মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
মানুষের অবচেতন মনের চিন্তার মাধ্যম হলো মাতৃভাষা। মাতৃভাষার সঙ্গে মানুষের আত্মিক সম্পর্ক রয়েছে। তাই মাতৃভাষায় বিজ্ঞানবিষয়ক শিক্ষা ও গবেষণা অতি দ্রুত কোনো জাতিকে তার কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে পারে। জ্ঞান-বিজ্ঞানের উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি শিল্পনির্ভর হয়ে পড়েছে। শিল্পের বিকাশই কোনো জাতির উন্নয়নের মানদন্ড। যে জাতি শিল্পে যত উন্নত এবং যাদের উৎপাদিত পণ্য বিশ্ববাজারে যত সমাদৃত, তারাই তত সমৃদ্ধ জাতি। জ্ঞানচর্চার এ যুগে যারা মাতৃভাষাকে আঁকড়ে ধরেছে, তারা দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে।
উদাহরণস্বরূপ চীনের কথা বলা যেতে পারে। প্রাথমিক থেকে শুরু করে উচ্চশিক্ষায় জ্ঞানচর্চার মাধ্যম হিসেবে চীনারা মাতৃভাষাকে ব্যবহার করছে। এর সুফল কিন্তু তারা হাতে হাতে পাচ্ছে। মাতৃভাষায় জ্ঞানচর্চার কারণে চীনের ১৫০ কোটি জনগণ তাদের চিন্তা, সৃজনশীলতা, আবিষ্কার সব কিছুতেই সর্বোচ্চ সক্ষমতা সহজভাবে উপস্থাপন করার সুযোগ পাচ্ছে। ফলে চীন আজ পৃথিবীর জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতির এক অপ্রতিরোধ্য শক্তি।
ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়ার মতো বিশ্বের শক্তিধর ও উন্নত দেশগুলো তাদের উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম মাতৃভাষায় পরিচালিত করে। প্রসঙ্গক্রমে বলা যায়, রসায়নের পর্যায় সারণির উদ্ভাবক রাশিয়ান নাগরিক দিমিত্রি মেনডেলিফ তার গবেষণার নিবন্ধগুলো কখনোই ইংরেজিতে প্রকাশ করেননি। সব সময়ই তিনি তার প্রকাশনাগুলো রুশ ভাষায় প্রকাশ করতেন।
বিশ্বের অন্যান্য জাতি তাদের নিজেদের প্রয়োজনেই মেনডেলিফের গবেষণালব্ধ প্রকাশনাগুলো নিজেদের ভাষায় অনুবাদ করে নিয়েছে। যদি মেনডেলিফের ক্ষেত্রে এমন শর্ত থাকত যে ইংরেজিতে গবেষণাপত্র প্রকাশ করা ছাড়া বিকল্প কোনো উপায় নেই, তাহলে হয়তো পর্যায় সারণির মতো জটিল একটি বিষয় নিয়ে এমন সুন্দর উদ্ভাবন পৃথিবীর মানুষ দেখতেই পেত না। পৃথিবীকে যারা নতুন কিছু দিতে চায় তাদের জন্য ভাষা যেন বাধা না হয়ে দাঁড়ায়। উন্নত জাতি গঠনে বিষয়টি নিয়ে ভাবার ও পদক্ষেপ গ্রহণের প্রকৃত সময় এখনই।
নাজমুল ইসলাম
মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন
শনিবার, ২৭ আগস্ট ২০২২
মানুষের অবচেতন মনের চিন্তার মাধ্যম হলো মাতৃভাষা। মাতৃভাষার সঙ্গে মানুষের আত্মিক সম্পর্ক রয়েছে। তাই মাতৃভাষায় বিজ্ঞানবিষয়ক শিক্ষা ও গবেষণা অতি দ্রুত কোনো জাতিকে তার কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে পারে। জ্ঞান-বিজ্ঞানের উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি শিল্পনির্ভর হয়ে পড়েছে। শিল্পের বিকাশই কোনো জাতির উন্নয়নের মানদন্ড। যে জাতি শিল্পে যত উন্নত এবং যাদের উৎপাদিত পণ্য বিশ্ববাজারে যত সমাদৃত, তারাই তত সমৃদ্ধ জাতি। জ্ঞানচর্চার এ যুগে যারা মাতৃভাষাকে আঁকড়ে ধরেছে, তারা দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে।
উদাহরণস্বরূপ চীনের কথা বলা যেতে পারে। প্রাথমিক থেকে শুরু করে উচ্চশিক্ষায় জ্ঞানচর্চার মাধ্যম হিসেবে চীনারা মাতৃভাষাকে ব্যবহার করছে। এর সুফল কিন্তু তারা হাতে হাতে পাচ্ছে। মাতৃভাষায় জ্ঞানচর্চার কারণে চীনের ১৫০ কোটি জনগণ তাদের চিন্তা, সৃজনশীলতা, আবিষ্কার সব কিছুতেই সর্বোচ্চ সক্ষমতা সহজভাবে উপস্থাপন করার সুযোগ পাচ্ছে। ফলে চীন আজ পৃথিবীর জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতির এক অপ্রতিরোধ্য শক্তি।
ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়ার মতো বিশ্বের শক্তিধর ও উন্নত দেশগুলো তাদের উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম মাতৃভাষায় পরিচালিত করে। প্রসঙ্গক্রমে বলা যায়, রসায়নের পর্যায় সারণির উদ্ভাবক রাশিয়ান নাগরিক দিমিত্রি মেনডেলিফ তার গবেষণার নিবন্ধগুলো কখনোই ইংরেজিতে প্রকাশ করেননি। সব সময়ই তিনি তার প্রকাশনাগুলো রুশ ভাষায় প্রকাশ করতেন।
বিশ্বের অন্যান্য জাতি তাদের নিজেদের প্রয়োজনেই মেনডেলিফের গবেষণালব্ধ প্রকাশনাগুলো নিজেদের ভাষায় অনুবাদ করে নিয়েছে। যদি মেনডেলিফের ক্ষেত্রে এমন শর্ত থাকত যে ইংরেজিতে গবেষণাপত্র প্রকাশ করা ছাড়া বিকল্প কোনো উপায় নেই, তাহলে হয়তো পর্যায় সারণির মতো জটিল একটি বিষয় নিয়ে এমন সুন্দর উদ্ভাবন পৃথিবীর মানুষ দেখতেই পেত না। পৃথিবীকে যারা নতুন কিছু দিতে চায় তাদের জন্য ভাষা যেন বাধা না হয়ে দাঁড়ায়। উন্নত জাতি গঠনে বিষয়টি নিয়ে ভাবার ও পদক্ষেপ গ্রহণের প্রকৃত সময় এখনই।
নাজমুল ইসলাম