ঢাকার মিরপুরে একটি পোশাক কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকা-ে কমপক্ষে ১৬ জন শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় অনেক শ্রমিক এখনও নিখোঁজ রয়েছেন। কারখানার পাশে অবস্থিত একটি রাসায়নিক গুদামেও আগুন ধরে গেলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়ে। এই ঘটনা দেশের শিল্প-কারখানার নিরাপত্তা ব্যবস্থার গভীর সংকট ও অবহেলার একটি নজির।
অগ্নিকা-ে নিহতদের স্বজনদের প্রতি আমরা জানাই গভীর সমবেদনা। এই ঘটনায় আহতরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন সেই কামনা করি। যেসব শ্রমিক এখনো নিখোঁজ আছেন তাদের সন্ধান মিলবে বলে আশা করি।
অগ্নিকা-ের ঘটনায় বেশ কয়েকটি বিষয় উদ্বেগজনকভাবে সামনে এসেছে। সংশ্লিষ্ট কারখানার ছাদের দরজা তালাবদ্ধ থাকায় শ্রমিকরা নিরাপদে বের হতে পারেননি। এ কারণে প্রাণহানির ঘটনা বেড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কারখানার পাশের রাসায়নিক গুদামে বিস্ফোরণ ও বিষাক্ত ধোঁয়ার কারণে শ্রমিকরা অজ্ঞান হয়ে পড়েন। এতে উদ্ধার কার্যক্রম আরও কঠিন হয়ে পড়ে। রাসায়নিক গুদামটির অনুমোদন নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
পোশাক শিল্প দেশের অর্থনীতির অন্যতম স্তম্ভ। এই শিল্পের ওপর নির্ভর করে লাখো শ্রমিকের জীবিকা। তবে বারবার অগ্নিকা-, ভবন ধস, বা অন্যান্য দুর্ঘটনার ঘটনা আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, এই শিল্পের নিরাপত্তা ব্যবস্থা এখনও অনেক ক্ষেত্রে অপ্রতুল।
২০১২ সালের তাজরীন ফ্যাশনের অগ্নিকা- এবং ২০১৩ সালের রানা প্লাজার ধসের পর নিরাপত্তা সংস্কারের নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। মিরপুরের এই ঘটনা প্রমাণ করে যে, এই সংস্কারগুলো এখনও পুরোপুরি কার্যকর হয়নি। সেখানেও দেখা গেল অপর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা আর তালাবদ্ধ দরজা।
কেন বারবার একই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটছে সেটা আমরা জানতে চাইব। এজন্য দায়ী কারা, দায়ীদের জবাবদিহি কি নিশ্চিত করা হচ্ছে? রাসায়নিক গুদামের মতো স্পর্শকাতর স্থাপনার অনুমোদন এবং নিয়মিত পরিদর্শনের বিষয়ে কঠোর নজরদারি কি করা হয়?
এই মর্মান্তিক ঘটনা থেকে শিক্ষা নিতে হবে। সকল পোশাক কারখানা ও সংলগ্ন স্থাপনার নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যালোচনা করতে হবে। অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা, জরুরি নির্গমন পথ, এবং শ্রমিকদের নিরাপত্তা প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে। রাসায়নিক গুদামের মতো ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনার জন্য কঠোর নিয়ম-কানুন প্রণয়ন ও তার বাস্তবায়ন জরুরি। এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করতে হবে। তদন্তে দায়ীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের অবহেলা রোধ করা যায়।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫
ঢাকার মিরপুরে একটি পোশাক কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকা-ে কমপক্ষে ১৬ জন শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় অনেক শ্রমিক এখনও নিখোঁজ রয়েছেন। কারখানার পাশে অবস্থিত একটি রাসায়নিক গুদামেও আগুন ধরে গেলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়ে। এই ঘটনা দেশের শিল্প-কারখানার নিরাপত্তা ব্যবস্থার গভীর সংকট ও অবহেলার একটি নজির।
অগ্নিকা-ে নিহতদের স্বজনদের প্রতি আমরা জানাই গভীর সমবেদনা। এই ঘটনায় আহতরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন সেই কামনা করি। যেসব শ্রমিক এখনো নিখোঁজ আছেন তাদের সন্ধান মিলবে বলে আশা করি।
অগ্নিকা-ের ঘটনায় বেশ কয়েকটি বিষয় উদ্বেগজনকভাবে সামনে এসেছে। সংশ্লিষ্ট কারখানার ছাদের দরজা তালাবদ্ধ থাকায় শ্রমিকরা নিরাপদে বের হতে পারেননি। এ কারণে প্রাণহানির ঘটনা বেড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কারখানার পাশের রাসায়নিক গুদামে বিস্ফোরণ ও বিষাক্ত ধোঁয়ার কারণে শ্রমিকরা অজ্ঞান হয়ে পড়েন। এতে উদ্ধার কার্যক্রম আরও কঠিন হয়ে পড়ে। রাসায়নিক গুদামটির অনুমোদন নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
পোশাক শিল্প দেশের অর্থনীতির অন্যতম স্তম্ভ। এই শিল্পের ওপর নির্ভর করে লাখো শ্রমিকের জীবিকা। তবে বারবার অগ্নিকা-, ভবন ধস, বা অন্যান্য দুর্ঘটনার ঘটনা আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, এই শিল্পের নিরাপত্তা ব্যবস্থা এখনও অনেক ক্ষেত্রে অপ্রতুল।
২০১২ সালের তাজরীন ফ্যাশনের অগ্নিকা- এবং ২০১৩ সালের রানা প্লাজার ধসের পর নিরাপত্তা সংস্কারের নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। মিরপুরের এই ঘটনা প্রমাণ করে যে, এই সংস্কারগুলো এখনও পুরোপুরি কার্যকর হয়নি। সেখানেও দেখা গেল অপর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা আর তালাবদ্ধ দরজা।
কেন বারবার একই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটছে সেটা আমরা জানতে চাইব। এজন্য দায়ী কারা, দায়ীদের জবাবদিহি কি নিশ্চিত করা হচ্ছে? রাসায়নিক গুদামের মতো স্পর্শকাতর স্থাপনার অনুমোদন এবং নিয়মিত পরিদর্শনের বিষয়ে কঠোর নজরদারি কি করা হয়?
এই মর্মান্তিক ঘটনা থেকে শিক্ষা নিতে হবে। সকল পোশাক কারখানা ও সংলগ্ন স্থাপনার নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যালোচনা করতে হবে। অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা, জরুরি নির্গমন পথ, এবং শ্রমিকদের নিরাপত্তা প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে। রাসায়নিক গুদামের মতো ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনার জন্য কঠোর নিয়ম-কানুন প্রণয়ন ও তার বাস্তবায়ন জরুরি। এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করতে হবে। তদন্তে দায়ীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের অবহেলা রোধ করা যায়।