মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
এই জ্ঞান-বিজ্ঞানের যুগেও সমাজের অনেক মানুষ এখনো কুসংস্কারে নিমজ্জিত। এক্ষেত্রে শিক্ষিত আর অশিক্ষিত উভয় শ্রেণীর মানুষের মধ্যেই কুসংস্কার লক্ষণীয়। আজও গ্রামেগঞ্জে মেয়েদের শ্রী বা সৌন্দর্য বিচারের ক্ষেত্রে লক্ষ্মী-অলক্ষ্মী ইত্যাদি নিয়ে বিভাজন চলে। এখনও অনেককে দেখা যায়, এক শালিক দেখলে দিন খারাপের অন্ধ বিশ্বাসে আচ্ছন্ন হতে। ঘর থেকে বেরোবার সময়, অসাবধানতাবশত হোঁচট খেলে, কেউ কেউ খানিকটা বসে তারপর বাড়ি থেকে বের হন। অনেকেই ‘পেছন থেকে ডাকা অমঙ্গলকর’ এই কথাটাও যুক্তিহীনভাবে বিশ্বাস করেন। এরূপ হাজারও কুসংস্কার দৈনন্দিন জীবনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। এসব কুসংস্কার মূলত সামাজিক জীবনের প্রতিবন্ধক এবং উন্নয়ন ও অগ্রগতির অন্তরায়।
কুসংস্কার এক ধরনের অন্ধবিশ্বাস হলেও একে সমাজ জীবনের অভিশাপও বলা চলে। অনেকে একে জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে মনে করে! যদিও মনের অজ্ঞানতা, যুক্তিহীনতা আর বিবেক-বুদ্ধির অভাব থেকেই কুসংস্কারের জন্ম। প্রকৃতপক্ষে এর পেছনে কোনরকম সত্যতা বা বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। যুগ যুগ ধরে লোকমুখে প্রচলিত মিথ্যা ধারণা, কিছু বানানো গল্পের মিথ্যা রটনা আর মনের অন্ধকারজনিত বিশ্বাসই এর মূল ভিত্তি। কুসংস্কারের প্রভাবে সমাজের পাশাপাশি মানবজীবনের অনেক ক্ষতি হয়। ধর্মীয় গোঁড়ামি, অজ্ঞতা ও অশিক্ষা থেকে সৃষ্টি হয় যাবতীয় কুসংস্কারের। ফলে সমাজে নানারকম বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়।
ছোটখাটো বিষয়ে যেসব কুসংস্কার প্রচলিত রয়েছে তাতে আপাতদৃষ্টিতে তেমন কোন ক্ষতিকর প্রভাব না দেখা গেলেও আসলে মানবজীবনে তার সুদূরপ্রসারী প্রভাব আছে। কুসংস্কারের প্রভাবে মনে যে সংকীর্ণতা দেখা দেয়, তা প্রতিফলিত হয় তার আচরণে, কাজকর্মে। যেমন- অজপাড়া গাঁয়ে এমন ধারণা আছে, ঘুম থেকে উঠে কিছুকিছু মানুষের মুখ দেখলে দিন খারাপ যায়। এর ফলে সৃষ্টি হয় মানুষে মানুষে বিভেদের আর শত্রুতার। তাই সবাইকে কুসংস্কারের এ অন্ধকার বিশ্বাস দূরীকরণে এগিয়ে আসতে হবে। এই লক্ষ্যে পর্যাপ্ত শিক্ষার প্রসার ঘটাতে হবে। সামাজিক মাধ্যমগুলোতে জোরপ্রচার চালাতে হবে। ধনী, দরিদ্র, শিক্ষিত, অশিক্ষিত সবস্তরের মানুষের মাঝে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। সামাজিক কুসংস্কার দূর করে আলোর পথ দেখতে হবে, সমাজকে নতুনভাবে গড়তে হবে, উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথ নিশ্চিত করতে হবে।
জিল্লুর রহমান
লেখক, ব্যাংকার
মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
বৃহস্পতিবার, ২৫ আগস্ট ২০২২
এই জ্ঞান-বিজ্ঞানের যুগেও সমাজের অনেক মানুষ এখনো কুসংস্কারে নিমজ্জিত। এক্ষেত্রে শিক্ষিত আর অশিক্ষিত উভয় শ্রেণীর মানুষের মধ্যেই কুসংস্কার লক্ষণীয়। আজও গ্রামেগঞ্জে মেয়েদের শ্রী বা সৌন্দর্য বিচারের ক্ষেত্রে লক্ষ্মী-অলক্ষ্মী ইত্যাদি নিয়ে বিভাজন চলে। এখনও অনেককে দেখা যায়, এক শালিক দেখলে দিন খারাপের অন্ধ বিশ্বাসে আচ্ছন্ন হতে। ঘর থেকে বেরোবার সময়, অসাবধানতাবশত হোঁচট খেলে, কেউ কেউ খানিকটা বসে তারপর বাড়ি থেকে বের হন। অনেকেই ‘পেছন থেকে ডাকা অমঙ্গলকর’ এই কথাটাও যুক্তিহীনভাবে বিশ্বাস করেন। এরূপ হাজারও কুসংস্কার দৈনন্দিন জীবনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। এসব কুসংস্কার মূলত সামাজিক জীবনের প্রতিবন্ধক এবং উন্নয়ন ও অগ্রগতির অন্তরায়।
কুসংস্কার এক ধরনের অন্ধবিশ্বাস হলেও একে সমাজ জীবনের অভিশাপও বলা চলে। অনেকে একে জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে মনে করে! যদিও মনের অজ্ঞানতা, যুক্তিহীনতা আর বিবেক-বুদ্ধির অভাব থেকেই কুসংস্কারের জন্ম। প্রকৃতপক্ষে এর পেছনে কোনরকম সত্যতা বা বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। যুগ যুগ ধরে লোকমুখে প্রচলিত মিথ্যা ধারণা, কিছু বানানো গল্পের মিথ্যা রটনা আর মনের অন্ধকারজনিত বিশ্বাসই এর মূল ভিত্তি। কুসংস্কারের প্রভাবে সমাজের পাশাপাশি মানবজীবনের অনেক ক্ষতি হয়। ধর্মীয় গোঁড়ামি, অজ্ঞতা ও অশিক্ষা থেকে সৃষ্টি হয় যাবতীয় কুসংস্কারের। ফলে সমাজে নানারকম বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়।
ছোটখাটো বিষয়ে যেসব কুসংস্কার প্রচলিত রয়েছে তাতে আপাতদৃষ্টিতে তেমন কোন ক্ষতিকর প্রভাব না দেখা গেলেও আসলে মানবজীবনে তার সুদূরপ্রসারী প্রভাব আছে। কুসংস্কারের প্রভাবে মনে যে সংকীর্ণতা দেখা দেয়, তা প্রতিফলিত হয় তার আচরণে, কাজকর্মে। যেমন- অজপাড়া গাঁয়ে এমন ধারণা আছে, ঘুম থেকে উঠে কিছুকিছু মানুষের মুখ দেখলে দিন খারাপ যায়। এর ফলে সৃষ্টি হয় মানুষে মানুষে বিভেদের আর শত্রুতার। তাই সবাইকে কুসংস্কারের এ অন্ধকার বিশ্বাস দূরীকরণে এগিয়ে আসতে হবে। এই লক্ষ্যে পর্যাপ্ত শিক্ষার প্রসার ঘটাতে হবে। সামাজিক মাধ্যমগুলোতে জোরপ্রচার চালাতে হবে। ধনী, দরিদ্র, শিক্ষিত, অশিক্ষিত সবস্তরের মানুষের মাঝে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। সামাজিক কুসংস্কার দূর করে আলোর পথ দেখতে হবে, সমাজকে নতুনভাবে গড়তে হবে, উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথ নিশ্চিত করতে হবে।
জিল্লুর রহমান
লেখক, ব্যাংকার