alt

চিঠিপত্র

চরাঞ্চলে বিদ্যুতের প্রয়োজন

: বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন

দেশের যখন একটি প্রান্ত শহরের আলোর ঝলমলে আধুনিকতায় উদ্ভাসিত, তখন চরাঞ্চলের মানুষেরা এখনও জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত কাটাচ্ছে বিদ্যুতের স্পর্শহীনতায়। শহরের সুবিধা ও চকমকের বিপরীতে চরাঞ্চলের মানুষগুলো যেন এক আলোকবঞ্চিত অন্ধকারে বন্দী। তাদের জীবনযাত্রার মৌলিক চাহিদা হিসেবে বিদ্যুৎ, সুপেয় পানি, ও অন্যান্য সুবিধা পাওয়ার অধিকার থাকলেও তারা তা থেকে বহু দূরে। দিনের পর দিন তাদের জীবন কাটছে গ্রীষ্মের প্রচ- গরমে ফ্যানের শীতল বাতাস ছাড়া, সন্ধ্যার পর অন্ধকারে পড়াশোনা কিংবা কাজকর্ম চালিয়ে নেয়ার অক্ষমতায়।

শহরের উজ্জ্বল আলোয় মোড়ানো বিলাসী জীবনের পাশে এই চরাঞ্চলের মানুষের জীবন যেন এক বৈষম্যময় সংগ্রামে পূর্ণ। তারা প্রত্যেকদিনই সামান্য বিদ্যুতের আশায় থাকে। বিশেষ করে গ্রীষ্মের খরতাপে যখন শহরের মানুষ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে থাকে, তখন চরাঞ্চলের মানুষজন ফ্যানের সামান্য বাতাসের জন্য আকুল হয়ে থাকেন। মোবাইল চার্জ দেয়া থেকে শুরু করে দৈনন্দিন কাজগুলোতেও বিদ্যুতের প্রয়োজন পড়ে, কিন্তু বিদ্যুৎ সুবিধার অভাবে তাদের তা কল্পনাতেও নেই।

এমনই একটি উদাহরণ হলো চর আষাড়িয়াদহ ইউনিয়ন, যেখানে কিছু পরিবার সীমিত পরিসরে সোলার প্যানেলের সাহায্যে দিনে দুই ঘণ্টা বিদ্যুৎ পায়, যা তাদের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ। অধিকাংশ চরাঞ্চল কৃষিজীবী হওয়ায় তাদের বিদ্যুতের প্রয়োজন হয় চাষাবাদের কাজেও। কিন্তু বিদ্যুতের প্রয়োজনীয়তা সত্ত্বেও সমাজের উচ্চশ্রেণীর কাছে তাদের কণ্ঠ দমিত হয়। ফলে বিদ্যুতের জন্য তাদের সংগ্রাম যেন এক অবিচ্ছেদ্য নিয়মে পরিণত হয়েছে।

শিশুদের লেখাপড়ায় বিদ্যুতের অভাব সবচেয়ে বড় বাধা। রাতের বেলায় পড়াশোনার সুবিধা না থাকায় তারা পিছিয়ে পড়ছে। আধুনিক শিক্ষায় তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় বিদ্যুতের প্রয়োজন আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। চিকিৎসা, বিনোদন ও অন্যান্য মৌলিক সেবাগুলো থেকেও তারা বঞ্চিত, যা তাদের জীবনকে আরও কঠিন করে তুলেছে।

যে সব চরাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ কঠিন, সেখানে সরকারি উদ্যোগে সৌরবিদ্যুৎ ব্যবস্থা সম্প্রসারিত করা যেতে পারে। সোলার প্যানেলের মাধ্যমে প্রতিটি পরিবারকে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা করা সম্ভব।

চরাঞ্চলগুলোর ভৌগোলিক মানচিত্রায়নের মাধ্যমে বিদ্যুৎ গ্রিডের নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ করা জরুরি। নদী পারাপার করে বিদ্যুৎ লাইনের সম্প্রসারণ করে চরাঞ্চলগুলোকে বিদ্যুতের আওতায় আনার জন্য উন্নত অবকাঠামো গড়ে তোলা যেতে পারে।

চরাঞ্চলের মানুষকে তাদের অধিকার সম্পর্কে অবগত করতে এবং নিজ নিজ এলাকার উন্নয়নে অবদান রাখতে স্থানীয় পর্যায়ে শিক্ষামূলক কর্মসূচির আয়োজন করা প্রয়োজন। সরকারি সহযোগিতা ও নীতিমালা প্রণয়ন চরাঞ্চলের মানুষের মৌলিক অধিকার হিসেবে বিদ্যুৎ সুবিধা নিশ্চিত করতে সরকারকে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। এই অঞ্চলের বিদ্যুৎ উন্নয়নে নির্দিষ্ট বাজেট বরাদ্দ ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করা প্রয়োজন।

পদ্মার ওপারের চরাঞ্চলের মানুষের জীবন যেন আধুনিকতার ছোঁয়া থেকে বঞ্চিত। এখন সময় এসেছে তাদের জন্য বিদ্যুতের আলো পৌঁছে দেয়ার। তাদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করে তাদেরকেও স্বাধীন জীবনের স্বপ্ন দেখার সুযোগ দেয়া উচিত। বিদ্যুৎবিহীন অন্ধকারে যেন তাদের জীবন আর আটকে না থাকে। আসুন, তাদের জন্য আলোর ব্যবস্থা করি, যেন তারা পিছিয়ে না থাকে এবং উন্নতির পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে যেতে পারে। চরাঞ্চলের এই অবস্থা তুলে ধরে আমরা তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে পারি এবং সমাজে তাদের যথার্থ স্থান করে দিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারি।

আব্দুল আলিম

রাজশাহী কলেজ

গণপরিবহনে নারীদের হয়রানি : সমাধান কোথায়

বিনোদপুর বাজারে ব্যানার অপসারণের দাবি

অভয়ারণ্যে মানুষের আনাগোনা

ঢাকা কলেজের শৌচাগারের বেহাল দশা

অভিভাবকদের প্রতি একটি ছোট্ট নিবেদন

নোয়াখালীর হাতিয়া দ্বীপের স্বাক্ষরতার হার বাড়ানো সময়ের দাবি

হোসেনপুর টু টোক সড়কের বেহাল অবস্থা

পাবলিক প্লেসে ধূমপান বন্ধ হোক

বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিতে পোষ্যকোটা

আসুন শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়াই

শীতে শিশু ও বয়স্কদের বিশেষ যতেœর প্রয়োজন

চাঁদাবাজি : নতুন সরকারের পুরোনো চ্যালেঞ্জ

প্রাণী নির্যাতন বন্ধ করুন

ভর্তিতে লটারি, জীবনে অভিশাপ

গুজব একটি সামাজিক ব্যাধি

জলবায়ু পরিবর্তন : বাংলাদেশের বর্তমান সংকট ও অভিযোজনের চ্যালেঞ্জ।

গুচ্ছ পদ্ধতি বহাল চাই

ফসলের জন্য বন্ধুপোকা

নকল প্রসাধনীতে স্বাস্থ্যঝুঁকি

ছাগলে চাটে বাঘের গাল

উন্নত স্বাস্থ্যব্যবস্থা গড়তে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ফার্মাসিস্ট

হল আবাসন আমার অধিকার

ডেঙ্গুর ভ্যাকসিন

শব্দদূষণে অতিষ্ঠ শহরের জনজীবন

থার্টিফার্স্ট নাইট হোক স্বাভাবিক

বর্ষবরণে পরিবেশ দূষণ কাম্য নয়

লক্ষ্মীবাজার ও নারিন্দার রাস্তা শোচনীয়

প্রকৃতিকে বাঁচাতেই হবে

প্রাণীদের প্রতি সদয় হোন

সহকারী শিক্ষকরা কাদের সহকারী?

শতভাগ ধূমপানমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান বাতিল করুন

স্বাস্থ্যসেবায় সংকট : রেফারেল ব্যবস্থার অভাব ও সমাধানের উপায়

রাস্তার পাশে বর্জ্য নিরসনে পদক্ষেপ চাই

স্বাস্থ্যসেবার সংকটে পার্বত্যবাসী

ফুটপাতের দখলদারিত্ব বন্ধ হোক

হেমন্তের দূষণ ও বিষণœতা

tab

চিঠিপত্র

চরাঞ্চলে বিদ্যুতের প্রয়োজন

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন

বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪

দেশের যখন একটি প্রান্ত শহরের আলোর ঝলমলে আধুনিকতায় উদ্ভাসিত, তখন চরাঞ্চলের মানুষেরা এখনও জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত কাটাচ্ছে বিদ্যুতের স্পর্শহীনতায়। শহরের সুবিধা ও চকমকের বিপরীতে চরাঞ্চলের মানুষগুলো যেন এক আলোকবঞ্চিত অন্ধকারে বন্দী। তাদের জীবনযাত্রার মৌলিক চাহিদা হিসেবে বিদ্যুৎ, সুপেয় পানি, ও অন্যান্য সুবিধা পাওয়ার অধিকার থাকলেও তারা তা থেকে বহু দূরে। দিনের পর দিন তাদের জীবন কাটছে গ্রীষ্মের প্রচ- গরমে ফ্যানের শীতল বাতাস ছাড়া, সন্ধ্যার পর অন্ধকারে পড়াশোনা কিংবা কাজকর্ম চালিয়ে নেয়ার অক্ষমতায়।

শহরের উজ্জ্বল আলোয় মোড়ানো বিলাসী জীবনের পাশে এই চরাঞ্চলের মানুষের জীবন যেন এক বৈষম্যময় সংগ্রামে পূর্ণ। তারা প্রত্যেকদিনই সামান্য বিদ্যুতের আশায় থাকে। বিশেষ করে গ্রীষ্মের খরতাপে যখন শহরের মানুষ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে থাকে, তখন চরাঞ্চলের মানুষজন ফ্যানের সামান্য বাতাসের জন্য আকুল হয়ে থাকেন। মোবাইল চার্জ দেয়া থেকে শুরু করে দৈনন্দিন কাজগুলোতেও বিদ্যুতের প্রয়োজন পড়ে, কিন্তু বিদ্যুৎ সুবিধার অভাবে তাদের তা কল্পনাতেও নেই।

এমনই একটি উদাহরণ হলো চর আষাড়িয়াদহ ইউনিয়ন, যেখানে কিছু পরিবার সীমিত পরিসরে সোলার প্যানেলের সাহায্যে দিনে দুই ঘণ্টা বিদ্যুৎ পায়, যা তাদের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ। অধিকাংশ চরাঞ্চল কৃষিজীবী হওয়ায় তাদের বিদ্যুতের প্রয়োজন হয় চাষাবাদের কাজেও। কিন্তু বিদ্যুতের প্রয়োজনীয়তা সত্ত্বেও সমাজের উচ্চশ্রেণীর কাছে তাদের কণ্ঠ দমিত হয়। ফলে বিদ্যুতের জন্য তাদের সংগ্রাম যেন এক অবিচ্ছেদ্য নিয়মে পরিণত হয়েছে।

শিশুদের লেখাপড়ায় বিদ্যুতের অভাব সবচেয়ে বড় বাধা। রাতের বেলায় পড়াশোনার সুবিধা না থাকায় তারা পিছিয়ে পড়ছে। আধুনিক শিক্ষায় তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় বিদ্যুতের প্রয়োজন আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। চিকিৎসা, বিনোদন ও অন্যান্য মৌলিক সেবাগুলো থেকেও তারা বঞ্চিত, যা তাদের জীবনকে আরও কঠিন করে তুলেছে।

যে সব চরাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ কঠিন, সেখানে সরকারি উদ্যোগে সৌরবিদ্যুৎ ব্যবস্থা সম্প্রসারিত করা যেতে পারে। সোলার প্যানেলের মাধ্যমে প্রতিটি পরিবারকে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা করা সম্ভব।

চরাঞ্চলগুলোর ভৌগোলিক মানচিত্রায়নের মাধ্যমে বিদ্যুৎ গ্রিডের নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ করা জরুরি। নদী পারাপার করে বিদ্যুৎ লাইনের সম্প্রসারণ করে চরাঞ্চলগুলোকে বিদ্যুতের আওতায় আনার জন্য উন্নত অবকাঠামো গড়ে তোলা যেতে পারে।

চরাঞ্চলের মানুষকে তাদের অধিকার সম্পর্কে অবগত করতে এবং নিজ নিজ এলাকার উন্নয়নে অবদান রাখতে স্থানীয় পর্যায়ে শিক্ষামূলক কর্মসূচির আয়োজন করা প্রয়োজন। সরকারি সহযোগিতা ও নীতিমালা প্রণয়ন চরাঞ্চলের মানুষের মৌলিক অধিকার হিসেবে বিদ্যুৎ সুবিধা নিশ্চিত করতে সরকারকে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। এই অঞ্চলের বিদ্যুৎ উন্নয়নে নির্দিষ্ট বাজেট বরাদ্দ ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করা প্রয়োজন।

পদ্মার ওপারের চরাঞ্চলের মানুষের জীবন যেন আধুনিকতার ছোঁয়া থেকে বঞ্চিত। এখন সময় এসেছে তাদের জন্য বিদ্যুতের আলো পৌঁছে দেয়ার। তাদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করে তাদেরকেও স্বাধীন জীবনের স্বপ্ন দেখার সুযোগ দেয়া উচিত। বিদ্যুৎবিহীন অন্ধকারে যেন তাদের জীবন আর আটকে না থাকে। আসুন, তাদের জন্য আলোর ব্যবস্থা করি, যেন তারা পিছিয়ে না থাকে এবং উন্নতির পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে যেতে পারে। চরাঞ্চলের এই অবস্থা তুলে ধরে আমরা তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে পারি এবং সমাজে তাদের যথার্থ স্থান করে দিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারি।

আব্দুল আলিম

রাজশাহী কলেজ

back to top