মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
বিশিষ্ট লোকশিল্পী আব্দুল মজিদ তালুকদার গীতিকার, সুরকার ও আপাদমস্তক একজন দেশপ্রেমিক ছিলেন। ভাষা আন্দোলন, ছয় দফা, গণঅভ্যুত্থান ও মুক্তিযুদ্ধ ছাড়াও তৎকালীন আন্দোলনগুলোকে নিয়ে বিপ্লবী গান লিখে গতিশীল করেছেন।
মজিদ তালুকদার একাধারে অলইন্ডিয়া বেতার থেকে শুরু করে গ্রামোফোন রেকর্ড এবং পাকিস্তান বেতার টিভির একজন গীতিকার ও সুরকার ছিলেন। যিনি আশির দশকে উপমহাদেশে বরেণ্য কয়েকজন শিল্পীর মাঝে অন্যতম একজন ছিলেন। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন, সর্বভারতীয় কাগমারী কৃষক সম্মেলন, ছয় দফা, ১১ দফা, যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন ও ৭০-এর নির্বাচন নিয়ে গান রচনা করেছেন। একাত্তরেও তিনি ক্ষুরধার গানের কথা ও ধ্রুপদী কণ্ঠে বিপ্লবী ও দেশাত্মবোধক গান গেয়ে মুক্তিযুদ্ধকে বেগবান করে তুলেছেন, গণ মানুষকে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিজয়োৎসবে গান গেয়ে তিনি স্বর্ণপদক লাভ করেন। ১৯৪৫ সালে নেত্রকোনার নাগড়ার মাঠে অবিভক্ত সর্বভারতীয় কৃষক সম্মেলনে তার লেখা ‘রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই’ গান পরিবেশন করেন।
ছয় দফা ও ১১ দফাকে নিয়ে তিনি লিখেছিলেন- ‘রঙিন কাষ্ঠের রঙিন নাও /রঙিন নায়ের ছইয়া রে/ বঙ্গবন্ধু হাল ধইরাছে/ নায়ের পাছায় বইয়া রে/ ছয় দফারই নৌকা খানি/ ১১দফার বৈঠা রে...।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণ নিয়েও তিনি গান লিখে প্রচার করেন। আব্দুল মজিদ তালুকদার ১ম ও ২য় অধিবেশনে বাংলা একাডেমির একজন সদস্য সংগ্রাহক ছিলেন। একুশে বইমেলা ২০২১-এ অধ্যক্ষ গোলাম মোস্তফার সম্পাদনায় তার জীবন ও ৬৪৬টি সঙ্গীত নিয়ে ‘মজিদগীতি সমগ্র’ বইটি প্রকাশ হয়। সম্প্রতি তাকে ভাষা সৈনিক আবুল হোসেন কলেজ ও ‘অমাস’ এর যৌথ উদ্যোগে মরণোত্তর সম্মাননা প্রদান করা হয়। গানের মধ্যে তিনি লোকগীতি, জারি-সারি, ভাটিয়ালি, পল্লিগীতি, বাউল গান, মারফতিসহ লোকগানের সকল শাখায় কণ্ঠে ও কলমে বিচরণ করেছেন। তিনি ১৮৯৮ সালের ১৫ জানুয়ারি নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার ইটাউতা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৮৮সালের ৮ জুন তিনি পরলোক গমন করেন।
মহান এই গীতিকার, সুরকার ও দেশপ্রেমিক সম্পের্ক নতুন প্রজন্মকে জানার জন্য সরকারের উদ্যোগ নেওয়া দরকার বলে মনেকরি। এছাড়াও লোক সাহিত্যে ও বাঙালির আন্দোলন সংগ্রামে, মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদান রাখার জন্য দেরিতে হলেও মরণোত্তর একুশে পদক প্রদান করা উচিত। আশা করি কর্তৃপক্ষ বিষয়টি বিবেচনা করবেন।
রাসেল হাসান
নেত্রকোনা
মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
শনিবার, ০১ জানুয়ারী ২০২২
বিশিষ্ট লোকশিল্পী আব্দুল মজিদ তালুকদার গীতিকার, সুরকার ও আপাদমস্তক একজন দেশপ্রেমিক ছিলেন। ভাষা আন্দোলন, ছয় দফা, গণঅভ্যুত্থান ও মুক্তিযুদ্ধ ছাড়াও তৎকালীন আন্দোলনগুলোকে নিয়ে বিপ্লবী গান লিখে গতিশীল করেছেন।
মজিদ তালুকদার একাধারে অলইন্ডিয়া বেতার থেকে শুরু করে গ্রামোফোন রেকর্ড এবং পাকিস্তান বেতার টিভির একজন গীতিকার ও সুরকার ছিলেন। যিনি আশির দশকে উপমহাদেশে বরেণ্য কয়েকজন শিল্পীর মাঝে অন্যতম একজন ছিলেন। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন, সর্বভারতীয় কাগমারী কৃষক সম্মেলন, ছয় দফা, ১১ দফা, যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন ও ৭০-এর নির্বাচন নিয়ে গান রচনা করেছেন। একাত্তরেও তিনি ক্ষুরধার গানের কথা ও ধ্রুপদী কণ্ঠে বিপ্লবী ও দেশাত্মবোধক গান গেয়ে মুক্তিযুদ্ধকে বেগবান করে তুলেছেন, গণ মানুষকে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিজয়োৎসবে গান গেয়ে তিনি স্বর্ণপদক লাভ করেন। ১৯৪৫ সালে নেত্রকোনার নাগড়ার মাঠে অবিভক্ত সর্বভারতীয় কৃষক সম্মেলনে তার লেখা ‘রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই’ গান পরিবেশন করেন।
ছয় দফা ও ১১ দফাকে নিয়ে তিনি লিখেছিলেন- ‘রঙিন কাষ্ঠের রঙিন নাও /রঙিন নায়ের ছইয়া রে/ বঙ্গবন্ধু হাল ধইরাছে/ নায়ের পাছায় বইয়া রে/ ছয় দফারই নৌকা খানি/ ১১দফার বৈঠা রে...।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণ নিয়েও তিনি গান লিখে প্রচার করেন। আব্দুল মজিদ তালুকদার ১ম ও ২য় অধিবেশনে বাংলা একাডেমির একজন সদস্য সংগ্রাহক ছিলেন। একুশে বইমেলা ২০২১-এ অধ্যক্ষ গোলাম মোস্তফার সম্পাদনায় তার জীবন ও ৬৪৬টি সঙ্গীত নিয়ে ‘মজিদগীতি সমগ্র’ বইটি প্রকাশ হয়। সম্প্রতি তাকে ভাষা সৈনিক আবুল হোসেন কলেজ ও ‘অমাস’ এর যৌথ উদ্যোগে মরণোত্তর সম্মাননা প্রদান করা হয়। গানের মধ্যে তিনি লোকগীতি, জারি-সারি, ভাটিয়ালি, পল্লিগীতি, বাউল গান, মারফতিসহ লোকগানের সকল শাখায় কণ্ঠে ও কলমে বিচরণ করেছেন। তিনি ১৮৯৮ সালের ১৫ জানুয়ারি নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার ইটাউতা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৮৮সালের ৮ জুন তিনি পরলোক গমন করেন।
মহান এই গীতিকার, সুরকার ও দেশপ্রেমিক সম্পের্ক নতুন প্রজন্মকে জানার জন্য সরকারের উদ্যোগ নেওয়া দরকার বলে মনেকরি। এছাড়াও লোক সাহিত্যে ও বাঙালির আন্দোলন সংগ্রামে, মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদান রাখার জন্য দেরিতে হলেও মরণোত্তর একুশে পদক প্রদান করা উচিত। আশা করি কর্তৃপক্ষ বিষয়টি বিবেচনা করবেন।
রাসেল হাসান
নেত্রকোনা