alt

মুক্ত আলোচনা

শত অনিশ্চয়তার মধ্যেও ঘরমুখো মানুষগুলোর ভ্রমণ নিরাপদ হোক

মাছুম বিল্লাহ

: শনিবার, ৩০ এপ্রিল ২০২২

আমাদের সামনে অপেক্ষা করছে ঈদুল ফিতর। ঈদুল ফিতর মানে একমাস সিয়াম সাধনার পর আনন্দের দিন, প্রিয়জন ও আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশির সাথে মিলনের দিন, ফুর্তির দিন বিশেষ করে নিজ বাড়ি থেকে কার্যপদেশে যারা অন্যত্র অবস্থান করছেন তাদের এটি আলাদা এক গুরুত্ব নিয়ে আসে। কিন্তু এই আনন্দটুকু পাবার আশায় মানুষকে পোহাতে হয় অবর্ণনীয় দুর্ভোগ যা প্রতিবছরের একটি সাধারন চিত্র।প্রতিবছর শিক্ষা, কর্মসংস্থান কিংবা ভাগ্যবদলের তাড়নায় ঢাকাসহ বড় বড় শহরে মানুষের স্রোত যখন একসঙ্গে রাজধানীসহ বড় শহরগুলো ছাড়ে তখনই বিড়ম্বনার সূত্রপাত হয়। বাড়ি ফেরাটাকে কেন্দ্র করে সৃষ্টি হয় মানবিক বিপর্যয়ের। বিপুল সংখ্যক মানুষের চাপ নিতে পারেনা আমাদের সড়ক-মহাসড়কগুলো। ট্রেন কিংবা লঞ্চ কোন ক্ষেত্রেই এই দুর্ভোগের নিস্তার নেই। ট্রেনে কিংব লঞ্চে ধারনক্ষমতার অধিক যাত্রী নিয়ে চলাচলে প্রায়ই সৃষ্টি হয় দুর্ঘটনার। এক্ষেত্রে দ্রুত ও আন্তরিকভাবে নেওয়া কিছু কিছু পদক্ষেপ দুর্ঘটনাগুলোকে অনেকটাই এড়াতে পারে। আর কিছু বিষয় দ্রুত সমাধানের মতো নয়,যেগুলোর জন্য প্রয়োজন দীর্ঘ প্রতিক্ষা ।

প্রায় প্রতি বছরই শত শত মাইলযুগে যানজট লেগে থাকে ঘন্টার পর ঘন্টা, দিনের পর দিন। সমস্ত উন্নয়ন চাপা পড়ে যায় তখন। অপর্যাপ্ত রাস্তা ছাড়াও গাড়ীগুলোর নিয়ম না মানা, প্রতিযোগিতায় নাামা, মানুষের ও ছোট ছোট যানবাহনগুলোর যত্রতত্র চলাফেরা এই ঈদের সময় যানজটের সৃষ্টি করে। কয়েক মিনিটের মধ্যে এটি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। কাজেই সর্বক্ষণ গভীর পর্যবেক্ষন এবং অ্যাকটিভ থাকা প্রয়োজন। গাড়ীর চালক, হেলপারগন প্রথম এগুলোকে পাত্তা দেয়না, ভাবে এক দুই মিনিটের মধ্যে সামনের গাড়ীগুলোকে পেছনে ফেলে তারা চলে যাবে, আবার যখন একলাইনে গাড়ী দাঁড়িয়ে থাকে তখন দেখা যায় ডানপাশে বিপরীত দিক থেকে আসা গাড়ীর রাস্তা বন্ধ করে সামনে আগাতে থাকে , একটু পরে আর কেউ নড়াচড়া করতে পারেনা। এ দৃশ্য আমরা সবাই দেখি এবং জানি। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে ঈদের সময়ে এই ঘটান বেশি ঘটে। রাস্তাগুলোকে নির্বিঘ্ন করার জন্য আইন শৃংখলা বাহিনীকে সংক্ষিপ্ত একটি প্রশিক্ষণ দিয়ে রাস্তায় নামালে এবং তারা একটু তৎপর হলে এইসব কারনে সৃষ্ট যানজটের বড় অংশই কমানো সম্ভব। প্রতি জেলা পুলিশকে তার নিজ নিজ জেলার রাস্তায় যাতে কোন ধরনের যানজট না হয় সেই ব্যবস্তা নেওয়ার কথা কেন্দ্র থেকে নির্দেশ দিলে অনেকটাই কাজ হয়। কিন্তু আমরা সেই ধরনের সেবা আমাদের আইনশৃংখলা বাহিনীর কাছ থেকে কি আশা করতে পারি?

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির তথ্য অনুযায়ী এ বছর ঈদযাত্রায় ঢাকা থেকে এক কোটি মানুষ দেশের বিভিন্ন জেলায় যাতাযত করবেন।এ ছাড়া এক জেলা থেকে অপর জেলায় আরও প্রায় পাঁচ কোটি মানুষ যাতায়াত করার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে ২০ এপ্রিল থেকে ১০ মে পর্যন্ত ঈদবাজার, গ্রামের বাজার যাতায়াতসহ নানা কারণে দেশের বিভিন্ন শ্রেণির পরিবহনে বাড়তি প্রায় ৬ কোটি ট্রিপ যাত্রার যাতায়াত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ৬থেকে ৭জোড়া বিশেষ ট্রেন পরিচালনা করা হতে পারে।বর্তমানে ২০১টি ইঞ্জিন বিভিন্ন ট্রেরবর সঙ্গে চলাচল করছে। ঈদের সময় আরো ১৮টি ইঞ্জিন দিতে পারবে লোকোমেটিভ বিভাগ। এ ছাড়া বিপুল সংখ্যক মানুষের যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম বাস। ঈদ উপলক্ষে বাস টিকিটের চাহিদা অনুযায়ী সরবারহ কম থাকায় তৈরি হয় টিকিট কালোবাজারি। দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোাতে যাতাযযাতায বিভিন্ন রুটে নামানে হয়েচে রংচংয়ে ও জোড়াতালি দেওয়া ত্রুটিপূর্ন ফিটনেসবিহীন নৌযান। আত্মীয়-স্বজন পাড়াপ্রতিবেশির সাথে মিলনের এক প্রশান্তি পাওয়ার আশায় মানুষ ঢাকা ছাড়ে কিন্তু চরম দুর্ভোগ, সীমাহীন বিড়ম্বনা তাদের পুরো যাত্রাকে জাহান্নাম বানিয়ে ফেলে।

যানজট, মানুষের ভীড় ইত্যাদি কারণে চোর, পকেটমার, ছিনতাইকারী, মলম পার্টির দৌরাত্ম বেড়ে যায় এবং তারা নতুন নতুন কৌশল অবলম্বন করে। রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালীরা এলাকায় এলাকায় চাঁদার হাট বসায়, যানজটের এবং বাড়িফেরা মানুষের ভোগান্তি এগুলো আরও বাড়িয়ে দেয়। অত্যন্ত দক্ষতার সাথে এবং সিনিসিয়ারলি পদক্ষেপ নিলে অনেকটাই এগুলো এড়ানো সম্ভব। আমাদের প্রচুর আইনশৃংখলা বাহিনীর লোক আছে কিন্তু জনগনের প্রকৃত কাজে তারা কতটা অবদান রাখার সুযোগ পান সেটি একটি প্রশ্ন। ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-রাজশাহী, ঢাকা-রংপুর ও ঢাকা সিলেট মহাসড়কের ৩০-৩৫টি জায়াগায় প্রায়ই ডাকাতি হয়, মহাসড়কগুলোতে আন্ত:জেলা ডাকাত দলের ১৫-২০টি গ্রুপ এ অপরাধ করে যাচেছ। চলতি বছরের প্রথমে তিন মাসে বাস, ট্রাক, প্রইভেটকারসহ বিভিন্ন যানবাহনে ডাকাতির শিকার হয়ে জাতীয় করুরী সেবা ’৯৯৯’-এর কল করেছেন ২৪৮জন। গত ছয় মাসে শুধু ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাঁচপুর থেকে মেঘনা ঘাট এব ং এশিয়ান হাইওয়ে সড়কের গোলাকান্দাইল থেকে মদনপুরে ১২টি ডাকাতি ও সাতটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। আর এগুলোর মধ্যে মাত্র ১৯টি ঘটনা থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। মানুষ পুলিশের কাছে যেতে চায়না, কোন কাজ তো হয়ই না বরং হয়রানি আরও বেড়ে যায়। ডাকাতরা ও ছিনতাইকারীরা অনেক সময় শুধু অর্থ ও মামামাল নিয়েই ক্ষান্ত হয়না, তারা নারীশিশুসহ যাত্রীদের শারীরিকভাবেও নির্যাতন করে। পুলিশের কাছ থেকে কোন ধরনের সহযোগিতা মানুষ এসব বিষয়ে পায়না । পুলিশের সীমানাবিরোধ এবং প্রশাসনের ঔদাসীন্য মহাসড়কে যাত্রীদের জীবন ও সম্পদ এভাবে ঝুঁকিতে রেখে দিয়েছে, কোন ধরনের কোন প্রতিকার নেই।

সব মহাসড়কে ও কিছু সড়কে যানবাহনের নিরাপদ ও বাঁধাহীন চলাচল নিশ্চিত করার জন্য ২০০৫সালে হাইওয়ে পুলিশ গঠন করা হয়। কয়েক দফায় এ ইউনিটে জনবল ও গাড়ীসহ নানা সরঞ্জাম সরবরাহ করা হয়েছে কিন্তু পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। এসব হাইওয়ে পুলিশ অযথা সাধারন ও নিরীহ গাড়ীগুলো ধরে অর্থ কামায়, ট্রাক-লরি থেকে চাঁদা তোলার কারনে জিনিসপত্রের দাম বাড়ে আবার তাদের গাড়ী থামানো কর্মকান্ডে রাস্তায় যানজট লেগে যায়। মানুষকে হয়রানি করা ছাড়া এদের আর কোন কাজ আছে বলে মনে হয়না বলে অনেকেই মন্তব্য করছেন। কারন চুরি ডাকাতির বা ছিনতাইয়ের আগে ও পরে এদের কাছ থেকে কোন ধরনের সহায়তা যাত্রীরা পায়না।

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের আবদুল্লাহপুর থেকে গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত অংশে দীর্ঘ ১০ বছর ধরে চলছে বিআরটি প্রকল্পের কাজ। এ কাজের কারণে তীব্র দুর্ভোগ পোহাতে হচেছ যাত্রীদের। ঈদে এই দুর্ভোগ বাড়বে কয়েক গুণ। গাজীপুর মহাসড়কে ২৪ঘন্টায় ৬০হাজার যানবাহন চলাচল করে।অথচ এখানে ঢিমে তেতালা গতিতে কাজ চলছে। ২০১২ সালের ডিসেম্বরে শুরু হয়ে ২০১৬সালের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা ছিল গ্রেটার ঢাকা সাসটেইনেবল আরবান ট্রান্সপোর্ট প্রজেক্ট। ( বিআরটি, গাজীপুর-এয়ারপোর্ট)। শুরুতে নির্মাণব্যয় ছিল ২হাজার ৩৯ কোটি টাকা। ধীরগতির কারণে ব্যয় ও মেয়াদ দুই-ই বাড়ানো হয়। দ্বিতীয় সংশোধনীতে নির্মান ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৪হাজার ২৬কোটি টাকা। মেয়াদ বাড়ানো হয় ২০২২সালের জুন পর্যন্ত। বর্ধিত মেয়াদের শেষ প্রান্তে চলে এলেও এখন পর্যন্ত প্রকল্পটির অগ্রগতি হয়েছে প্রায় ৭৫ভাগ। কেন এমন হচেছ?এর সঠিক কোন জবাব নেই। দেশের দুই প্রধান ফেরিঘাট আরিচার পাটুরিয়া ও মুন্সীগঞ্জের মাওয়ায় ফেরি স্বল্পতা একটা বড় সমস্যা। মাওয়ায় বাস পারাপার বন্ধ থাকায় নিম্ন ও মধ্যবিত্তের যাত্রীদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়। ঈদে এই দুর্ভোগ আরও বাড়বে বলেই ধারণা করা হয়।

ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে নির্মানের পর ফরিদপুর ও বরিশাল অঞ্চলের ১০ জেলার যাত্রীদের ঢাকা ছাড়ার পথ হয়ে উঠেছে মাওয়া ঘাট। পদ্মা সেতু চালু না হওয়ায় এবারের ঈদেও তাই ফেরিই হবে ঘরে ফেরার ভরসা। অথচ ফেরির সংখ্যা বাড়ছে না। অন্য বছর ঈদে ১৭থেক ১৮টি ফেরি সচল থাকত। গত বর্ষায় দেড় মাসের ব্যবধানে পাঁচবার পদ্শা সেতুর খুটিতে ধাক্কা লাগার ঘটনায় সন্ধ্যা ছ’টার পর ফ্ল্যাট ফেরি চলাচাল বন্ধ থাকে। সেতরু নিচ দিয়ে ফেরি চলাচলও বন্ধ রাখা হয়। পরে ফেরি চালু হলেও পরাপার করা হচেছ মাইক্রোবাস, মোটসাইকেল, পিকআপ। আটমাস ধরে বন্ধ ট্রাক ও যাত্রবাহী বাস পরাপার। ঈদের চারপ সামাল দিতে একটি অস্থায়ী ঘাট নির্মাণ ছাড়া বাড়তি কোন পরিকল্পনারও কথাও শোনা যাচেছনা। অন্যদিকে মাওয়া পারাপার বন্ধ থাকায় দক্ষিনের ২১ জেলার বাস চলাালের পথ আরিচার পাটুরিয়া দৌলতদিয়া নৌপথ। সাধারন সময়েই এই পথে ভোগান্তি, ঈদে ঘরমুখো মানুষে ঢলে অবস্থার যে কত অবনিত হবে তা বুঝাই যাচেছ। পণ্যবাহী যান নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে ভোগান্তিই হবে নিয়তি। যদিও ঈদের আগে-পরে তিন দিন করে সাত দিন জরুরি পণ্য ছাড়া অন্যান্য ট্রাক পারাপার বন্ধ থাকবে। প্রতি বছরই এ নিয়ম থাকে।

তবে ঘুষের বিনিময়ে কিছু পন্যবাহী যানবাহন ও ভিআইপি সিরিয়াল ভেঙ্গে আগে পারাপার ব্যবস্থা করায় সংকট হয় প্রতি ঈদেই। এবারও এর ব্যতিক্রম হবেনা। বড় কোন দুর্ঘটনা যখন ঘটে তারপর গঠন করা হয় তদন্ত কমিটি। তদন্ত কমিটি তো আর সমস্যার সমাধানও করতে পারেনা আর কমিটির কথা দিয়ে কার কি লাভ? কে শোনে কার কথা?ট্রেনের ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হওয়ায় দেখা দিয়েছে বিশৃংখলা । টিকেট পরিণত হয়েছে সোনার হরিণে। এক শ্রেণির অসাধু ব্যক্তি পুরো টিকিট ব্যবস্থাকে জিম্মি করে রেখেছে। তারা দ্বিগুণ-তিনগুন দামে টিকিট বিক্রি করছে প্রতিবছরের মতোই। এই চক্রের হাত থেকে রেলের টিকিট উদ্ভার কারার কোন উদ্যোগ নেই, কখনও ছিলনা। আকাশপথে যাতায়াতের ক্ষেত্রেও শৃংখলার অভাব দেখা দিয়েছে। ব্যাপক চাহিদার মুখে বিমানের ভাড়া প্রায় তিনগুন বাড়ানো হয়েছে যা মধ্যবিত্তর নাগালের বাইরে চলে গেছে।

এতকিছুর পরেও মানুষ নাড়ীর টানে, ঐতিহ্যগত কারণে, প্রিয় জন্মভুমির টানে, প্রিয়জনদের সাথে মিলনের তীব্র বাসনা নিয়ে জীবনকে বাজি রেখে ইতিমধ্যে ঢাকা ছাড়ছেন।নিজেদের নিরাপত্তা নিজেরাই দিচেছন। তারা রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলোর কাছ থেকে কখনও আশা করেনা এবারও করবেন কারন সেসব আশা গুড়ে বালি। কিন্তু বাড়ি তাদের যেতেই হবে তা যদি প্রতিবছরের মতো রাস্তায় পুরোদিন পুরোরাত যানজটে আটকে থাকতে হয়। বাড়িমুখো সকলের ভ্রমন করি নিরাপদ হোক এবং নিরাপদে তাদের কর্মস্থলে সবাই ফিরে আসুক---এই আশির্বাদটুকু তো আমরা করতে পারি একে অপরের জন্য। এখানে তো কোন রাজনীতি থাকার কথা নয়। অতএব আমরা একে অপরের নিরাপদ ভ্রমণের জন্য প্রার্থনা করি।

[লেখক: কান্ট্রি ডিরেক্টর, ভলান্টিয়ার্স এসোসিয়েশন ফর বাংলাদেশ]

মুজিবনগরে স্বাধীনতার সূর্যোদয়

বঙ্গাব্দ প্রচলনের ইতিকথা

পহেলা বৈশাখ বাঙালির প্রাণের উৎসব

কেউতো অপেক্ষায় নেই

ফরগেট মি নট

ছবি

বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ সমার্থক

স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বীমা শিল্পের গুরুত্ব

একুশে ফেব্রুয়ারি আত্মপরিচয়ের দিন

দিদি, আপা, “বু” খালা

হিজল-করচ-আড়াংবন

ছবি

শেখ হাসিনা, এক উৎসারিত আলোকধারা

মনমাঝি

সেই ইটনা

ছবি

আংকর ওয়াট : উন্নত সভ্যতার স্মৃতিচিহ্ন যেখানে

নিয়ত ও নিয়তি

হারিয়ে যাওয়া ট্রেন

টম সয়ার না রবিনহুড

ছবি

‘ঝড়-বৃষ্টি আঁধার রাতে, আমরা আছি তোমার সাথে’

বাংলাদেশ-জাপান সহযোগিতা স্মারক: স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অনন্য মাইলফলক

রাষ্ট্রের কূটনৈতিক মিশনের পরিবর্তন আশু প্রয়োজন

কুয়েতের জীবনযাত্রার সাতকাহন: পর্ব-১-বিয়ে

বিবেকের লড়াই

ছবি

ছবি যেন শুধু ছবি নয়

বাত ব্যথার কারণ ও আধুনিক চিকিৎসা

ছবি

স্বাধীন স্বদেশে মুক্ত বঙ্গবন্ধু

ছবি

মহান নেতার স্বভূমিতে ফিরে আসা

ছবি

মেট্রোরেল : প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী চিন্তার ফসল

ছবি

আমার মা

ডিজিটাল বাংলাদেশ: প্রগতিশীল প্রযুক্তি, অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নতি

ছবি

৩ নভেম্বর: ১৫ আগস্টের হত্যাকান্ডের ধারাবাহিকতা

দেশের ইতিহাসে কলঙ্কজনক দ্বিতীয় অধ্যায়

এইচ এস সি ও সমমান পরীক্ষার্থীদের অনুশীলন

ছবি

ত্রিশ বছর পূর্তিতে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়

শিল্প কারখানার পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনায় এনভায়রনমেন্টাল ইন্জিনিয়ারিং

অসুর: এক পরাজিত বিপ্লবী

অসুর জাতির ইতিহাস

tab

মুক্ত আলোচনা

শত অনিশ্চয়তার মধ্যেও ঘরমুখো মানুষগুলোর ভ্রমণ নিরাপদ হোক

মাছুম বিল্লাহ

শনিবার, ৩০ এপ্রিল ২০২২

আমাদের সামনে অপেক্ষা করছে ঈদুল ফিতর। ঈদুল ফিতর মানে একমাস সিয়াম সাধনার পর আনন্দের দিন, প্রিয়জন ও আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশির সাথে মিলনের দিন, ফুর্তির দিন বিশেষ করে নিজ বাড়ি থেকে কার্যপদেশে যারা অন্যত্র অবস্থান করছেন তাদের এটি আলাদা এক গুরুত্ব নিয়ে আসে। কিন্তু এই আনন্দটুকু পাবার আশায় মানুষকে পোহাতে হয় অবর্ণনীয় দুর্ভোগ যা প্রতিবছরের একটি সাধারন চিত্র।প্রতিবছর শিক্ষা, কর্মসংস্থান কিংবা ভাগ্যবদলের তাড়নায় ঢাকাসহ বড় বড় শহরে মানুষের স্রোত যখন একসঙ্গে রাজধানীসহ বড় শহরগুলো ছাড়ে তখনই বিড়ম্বনার সূত্রপাত হয়। বাড়ি ফেরাটাকে কেন্দ্র করে সৃষ্টি হয় মানবিক বিপর্যয়ের। বিপুল সংখ্যক মানুষের চাপ নিতে পারেনা আমাদের সড়ক-মহাসড়কগুলো। ট্রেন কিংবা লঞ্চ কোন ক্ষেত্রেই এই দুর্ভোগের নিস্তার নেই। ট্রেনে কিংব লঞ্চে ধারনক্ষমতার অধিক যাত্রী নিয়ে চলাচলে প্রায়ই সৃষ্টি হয় দুর্ঘটনার। এক্ষেত্রে দ্রুত ও আন্তরিকভাবে নেওয়া কিছু কিছু পদক্ষেপ দুর্ঘটনাগুলোকে অনেকটাই এড়াতে পারে। আর কিছু বিষয় দ্রুত সমাধানের মতো নয়,যেগুলোর জন্য প্রয়োজন দীর্ঘ প্রতিক্ষা ।

প্রায় প্রতি বছরই শত শত মাইলযুগে যানজট লেগে থাকে ঘন্টার পর ঘন্টা, দিনের পর দিন। সমস্ত উন্নয়ন চাপা পড়ে যায় তখন। অপর্যাপ্ত রাস্তা ছাড়াও গাড়ীগুলোর নিয়ম না মানা, প্রতিযোগিতায় নাামা, মানুষের ও ছোট ছোট যানবাহনগুলোর যত্রতত্র চলাফেরা এই ঈদের সময় যানজটের সৃষ্টি করে। কয়েক মিনিটের মধ্যে এটি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। কাজেই সর্বক্ষণ গভীর পর্যবেক্ষন এবং অ্যাকটিভ থাকা প্রয়োজন। গাড়ীর চালক, হেলপারগন প্রথম এগুলোকে পাত্তা দেয়না, ভাবে এক দুই মিনিটের মধ্যে সামনের গাড়ীগুলোকে পেছনে ফেলে তারা চলে যাবে, আবার যখন একলাইনে গাড়ী দাঁড়িয়ে থাকে তখন দেখা যায় ডানপাশে বিপরীত দিক থেকে আসা গাড়ীর রাস্তা বন্ধ করে সামনে আগাতে থাকে , একটু পরে আর কেউ নড়াচড়া করতে পারেনা। এ দৃশ্য আমরা সবাই দেখি এবং জানি। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে ঈদের সময়ে এই ঘটান বেশি ঘটে। রাস্তাগুলোকে নির্বিঘ্ন করার জন্য আইন শৃংখলা বাহিনীকে সংক্ষিপ্ত একটি প্রশিক্ষণ দিয়ে রাস্তায় নামালে এবং তারা একটু তৎপর হলে এইসব কারনে সৃষ্ট যানজটের বড় অংশই কমানো সম্ভব। প্রতি জেলা পুলিশকে তার নিজ নিজ জেলার রাস্তায় যাতে কোন ধরনের যানজট না হয় সেই ব্যবস্তা নেওয়ার কথা কেন্দ্র থেকে নির্দেশ দিলে অনেকটাই কাজ হয়। কিন্তু আমরা সেই ধরনের সেবা আমাদের আইনশৃংখলা বাহিনীর কাছ থেকে কি আশা করতে পারি?

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির তথ্য অনুযায়ী এ বছর ঈদযাত্রায় ঢাকা থেকে এক কোটি মানুষ দেশের বিভিন্ন জেলায় যাতাযত করবেন।এ ছাড়া এক জেলা থেকে অপর জেলায় আরও প্রায় পাঁচ কোটি মানুষ যাতায়াত করার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে ২০ এপ্রিল থেকে ১০ মে পর্যন্ত ঈদবাজার, গ্রামের বাজার যাতায়াতসহ নানা কারণে দেশের বিভিন্ন শ্রেণির পরিবহনে বাড়তি প্রায় ৬ কোটি ট্রিপ যাত্রার যাতায়াত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ৬থেকে ৭জোড়া বিশেষ ট্রেন পরিচালনা করা হতে পারে।বর্তমানে ২০১টি ইঞ্জিন বিভিন্ন ট্রেরবর সঙ্গে চলাচল করছে। ঈদের সময় আরো ১৮টি ইঞ্জিন দিতে পারবে লোকোমেটিভ বিভাগ। এ ছাড়া বিপুল সংখ্যক মানুষের যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম বাস। ঈদ উপলক্ষে বাস টিকিটের চাহিদা অনুযায়ী সরবারহ কম থাকায় তৈরি হয় টিকিট কালোবাজারি। দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোাতে যাতাযযাতায বিভিন্ন রুটে নামানে হয়েচে রংচংয়ে ও জোড়াতালি দেওয়া ত্রুটিপূর্ন ফিটনেসবিহীন নৌযান। আত্মীয়-স্বজন পাড়াপ্রতিবেশির সাথে মিলনের এক প্রশান্তি পাওয়ার আশায় মানুষ ঢাকা ছাড়ে কিন্তু চরম দুর্ভোগ, সীমাহীন বিড়ম্বনা তাদের পুরো যাত্রাকে জাহান্নাম বানিয়ে ফেলে।

যানজট, মানুষের ভীড় ইত্যাদি কারণে চোর, পকেটমার, ছিনতাইকারী, মলম পার্টির দৌরাত্ম বেড়ে যায় এবং তারা নতুন নতুন কৌশল অবলম্বন করে। রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালীরা এলাকায় এলাকায় চাঁদার হাট বসায়, যানজটের এবং বাড়িফেরা মানুষের ভোগান্তি এগুলো আরও বাড়িয়ে দেয়। অত্যন্ত দক্ষতার সাথে এবং সিনিসিয়ারলি পদক্ষেপ নিলে অনেকটাই এগুলো এড়ানো সম্ভব। আমাদের প্রচুর আইনশৃংখলা বাহিনীর লোক আছে কিন্তু জনগনের প্রকৃত কাজে তারা কতটা অবদান রাখার সুযোগ পান সেটি একটি প্রশ্ন। ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-রাজশাহী, ঢাকা-রংপুর ও ঢাকা সিলেট মহাসড়কের ৩০-৩৫টি জায়াগায় প্রায়ই ডাকাতি হয়, মহাসড়কগুলোতে আন্ত:জেলা ডাকাত দলের ১৫-২০টি গ্রুপ এ অপরাধ করে যাচেছ। চলতি বছরের প্রথমে তিন মাসে বাস, ট্রাক, প্রইভেটকারসহ বিভিন্ন যানবাহনে ডাকাতির শিকার হয়ে জাতীয় করুরী সেবা ’৯৯৯’-এর কল করেছেন ২৪৮জন। গত ছয় মাসে শুধু ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাঁচপুর থেকে মেঘনা ঘাট এব ং এশিয়ান হাইওয়ে সড়কের গোলাকান্দাইল থেকে মদনপুরে ১২টি ডাকাতি ও সাতটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। আর এগুলোর মধ্যে মাত্র ১৯টি ঘটনা থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। মানুষ পুলিশের কাছে যেতে চায়না, কোন কাজ তো হয়ই না বরং হয়রানি আরও বেড়ে যায়। ডাকাতরা ও ছিনতাইকারীরা অনেক সময় শুধু অর্থ ও মামামাল নিয়েই ক্ষান্ত হয়না, তারা নারীশিশুসহ যাত্রীদের শারীরিকভাবেও নির্যাতন করে। পুলিশের কাছ থেকে কোন ধরনের সহযোগিতা মানুষ এসব বিষয়ে পায়না । পুলিশের সীমানাবিরোধ এবং প্রশাসনের ঔদাসীন্য মহাসড়কে যাত্রীদের জীবন ও সম্পদ এভাবে ঝুঁকিতে রেখে দিয়েছে, কোন ধরনের কোন প্রতিকার নেই।

সব মহাসড়কে ও কিছু সড়কে যানবাহনের নিরাপদ ও বাঁধাহীন চলাচল নিশ্চিত করার জন্য ২০০৫সালে হাইওয়ে পুলিশ গঠন করা হয়। কয়েক দফায় এ ইউনিটে জনবল ও গাড়ীসহ নানা সরঞ্জাম সরবরাহ করা হয়েছে কিন্তু পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। এসব হাইওয়ে পুলিশ অযথা সাধারন ও নিরীহ গাড়ীগুলো ধরে অর্থ কামায়, ট্রাক-লরি থেকে চাঁদা তোলার কারনে জিনিসপত্রের দাম বাড়ে আবার তাদের গাড়ী থামানো কর্মকান্ডে রাস্তায় যানজট লেগে যায়। মানুষকে হয়রানি করা ছাড়া এদের আর কোন কাজ আছে বলে মনে হয়না বলে অনেকেই মন্তব্য করছেন। কারন চুরি ডাকাতির বা ছিনতাইয়ের আগে ও পরে এদের কাছ থেকে কোন ধরনের সহায়তা যাত্রীরা পায়না।

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের আবদুল্লাহপুর থেকে গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত অংশে দীর্ঘ ১০ বছর ধরে চলছে বিআরটি প্রকল্পের কাজ। এ কাজের কারণে তীব্র দুর্ভোগ পোহাতে হচেছ যাত্রীদের। ঈদে এই দুর্ভোগ বাড়বে কয়েক গুণ। গাজীপুর মহাসড়কে ২৪ঘন্টায় ৬০হাজার যানবাহন চলাচল করে।অথচ এখানে ঢিমে তেতালা গতিতে কাজ চলছে। ২০১২ সালের ডিসেম্বরে শুরু হয়ে ২০১৬সালের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা ছিল গ্রেটার ঢাকা সাসটেইনেবল আরবান ট্রান্সপোর্ট প্রজেক্ট। ( বিআরটি, গাজীপুর-এয়ারপোর্ট)। শুরুতে নির্মাণব্যয় ছিল ২হাজার ৩৯ কোটি টাকা। ধীরগতির কারণে ব্যয় ও মেয়াদ দুই-ই বাড়ানো হয়। দ্বিতীয় সংশোধনীতে নির্মান ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৪হাজার ২৬কোটি টাকা। মেয়াদ বাড়ানো হয় ২০২২সালের জুন পর্যন্ত। বর্ধিত মেয়াদের শেষ প্রান্তে চলে এলেও এখন পর্যন্ত প্রকল্পটির অগ্রগতি হয়েছে প্রায় ৭৫ভাগ। কেন এমন হচেছ?এর সঠিক কোন জবাব নেই। দেশের দুই প্রধান ফেরিঘাট আরিচার পাটুরিয়া ও মুন্সীগঞ্জের মাওয়ায় ফেরি স্বল্পতা একটা বড় সমস্যা। মাওয়ায় বাস পারাপার বন্ধ থাকায় নিম্ন ও মধ্যবিত্তের যাত্রীদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়। ঈদে এই দুর্ভোগ আরও বাড়বে বলেই ধারণা করা হয়।

ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে নির্মানের পর ফরিদপুর ও বরিশাল অঞ্চলের ১০ জেলার যাত্রীদের ঢাকা ছাড়ার পথ হয়ে উঠেছে মাওয়া ঘাট। পদ্মা সেতু চালু না হওয়ায় এবারের ঈদেও তাই ফেরিই হবে ঘরে ফেরার ভরসা। অথচ ফেরির সংখ্যা বাড়ছে না। অন্য বছর ঈদে ১৭থেক ১৮টি ফেরি সচল থাকত। গত বর্ষায় দেড় মাসের ব্যবধানে পাঁচবার পদ্শা সেতুর খুটিতে ধাক্কা লাগার ঘটনায় সন্ধ্যা ছ’টার পর ফ্ল্যাট ফেরি চলাচাল বন্ধ থাকে। সেতরু নিচ দিয়ে ফেরি চলাচলও বন্ধ রাখা হয়। পরে ফেরি চালু হলেও পরাপার করা হচেছ মাইক্রোবাস, মোটসাইকেল, পিকআপ। আটমাস ধরে বন্ধ ট্রাক ও যাত্রবাহী বাস পরাপার। ঈদের চারপ সামাল দিতে একটি অস্থায়ী ঘাট নির্মাণ ছাড়া বাড়তি কোন পরিকল্পনারও কথাও শোনা যাচেছনা। অন্যদিকে মাওয়া পারাপার বন্ধ থাকায় দক্ষিনের ২১ জেলার বাস চলাালের পথ আরিচার পাটুরিয়া দৌলতদিয়া নৌপথ। সাধারন সময়েই এই পথে ভোগান্তি, ঈদে ঘরমুখো মানুষে ঢলে অবস্থার যে কত অবনিত হবে তা বুঝাই যাচেছ। পণ্যবাহী যান নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে ভোগান্তিই হবে নিয়তি। যদিও ঈদের আগে-পরে তিন দিন করে সাত দিন জরুরি পণ্য ছাড়া অন্যান্য ট্রাক পারাপার বন্ধ থাকবে। প্রতি বছরই এ নিয়ম থাকে।

তবে ঘুষের বিনিময়ে কিছু পন্যবাহী যানবাহন ও ভিআইপি সিরিয়াল ভেঙ্গে আগে পারাপার ব্যবস্থা করায় সংকট হয় প্রতি ঈদেই। এবারও এর ব্যতিক্রম হবেনা। বড় কোন দুর্ঘটনা যখন ঘটে তারপর গঠন করা হয় তদন্ত কমিটি। তদন্ত কমিটি তো আর সমস্যার সমাধানও করতে পারেনা আর কমিটির কথা দিয়ে কার কি লাভ? কে শোনে কার কথা?ট্রেনের ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হওয়ায় দেখা দিয়েছে বিশৃংখলা । টিকেট পরিণত হয়েছে সোনার হরিণে। এক শ্রেণির অসাধু ব্যক্তি পুরো টিকিট ব্যবস্থাকে জিম্মি করে রেখেছে। তারা দ্বিগুণ-তিনগুন দামে টিকিট বিক্রি করছে প্রতিবছরের মতোই। এই চক্রের হাত থেকে রেলের টিকিট উদ্ভার কারার কোন উদ্যোগ নেই, কখনও ছিলনা। আকাশপথে যাতায়াতের ক্ষেত্রেও শৃংখলার অভাব দেখা দিয়েছে। ব্যাপক চাহিদার মুখে বিমানের ভাড়া প্রায় তিনগুন বাড়ানো হয়েছে যা মধ্যবিত্তর নাগালের বাইরে চলে গেছে।

এতকিছুর পরেও মানুষ নাড়ীর টানে, ঐতিহ্যগত কারণে, প্রিয় জন্মভুমির টানে, প্রিয়জনদের সাথে মিলনের তীব্র বাসনা নিয়ে জীবনকে বাজি রেখে ইতিমধ্যে ঢাকা ছাড়ছেন।নিজেদের নিরাপত্তা নিজেরাই দিচেছন। তারা রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলোর কাছ থেকে কখনও আশা করেনা এবারও করবেন কারন সেসব আশা গুড়ে বালি। কিন্তু বাড়ি তাদের যেতেই হবে তা যদি প্রতিবছরের মতো রাস্তায় পুরোদিন পুরোরাত যানজটে আটকে থাকতে হয়। বাড়িমুখো সকলের ভ্রমন করি নিরাপদ হোক এবং নিরাপদে তাদের কর্মস্থলে সবাই ফিরে আসুক---এই আশির্বাদটুকু তো আমরা করতে পারি একে অপরের জন্য। এখানে তো কোন রাজনীতি থাকার কথা নয়। অতএব আমরা একে অপরের নিরাপদ ভ্রমণের জন্য প্রার্থনা করি।

[লেখক: কান্ট্রি ডিরেক্টর, ভলান্টিয়ার্স এসোসিয়েশন ফর বাংলাদেশ]

back to top