alt

সম্পাদকীয়

ধর্ষণ মামলার রায় : আদালতের পর্যবেক্ষণ ও কিছু প্রশ্ন

: শনিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২১

রাজধানীর বনানীর রেইনট্রি হোটেলে চার বছর আগে দুই তরুণীকে ধর্ষণের মামলায় সব আসামিকে খালাস দেয়া হয়েছে। ঢাকার ৭ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক বেগম মোছা. কামরুন্নাহার বলেছেন, ‘ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। ভিকটিমদের ডাক্তারি রিপোর্টে কোন সেক্সুয়াল ভায়োলেশনের বিবরণ নেই। ভিকটিমের পরিধেয়তে পাওয়া ডিএনএ নমুনা আসামিদের সঙ্গে মিলল না।’

রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেছে, ঘটনার ৩৮ দিন পর মামলা হওয়ায় ভিকটিমদের মেডিকেল রিপোর্টে প্রমাণ আসেনি। বিচারক বলেছেন, অভিযোগকারীরা শারীরিক সম্পর্কে অভ্যস্ত ছিল। ৩৮ দিন পর এসে তারা বললো ‘রেপ্ড হয়েছি’, বিষয়টি তদন্ত কর্মকর্তার বিবেচনা করা উচিৎ ছিল। সাক্ষ্য-প্রমাণ না পাওয়া সত্ত্বেও চার্জশিট দিয়ে তদন্ত কর্মকর্তা আদালতের সময় নষ্ট করেছে।

বিচারক ধর্ষণের ঘটনার ৭২ ঘণ্টা পর পুলিশকে মামলা না নিতে বলেছেন। কারণ হিসেবে তিনি বলেছেন, ৭২ ঘণ্টা পর মেডিকেল টেস্ট করা হলে ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায় না। তাতে মামলা প্রমাণ করা দুরূহ হয়ে পড়ে।

আদালতের পর্যবেক্ষণে তদন্ত কর্মকর্তার ভূমিকার সমালোচনা করা হয়েছে। বিচারক বলছে, তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। আদালতের পর্যবেক্ষণে বোঝা যায়, তদন্তে গাফিলতি আছে। যদি তদন্তে গাফিলতি থাকে তাহলে আদালত পুনঃতদন্তের নির্দেশ দিতে পারে কিনা সেটা একটা প্রশ্ন।

ট্রাইব্যুনালের বিচারক কামরুন্নাহার বলেছেন, অভিযোগকারীরা শারীরিক সম্পর্কে অভ্যস্ত। প্রশ্ন হচ্ছে, শারীরিক সম্পর্কে অভ্যস্ত কোন ব্যক্তি কি ধর্ষণের শিকার হতে পারেন না? শারীরিক সম্পর্কে অভ্যস্ত কোন ব্যক্তি ধর্ষণের শিকার হলে তিনি কি বিচার পাওয়ার অধিকার হারিয়ে ফেলেন? দেশের আইন এ বিষয়ে কী বলে? উক্ত পর্যবেক্ষণ দিয়ে কী বোঝানো হলো?

ধর্ষণের ৭২ ঘণ্টা পর পুলিশকে মামলা না নেয়ার যে কথা আদালত বলেছে, সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উচ্চ আদালতের ঠিক করে দেয়া নীতিমালা অনুযায়ী, ধর্ষণের মামলা নেয়ার ক্ষেত্রে কোন রকম কালবিলম্ব চলবে না, সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়া পুলিশ মামলা নিতে অস্বীকৃতিও জানাতে পারবে না। উচ্চ আদালতের এমন নীতিমালা থাকা সত্ত্বেও নিম্ন আদালতের একজন বিচারক পুলিশকে ৭২ ঘণ্টা পর মামলা না নেয়ার পর্যবেক্ষণ দিলেন কিসের ভিত্তিতে সেই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

বিচারক বলেছেন, ৭২ ঘণ্টা পর মেডিকেল টেস্ট করা হলে ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায় না। তাতে মামলা প্রমাণ করা দুরূহ হয়ে পড়ে। আমরা জানতে চাইব, কেবল মেডিকেল টেস্ট দিয়ে ধর্ষণের অপরাধ প্রমাণ করতে হবে এমন বিধান কোথায় আছে। উচ্চ আদালতের রায় অনুযায়ী, ভিকটিমের মৌখিক সাক্ষ্য ও অন্যান্য পারিপার্শ্বিক সাক্ষ্যের মাধ্যমে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করা গেলে তার ভিত্তিতেই দন্ড দেয়া যেতে পারে।

অভিযোগ রয়েছে, ধর্ষণের ঘটনায় অনেক থানা নানান অজুহাতে মামলা নিতে চায় না। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে কেউ ধর্ষণের মামলা করলেও তার বিচার মেলে না। বিচার পাওয়ার প্রতিটি স্তরে ভিকটিমকে হেনস্তা হতে হয়। এখন ট্রাইব্যুনালের একজন বিচারকের উল্লিখিত পর্যবেক্ষণের পর পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে ভিকটিমরা মামলা করতে নিরুৎসাহিত হতে পারেন। ৭২ ঘণ্টা পর মামলা না নেয়ার পর্যবেক্ষণ দিয়ে ধর্ষকদেরই অন্যায় উৎসাহ দেয়া হলো কিনা সেটা একটা প্রশ্ন। এসব প্রশ্নের উত্তর জানা দরকার। কারণ ট্রাইব্যুনালের বিচারক যে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন তা মানুষের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। মানুষের এই উদ্বেগের অবসান ঘটানো জরুরি।

চকরিয়ায় পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

গরমে দুর্বিষহ জনজীবন

ভালুকায় খাবার পানির সংকট নিরসনে ব্যবস্থা নিন

সড়কে চাই সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা

লঞ্চ চালাতে হবে নিয়ম মেনে

নতুন বছররে শুভচ্ছো

বিষ ঢেলে মাছ নিধনের অভিযোগ আমলে নিন

ঈদের আনন্দ স্পর্শ করুক সবার জীবন

মীরসরাইয়ের বন রক্ষায় সমন্বিত উদ্যোগ নেয়া জরুরি

স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বাড়ানো জরুরি

কৃষকরা কেন তামাক চাষে ঝুঁকছে

রেলক্রসিংয়ে প্রাণহানির দায় কার

আর কত অপেক্ষার পর সেতু পাবে রানিশংকৈলের মানুষ^

পাহাড়ে ব্যাংক হামলা কেন

সিসা দূষণ রোধে আইনের কঠোর বাস্তবায়ন জরুরি

হার্টের রিংয়ের নির্ধারিত দর বাস্তবায়নে মনিটরিং জরুরি

রইচপুর খালে সেতু নির্মাণে আর কত অপেক্ষা

রাজধানীকে যানজটমুক্ত করা যাচ্ছে না কেন

জেলেরা কেন বরাদ্দকৃত চাল পাচ্ছে না

নিয়মতান্ত্রিক সংগঠনের সুযোগ থাকা জরুরি, বন্ধ করতে হবে অপরাজনীতি

ঢাকা-ময়মনসিংহ চার লেন সড়কের ক্ষতিগ্রস্ত অংশে সংস্কার করুন

শিক্ষা খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে

স্লুইসগেটের ফাটল মেরামতে উদ্যোগ নিন

পরিবেশ দূষণ বন্ধে সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে

রংপুর শিশু হাসপাতাল চালু হতে কালক্ষেপণ কেন

দেশে এত খাবার অপচয়ের কারণ কী

রায়গঞ্জে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাতায়াতের দুর্ভোগ দূর করুন

প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার বাইরে থাকা জনগোষ্ঠী নিয়ে ভাবতে হবে

জলাশয় দূষণের জন্য দায়ী কারখানার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

নদী থেকে অবৈধভাবে বালু তোলা বন্ধ করুন

বহরবুনিয়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভবন নির্মাণে আর কত বিলম্ব

মশার উপদ্রব থেকে নগরবাসীকে মুক্তি দিন

সিলেট ‘ইইডি’ কার্যালয়ের অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ

পাহাড় কাটা বন্ধ করুন

স্বাধীনতার ৫৪ বছর : মানুষের আশা-আকাক্সক্ষা কতটা পূরণ হলো

চিকিৎসক সংকট দূর করুন

tab

সম্পাদকীয়

ধর্ষণ মামলার রায় : আদালতের পর্যবেক্ষণ ও কিছু প্রশ্ন

শনিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২১

রাজধানীর বনানীর রেইনট্রি হোটেলে চার বছর আগে দুই তরুণীকে ধর্ষণের মামলায় সব আসামিকে খালাস দেয়া হয়েছে। ঢাকার ৭ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক বেগম মোছা. কামরুন্নাহার বলেছেন, ‘ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। ভিকটিমদের ডাক্তারি রিপোর্টে কোন সেক্সুয়াল ভায়োলেশনের বিবরণ নেই। ভিকটিমের পরিধেয়তে পাওয়া ডিএনএ নমুনা আসামিদের সঙ্গে মিলল না।’

রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেছে, ঘটনার ৩৮ দিন পর মামলা হওয়ায় ভিকটিমদের মেডিকেল রিপোর্টে প্রমাণ আসেনি। বিচারক বলেছেন, অভিযোগকারীরা শারীরিক সম্পর্কে অভ্যস্ত ছিল। ৩৮ দিন পর এসে তারা বললো ‘রেপ্ড হয়েছি’, বিষয়টি তদন্ত কর্মকর্তার বিবেচনা করা উচিৎ ছিল। সাক্ষ্য-প্রমাণ না পাওয়া সত্ত্বেও চার্জশিট দিয়ে তদন্ত কর্মকর্তা আদালতের সময় নষ্ট করেছে।

বিচারক ধর্ষণের ঘটনার ৭২ ঘণ্টা পর পুলিশকে মামলা না নিতে বলেছেন। কারণ হিসেবে তিনি বলেছেন, ৭২ ঘণ্টা পর মেডিকেল টেস্ট করা হলে ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায় না। তাতে মামলা প্রমাণ করা দুরূহ হয়ে পড়ে।

আদালতের পর্যবেক্ষণে তদন্ত কর্মকর্তার ভূমিকার সমালোচনা করা হয়েছে। বিচারক বলছে, তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। আদালতের পর্যবেক্ষণে বোঝা যায়, তদন্তে গাফিলতি আছে। যদি তদন্তে গাফিলতি থাকে তাহলে আদালত পুনঃতদন্তের নির্দেশ দিতে পারে কিনা সেটা একটা প্রশ্ন।

ট্রাইব্যুনালের বিচারক কামরুন্নাহার বলেছেন, অভিযোগকারীরা শারীরিক সম্পর্কে অভ্যস্ত। প্রশ্ন হচ্ছে, শারীরিক সম্পর্কে অভ্যস্ত কোন ব্যক্তি কি ধর্ষণের শিকার হতে পারেন না? শারীরিক সম্পর্কে অভ্যস্ত কোন ব্যক্তি ধর্ষণের শিকার হলে তিনি কি বিচার পাওয়ার অধিকার হারিয়ে ফেলেন? দেশের আইন এ বিষয়ে কী বলে? উক্ত পর্যবেক্ষণ দিয়ে কী বোঝানো হলো?

ধর্ষণের ৭২ ঘণ্টা পর পুলিশকে মামলা না নেয়ার যে কথা আদালত বলেছে, সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উচ্চ আদালতের ঠিক করে দেয়া নীতিমালা অনুযায়ী, ধর্ষণের মামলা নেয়ার ক্ষেত্রে কোন রকম কালবিলম্ব চলবে না, সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়া পুলিশ মামলা নিতে অস্বীকৃতিও জানাতে পারবে না। উচ্চ আদালতের এমন নীতিমালা থাকা সত্ত্বেও নিম্ন আদালতের একজন বিচারক পুলিশকে ৭২ ঘণ্টা পর মামলা না নেয়ার পর্যবেক্ষণ দিলেন কিসের ভিত্তিতে সেই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

বিচারক বলেছেন, ৭২ ঘণ্টা পর মেডিকেল টেস্ট করা হলে ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায় না। তাতে মামলা প্রমাণ করা দুরূহ হয়ে পড়ে। আমরা জানতে চাইব, কেবল মেডিকেল টেস্ট দিয়ে ধর্ষণের অপরাধ প্রমাণ করতে হবে এমন বিধান কোথায় আছে। উচ্চ আদালতের রায় অনুযায়ী, ভিকটিমের মৌখিক সাক্ষ্য ও অন্যান্য পারিপার্শ্বিক সাক্ষ্যের মাধ্যমে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করা গেলে তার ভিত্তিতেই দন্ড দেয়া যেতে পারে।

অভিযোগ রয়েছে, ধর্ষণের ঘটনায় অনেক থানা নানান অজুহাতে মামলা নিতে চায় না। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে কেউ ধর্ষণের মামলা করলেও তার বিচার মেলে না। বিচার পাওয়ার প্রতিটি স্তরে ভিকটিমকে হেনস্তা হতে হয়। এখন ট্রাইব্যুনালের একজন বিচারকের উল্লিখিত পর্যবেক্ষণের পর পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে ভিকটিমরা মামলা করতে নিরুৎসাহিত হতে পারেন। ৭২ ঘণ্টা পর মামলা না নেয়ার পর্যবেক্ষণ দিয়ে ধর্ষকদেরই অন্যায় উৎসাহ দেয়া হলো কিনা সেটা একটা প্রশ্ন। এসব প্রশ্নের উত্তর জানা দরকার। কারণ ট্রাইব্যুনালের বিচারক যে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন তা মানুষের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। মানুষের এই উদ্বেগের অবসান ঘটানো জরুরি।

back to top