কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে দেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা পালিত হচ্ছে। গত বছরের চেয়ে এ বছর পূজামন্ডপের সংখ্যাও বেড়েছে। ক্ষমতাসীন দলের নেতারা বিভিন্ন পূজামন্ডপ পরিদর্শন করেছেন। তারা সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন।
র্যাব-পুলিশ মোতায়েন করে ধর্মীয় অনুষ্ঠান আয়োজনে বাহ্যিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা গেছে। প্রশ্ন হচ্ছে, এর মধ্য দিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের মন থেকে শঙ্কা দূর করা গেছে কিনা। একটি গণতান্ত্রিক দেশে যার যার ধর্ম সে সে নির্বিঘ্নে পালন করবেন সেটাই স্বাভাবিক। কোন পরিবেশে ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সর্বক্ষণ পাহারা দিয়ে রাখতে হয় সেই প্রশ্ন উঠেছে। দেশে যদি অসাম্প্রদায়িকতার পরিবেশ নিশ্চিত করা যেত তাহলে পুলিশি পাহারার প্রয়োজন পড়ত না।
প্রশ্ন হচ্ছে, অসাম্প্রদায়িকতার চেতনা নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ করা বিজয়ী একটি দেশকে এখনো কেন সাম্প্রদায়িকতার ভূত তাড়া করে ফিরছে। স্বাধীন দেশেও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নানাভাবে নির্যাতন চালানো হচ্ছে। ফেসবুকে গুজব ছড়িয়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার অশুভ প্রবণতা দেখা দিয়েছে। কখনো কখনো মাইকিং করে লোক জড়ো করে প্রকাশ্যে হামলা চালানো হয়।
কোরআন অবমাননার কথিত অভিযোগ তুলে, ফেসবুকে সাম্প্রদায়িক উসকানি ছড়িয়ে গত বছর কুমিল্লায় কয়েকটি মন্দির এবং পূজামন্ডপে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়। সেই ঘটনায় করা ১২টি মামলার মধ্যে আদালতে ৬টি মামলার অভিযোগপত্র বা চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে, বাকি ৬টি মামলার তদন্ত এখনও শেষ হয়নি। একজন আসামি ছাড়া বাকিরা জামিনে ছাড়া পেয়ে গেছে। সে সময় চাঁদপুর ও নোয়াখালীতেও সাম্প্রদায়িক হামলা হয়েছিল। সেখানেও একাধিক মামলা করা হয়েছে। যার কোনটির বিচারই আলোর মুখ দেখেনি।
দেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনার বিচার বছরের পর বছর ধরে ঝুলে থাকে। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা আটক হলেও আইনের ফাঁক গলে জামিনে বের হয়ে আসে। হামলা-নির্যাতনের বিচার হয় না বলে এখন অনেকে বিচার চান না। তারা মনে করেন, থানা-পুলিশ করে কোন লাভ তো হয় নেই, বরং অত্যাচার-নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যায়।
বড় ধরনের কোন হামলার ঘটনা ঘটলে মামলা হয়। সমস্যা হচ্ছে, এসব মামলায় শত শত ব্যক্তিকে আসামি করা। আসামিদের বেশিরভাগই অজ্ঞাতনামা। অভিযোগ রয়েছে যে, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর জন্য এসব মামলা হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
সাম্প্রদায়িক হামলাগুলোর বিচার করা না গেলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভেতর স্বস্তি ফিরিয়ে আনা যাবে না। এজন্য সব সাম্প্রদায়িক হামলার বিচার নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি বৃহত্তর সেই জনগোষ্ঠীকেও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে যাদের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু মানুষদের নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে। তাদেরকেই অসাম্প্রদায়িকতার পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
মঙ্গলবার, ০৪ অক্টোবর ২০২২
কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে দেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা পালিত হচ্ছে। গত বছরের চেয়ে এ বছর পূজামন্ডপের সংখ্যাও বেড়েছে। ক্ষমতাসীন দলের নেতারা বিভিন্ন পূজামন্ডপ পরিদর্শন করেছেন। তারা সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন।
র্যাব-পুলিশ মোতায়েন করে ধর্মীয় অনুষ্ঠান আয়োজনে বাহ্যিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা গেছে। প্রশ্ন হচ্ছে, এর মধ্য দিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের মন থেকে শঙ্কা দূর করা গেছে কিনা। একটি গণতান্ত্রিক দেশে যার যার ধর্ম সে সে নির্বিঘ্নে পালন করবেন সেটাই স্বাভাবিক। কোন পরিবেশে ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সর্বক্ষণ পাহারা দিয়ে রাখতে হয় সেই প্রশ্ন উঠেছে। দেশে যদি অসাম্প্রদায়িকতার পরিবেশ নিশ্চিত করা যেত তাহলে পুলিশি পাহারার প্রয়োজন পড়ত না।
প্রশ্ন হচ্ছে, অসাম্প্রদায়িকতার চেতনা নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ করা বিজয়ী একটি দেশকে এখনো কেন সাম্প্রদায়িকতার ভূত তাড়া করে ফিরছে। স্বাধীন দেশেও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নানাভাবে নির্যাতন চালানো হচ্ছে। ফেসবুকে গুজব ছড়িয়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার অশুভ প্রবণতা দেখা দিয়েছে। কখনো কখনো মাইকিং করে লোক জড়ো করে প্রকাশ্যে হামলা চালানো হয়।
কোরআন অবমাননার কথিত অভিযোগ তুলে, ফেসবুকে সাম্প্রদায়িক উসকানি ছড়িয়ে গত বছর কুমিল্লায় কয়েকটি মন্দির এবং পূজামন্ডপে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়। সেই ঘটনায় করা ১২টি মামলার মধ্যে আদালতে ৬টি মামলার অভিযোগপত্র বা চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে, বাকি ৬টি মামলার তদন্ত এখনও শেষ হয়নি। একজন আসামি ছাড়া বাকিরা জামিনে ছাড়া পেয়ে গেছে। সে সময় চাঁদপুর ও নোয়াখালীতেও সাম্প্রদায়িক হামলা হয়েছিল। সেখানেও একাধিক মামলা করা হয়েছে। যার কোনটির বিচারই আলোর মুখ দেখেনি।
দেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনার বিচার বছরের পর বছর ধরে ঝুলে থাকে। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা আটক হলেও আইনের ফাঁক গলে জামিনে বের হয়ে আসে। হামলা-নির্যাতনের বিচার হয় না বলে এখন অনেকে বিচার চান না। তারা মনে করেন, থানা-পুলিশ করে কোন লাভ তো হয় নেই, বরং অত্যাচার-নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যায়।
বড় ধরনের কোন হামলার ঘটনা ঘটলে মামলা হয়। সমস্যা হচ্ছে, এসব মামলায় শত শত ব্যক্তিকে আসামি করা। আসামিদের বেশিরভাগই অজ্ঞাতনামা। অভিযোগ রয়েছে যে, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর জন্য এসব মামলা হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
সাম্প্রদায়িক হামলাগুলোর বিচার করা না গেলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভেতর স্বস্তি ফিরিয়ে আনা যাবে না। এজন্য সব সাম্প্রদায়িক হামলার বিচার নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি বৃহত্তর সেই জনগোষ্ঠীকেও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে যাদের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু মানুষদের নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে। তাদেরকেই অসাম্প্রদায়িকতার পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।