আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংহতি দিবস হিসেবে ১ মে পালন করা শুরু হয় ১৮৯০ সাল থেকে। ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে আছে ১৮৮৬ সালের ৪ মে শিকাগোর হে মার্কেটে ৮ ঘণ্টা কাজের দাবিতে একটি শ্রমিক সমাবেশে সংঘটিত রক্তাক্ত ঘটনাবলি। পুলিশ সেদিন গুলি চালিয়ে ৫ শ্রমিককে হত্যা এবং শ্রমিক নেতাদের গ্রেপ্তার করে। সেদিন শ্রমিকরা শুধু ৮ ঘণ্টা কাজের দাবিতেই সমাবেশ আহ্বান করেননি, তার আগের দিন অর্থাৎ ৩ মে ধর্মঘটী শ্রমিকদের ওপর গুলি চালিয়ে পুলিশ এক শ্রমিককে হত্যা করেছিল, সেই শ্রমিক হত্যার প্রতিবাদ জানাতেও শ্রমিকরা এসেছিলেন ওই সমাবেশে।
শিকাগো শহরে ১৮৮৬ সালের ৪ মে’র শ্রমিক হত্যা ও শ্রমিকদের মৃত্যুদন্ড শ্রমিক আন্দোলনকে স্তব্ধ করতে পারেনি। ইউরোপে শ্রমিকদের সংগঠন দ্বিতীয় ইন্টারন্যাশনাল ১৮৮৯ সালে এক সম্মেলনে সিদ্ধান্ত নেয় যে, পরবর্তী বছর অর্থাৎ ১৮৯০ সাল থেকে শিকাগোর শ্রমিকদের আন্দোলনের দিনটি স্মরণীয় করে রাখার জন্য প্রতি বছর ১ মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংহতি দিবস হিসেবে পালন করা হবে। এভাবেই প্রতি বছর পৃথিবীর দেশে দেশে শ্রমিক শ্রেণী তথা মেহনতি মানুষ মহান মে দিবস পালন করে আসছেন।
কালক্রমে শ্রমিকদের ৮ ঘণ্টা কাজের দাবি পৃথিবীব্যাপী স্বীকৃতি পায়। আইএলও সনদের শ্রমিকদের ৮ ঘণ্টা কাজের দাবি স্বীকৃতি পেয়েছে। এখন সেটা সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনেও ছড়িয়ে পড়েছে।
আমাদের দেশে রাজনীতি দীর্ঘকাল ধরে সামরিক ও অস্বাভাবিক শাসনের দ্বারা রাহুগ্রস্ত হওয়ার ফলে সামাজিক মূল্যবোধগুলো ধীরে ধীরে অবক্ষয়ের শিকার হয়েছে। তারই প্রভাবে আমাদের দেশের ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনও স্বধর্মচ্যুত হয়ে পড়ছে ক্রমান্বয়ে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের পরও সুস্থ রাজনীতির পরিবর্তে চলছে ক্ষমতা ও প্রভুত্বকে কেন্দ্র করে দলাদলি এবং তার পরিণতিতে সংঘবদ্ধ পীড়ন ও সুড়ঙ্গ পথে অর্থাগমের পথ ধরেছে এক শ্রেণীর অসৎ ট্রেড ইউনিয়ন নেতৃত্ব। চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, রাজনৈতিক পক্ষ-প্রতিপক্ষের আড়ালে প্রশাসনের ওপর অশুভ প্রভাব বিস্তার করে চলেছে। ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনের এসব অশুভ শক্তির প্রভাবের কারণে একদিকে ক্ষতি হচ্ছে শ্রমিক স্বার্থ, অন্যদিকে শ্রমিক আন্দোলন সম্পর্কে, ট্রেড ইউনিয়নের কর্মকান্ড সম্পর্কে সাধারণের মধ্যে বিরূপ ধারণার সৃষ্টি হচ্ছে।
আজ স্বদেশে ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলন অতীতের গৌরবময় ঐতিহ্য থেকে ক্রমান্বয়ে সরে গিয়ে এমন এক আত্মঘাতী পথে চলতে শুরু করেছে, যা আমাদের দুর্ভাবনাকে তীব্র করে। এই বিকৃত ধারা বর্জন করে সুস্থ ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলন গড়ে তোলার অঙ্গীকার এ বছরের মে দিবসে শ্রমিক শ্রেণী তথা মেহনতি মানুষকে নিতে হবে।
শনিবার, ৩০ এপ্রিল ২০২২
আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংহতি দিবস হিসেবে ১ মে পালন করা শুরু হয় ১৮৯০ সাল থেকে। ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে আছে ১৮৮৬ সালের ৪ মে শিকাগোর হে মার্কেটে ৮ ঘণ্টা কাজের দাবিতে একটি শ্রমিক সমাবেশে সংঘটিত রক্তাক্ত ঘটনাবলি। পুলিশ সেদিন গুলি চালিয়ে ৫ শ্রমিককে হত্যা এবং শ্রমিক নেতাদের গ্রেপ্তার করে। সেদিন শ্রমিকরা শুধু ৮ ঘণ্টা কাজের দাবিতেই সমাবেশ আহ্বান করেননি, তার আগের দিন অর্থাৎ ৩ মে ধর্মঘটী শ্রমিকদের ওপর গুলি চালিয়ে পুলিশ এক শ্রমিককে হত্যা করেছিল, সেই শ্রমিক হত্যার প্রতিবাদ জানাতেও শ্রমিকরা এসেছিলেন ওই সমাবেশে।
শিকাগো শহরে ১৮৮৬ সালের ৪ মে’র শ্রমিক হত্যা ও শ্রমিকদের মৃত্যুদন্ড শ্রমিক আন্দোলনকে স্তব্ধ করতে পারেনি। ইউরোপে শ্রমিকদের সংগঠন দ্বিতীয় ইন্টারন্যাশনাল ১৮৮৯ সালে এক সম্মেলনে সিদ্ধান্ত নেয় যে, পরবর্তী বছর অর্থাৎ ১৮৯০ সাল থেকে শিকাগোর শ্রমিকদের আন্দোলনের দিনটি স্মরণীয় করে রাখার জন্য প্রতি বছর ১ মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংহতি দিবস হিসেবে পালন করা হবে। এভাবেই প্রতি বছর পৃথিবীর দেশে দেশে শ্রমিক শ্রেণী তথা মেহনতি মানুষ মহান মে দিবস পালন করে আসছেন।
কালক্রমে শ্রমিকদের ৮ ঘণ্টা কাজের দাবি পৃথিবীব্যাপী স্বীকৃতি পায়। আইএলও সনদের শ্রমিকদের ৮ ঘণ্টা কাজের দাবি স্বীকৃতি পেয়েছে। এখন সেটা সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনেও ছড়িয়ে পড়েছে।
আমাদের দেশে রাজনীতি দীর্ঘকাল ধরে সামরিক ও অস্বাভাবিক শাসনের দ্বারা রাহুগ্রস্ত হওয়ার ফলে সামাজিক মূল্যবোধগুলো ধীরে ধীরে অবক্ষয়ের শিকার হয়েছে। তারই প্রভাবে আমাদের দেশের ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনও স্বধর্মচ্যুত হয়ে পড়ছে ক্রমান্বয়ে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের পরও সুস্থ রাজনীতির পরিবর্তে চলছে ক্ষমতা ও প্রভুত্বকে কেন্দ্র করে দলাদলি এবং তার পরিণতিতে সংঘবদ্ধ পীড়ন ও সুড়ঙ্গ পথে অর্থাগমের পথ ধরেছে এক শ্রেণীর অসৎ ট্রেড ইউনিয়ন নেতৃত্ব। চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, রাজনৈতিক পক্ষ-প্রতিপক্ষের আড়ালে প্রশাসনের ওপর অশুভ প্রভাব বিস্তার করে চলেছে। ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনের এসব অশুভ শক্তির প্রভাবের কারণে একদিকে ক্ষতি হচ্ছে শ্রমিক স্বার্থ, অন্যদিকে শ্রমিক আন্দোলন সম্পর্কে, ট্রেড ইউনিয়নের কর্মকান্ড সম্পর্কে সাধারণের মধ্যে বিরূপ ধারণার সৃষ্টি হচ্ছে।
আজ স্বদেশে ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলন অতীতের গৌরবময় ঐতিহ্য থেকে ক্রমান্বয়ে সরে গিয়ে এমন এক আত্মঘাতী পথে চলতে শুরু করেছে, যা আমাদের দুর্ভাবনাকে তীব্র করে। এই বিকৃত ধারা বর্জন করে সুস্থ ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলন গড়ে তোলার অঙ্গীকার এ বছরের মে দিবসে শ্রমিক শ্রেণী তথা মেহনতি মানুষকে নিতে হবে।