alt

উপ-সম্পাদকীয়

পেঁয়াজের আদ্যোপান্ত

এম মনির উদ্দিন

: শনিবার, ২৯ মার্চ ২০২৫

২০১৯ সালের কৃষি সমীক্ষা অনুযায়ী দেশে ১৬.৫ মিলিয়ন কৃষি পরিবার রয়েছে যারা কৃষির সঙ্গে জড়িত থেকে নিজ নিজ পরিবারের খাদ্যের জোগানের পাশাপাশি দেশের ১৮০ মিলিয়ন মানুষের খাদ্যের নিরাপত্তা দিয়ে চলেছে। শুধু কৃষিকে ঘিরেই দেশের ৪০ শতাংশ জনবলের কর্মসংস্থান হয়েছে এবং দেশের জিডিপিতে কৃষি সেক্টর অবদান রেখে চলেছে প্রায় ১৪ শতাংশ। ২০২৩ সালের তথ্য অনুযায়ী, দেশে ২.৪৯ লাখ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ করা হয় এবং দেশে পেঁয়াজ উৎপাদিত হয় ৩৪ লাখ টন। উৎপাদিত পেঁয়াজের অধিকাংশই চাষ করা হয় ফরিদপুর, কুষ্টিয়া, যশোর, পাবনা এবং রাজশাহী জেলা থেকে।

বাংলাদেশে পেঁয়াজ উৎপাদন, বাজার ব্যবস্থাপনা ও সরবরাহ চেইন নানা চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে। পেঁয়াজ আমাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যগুলোর মধ্যে অন্যতম, তবে এর বাজার পরিস্থিতি প্রায়শই অস্থিতিশীল থাকে। দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন, সংরক্ষনের সীমাবদ্ধতা, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট ও মধ্যস্বত্বভোগীদের আধিপত্য, সরবরাহ ব্যবস্থার দুর্বলতা ইত্যাদির কারণে একদিকে পেঁয়াজ উৎপাদনকারী কৃষক যেমন ন্যায্য দাম পায় না তেমনি দেশের উৎপাদন বৃদ্ধির পরও বাজারে সংকট এবং মূল্যবৃদ্ধির ঘটনা নিয়মিত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বাংলাদেশের পেঁয়াজ বাজার মূলত মৌসুমি চক্রের ওপর নির্ভরশীল। যখন উৎপাদন ভালো হয়, তখন বাজারে সরবরাহ বেড়ে যায় এবং কৃষক ন্যায্য দাম না পেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অন্যদিকে, চাষের অফ-সিজনে এবং আমদানিতে বাধা আসলে বাজারে সরবরাহ সংকট দেখা দেয়, ফলে মূল্যবৃদ্ধি হয়। দেশের পেঁয়াজ চাহিদার একটি বড় অংশ আমদানি করে পূরণ করতে হয়। প্রতিবেশী দেশগুলো বিশেষ করে ভারতের উপর অতিরিক্ত নির্ভরতা বাজারে বড় ধরনের অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করে। ভারত যখন রপ্তানি নিষিদ্ধ করে, তখন বাংলাদেশে পেঁয়াজ সংকট তৈরি হয় এবং এর সুযোগে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে অতি মুনাফা লুটে নেয়। ২০২৩ সালে ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি নিষিদ্ধ করলে দেশে এক মাসের ব্যবধানে পেঁয়াজের মূল্য তিনগুণ বেড়ে যায়।

২০২৩ সালে দেশে পেঁয়াজের চাহিদা ছিল ২৫ লাখ টন আর পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছিল ৩৪ লাখ টন। তারপরও, ২০২৩ সালে ৯.৫ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি করার প্রয়োজন হয়েছে দেশের চাহিদা মেটানোর জন্য যার জন্য ব্যয় হয়েছে ৩৩৪ মিলিয়ন ডলার। চাহিদার তুলনায় উৎপাদন বেশি হওয়ার পরও কেন ৯.৫ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি করার প্রয়োজন হলো? কারণটা হলো, আমাদের দেশে পেঁয়াজ সংরক্ষণের জন্য সরকারি বা বেসরকারি পর্যায়ে এখন পর্যন্ত কোন আধুনিক স্টোরেজ বা হিমঘর স্থাপিত হয়নি। এর ফলে প্রতি বছর, আমাদের দেশের উৎপাদিত পেঁয়াজের ৯-১০ লাখ টন বা ২৫-৩০ শতাংশ শুধু সংরক্ষণের সুবিধা না থাকায় পচে নষ্ট হয়ে যায়, যার আন্তর্জাতিক বাজারমূল্য প্রায় ৩৫০ মিলিয়ন ডলার।

পেঁয়াজ চাষের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ হলো মানসম্পন্ন পেঁয়াজ বীজ। দেশে প্রতি বছর পেঁয়াজের বীজ উৎপাদন হয় ১৫০ টন, কিন্তু দেশের চাহিদা অনুযায়ী পেঁয়াজ উৎপাদনের জন্য বছরে পেঁয়াজের বীজের চাহিদা রয়েছে ৩০০ টন। অর্থাৎ, বীজ উৎপাদনের ঘাটতি রয়েছে ১৫০ টনের যার উৎপাদন করার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে দেশেই। দেশে কৃষক পর্যায়ে উৎপাদিত বীজের বড় একটি অংশ যথাযথ সংরক্ষনের অভাবে অঙ্কুুরোদগম ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায় বা গজায় না যার ফলে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে তাপমাত্রা বৃদ্ধি এবং বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় কৃষক পর্যায়ে আগের মতো আর মান বজায় রেখে বিশেষ করে পেঁয়াজের বীজ সংরক্ষণ করা যায় না। ফলে, পেঁয়াজ চাষের গুরুত্বপূর্ণ ফরিদপুর অঞ্চলে কৃষক পর্যায়ে বীজ সংরক্ষণ করার মাধ্যমে গুণগতমান সম্পন্ন বীজ পাওয়া এক চরম সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আজও কৃষক পর্যায়ে রাখা বীজ না গজানোর কারণ হিসেবে বিভিন্ন ছুত ছায়া লাগার মতো নানা ধরনের কুসংস্কার কৃষকের মাঝে রয়ে গেছে। তার মানে, কৃষক এখনো বীজ ভালোভাবে না রাখার কারণে কৃষক পর্যায়ে বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজের বীজ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

শুধু কৃষক পর্যায়ে মানসম্পন্ন বীজ না রাখতে পারার কারণে পেঁয়াজের চাষ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কম হয়। এর কারণে দেশে পেঁয়াজের উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটে এবং দেশের সামগ্রিক উৎপাদন কাক্সিক্ষত পর্যায়ে পৌঁছায় না। অথচ দেশের পেঁয়াজ উৎপাদনের প্রধান হাব ফরিদপুর অঞ্চলে কৃষকের বীজ সংরক্ষণের জন্য সরকারি পর্যায়ে অনেক আগেই হিমঘর স্থাপন করার প্রয়োজন ছিল। যদি নির্দিষ্ট তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতায় কৃষকের উৎপাদিত পেঁয়াজ বীজ হিমঘর স্থাপন করে রাখার ব্যবস্থা করা যেত তাহলে প্রতি বছর কৃষকের বিপুল পরিমাণ বীজ নষ্ট হতো না। এ অঞ্চলে হিমঘরের সুবিধা থাকলে দেশেই পেঁয়াজের বীজ উৎপাদন বাণিজ্যিকভাবে আরও বেড়ে যেত যার ফলে বীজের জন্য আমাদের বিদেশ নির্ভর হতে হতো না। এমনকি, দেশের পেঁয়াজ উৎপাদন ৫০ লাখ টনে উন্নীত করা তেমন কোন ব্যাপারই না। ফলে বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করার প্রয়োজন পড়ত না, বরং বাংলাদেশ অনেক আগে থেকেই পেঁয়াজ বিদেশে রপ্তানি করতে পারত।

আমাদের দেশের কৃষকেরা সাধারণত দুইভাবে পেঁয়াজ উৎপাদন করে থাকে। প্রথমটি হলো বীজের মাধ্যমে অর্থাৎ বীজ থেকে চারা উৎপাদন করে সেই চারা জমিতে লাগানো হয় যা থেকে পেঁয়াজ হয়। এইভাবে বীজের মাধ্যমেই দেশের সিংহভাগ পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়ে থাকে। দ্বিতীয়ত, উৎপাদিত পেঁয়াজের বাল্ব বা কন্দ ব্যবহার করে কৃষক কাটা পেঁয়াজ উৎপাদন করে শীতের শুরুতেই বাজারে আগাম নিয়ে আসে যা বীজের পেঁয়াজ উঠার আগ পর্যন্ত এই কাটা পেঁয়াজই দেশের চাহিদা মেটায়। কাটা পেঁয়াজ উৎপাদনের জন্য কৃষক বীজ থেকে উৎপাদিত নির্দিষ্ট সাইজের পেঁয়াজ বেছে ঘরে সনাতনী পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করে যা দিয়ে পরের বছর কাটা পেঁয়াজ উৎপাদন করে। এখানে উল্লেখ্য যে, পেঁয়াজের কন্দ থেকেই পরের বছর পেঁয়াজ বীজও উৎপাদন করা হয়। কৃষকের সংরক্ষণ করা এই কন্দের প্রায় অর্ধেক রোপণের আগ পর্যন্ত তাপমাত্রা ও আর্দ্রতার কারনে পচে নষ্ট হয়ে যায়। এর ফলে, কৃষক যে পরিমাণ জমিতে কাটা পেঁয়াজ লাগানোর পাশাপাশি বীজ উৎপাদন করার পরিকল্পনা করে তা আর করতে পারে না কন্দ নষ্ট হয়ে কমে যাওয়ার কারনে।

ফরিদপুর অঞ্চলে বিএডিসি বীজ উৎপাদনের জন্য এই কন্দ পেঁয়াজ হিমঘরে রেখে দেয় যা দিয়ে পরের বছর চুক্তিবদ্ধ কৃষকের মাধ্যমে বীজ উৎপাদন করে। এই হিমঘরে ০-২ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় পেঁয়াজের কন্দ রাখা হয় এবং রোপনের সময় বের করে চুক্তিবদ্ধ কৃষকের কাছে বীজ তুলে দেয়া হয় বীজ উৎপাদনের জন্য যেখানে পেঁয়াজের কন্দের মোটেই কোন অপচয় বা নষ্ট হয় না। অথচ একইভাবে যদি হিমঘর করে কৃষকের পেঁয়াজের কন্দ রাখার ব্যবস্থা করা যায় তাহলে দেশে পেঁয়াজের বীজ উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপশি পেঁয়াজের উৎপাদনও বহুলাংশে বেড়ে যাবে। শুধু তাই নয়, এই হিমঘর করা হলে কৃষক খাওয়ার জন্য পেঁয়াজও হিমঘরে রাখতে পারবে যাতে করে পেঁয়াজের ২৫-৩০ শতাংশ অপচয় কমে যাবে।

৩০০-৩৫০ টন পেঁয়াজের বীজ সংরক্ষণের জন্য ছোট আকারের হিমঘর করা হলে দেশে বীজের উৎপাদন বাড়ার পাশাপাশি কৃষকের বীজ আর নষ্ট হওযার কোন সুযোগ থাকবে না। এর ফলে, বীজ থেকে দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন অনেকাংশে বেড়ে যাবে। সেইসঙ্গে, কাটা পেঁয়াজ উৎপাদনের জন্য ব্যবহার করা পেঁয়াজের কন্দ এবং খাওয়ার জন্য পেঁয়াজের সংরক্ষন করার জন্য হিমঘর স্থাপন করা গেলে দেশে সবমিলে ৫০ লাখ টন পেঁয়াজ উৎপাদন করা সহজেই সম্ভব এবং তখন আমদানি নয় বরং দেশ থেকে ১৫-২০ লাখ টন পেঁয়াজ রপ্তানি করা সময়ের ব্যাপার মাত্র। এর মাধ্যমে যেমন কৃষক পেঁয়াজের কোন প্রকার নষ্ট হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পাবে এবং হিমঘর থেকে কৃষক সরাসরি পেঁয়াজ বিক্রয় করার মাধ্যমে মধ্যস্বত্বভোগীর সংখ্যা কমে যাবে যার ফলে কৃষক পেঁয়াজের ন্যায্য দাম পাওয়ার মাধ্যমে লাভবান হবে। সেইসঙ্গে, দেশের ভোক্তা শ্রেণীও সারাবছর গ্রহণযোগ্য দামের মধ্যে পেঁয়াজ খেতে পারবে।

দেশকে পেঁয়াজ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার জন্য সরকারিভাবে সামান্য কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করলেই আমাদের পেঁয়াজের জন্য বিদেশ নির্ভর হতে হয় না। অথচ, আমরা যুগের পর যুগ ধরে পেঁয়াজ নিয়ে রাজনীতি দেখছি। বিদেশ থেকে পেঁয়াজ এনে সেই পেঁয়াজ দেশের মানুষ ২০০-৩০০ টাকা কেজিতে কিনে খায়। অথচ, আমার দেশে প্রয়োজনের বেশি পরিমাণে পেঁয়াজ উৎপাদন করে তা নষ্ট করছি। দেশে প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণে পেঁয়াজ উৎপাদন করা সম্ভব। প্রয়োজন শুধু সঠিক পরিকল্পনার। কাজেই, দেশের যারা পলিসি পর্যায়ে কাজ করছেন তাদেরকে অনুরোধ করছি ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের স্বার্থ না দেখে দেশের কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নের জন্য কৃষি বান্ধব পরিকল্পনা করুন, দেশের কৃষকের স্বার্থ রক্ষা করুন। কারণ, এই অবহেলিত কৃষকরাই কিন্তু দেশের ১৮ কোটি মানুষের খাদ্যের জোগান দিয়ে যাচ্ছে।

তাই, দেশের অবহেলিত কৃষকদের কথা বিবেচনায় নিয়ে, দেশের মানুষ যাতে সারাবছর যৌক্তিক দামের মধ্যে পেঁয়াজ কিনে খেতে পারে, দেশেই যাতে প্রয়োজনীয় পেঁয়াজের বীজ উৎপাদন করা যায়, দেশের পেঁয়াজ উৎপাদন বৃদ্ধি এবং এর অপচয় কমানোর জন্য ৩০০-৩৫০ টন বীজ সংরক্ষণ করার জন্য সেইসঙ্গে পেঁয়াজের কন্দ ও খাওয়ার পেঁয়াজ সংরক্ষনের জন্য কয়েকটি হিমঘর স্থাপন করুন। এতে করে, দেশে পেঁয়াজ আমদানি করার জন্য যে ৩৩৪-৩৫০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় হয় এবং পেঁয়াজের বীজ আমদানি করার জন্য যে আমদানি ব্যয় হয় তা করতে হবে না বরং, বাংলাদেশ প্রতি বছর ১৫-২০ লাখ টন পেঁয়াজ বিদেশে রপ্তানি করতে পারবে। দেশ প্রধান খাদ্য ধানের মতো পেঁয়াজেও স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে। দূর হবে পেঁয়াজ নিয়ে কল্পকাহিনী।

[লেখক : এগ্রোনমিস্ট]

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয়

প্রযুক্তির ফাঁদে শৈশব : স্ক্রিন টাইম গিলে খাচ্ছে খেলার মাঠ

রমগদ্য : সিরাজগঞ্জে ‘ব্রিটিশ প্রেতাত্মা’

বামপন্থা : নীতির সঙ্গে নেতৃত্বের ভূমিকা

দাবি আদায়ে জনদুর্ভোগ : জনশিক্ষা ও সুশাসনের পথ

ইমাম রইস উদ্দিন হত্যাকাণ্ড : সুবিচার নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব

কারাগার, সংশোধনাগার ও ভবঘুরে কেন্দ্রগুলোর সংস্কার কি হবে

জ্বালানির বদল, জীবিকার ঝুঁকি

প্রসঙ্গ : রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী ও চট্টগ্রামে এস্কর্ট ডিউটি

দেশটা কারো বাপের নয়!

বুদ্ধের বাণীতে বিশ্বশান্তির প্রার্থনা

আর কত ধর্ষণের খবর শুনতে হবে?

সংস্কারের স্বপ্ন বনাম বাস্তবতার রাজনীতি

মধুমাসের স্মৃতি ও দেশীয় ফলের রসাল সমারোহ

মুর্শিদাবাদে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট

লিঙ্গের রাজনীতি বা বিবাদ নয়, চাই মানবিকতার নিবিড় বন্ধন

বাজেট : বাস্তবতা, চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা

যুক্তরাষ্ট্র-ইরান পারমাণবিক আলোচনার স্থবিরতা

রম্যগদ্য: “বাঙালি আমরা, নহি তো মেষ...”

সর্বজনীন শিক্ষার বলয়ের বাইরে আদিবাসীরা : অন্তর্ভুক্তির লড়াইয়ে বৈষম্যের দেয়াল

শোনার গান, দেখার টান : অনুভূতির ভোঁতা সময়

ছবি

ছিন্নপত্রে বাংলাদেশের প্রকৃতি ও রবীন্দ্র চেতনা

ভেতরের অদৃশ্য অপরাধ : সমাজের বিপন্ন মানসিকতা

দারিদ্র্য ও বৈষম্য নিরসনে খাসজমি ও জলার গুরুত্ব

অবহেলিত কৃষক ও বাজার ব্যবস্থার বৈষম্য

রাক্ষুসে মাছের দাপটে বিপন্ন দেশীয় মাছ : করণীয় কী?

বজ্রপাতের আতঙ্কে জনজীবন

তাহলে কি ঘৃণায় ছেয়ে যাবে দেশ, মানবজমিন রইবে পতিত

কর্পোরেট ও ব্যক্তিগত সামাজিক দায়বদ্ধতা

‘রাখাইন করিডর’ : একটি ভূ-রাজনৈতিক বিশ্লেষণ

ভিন্নমতের ভয়, নির্বাচনের দোলাচল ও অন্তর্বর্তী সরকারের কৌশলী অবস্থান

সমুদ্রসম্পদ সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা

কৃষি শিক্ষা হোক উদ্যোক্তা গড়ার মাধ্যম

রঙ্গব্যঙ্গ : কোটের কেবল রং বদলায়

মে দিবসের চেতনা বনাম বাস্তবতা

শ্রম আইন ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় চাই আন্তরিকতা

tab

উপ-সম্পাদকীয়

পেঁয়াজের আদ্যোপান্ত

এম মনির উদ্দিন

শনিবার, ২৯ মার্চ ২০২৫

২০১৯ সালের কৃষি সমীক্ষা অনুযায়ী দেশে ১৬.৫ মিলিয়ন কৃষি পরিবার রয়েছে যারা কৃষির সঙ্গে জড়িত থেকে নিজ নিজ পরিবারের খাদ্যের জোগানের পাশাপাশি দেশের ১৮০ মিলিয়ন মানুষের খাদ্যের নিরাপত্তা দিয়ে চলেছে। শুধু কৃষিকে ঘিরেই দেশের ৪০ শতাংশ জনবলের কর্মসংস্থান হয়েছে এবং দেশের জিডিপিতে কৃষি সেক্টর অবদান রেখে চলেছে প্রায় ১৪ শতাংশ। ২০২৩ সালের তথ্য অনুযায়ী, দেশে ২.৪৯ লাখ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ করা হয় এবং দেশে পেঁয়াজ উৎপাদিত হয় ৩৪ লাখ টন। উৎপাদিত পেঁয়াজের অধিকাংশই চাষ করা হয় ফরিদপুর, কুষ্টিয়া, যশোর, পাবনা এবং রাজশাহী জেলা থেকে।

বাংলাদেশে পেঁয়াজ উৎপাদন, বাজার ব্যবস্থাপনা ও সরবরাহ চেইন নানা চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে। পেঁয়াজ আমাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যগুলোর মধ্যে অন্যতম, তবে এর বাজার পরিস্থিতি প্রায়শই অস্থিতিশীল থাকে। দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন, সংরক্ষনের সীমাবদ্ধতা, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট ও মধ্যস্বত্বভোগীদের আধিপত্য, সরবরাহ ব্যবস্থার দুর্বলতা ইত্যাদির কারণে একদিকে পেঁয়াজ উৎপাদনকারী কৃষক যেমন ন্যায্য দাম পায় না তেমনি দেশের উৎপাদন বৃদ্ধির পরও বাজারে সংকট এবং মূল্যবৃদ্ধির ঘটনা নিয়মিত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বাংলাদেশের পেঁয়াজ বাজার মূলত মৌসুমি চক্রের ওপর নির্ভরশীল। যখন উৎপাদন ভালো হয়, তখন বাজারে সরবরাহ বেড়ে যায় এবং কৃষক ন্যায্য দাম না পেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অন্যদিকে, চাষের অফ-সিজনে এবং আমদানিতে বাধা আসলে বাজারে সরবরাহ সংকট দেখা দেয়, ফলে মূল্যবৃদ্ধি হয়। দেশের পেঁয়াজ চাহিদার একটি বড় অংশ আমদানি করে পূরণ করতে হয়। প্রতিবেশী দেশগুলো বিশেষ করে ভারতের উপর অতিরিক্ত নির্ভরতা বাজারে বড় ধরনের অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করে। ভারত যখন রপ্তানি নিষিদ্ধ করে, তখন বাংলাদেশে পেঁয়াজ সংকট তৈরি হয় এবং এর সুযোগে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে অতি মুনাফা লুটে নেয়। ২০২৩ সালে ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি নিষিদ্ধ করলে দেশে এক মাসের ব্যবধানে পেঁয়াজের মূল্য তিনগুণ বেড়ে যায়।

২০২৩ সালে দেশে পেঁয়াজের চাহিদা ছিল ২৫ লাখ টন আর পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছিল ৩৪ লাখ টন। তারপরও, ২০২৩ সালে ৯.৫ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি করার প্রয়োজন হয়েছে দেশের চাহিদা মেটানোর জন্য যার জন্য ব্যয় হয়েছে ৩৩৪ মিলিয়ন ডলার। চাহিদার তুলনায় উৎপাদন বেশি হওয়ার পরও কেন ৯.৫ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি করার প্রয়োজন হলো? কারণটা হলো, আমাদের দেশে পেঁয়াজ সংরক্ষণের জন্য সরকারি বা বেসরকারি পর্যায়ে এখন পর্যন্ত কোন আধুনিক স্টোরেজ বা হিমঘর স্থাপিত হয়নি। এর ফলে প্রতি বছর, আমাদের দেশের উৎপাদিত পেঁয়াজের ৯-১০ লাখ টন বা ২৫-৩০ শতাংশ শুধু সংরক্ষণের সুবিধা না থাকায় পচে নষ্ট হয়ে যায়, যার আন্তর্জাতিক বাজারমূল্য প্রায় ৩৫০ মিলিয়ন ডলার।

পেঁয়াজ চাষের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ হলো মানসম্পন্ন পেঁয়াজ বীজ। দেশে প্রতি বছর পেঁয়াজের বীজ উৎপাদন হয় ১৫০ টন, কিন্তু দেশের চাহিদা অনুযায়ী পেঁয়াজ উৎপাদনের জন্য বছরে পেঁয়াজের বীজের চাহিদা রয়েছে ৩০০ টন। অর্থাৎ, বীজ উৎপাদনের ঘাটতি রয়েছে ১৫০ টনের যার উৎপাদন করার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে দেশেই। দেশে কৃষক পর্যায়ে উৎপাদিত বীজের বড় একটি অংশ যথাযথ সংরক্ষনের অভাবে অঙ্কুুরোদগম ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায় বা গজায় না যার ফলে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে তাপমাত্রা বৃদ্ধি এবং বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় কৃষক পর্যায়ে আগের মতো আর মান বজায় রেখে বিশেষ করে পেঁয়াজের বীজ সংরক্ষণ করা যায় না। ফলে, পেঁয়াজ চাষের গুরুত্বপূর্ণ ফরিদপুর অঞ্চলে কৃষক পর্যায়ে বীজ সংরক্ষণ করার মাধ্যমে গুণগতমান সম্পন্ন বীজ পাওয়া এক চরম সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আজও কৃষক পর্যায়ে রাখা বীজ না গজানোর কারণ হিসেবে বিভিন্ন ছুত ছায়া লাগার মতো নানা ধরনের কুসংস্কার কৃষকের মাঝে রয়ে গেছে। তার মানে, কৃষক এখনো বীজ ভালোভাবে না রাখার কারণে কৃষক পর্যায়ে বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজের বীজ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

শুধু কৃষক পর্যায়ে মানসম্পন্ন বীজ না রাখতে পারার কারণে পেঁয়াজের চাষ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কম হয়। এর কারণে দেশে পেঁয়াজের উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটে এবং দেশের সামগ্রিক উৎপাদন কাক্সিক্ষত পর্যায়ে পৌঁছায় না। অথচ দেশের পেঁয়াজ উৎপাদনের প্রধান হাব ফরিদপুর অঞ্চলে কৃষকের বীজ সংরক্ষণের জন্য সরকারি পর্যায়ে অনেক আগেই হিমঘর স্থাপন করার প্রয়োজন ছিল। যদি নির্দিষ্ট তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতায় কৃষকের উৎপাদিত পেঁয়াজ বীজ হিমঘর স্থাপন করে রাখার ব্যবস্থা করা যেত তাহলে প্রতি বছর কৃষকের বিপুল পরিমাণ বীজ নষ্ট হতো না। এ অঞ্চলে হিমঘরের সুবিধা থাকলে দেশেই পেঁয়াজের বীজ উৎপাদন বাণিজ্যিকভাবে আরও বেড়ে যেত যার ফলে বীজের জন্য আমাদের বিদেশ নির্ভর হতে হতো না। এমনকি, দেশের পেঁয়াজ উৎপাদন ৫০ লাখ টনে উন্নীত করা তেমন কোন ব্যাপারই না। ফলে বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করার প্রয়োজন পড়ত না, বরং বাংলাদেশ অনেক আগে থেকেই পেঁয়াজ বিদেশে রপ্তানি করতে পারত।

আমাদের দেশের কৃষকেরা সাধারণত দুইভাবে পেঁয়াজ উৎপাদন করে থাকে। প্রথমটি হলো বীজের মাধ্যমে অর্থাৎ বীজ থেকে চারা উৎপাদন করে সেই চারা জমিতে লাগানো হয় যা থেকে পেঁয়াজ হয়। এইভাবে বীজের মাধ্যমেই দেশের সিংহভাগ পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়ে থাকে। দ্বিতীয়ত, উৎপাদিত পেঁয়াজের বাল্ব বা কন্দ ব্যবহার করে কৃষক কাটা পেঁয়াজ উৎপাদন করে শীতের শুরুতেই বাজারে আগাম নিয়ে আসে যা বীজের পেঁয়াজ উঠার আগ পর্যন্ত এই কাটা পেঁয়াজই দেশের চাহিদা মেটায়। কাটা পেঁয়াজ উৎপাদনের জন্য কৃষক বীজ থেকে উৎপাদিত নির্দিষ্ট সাইজের পেঁয়াজ বেছে ঘরে সনাতনী পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করে যা দিয়ে পরের বছর কাটা পেঁয়াজ উৎপাদন করে। এখানে উল্লেখ্য যে, পেঁয়াজের কন্দ থেকেই পরের বছর পেঁয়াজ বীজও উৎপাদন করা হয়। কৃষকের সংরক্ষণ করা এই কন্দের প্রায় অর্ধেক রোপণের আগ পর্যন্ত তাপমাত্রা ও আর্দ্রতার কারনে পচে নষ্ট হয়ে যায়। এর ফলে, কৃষক যে পরিমাণ জমিতে কাটা পেঁয়াজ লাগানোর পাশাপাশি বীজ উৎপাদন করার পরিকল্পনা করে তা আর করতে পারে না কন্দ নষ্ট হয়ে কমে যাওয়ার কারনে।

ফরিদপুর অঞ্চলে বিএডিসি বীজ উৎপাদনের জন্য এই কন্দ পেঁয়াজ হিমঘরে রেখে দেয় যা দিয়ে পরের বছর চুক্তিবদ্ধ কৃষকের মাধ্যমে বীজ উৎপাদন করে। এই হিমঘরে ০-২ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় পেঁয়াজের কন্দ রাখা হয় এবং রোপনের সময় বের করে চুক্তিবদ্ধ কৃষকের কাছে বীজ তুলে দেয়া হয় বীজ উৎপাদনের জন্য যেখানে পেঁয়াজের কন্দের মোটেই কোন অপচয় বা নষ্ট হয় না। অথচ একইভাবে যদি হিমঘর করে কৃষকের পেঁয়াজের কন্দ রাখার ব্যবস্থা করা যায় তাহলে দেশে পেঁয়াজের বীজ উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপশি পেঁয়াজের উৎপাদনও বহুলাংশে বেড়ে যাবে। শুধু তাই নয়, এই হিমঘর করা হলে কৃষক খাওয়ার জন্য পেঁয়াজও হিমঘরে রাখতে পারবে যাতে করে পেঁয়াজের ২৫-৩০ শতাংশ অপচয় কমে যাবে।

৩০০-৩৫০ টন পেঁয়াজের বীজ সংরক্ষণের জন্য ছোট আকারের হিমঘর করা হলে দেশে বীজের উৎপাদন বাড়ার পাশাপাশি কৃষকের বীজ আর নষ্ট হওযার কোন সুযোগ থাকবে না। এর ফলে, বীজ থেকে দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন অনেকাংশে বেড়ে যাবে। সেইসঙ্গে, কাটা পেঁয়াজ উৎপাদনের জন্য ব্যবহার করা পেঁয়াজের কন্দ এবং খাওয়ার জন্য পেঁয়াজের সংরক্ষন করার জন্য হিমঘর স্থাপন করা গেলে দেশে সবমিলে ৫০ লাখ টন পেঁয়াজ উৎপাদন করা সহজেই সম্ভব এবং তখন আমদানি নয় বরং দেশ থেকে ১৫-২০ লাখ টন পেঁয়াজ রপ্তানি করা সময়ের ব্যাপার মাত্র। এর মাধ্যমে যেমন কৃষক পেঁয়াজের কোন প্রকার নষ্ট হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পাবে এবং হিমঘর থেকে কৃষক সরাসরি পেঁয়াজ বিক্রয় করার মাধ্যমে মধ্যস্বত্বভোগীর সংখ্যা কমে যাবে যার ফলে কৃষক পেঁয়াজের ন্যায্য দাম পাওয়ার মাধ্যমে লাভবান হবে। সেইসঙ্গে, দেশের ভোক্তা শ্রেণীও সারাবছর গ্রহণযোগ্য দামের মধ্যে পেঁয়াজ খেতে পারবে।

দেশকে পেঁয়াজ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার জন্য সরকারিভাবে সামান্য কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করলেই আমাদের পেঁয়াজের জন্য বিদেশ নির্ভর হতে হয় না। অথচ, আমরা যুগের পর যুগ ধরে পেঁয়াজ নিয়ে রাজনীতি দেখছি। বিদেশ থেকে পেঁয়াজ এনে সেই পেঁয়াজ দেশের মানুষ ২০০-৩০০ টাকা কেজিতে কিনে খায়। অথচ, আমার দেশে প্রয়োজনের বেশি পরিমাণে পেঁয়াজ উৎপাদন করে তা নষ্ট করছি। দেশে প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণে পেঁয়াজ উৎপাদন করা সম্ভব। প্রয়োজন শুধু সঠিক পরিকল্পনার। কাজেই, দেশের যারা পলিসি পর্যায়ে কাজ করছেন তাদেরকে অনুরোধ করছি ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের স্বার্থ না দেখে দেশের কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নের জন্য কৃষি বান্ধব পরিকল্পনা করুন, দেশের কৃষকের স্বার্থ রক্ষা করুন। কারণ, এই অবহেলিত কৃষকরাই কিন্তু দেশের ১৮ কোটি মানুষের খাদ্যের জোগান দিয়ে যাচ্ছে।

তাই, দেশের অবহেলিত কৃষকদের কথা বিবেচনায় নিয়ে, দেশের মানুষ যাতে সারাবছর যৌক্তিক দামের মধ্যে পেঁয়াজ কিনে খেতে পারে, দেশেই যাতে প্রয়োজনীয় পেঁয়াজের বীজ উৎপাদন করা যায়, দেশের পেঁয়াজ উৎপাদন বৃদ্ধি এবং এর অপচয় কমানোর জন্য ৩০০-৩৫০ টন বীজ সংরক্ষণ করার জন্য সেইসঙ্গে পেঁয়াজের কন্দ ও খাওয়ার পেঁয়াজ সংরক্ষনের জন্য কয়েকটি হিমঘর স্থাপন করুন। এতে করে, দেশে পেঁয়াজ আমদানি করার জন্য যে ৩৩৪-৩৫০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় হয় এবং পেঁয়াজের বীজ আমদানি করার জন্য যে আমদানি ব্যয় হয় তা করতে হবে না বরং, বাংলাদেশ প্রতি বছর ১৫-২০ লাখ টন পেঁয়াজ বিদেশে রপ্তানি করতে পারবে। দেশ প্রধান খাদ্য ধানের মতো পেঁয়াজেও স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে। দূর হবে পেঁয়াজ নিয়ে কল্পকাহিনী।

[লেখক : এগ্রোনমিস্ট]

back to top