কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের পূর্ব ধনীরামপুর গ্রামের খালে ৩০ লাখেরও বেশি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছিল সেতু। কিন্তু নির্মাণের তিন মাস যেতে না যেতেই সেতুটি দেবে গিয়ে উল্টে যায়। পরে বন্যার পানির চাপে সেতুর সংযোগ সড়ক ভেঙ্গে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। স্বপ্নের সেতুর এমন পরিণতিতে গত তিন বছর ধরে পূর্বের মতো ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীর। সেতুর নির্মাণের সুফল যেন ‘পেয়েও পাওয়া হলো না’ তাদের। এ নিয়ে গত শুক্রবার সংবাদ-এ সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
সেতু না থাকায় দড়ি দিয়ে ড্রামের ভেলা টেনে খাল পারাপার হচ্ছে এলাকার বাসিন্দারা। তারা জানিয়েছে, এখন পানি কম থাকায় পারাপারে সমস্যা হচ্ছে না। কিন্তু বর্ষা মৌসুমে পানি বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্রোতের তীব্রতাও বেড় যায়। তখন ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হয় তাদের। এ সময় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়তে হয় স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীদের। ভোগান্তির শিকার হতে হয় নারী, শিশু ও প্রবীণদের। তাছাড়া রোগী ও তাদের স্বজনরা পড়েন চরম দুর্ভোগে। পণ্য পরিবহন নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও কৃষিকাজে জড়িতদের।
সেতুসহ কোন অবকাঠামো যখন নির্মাণ করা হয় তখন এর ন্যূনতম আয়ুষ্কালও নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। এ সেতুটিরও আয়ুষ্কাল নির্ধারণ ছিল। নিশ্চয়ই সেটা তিন মাস কিংবা তিন বছর নয়- এর চেয়ে বেশি হওয়ার কথা। এ আয়ুষ্কাল শুরু হতে না হতেই সেতুটি কেন দেবে গেল- সেটা একটা প্রশ্ন।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বলছেন, বন্যার কারণে সেতু ভেঙ্গে গেছে। আর স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, নিম্নœমানের নির্মাণসমাগ্রী ও ত্রুটিপূর্ণ কাজের ফলে সেতুটির এমন পরিণতি হয়েছে। সংশ্লিষ্টদের একাধিকবার ঘটনাস্থল পরির্দশন, প্রশাসন ও দুদক থেকে বার বার তদন্তের কথা বলা হলেও অদৃশ্য কারণে তা হয়নি।
গ্রামের ছোট খালে কংক্রিটের কাঠামো দিয়ে একটি সেতু নির্মাণ করা হলো, আর তা বর্ষার পানিতে বা ¯্রােতে দেবে গেল- এটা কোন যুক্তিযুক্ত কথা হতে পারে না। সেতু তো পানির মধ্যেই নির্মাণ করা হয়। সেখানে বর্ষা মৌসুমে পানি বেড়ে যাবে, স্রোত হবে- এটাই স্বাভাবিক। এক্ষেত্রে স্থানীয়দের অভিযোগ অমূলক নয়। কারণ শুধু সেতু নয় দেশের প্রায় সব প্রকল্পেই অনিয়ম-দুর্নীতি নতুন কিছু নয়। এখানেও যে অনিয়ম-দুর্নীতি হয়েছে সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রশ্ন হলো, এতদিনেও সেটার কোন সুরাহা হলো না কেন।
সেতু নির্মাণ নিয়ে স্থানীয়দের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে হবে। কালক্ষেপণ না করে এসব অভিযোগের বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে হবে। সেতু নির্মাণের তিন মাসের মধ্যে ভেঙ্গে গেল, বছরের পর বছর পার হয়ে গেল; অথচ বিকল্প ব্যবস্থা করা হয়নি। ফলে সেতুটি যে উদ্দেশ্যে নির্মাণ করা হয়েছিল তা ব্যাহত হয়েছে। জনসাধারণের দুর্ভোগ লাঘব হয়নি, কিন্তু রাষ্ট্রের অর্থ ঠিকই অপচয় হয়েছে। আমরা বলতে চাই, দ্রুত এখানে সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নিতে হবে। পাশাপাশি সেতু নির্মাণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত বিকল্প ব্যবস্থা করতে হবে। যাদের কারণে রাষ্ট্রের অর্থের অপচয় হলো তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে।
সোমবার, ২৩ মে ২০২২
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের পূর্ব ধনীরামপুর গ্রামের খালে ৩০ লাখেরও বেশি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছিল সেতু। কিন্তু নির্মাণের তিন মাস যেতে না যেতেই সেতুটি দেবে গিয়ে উল্টে যায়। পরে বন্যার পানির চাপে সেতুর সংযোগ সড়ক ভেঙ্গে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। স্বপ্নের সেতুর এমন পরিণতিতে গত তিন বছর ধরে পূর্বের মতো ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীর। সেতুর নির্মাণের সুফল যেন ‘পেয়েও পাওয়া হলো না’ তাদের। এ নিয়ে গত শুক্রবার সংবাদ-এ সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
সেতু না থাকায় দড়ি দিয়ে ড্রামের ভেলা টেনে খাল পারাপার হচ্ছে এলাকার বাসিন্দারা। তারা জানিয়েছে, এখন পানি কম থাকায় পারাপারে সমস্যা হচ্ছে না। কিন্তু বর্ষা মৌসুমে পানি বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্রোতের তীব্রতাও বেড় যায়। তখন ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হয় তাদের। এ সময় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়তে হয় স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীদের। ভোগান্তির শিকার হতে হয় নারী, শিশু ও প্রবীণদের। তাছাড়া রোগী ও তাদের স্বজনরা পড়েন চরম দুর্ভোগে। পণ্য পরিবহন নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও কৃষিকাজে জড়িতদের।
সেতুসহ কোন অবকাঠামো যখন নির্মাণ করা হয় তখন এর ন্যূনতম আয়ুষ্কালও নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। এ সেতুটিরও আয়ুষ্কাল নির্ধারণ ছিল। নিশ্চয়ই সেটা তিন মাস কিংবা তিন বছর নয়- এর চেয়ে বেশি হওয়ার কথা। এ আয়ুষ্কাল শুরু হতে না হতেই সেতুটি কেন দেবে গেল- সেটা একটা প্রশ্ন।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বলছেন, বন্যার কারণে সেতু ভেঙ্গে গেছে। আর স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, নিম্নœমানের নির্মাণসমাগ্রী ও ত্রুটিপূর্ণ কাজের ফলে সেতুটির এমন পরিণতি হয়েছে। সংশ্লিষ্টদের একাধিকবার ঘটনাস্থল পরির্দশন, প্রশাসন ও দুদক থেকে বার বার তদন্তের কথা বলা হলেও অদৃশ্য কারণে তা হয়নি।
গ্রামের ছোট খালে কংক্রিটের কাঠামো দিয়ে একটি সেতু নির্মাণ করা হলো, আর তা বর্ষার পানিতে বা ¯্রােতে দেবে গেল- এটা কোন যুক্তিযুক্ত কথা হতে পারে না। সেতু তো পানির মধ্যেই নির্মাণ করা হয়। সেখানে বর্ষা মৌসুমে পানি বেড়ে যাবে, স্রোত হবে- এটাই স্বাভাবিক। এক্ষেত্রে স্থানীয়দের অভিযোগ অমূলক নয়। কারণ শুধু সেতু নয় দেশের প্রায় সব প্রকল্পেই অনিয়ম-দুর্নীতি নতুন কিছু নয়। এখানেও যে অনিয়ম-দুর্নীতি হয়েছে সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রশ্ন হলো, এতদিনেও সেটার কোন সুরাহা হলো না কেন।
সেতু নির্মাণ নিয়ে স্থানীয়দের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে হবে। কালক্ষেপণ না করে এসব অভিযোগের বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে হবে। সেতু নির্মাণের তিন মাসের মধ্যে ভেঙ্গে গেল, বছরের পর বছর পার হয়ে গেল; অথচ বিকল্প ব্যবস্থা করা হয়নি। ফলে সেতুটি যে উদ্দেশ্যে নির্মাণ করা হয়েছিল তা ব্যাহত হয়েছে। জনসাধারণের দুর্ভোগ লাঘব হয়নি, কিন্তু রাষ্ট্রের অর্থ ঠিকই অপচয় হয়েছে। আমরা বলতে চাই, দ্রুত এখানে সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নিতে হবে। পাশাপাশি সেতু নির্মাণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত বিকল্প ব্যবস্থা করতে হবে। যাদের কারণে রাষ্ট্রের অর্থের অপচয় হলো তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে।