখানা মালিকদের অভিযোগ, দরপত্রে কাগজের মান-সংক্রান্ত শর্ত এমনভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে, যা দেশের কাগজ মিলগুলোর সক্ষমতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এনসিটিবি এই বিষয়ে বৈদেশিক আমদানির উদ্যোগ নিলেও যথাসময়ে পাঠ্যবই সরবরাহ নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হচ্ছে।

অবস্থার আরও অবনতি ঘটেছে নিম্নমানের কাগজে বই ছাপা নিয়ে। এনসিটিবি ইতোমধ্যে নিম্নমানের অভিযোগে কয়েক লাখ বই ধ্বংস করেছে। এটি কেবল সময় ও সম্পদের অপচয় নয়, বরং শিক্ষার্থীদের হাতে যথাসময়ে মানসম্পন্ন বই পৌঁছানোর প্রতিশ্রুতিরও ব্যর্থতা।

এ সংকটের পেছনে একটি কাঠামোগত সমস্যা স্পষ্ট। এনসিটিবি কর্তৃক দরপত্র প্রক্রিয়া ও তদারকির ঘাটতি, ছাপাখানা মালিকদের অতিরিক্ত কাজ গ্রহণের প্রবণতা এবং বাজারে কাগজ সরবরাহ ও দামের অস্থিরতা সংকটকে আরও গভীরতর করেছে।

তবে দায় এড়ানোর সুযোগ নেই। শিক্ষাব্যবস্থার ভিত্তি হলো পাঠ্যবই। এই সংকট শিক্ষার্থীদের মানসিক চাপ বাড়ানোর পাশাপাশি তাদের পড়াশোনার প্রাথমিক পর্যায়ে সুশৃঙ্খল পাঠাভ্যাস গড়ে তোলার প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করছে। ফলস্বরূপ, এটি শিক্ষার গুণগত মানে দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

পাঠ্যবই শিক্ষার্থীদের মৌলিক অধিকার। সময়মতো বই সরবরাহ করতে না পারা দুর্ভাগ্যজনক। এই সংকট শুধু বর্তমান শিক্ষাবর্ষের জন্য নয়, বরং ভবিষ্যতের শিক্ষাব্যবস্থার জন্যও একটি সতর্কবার্তা। এখনই যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে এ ধরনের ব্যর্থতা আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার প্রতি আস্থা দুর্বল করবে। শিক্ষা খাতে দ্রুত ও কার্যকর সংস্কারই পারে এই সংকট থেকে উত্তরণের পথ তৈরি করতে।

নদীভাঙনের শিকার শিক্ষার্থীরা কোথায় যাবে?

আবারও অপহরণের ঘটনা : সমাধান কী

সারের কালোবাজারি বন্ধ করতে হবে

ভোটার তালিকা হালনাগাদ : কিছু প্রশ্ন

চায়নাদুয়ারী ও কারেন্টজাল ব্যবহার বন্ধে ব্যবস্থা নিন

পাহাড়-টিলা রক্ষায় কঠোর পদক্ষেপ জরুরি

জলমহাল দখল : জেলেদের অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ

সাংবাদিকদের ওপর হামলা : মুক্ত গণমাধ্যমের জন্য হুমকি

শেরপুরের আলু চাষিদের সংকট

রেলের জমি রক্ষায় ব্যবস্থা নিন

চাঁদাবাজি থেকে বাজার ও সমাজের মুক্তি কোন পথে

বারোমাসি খালের দুর্দশা

এখনো কেন বিচারবহির্ভূত হত্যা

বুড়িগঙ্গা বাঁচাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন

হরিপুর-চিলমারি তিস্তা সেতুর পাশে বালু তোলা বন্ধ করুন

ইটভাটা হোক পরিবেশবান্ধব

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ক্যানসার চিকিৎসার সংকট : দ্রুত পদক্ষেপ জরুরি

পানি সংকটে হাইমচরের কৃষকদের হতাশা

ঢাবিতে আবাসন সমস্যা, অধিক ভোগান্তিতে নারী শিক্ষার্থীরা

কুষ্ঠ রোগ : চ্যালেঞ্জ ও করণীয়

জনবল সংকটে অচল আইসিইউ: জনস্বাস্থ্যের করুণ চিত্র

ঢাবি ও অধিভুক্ত সাত কলেজ : সমঝোতার পথেই সমাধান

নওগাঁয় মেনিনজাইটিস টিকা সংকট নিরসনে দ্রুত ব্যবস্থা নিন

হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে দেরি কেন

জলবায়ু সংকট : শিশুদের শিক্ষা জীবনের জন্য বড় হুমকি

সয়াবিন তেলের সংকট : বাজার ব্যবস্থার দুর্বলতার প্রতিচ্ছবি

ভালুকার খীরু নদীর দূষণ বন্ধ করুন

নির্ধারিত মূল্যে ধান সংগ্রহ করা যাচ্ছে না কেন

লালপুরে ফসলি জমিতে জলাবদ্ধতা

শীতে বিপর্যস্ত জনজীবন

আমতলীর ভ্যাকসিন সংকট দূর করুন

অতিরিক্ত সেচ খরচ: কৃষকের জীবনযাত্রায় বোঝা

আমতলী পৌরসভায় সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলুন

অরক্ষিত রেলক্রসিং : সুরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা জরুরি

সুন্দরবনে হরিণ শিকার বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিন

পাহাড় রক্ষা ও পরিবেশ সংরক্ষণে ‘টম অ্যান্ড জেরি খেলা’র অবসান ঘটুক

tab

সম্পাদকীয়

পাঠ্যবই বিতরণে বিলম্ব : শিক্ষাব্যবস্থার প্রতি আঘাত

বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫

শিক্ষাবর্ষের প্রায় দুই সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও দেশের অনেক শিক্ষার্থী এখনও পাঠ্যবই পায়নি। এনসিটিবির তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারি মাসের ১৩ দিন পার হয়ে গেলেও ৪০ কোটির বেশি বইয়ের মধ্যে মাত্র ১২ কোটি বই বিতরণ করা সম্ভব হয়েছে। পরিস্থিতি এতটাই উদ্বেগজনক যে, মার্চের আগে সব শিক্ষার্থীর হাতে বই পৌঁছানো সম্ভব নয় বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এনসিটিবির শীর্ষ কর্মকর্তারা দেরির জন্য ছাপাখানা মালিক এবং কাগজ মিলগুলোর ওপর দায় চাপালেও বিষয়টির গভীরে আরও বৃহত্তর ব্যবস্থাপনা ত্রুটি বিদ্যমান। ছাপাখানাগুলো তাদের সক্ষমতার চেয়ে বেশি কাজ নেয়ার পর তা সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হয়েছে। অপরদিকে, কাগজ মিল মালিকরাও নির্ধারিত পরিমাণ কাগজ সরবরাহ করতে পারেনি। ফলে পাঠ্যবই ছাপা ও বিতরণের পুরো প্রক্রিয়াটি ভেঙে পড়ার উপক্রম।

এ সংকটের একটি বড় কারণ হলো কাগজের অপ্রতুলতা ও দাম বৃদ্ধি। ছাপাখানা মালিকদের অভিযোগ, দরপত্রে কাগজের মান-সংক্রান্ত শর্ত এমনভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে, যা দেশের কাগজ মিলগুলোর সক্ষমতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এনসিটিবি এই বিষয়ে বৈদেশিক আমদানির উদ্যোগ নিলেও যথাসময়ে পাঠ্যবই সরবরাহ নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হচ্ছে।

অবস্থার আরও অবনতি ঘটেছে নিম্নমানের কাগজে বই ছাপা নিয়ে। এনসিটিবি ইতোমধ্যে নিম্নমানের অভিযোগে কয়েক লাখ বই ধ্বংস করেছে। এটি কেবল সময় ও সম্পদের অপচয় নয়, বরং শিক্ষার্থীদের হাতে যথাসময়ে মানসম্পন্ন বই পৌঁছানোর প্রতিশ্রুতিরও ব্যর্থতা।

এ সংকটের পেছনে একটি কাঠামোগত সমস্যা স্পষ্ট। এনসিটিবি কর্তৃক দরপত্র প্রক্রিয়া ও তদারকির ঘাটতি, ছাপাখানা মালিকদের অতিরিক্ত কাজ গ্রহণের প্রবণতা এবং বাজারে কাগজ সরবরাহ ও দামের অস্থিরতা সংকটকে আরও গভীরতর করেছে।

তবে দায় এড়ানোর সুযোগ নেই। শিক্ষাব্যবস্থার ভিত্তি হলো পাঠ্যবই। এই সংকট শিক্ষার্থীদের মানসিক চাপ বাড়ানোর পাশাপাশি তাদের পড়াশোনার প্রাথমিক পর্যায়ে সুশৃঙ্খল পাঠাভ্যাস গড়ে তোলার প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করছে। ফলস্বরূপ, এটি শিক্ষার গুণগত মানে দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

পাঠ্যবই শিক্ষার্থীদের মৌলিক অধিকার। সময়মতো বই সরবরাহ করতে না পারা দুর্ভাগ্যজনক। এই সংকট শুধু বর্তমান শিক্ষাবর্ষের জন্য নয়, বরং ভবিষ্যতের শিক্ষাব্যবস্থার জন্যও একটি সতর্কবার্তা। এখনই যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে এ ধরনের ব্যর্থতা আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার প্রতি আস্থা দুর্বল করবে। শিক্ষা খাতে দ্রুত ও কার্যকর সংস্কারই পারে এই সংকট থেকে উত্তরণের পথ তৈরি করতে।

back to top