বৈশ্বিক মহামারি নভেল করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বের যে ১৪টি দেশে সবচেয়ে বেশি দিন স্কুল বন্ধ রয়েছে তার একটি হচ্ছে বাংলাদেশ। ইউনিসেফের একটি প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। দেশে করোনার সংক্রমণের কারণে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ করে দেয়ার পর আর খোলা হয়নি। করোনার সংক্রমণ আবার বেড়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটিও বেড়েছে। আগামী ৩০ জুনের আগে আর তা খোলার সম্ভাবনা নেই।
কবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সম্ভাবনা আছে- এমন প্রশ্নের উত্তর বলা হচ্ছে, করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এলে তারপর খোলা হবে। আর বিশ্ববিদ্যালয় খোলা হবে শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার পর। হার্ড ইমিউনিটি অর্জন করা ছাড়া করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না। হার্ড ইমিউনিটি অর্জনের জন্য দেশের ৭০ থেকে ৮০ ভাগ মানুষকে টিকা দিতে হবে। বাজেটে প্রতি মাসে ২৫ লাখ টিকা দেয়ার যে পরিকল্পনা করা হয়েছে তাতে ৮০ ভাগ মানুষকে টিকা দিতে প্রায় নয় বছর সময় লাগবে।
শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে টিকা দেওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় খোলার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। ৩৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ লাখ ৩ হাজার শিক্ষার্থীর একটি তালিকাও করা হয়েছে। অথচ এখন টিকার জোগান নেই বললেই চলে। বহু মানুষ দ্বিতীয় ডোজের টিকা পায়নি। সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে হু হু করে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংক্রমণ বাড়তে থাকা জেলায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দেয়া জরুরি। বয়স্ক ও জটিল রোগে আক্রান্ত মানুষদেরকেও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দিতে হবে। প্রশ্ন হচ্ছে, সীমিত জোগান দিয়ে অগ্রাধিকারের এতসব দাবি সরকার মেটাবে কীভাবে।
প্রশ্ন হচ্ছে-মহামারি যদি আগামী কয়েক বছরেও নিয়ন্ত্রণে না আসে তাহলে কি এভাবেই চলতে থাকবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো কবে আর কীভাবে খুলবে সেটা নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোন পরিকল্পনার কথা জানা যায় না। করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসেনি বলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা যাচ্ছে না- এমন ঘোষাণা দিয়েই দায়দায়িত্ব সারছেন সংশ্লিষ্টরা। স্কুল-কলেজ খোলার অপেক্ষায় থেকে থেকে হাঁফিয়ে উঠেছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা বা পরীক্ষা নেয়ার জন্য বাস্তবায়নযোগ্য কোন রোডম্যাপ বা সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নেই দেখে তাদের হতাশা আরো বাড়ছে। অনেক স্থানেই শিক্ষার্থীরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবিতে আন্দোলন করছে। অনেকে ধাপে ধাপে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পরামর্শ দিয়েছেন। তারা বলছেন, সংক্রমণ কম এমন এলাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে পরিস্থিতি পর্যিবেক্ষণ করা যায়। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সপ্তাহের একেক দিনে একেক শ্রেণির পাঠদানের ব্যবস্থা করা গেলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভিড় এড়ানো সম্ভব হবে।
করোনার সংক্রমণ কমার আগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা ঝুঁকিপূর্ণ। আবার দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার কারণে প্রাক?-প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত প্রায় চার কোটি শিক্ষার্থীর ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। শিশুশ্রম ও বাল্যবিয়ে বেড়েছে। সেশন জটের শিকার হচ্ছে অনেকে। পড়াশোনা শেষ না হওয়ায় কর্মজীবনে প্রবেশ করতে পারছে না উল্লেখযোগ্য একটি অংশ। শারীরিক-মানসিক নানান সংকট তো রয়েছেই।
দেশে দেশে করোনা দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে। বিশ্বের অনেক দেশই নতুন এ পরিস্থিতিতে খাপ খাইয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে। করোনা মোকাবিলা করে কীভাবে শিক্ষা ব্যবস্থাকে সচল করা যায় সেই পথ খুঁজতে হবে। এজন্য সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা থাকা জরুরি। উন্নত দেশগুলোর অভিজ্ঞতা কাজে লাগানো যেতে পারে।
সোমবার, ১৪ জুন ২০২১
বৈশ্বিক মহামারি নভেল করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বের যে ১৪টি দেশে সবচেয়ে বেশি দিন স্কুল বন্ধ রয়েছে তার একটি হচ্ছে বাংলাদেশ। ইউনিসেফের একটি প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। দেশে করোনার সংক্রমণের কারণে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ করে দেয়ার পর আর খোলা হয়নি। করোনার সংক্রমণ আবার বেড়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটিও বেড়েছে। আগামী ৩০ জুনের আগে আর তা খোলার সম্ভাবনা নেই।
কবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সম্ভাবনা আছে- এমন প্রশ্নের উত্তর বলা হচ্ছে, করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এলে তারপর খোলা হবে। আর বিশ্ববিদ্যালয় খোলা হবে শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার পর। হার্ড ইমিউনিটি অর্জন করা ছাড়া করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না। হার্ড ইমিউনিটি অর্জনের জন্য দেশের ৭০ থেকে ৮০ ভাগ মানুষকে টিকা দিতে হবে। বাজেটে প্রতি মাসে ২৫ লাখ টিকা দেয়ার যে পরিকল্পনা করা হয়েছে তাতে ৮০ ভাগ মানুষকে টিকা দিতে প্রায় নয় বছর সময় লাগবে।
শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে টিকা দেওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় খোলার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। ৩৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ লাখ ৩ হাজার শিক্ষার্থীর একটি তালিকাও করা হয়েছে। অথচ এখন টিকার জোগান নেই বললেই চলে। বহু মানুষ দ্বিতীয় ডোজের টিকা পায়নি। সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে হু হু করে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংক্রমণ বাড়তে থাকা জেলায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দেয়া জরুরি। বয়স্ক ও জটিল রোগে আক্রান্ত মানুষদেরকেও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দিতে হবে। প্রশ্ন হচ্ছে, সীমিত জোগান দিয়ে অগ্রাধিকারের এতসব দাবি সরকার মেটাবে কীভাবে।
প্রশ্ন হচ্ছে-মহামারি যদি আগামী কয়েক বছরেও নিয়ন্ত্রণে না আসে তাহলে কি এভাবেই চলতে থাকবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো কবে আর কীভাবে খুলবে সেটা নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোন পরিকল্পনার কথা জানা যায় না। করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসেনি বলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা যাচ্ছে না- এমন ঘোষাণা দিয়েই দায়দায়িত্ব সারছেন সংশ্লিষ্টরা। স্কুল-কলেজ খোলার অপেক্ষায় থেকে থেকে হাঁফিয়ে উঠেছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা বা পরীক্ষা নেয়ার জন্য বাস্তবায়নযোগ্য কোন রোডম্যাপ বা সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নেই দেখে তাদের হতাশা আরো বাড়ছে। অনেক স্থানেই শিক্ষার্থীরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবিতে আন্দোলন করছে। অনেকে ধাপে ধাপে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পরামর্শ দিয়েছেন। তারা বলছেন, সংক্রমণ কম এমন এলাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে পরিস্থিতি পর্যিবেক্ষণ করা যায়। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সপ্তাহের একেক দিনে একেক শ্রেণির পাঠদানের ব্যবস্থা করা গেলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভিড় এড়ানো সম্ভব হবে।
করোনার সংক্রমণ কমার আগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা ঝুঁকিপূর্ণ। আবার দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার কারণে প্রাক?-প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত প্রায় চার কোটি শিক্ষার্থীর ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। শিশুশ্রম ও বাল্যবিয়ে বেড়েছে। সেশন জটের শিকার হচ্ছে অনেকে। পড়াশোনা শেষ না হওয়ায় কর্মজীবনে প্রবেশ করতে পারছে না উল্লেখযোগ্য একটি অংশ। শারীরিক-মানসিক নানান সংকট তো রয়েছেই।
দেশে দেশে করোনা দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে। বিশ্বের অনেক দেশই নতুন এ পরিস্থিতিতে খাপ খাইয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে। করোনা মোকাবিলা করে কীভাবে শিক্ষা ব্যবস্থাকে সচল করা যায় সেই পথ খুঁজতে হবে। এজন্য সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা থাকা জরুরি। উন্নত দেশগুলোর অভিজ্ঞতা কাজে লাগানো যেতে পারে।