alt

সম্পাদকীয়

মামলার ন্যায্যতা ও আইনের শাসন: কিসের পরিবর্তন ঘটেছে?

: বুধবার, ২১ মে ২০২৫

নুসরাত ফারিয়ার গ্রেপ্তার ইস্যুতে সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনাবলি ও অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো কোনো উপদেষ্টার বক্তব্য সমাজে এক গভীর উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে যেÑকোন যুক্তিতে এই মামলা করা হলো, কোন আইনি ও প্রাসঙ্গিক ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হলো। এসব প্রশ্নের কোনো গ্রহণযোগ্য উত্তর মেলেনি। দায়িত্বশীলদের কেউ কেউ যা বলছেন তা বাকওয়াজ।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলছেন, “নুসরাত ফারিয়ার মামলার তদন্ত শেষ না হওয়ায় তিনি নিরপরাধ কি না তা এখনো স্পষ্ট নয়। আর সেই কারণেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”

এ বক্তব্য কতটা যুক্তিযুক্ত সেই প্রশ্ন উঠেছে। আমরা বলতে চাই, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কাউকে অপরাধী ভাবার এই প্রবণতা বিপজ্জনক। কারণ, এই মানসিকতা যদি প্রতিষ্ঠিত হয়, তবে তো যে কাউকে শুধু ‘তদন্ত চলছে’Ñএই অজুহাতে আটক রাখা যাবে।

সরকারের মধ্যেই অনেকে এ গ্রেপ্তারে প্রশ্ন তুলছেন। কেউ কেউ খোলাখুলি সমালোচনা করছেন। একজন উপদেষ্টা বলেছেন, তিনি ‘বিব্রত’। প্রশ্ন হচ্ছে, তাহলে ঢালাও মামলা ও গ্রেপ্তারের এই অদ্ভুত প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছে কারা? আর কেন?

পাঁচ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর পরিস্থিতি পাল্টাবে বলে আশা তৈরি হয়েছিল, বাস্তব চিত্র যেন একেবারেই উল্টো। বরং মনে হচ্ছে, মামলার বন্যা বইছেÑসাংবাদিক, সংস্কৃতিকর্মী, আইনজীবী, এমনকি সাধারণ নাগরিকের বিরুদ্ধেও। একেকটি মামলায় একশ থেকে দেড়শ জনের মতো আসামি। কোনও কোনও মামলায় সেই সংখ্যা আরও বেশী।

খেয়াল-খুশি মতো মামলা করা, ইচ্ছেমতো গ্রেপ্তার করা, জামিন না দেওয়া- কী চলছে এসব! একে কী আইনের শাসন বলে! পাঁচ আগস্টের পর দেশে পরিবর্তনটা কী হলো? আমরা তো সেরকম কোনও পরিবর্তন দেখছি না। দেশ যেভাবে চলছিল সেভাবেই চলছে।

আইন উপদেষ্টা আগে বলেছেন, “কেউ মামলা করতে চাইলে বাধা দেওয়া যায় না।”

প্রশ্ন হচ্ছে, আইনের শাসন কি তাহলে খেয়াল-খুশির বিষয় হয়ে গেল? সাধারণ মানুষ কি সরকারের কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করতে চাইলে তা নেওয়া হবে? সরকারের কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে যদি মামলা হয়ও তাহলে কি তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তারা গ্রেপ্তারও হবেন?

মামলা, গ্রেপ্তার এবং জামিনের প্রশ্নে যদি নূন্যতম নিয়ম মানা না হয় তাহলে সেটা হয়রানির হাতিয়ারে পরিণত হয়। আজ দেখা যাচ্ছে, একই অভিযোগে একজন জামিন পাচ্ছেন, অন্যজন পাচ্ছেন না। কাউকে মামলা দিয়েই তুলে আনা হচ্ছে। এ কেমন বিচারব্যবস্থা?

এই প্রহসনমূলক মামলা ও গ্রেপ্তার প্রক্রিয়া অবিলম্বে বন্ধ হওয়া জরুরি। ঢালাও মামলা, নির্বিচার গ্রেপ্তার আর জামিন না দেওয়ার এই প্রবণতা না থামলে ভবিষ্যতে কেউই এই প্রবণতা থেকে রেহাই পাবেন না।

দেশের বিচার ব্যবস্থায় ন্যায্যতা ও স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনা না গেলে, পাঁচ আগস্টের পরিবর্তনের অর্থ দাঁড়াবে কেবল এক তারিখ বদলের গল্পÑব্যবস্থা বদলের নয়।

সরকারি গাছ কাটা কঠোরভাবে বন্ধ করুন

এসএসসি পরীক্ষায় অনুপস্থিতি : বাল্যবিয়ে রোধে ব্যবস্থা নিন

জলাবদ্ধতা : প্রশ্নবিদ্ধ নগর ব্যবস্থাপনা

ভিজিএফ চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ আমলে নিন

সার বিতরণে অনিয়ম : কৃষকের দুর্ভোগের অবসান হোক

ভারতে বিমান দুর্ঘটনা

ইরান-ইসরায়েল সংঘাত : যুদ্ধ নয়, শান্তিই টেকসই সমাধান

বাড়ছে করোনার সংক্রমণ : মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধি

ডেঙ্গু মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে হবে

ঈদুল আজহা : ত্যাগ, ভালোবাসা ও সম্প্রীতির উৎসব

ঈদযাত্রায় বাড়তি ভাড়া : ব্যবস্থাপনার ফাঁকফোকর ও নজরদারির সীমাবদ্ধতা

নির্বাচন নিয়ে বাদানুবাদ শুভ লক্ষণ নয়

অপরাধের উদ্বেগজনক প্রবণতা ও আইনশৃঙ্খলার বাস্তবতা

রেলের জমি দখলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

বাসে ডাকাতি ও নারী নির্যাতন : সড়কে জনসাধারণের আতঙ্ক

স্মার্টকার্ড জটিলতায় টিসিবির পণ্য সরবরাহ ব্যাহত, ব্যবস্থা নিন

প্যারাবন ধ্বংস ও দখলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

বজ্রপাতে প্রাণহানি ঠেকাতে চাই প্রস্তুতি ও সচেতনতা

নারীর ডাকে ‘মৈত্রী যাত্রা’

খাদ্যে ভেজাল : আইন আছে, প্রয়োগ কোথায়?

চুয়াত্তর পেরিয়ে পঁচাত্তরে সংবাদ: প্রতিজ্ঞায় অবিচল পথচলা

দখলে অস্তিত্ব সংকটে বন

এই যুদ্ধবিরতি হোক স্থায়ী শান্তির সূচনা

তাপপ্রবাহে চাই সতর্কতা, সচেতনতা ও সুরক্ষা পরিকল্পনা

যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই

ধর্মীয় অপব্যাখ্যায় শতবর্ষী বটগাছ নিধন : এ কোন সভ্যতা?

বেইলি রোডে আবার আগুন : নিরাপত্তা নিয়ে ভাবার সময় এখনই

লাউয়াছড়া বন : নিঃশব্দ বিপর্যয়ের মুখে

ডেঙ্গু পরিস্থিতি : অবহেলা নয়, দরকার জরুরি উদ্যোগ

ইকোপার্কের করুণ দশা : দায় কার

হাতি শাবকের মৃত্যু ও সাফারি পার্কের দায়ভার

বায়ুদূষণ রোধে চাই টেকসই উদ্যোগ

মেহনতি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার দিন

চালের দামে অস্বস্তি : সরকারি তথ্য ও বাজারের বাস্তবতার ফারাক

অতিদারিদ্র্যের আশঙ্কা : সমাধান কোথায়?

ডিমলা উপজেলা হাসপাতালের অনিয়ম

tab

সম্পাদকীয়

মামলার ন্যায্যতা ও আইনের শাসন: কিসের পরিবর্তন ঘটেছে?

বুধবার, ২১ মে ২০২৫

নুসরাত ফারিয়ার গ্রেপ্তার ইস্যুতে সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনাবলি ও অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো কোনো উপদেষ্টার বক্তব্য সমাজে এক গভীর উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে যেÑকোন যুক্তিতে এই মামলা করা হলো, কোন আইনি ও প্রাসঙ্গিক ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হলো। এসব প্রশ্নের কোনো গ্রহণযোগ্য উত্তর মেলেনি। দায়িত্বশীলদের কেউ কেউ যা বলছেন তা বাকওয়াজ।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলছেন, “নুসরাত ফারিয়ার মামলার তদন্ত শেষ না হওয়ায় তিনি নিরপরাধ কি না তা এখনো স্পষ্ট নয়। আর সেই কারণেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”

এ বক্তব্য কতটা যুক্তিযুক্ত সেই প্রশ্ন উঠেছে। আমরা বলতে চাই, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কাউকে অপরাধী ভাবার এই প্রবণতা বিপজ্জনক। কারণ, এই মানসিকতা যদি প্রতিষ্ঠিত হয়, তবে তো যে কাউকে শুধু ‘তদন্ত চলছে’Ñএই অজুহাতে আটক রাখা যাবে।

সরকারের মধ্যেই অনেকে এ গ্রেপ্তারে প্রশ্ন তুলছেন। কেউ কেউ খোলাখুলি সমালোচনা করছেন। একজন উপদেষ্টা বলেছেন, তিনি ‘বিব্রত’। প্রশ্ন হচ্ছে, তাহলে ঢালাও মামলা ও গ্রেপ্তারের এই অদ্ভুত প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছে কারা? আর কেন?

পাঁচ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর পরিস্থিতি পাল্টাবে বলে আশা তৈরি হয়েছিল, বাস্তব চিত্র যেন একেবারেই উল্টো। বরং মনে হচ্ছে, মামলার বন্যা বইছেÑসাংবাদিক, সংস্কৃতিকর্মী, আইনজীবী, এমনকি সাধারণ নাগরিকের বিরুদ্ধেও। একেকটি মামলায় একশ থেকে দেড়শ জনের মতো আসামি। কোনও কোনও মামলায় সেই সংখ্যা আরও বেশী।

খেয়াল-খুশি মতো মামলা করা, ইচ্ছেমতো গ্রেপ্তার করা, জামিন না দেওয়া- কী চলছে এসব! একে কী আইনের শাসন বলে! পাঁচ আগস্টের পর দেশে পরিবর্তনটা কী হলো? আমরা তো সেরকম কোনও পরিবর্তন দেখছি না। দেশ যেভাবে চলছিল সেভাবেই চলছে।

আইন উপদেষ্টা আগে বলেছেন, “কেউ মামলা করতে চাইলে বাধা দেওয়া যায় না।”

প্রশ্ন হচ্ছে, আইনের শাসন কি তাহলে খেয়াল-খুশির বিষয় হয়ে গেল? সাধারণ মানুষ কি সরকারের কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করতে চাইলে তা নেওয়া হবে? সরকারের কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে যদি মামলা হয়ও তাহলে কি তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তারা গ্রেপ্তারও হবেন?

মামলা, গ্রেপ্তার এবং জামিনের প্রশ্নে যদি নূন্যতম নিয়ম মানা না হয় তাহলে সেটা হয়রানির হাতিয়ারে পরিণত হয়। আজ দেখা যাচ্ছে, একই অভিযোগে একজন জামিন পাচ্ছেন, অন্যজন পাচ্ছেন না। কাউকে মামলা দিয়েই তুলে আনা হচ্ছে। এ কেমন বিচারব্যবস্থা?

এই প্রহসনমূলক মামলা ও গ্রেপ্তার প্রক্রিয়া অবিলম্বে বন্ধ হওয়া জরুরি। ঢালাও মামলা, নির্বিচার গ্রেপ্তার আর জামিন না দেওয়ার এই প্রবণতা না থামলে ভবিষ্যতে কেউই এই প্রবণতা থেকে রেহাই পাবেন না।

দেশের বিচার ব্যবস্থায় ন্যায্যতা ও স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনা না গেলে, পাঁচ আগস্টের পরিবর্তনের অর্থ দাঁড়াবে কেবল এক তারিখ বদলের গল্পÑব্যবস্থা বদলের নয়।

back to top