দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র চট্টগ্রামের হালদা নদীতে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ শিকার চলছে বলে জানা গেছে। অভিযান চালিয়েও বন্ধ করা যাচ্ছে না মা মাছ নিধন। এ নিয়ে গণমাধ্যমে প্রায়ই প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
হালদা নদীতে অতি বিপন্ন জলজ প্রাণী গাঙ্গেয় ডলফিনের বিচরণ আছে। গ্রীষ্ম ও বর্ষায় হালদায় কার্পজাতীয় মা মাছেরা ডিম ছাড়ে, যা দেশের অন্যা কোন নদীতে হয় না। কিন্তু নদীর মূল সম্পদ মা মাছ ও ডলফিনের আবাসস্থল এখন চরম হুমকির মুখে রয়েছে।
সরকার ২০০৭ সালে নদীর কর্ণফুলীর মোহনা থেকে ফটিকছড়ি নাজিরহাট পর্যন্ত এলাকাকে অভয়াশ্রম ঘোষণা করে। ২০১৮ সালে নদীর সব স্থানে বালুর ইজারা মহাল তুলে নিয়ে বালু উত্তোলন, বালুবাহী ড্রেজার, যান্ত্রিক নৌ চলাচলসহ ও জাল পাতার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে হালদায় সারা বছর অবৈধভাবে মাছ শিকার করা হলেও বছরের এ সময়ে মরিয়া হয়ে ওঠেন শিকারিরা। কারণ, এ সময়ে বড় আকৃতির মা মাছ পাওয়া যায়। সাধারণত ‘ভাসা জাল’, ‘ঘেরা জাল’ ও ‘বেহুন্দি জাল’- এ তিন ধরনের জাল দিয়ে মা মাছ শিকার করা হয়। এসব জালের দাম বেশি হওয়ায় সাধারণ জেলেদের পক্ষে এই জাল কিনে হালদায় পাতা সম্ভব নয় বলে মনে করেন গবেষকরা। কিছু-সংখ্যক অসাধু বিত্তবান জেলে এবং অন্য পেশার লোকজন সুযোগ বুঝে টাকার বিনিময়ে সাধারণ জেলেদের মাছ শিকারের কাজে ব্যবহার করেন।
গবেষকদের মতে, প্রজননকালে একটি মা মাছের পেটে বয়স, ওজন ও আকৃতি অনুসারে সাধারণত তিন লাখ থেকে ৩৫ লাখের মতো ডিম থাকে। এক হিসেবে দেখা যায়, একটি মাছ থেকে যে সংখ্যায় ডিম পাওয়া যায়; সেই ডিম থেকে যাদি মাছ হয়- তাহলে সেগুলো দাম হবে প্রায় চার কোটি টাকা। তাই একটি পরিপূর্ণ মা মাছ শিকার করলে চার কোটি টাকার ক্ষতি হয়।
অব্যাহতভাবে হালদা নদীতে মাছের পরিমাণ ও প্রজাতির সংখ্যা কমছে। ফলে মাছের ডিম ও তা থেকে রেণু উৎপাদনের পরিমাণও কমে যাচ্ছে। হালদা রিসার্চ অ্যান্ড ল্যাবরেটরির তথ্যানুসারে, হালদায় গত বছর ডিম সংগ্রহ হয়েছিল ৮ হাজার ৫০০ কেজি। ২০২০ সালে এ পরিমাণ ছিল সাড়ে ২৫ হাজার কেজি।
হালদা নদীতে মা মাছ নিধন বন্ধে অভিযান আরও জোরদার করতে হবে। নদীতে নিয়মিত পাহারার ব্যবস্থা করতে হবে। সাধারণ জেলেদের অন্যায় উৎসাহ দিয়ে বা টাকার বিনিময়ে মাছ ধরতে যারা উদ্বুদ্ধ করছে, সেই প্রভাবশালীদের খুঁজে বের করতে হবে। তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
শুক্রবার, ২৭ মে ২০২২
দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র চট্টগ্রামের হালদা নদীতে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ শিকার চলছে বলে জানা গেছে। অভিযান চালিয়েও বন্ধ করা যাচ্ছে না মা মাছ নিধন। এ নিয়ে গণমাধ্যমে প্রায়ই প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
হালদা নদীতে অতি বিপন্ন জলজ প্রাণী গাঙ্গেয় ডলফিনের বিচরণ আছে। গ্রীষ্ম ও বর্ষায় হালদায় কার্পজাতীয় মা মাছেরা ডিম ছাড়ে, যা দেশের অন্যা কোন নদীতে হয় না। কিন্তু নদীর মূল সম্পদ মা মাছ ও ডলফিনের আবাসস্থল এখন চরম হুমকির মুখে রয়েছে।
সরকার ২০০৭ সালে নদীর কর্ণফুলীর মোহনা থেকে ফটিকছড়ি নাজিরহাট পর্যন্ত এলাকাকে অভয়াশ্রম ঘোষণা করে। ২০১৮ সালে নদীর সব স্থানে বালুর ইজারা মহাল তুলে নিয়ে বালু উত্তোলন, বালুবাহী ড্রেজার, যান্ত্রিক নৌ চলাচলসহ ও জাল পাতার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে হালদায় সারা বছর অবৈধভাবে মাছ শিকার করা হলেও বছরের এ সময়ে মরিয়া হয়ে ওঠেন শিকারিরা। কারণ, এ সময়ে বড় আকৃতির মা মাছ পাওয়া যায়। সাধারণত ‘ভাসা জাল’, ‘ঘেরা জাল’ ও ‘বেহুন্দি জাল’- এ তিন ধরনের জাল দিয়ে মা মাছ শিকার করা হয়। এসব জালের দাম বেশি হওয়ায় সাধারণ জেলেদের পক্ষে এই জাল কিনে হালদায় পাতা সম্ভব নয় বলে মনে করেন গবেষকরা। কিছু-সংখ্যক অসাধু বিত্তবান জেলে এবং অন্য পেশার লোকজন সুযোগ বুঝে টাকার বিনিময়ে সাধারণ জেলেদের মাছ শিকারের কাজে ব্যবহার করেন।
গবেষকদের মতে, প্রজননকালে একটি মা মাছের পেটে বয়স, ওজন ও আকৃতি অনুসারে সাধারণত তিন লাখ থেকে ৩৫ লাখের মতো ডিম থাকে। এক হিসেবে দেখা যায়, একটি মাছ থেকে যে সংখ্যায় ডিম পাওয়া যায়; সেই ডিম থেকে যাদি মাছ হয়- তাহলে সেগুলো দাম হবে প্রায় চার কোটি টাকা। তাই একটি পরিপূর্ণ মা মাছ শিকার করলে চার কোটি টাকার ক্ষতি হয়।
অব্যাহতভাবে হালদা নদীতে মাছের পরিমাণ ও প্রজাতির সংখ্যা কমছে। ফলে মাছের ডিম ও তা থেকে রেণু উৎপাদনের পরিমাণও কমে যাচ্ছে। হালদা রিসার্চ অ্যান্ড ল্যাবরেটরির তথ্যানুসারে, হালদায় গত বছর ডিম সংগ্রহ হয়েছিল ৮ হাজার ৫০০ কেজি। ২০২০ সালে এ পরিমাণ ছিল সাড়ে ২৫ হাজার কেজি।
হালদা নদীতে মা মাছ নিধন বন্ধে অভিযান আরও জোরদার করতে হবে। নদীতে নিয়মিত পাহারার ব্যবস্থা করতে হবে। সাধারণ জেলেদের অন্যায় উৎসাহ দিয়ে বা টাকার বিনিময়ে মাছ ধরতে যারা উদ্বুদ্ধ করছে, সেই প্রভাবশালীদের খুঁজে বের করতে হবে। তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।