alt

মুক্ত আলোচনা

বাবাসাহেব ভীমরাও আম্বেদকর : সমাজ সংস্কারের পথিকৃৎ

বাবুল রবিদাস

: বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫

ভীমরাও আম্বেদকর, শৈশবে ভীম নামে পরিচিত। ১৮৯১ সালের ১৪ এপ্রিল মধ্যপ্রদেশের মোউতে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা সুবেদার রামজী শকপাল এবং মা ভীমাবাঈ। মাহার জাতির এই পরিবার বোম্বাই প্রদেশের আম্বাবাদে গ্রামে বাস করত। হিন্দু সমাজে অস্পৃশ্য গণ্য হলেও তারা কবীরপন্থি ছিলেন। ভীম ছয় বছর বয়সে মাতৃহারা হন। তার পিসি মীরাবাঈ তাকে স্নেহে লালন করেন।

শিক্ষা ও অস্পৃশ্যতার অভিজ্ঞতা

সাতারার স্কুলে ভীম অস্পৃশ্যতার কঠোর বাস্তবতা অনুভব করেন। তাকে আলাদা বসতে হতো, শিক্ষক তার খাতা স্পর্শ করতেন না। জল চাওয়া নিষিদ্ধ ছিল। একজন ব্রাহ্মণ শিক্ষক তার পদবী আম্বাবাদেকর থেকে আম্বেদকর করে দেন। বোম্বাইয়ের মারাঠা হাই স্কুলে পড়াশোনা চললেও লাঞ্ছনা অব্যাহত থাকে। ১৯০৭ সালে তিনি এলফিনস্টোন হাই স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন।

উচ্চশিক্ষা ও কর্মজীবন

১৯১৩ সালে বরোদার মহারাজার বৃত্তি নিয়ে আমেরিকায় কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যান। ১৯১৫ সালে এমএ এবং ১৯১৬ সালে ডক্টরেট লাভ করেন। দেশে ফিরে বরোদায় চাকরিতে অপমানিত হয়ে বোম্বাই ফিরে কলেজে অধ্যাপনা শুরু করেন। লন্ডনে ১৯২১ সালে এমএসসি, ১৯২৩ সালে ডিএসসি এবং ব্যারিস্টারি পাস করেন। বোম্বাই হাইকোর্টে ব্যারিস্টারি এবং ১৯৩৪ সালে আইন কলেজে অধ্যাপক ও ১৯৩৫ সালে অধ্যক্ষ হন।

সামাজিক আন্দোলন

অস্পৃশ্যতার বিরুদ্ধে আন্দোলনের জন্য ১৯২০ সালে ‘মূকনায়ক’ পত্রিকা প্রকাশ করেন। ১৯২৪ সালে ‘বহিষ্কৃত হিতকারিণী সভা’ গঠন করে অস্পৃশ্যদের শিক্ষার জন্য কাজ করেন। ১৯২৭ সালে মাহাদের চওদার পুকুরে অস্পৃশ্যদের জলের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেন। ‘বহিষ্কৃত ভারত’, ‘সমতা’ ও ‘জনতা’ পত্রিকা প্রকাশ করেন।

শিক্ষা ও সংবিধান

১৯২৮ সালে ‘ডিপ্রেসড ক্লাসেস এডুকেশন সোসাইটি’ এবং ১৯৪৫ সালে ‘পিপলস এডুকেশন সোসাইটি’ গঠন করে সিদ্ধার্থ ও মিলিন্দ কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৪৭ সালে স্বাধীন ভারতের প্রথম আইনমন্ত্রী এবং সংবিধান খসড়া কমিটির চেয়ারম্যান হন। ১৯৪৯ সালে সংবিধান পাস হয়, যা ১৯৫০ সালে কার্যকর হয়।

বৌদ্ধধর্ম ও মৃত্যু

১৯৫৬ সালে নাগপুরে ৫ লাখ অনুগামীসহ বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ করেন। প্রজ্ঞা, করুণা ও সমতার নীতির জন্য তিনি বৌদ্ধধর্ম বেছে নেন। ১৯৫৬ সালের ৬ ডিসেম্বর দিল্লিতে তার মৃত্যু হয়। ৭ ডিসেম্বর বোম্বাইয়ে শেষকৃত্যে ১ লাখ মানুষ বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ করে।

ভারতরতœ

অসংখ্য বই লিখে তিনি হিন্দু সমাজের জাতিভেদ ও শোষণ তুলে ধরেন। ১৯৯০ সালে তাকে মরণোত্তর ‘ভারতরতœ’ প্রদান করা হয়। তার অবদান ভারত কখনো ভুলবে না।

[লেখক : অ্যাডভোকেট, জজ কোর্ট, জয়পুরহাট]

পলিথিনের পাপ, প্রকৃতির প্রতিশোধ

হারিয়ে যাওয়া অভিযোগকৃত চেকের মামলা

জার্মানীতে এসবি ৬২ সম্মেলন : বাংলাদেশের নজর অর্থায়নের ন্যায্যতায়

ছবি

শতবর্ষ পরেও যার প্রয়োজন ফুরোয় না : দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ

আদিবাসী মুণ্ডা ভাষার বাঁচার আর্তনাদ

মাসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা

টেলিভিশন বিতর্ক প্রতিযোগিতা : এক হারানো সম্ভাবনার খোঁজে

বিশ্ব রেড ক্রস দিবস

আত্মরক্ষার খালি-হাতের ইতিহাস ও আধুনিক বিস্তার

ছবি

বাংলা সাহিত্যের প্রথম উপন্যাস “বিজয় বসন্ত“গ্রন্থের লেখক

পয়লা বৈশাখ : বাঙালির সংহতি চেতনার সংস্কৃতি

ছবি

স্মরণ : কমরেড রূপনারায়ণ রায়

সাংবাদিক-সাহিত্যিক কাজী মোহাম্মদ ইদরিসের ৫০তম মৃত্যুবার্ষিকীতে কিছু কথা

রেসলিং

কোটা সমাচার

বাজেট ২০২৪-২৫: তথ্যপ্রযুক্তি খাতের স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের যাত্রা শুরু হোক এবার

সীমান্ত সড়ক পশ্চাদপদ পার্বত্য অঞ্চলকে উন্নয়নের স্রোতধারায় একীভূত করেছে

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১: উন্নত ও সমৃদ্ধ আগামীর স্বপ্ন পূরণে বাংলাদেশের মহাকাশ জয়

ছবি

নাটোরের সম্ভাব্য জিআই পণ্য

রিলিফ

মুজিবনগরে স্বাধীনতার সূর্যোদয়

বঙ্গাব্দ প্রচলনের ইতিকথা

পহেলা বৈশাখ বাঙালির প্রাণের উৎসব

কেউতো অপেক্ষায় নেই

ফরগেট মি নট

ছবি

বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ সমার্থক

স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বীমা শিল্পের গুরুত্ব

একুশে ফেব্রুয়ারি আত্মপরিচয়ের দিন

দিদি, আপা, “বু” খালা

হিজল-করচ-আড়াংবন

ছবি

শেখ হাসিনা, এক উৎসারিত আলোকধারা

মনমাঝি

সেই ইটনা

ছবি

আংকর ওয়াট : উন্নত সভ্যতার স্মৃতিচিহ্ন যেখানে

নিয়ত ও নিয়তি

হারিয়ে যাওয়া ট্রেন

tab

মুক্ত আলোচনা

বাবাসাহেব ভীমরাও আম্বেদকর : সমাজ সংস্কারের পথিকৃৎ

বাবুল রবিদাস

বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫

ভীমরাও আম্বেদকর, শৈশবে ভীম নামে পরিচিত। ১৮৯১ সালের ১৪ এপ্রিল মধ্যপ্রদেশের মোউতে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা সুবেদার রামজী শকপাল এবং মা ভীমাবাঈ। মাহার জাতির এই পরিবার বোম্বাই প্রদেশের আম্বাবাদে গ্রামে বাস করত। হিন্দু সমাজে অস্পৃশ্য গণ্য হলেও তারা কবীরপন্থি ছিলেন। ভীম ছয় বছর বয়সে মাতৃহারা হন। তার পিসি মীরাবাঈ তাকে স্নেহে লালন করেন।

শিক্ষা ও অস্পৃশ্যতার অভিজ্ঞতা

সাতারার স্কুলে ভীম অস্পৃশ্যতার কঠোর বাস্তবতা অনুভব করেন। তাকে আলাদা বসতে হতো, শিক্ষক তার খাতা স্পর্শ করতেন না। জল চাওয়া নিষিদ্ধ ছিল। একজন ব্রাহ্মণ শিক্ষক তার পদবী আম্বাবাদেকর থেকে আম্বেদকর করে দেন। বোম্বাইয়ের মারাঠা হাই স্কুলে পড়াশোনা চললেও লাঞ্ছনা অব্যাহত থাকে। ১৯০৭ সালে তিনি এলফিনস্টোন হাই স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন।

উচ্চশিক্ষা ও কর্মজীবন

১৯১৩ সালে বরোদার মহারাজার বৃত্তি নিয়ে আমেরিকায় কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যান। ১৯১৫ সালে এমএ এবং ১৯১৬ সালে ডক্টরেট লাভ করেন। দেশে ফিরে বরোদায় চাকরিতে অপমানিত হয়ে বোম্বাই ফিরে কলেজে অধ্যাপনা শুরু করেন। লন্ডনে ১৯২১ সালে এমএসসি, ১৯২৩ সালে ডিএসসি এবং ব্যারিস্টারি পাস করেন। বোম্বাই হাইকোর্টে ব্যারিস্টারি এবং ১৯৩৪ সালে আইন কলেজে অধ্যাপক ও ১৯৩৫ সালে অধ্যক্ষ হন।

সামাজিক আন্দোলন

অস্পৃশ্যতার বিরুদ্ধে আন্দোলনের জন্য ১৯২০ সালে ‘মূকনায়ক’ পত্রিকা প্রকাশ করেন। ১৯২৪ সালে ‘বহিষ্কৃত হিতকারিণী সভা’ গঠন করে অস্পৃশ্যদের শিক্ষার জন্য কাজ করেন। ১৯২৭ সালে মাহাদের চওদার পুকুরে অস্পৃশ্যদের জলের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেন। ‘বহিষ্কৃত ভারত’, ‘সমতা’ ও ‘জনতা’ পত্রিকা প্রকাশ করেন।

শিক্ষা ও সংবিধান

১৯২৮ সালে ‘ডিপ্রেসড ক্লাসেস এডুকেশন সোসাইটি’ এবং ১৯৪৫ সালে ‘পিপলস এডুকেশন সোসাইটি’ গঠন করে সিদ্ধার্থ ও মিলিন্দ কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৪৭ সালে স্বাধীন ভারতের প্রথম আইনমন্ত্রী এবং সংবিধান খসড়া কমিটির চেয়ারম্যান হন। ১৯৪৯ সালে সংবিধান পাস হয়, যা ১৯৫০ সালে কার্যকর হয়।

বৌদ্ধধর্ম ও মৃত্যু

১৯৫৬ সালে নাগপুরে ৫ লাখ অনুগামীসহ বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ করেন। প্রজ্ঞা, করুণা ও সমতার নীতির জন্য তিনি বৌদ্ধধর্ম বেছে নেন। ১৯৫৬ সালের ৬ ডিসেম্বর দিল্লিতে তার মৃত্যু হয়। ৭ ডিসেম্বর বোম্বাইয়ে শেষকৃত্যে ১ লাখ মানুষ বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ করে।

ভারতরতœ

অসংখ্য বই লিখে তিনি হিন্দু সমাজের জাতিভেদ ও শোষণ তুলে ধরেন। ১৯৯০ সালে তাকে মরণোত্তর ‘ভারতরতœ’ প্রদান করা হয়। তার অবদান ভারত কখনো ভুলবে না।

[লেখক : অ্যাডভোকেট, জজ কোর্ট, জয়পুরহাট]

back to top