alt

উপ-সম্পাদকীয়

‘রিফাইন্ড’ আওয়ামী লীগ হলে ‘ওয়াশিং মেশিন পার্টি’ বেকার হয়ে পড়বে না তো!

আনোয়ারুল হক

: মঙ্গলবার, ০৮ এপ্রিল ২০২৫

গত কিছু দিন যাবৎ ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ তত্ত্ব নিয়ে দেশে নানা ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া পরিলক্ষিত হচ্ছে। অবশ্য যাকে নিয়ে এত কথা বাকবিতণ্ডা তার খবর নেই, কিন্তু পাড়া-প্রতিবেশীর ঘুম নেই অবস্থা। আগেও বহুবার লিখেছি সাধারণভাবে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী, এমনকি সমর্থকদের মধ্যেও কোন আত্মসমালোচনা ও অনুশোচনা নেই এবং জুলাই-আগস্ট হত্যাকা-ের কুশীলবদের বিচারের দাবি আওয়ামী লীগের ভেতর থেকেই না ওঠায় দলের জনবিচ্ছিন্নতা আরো বেড়েছে। তবে আওয়ামী লীগের কর্তৃত্ববাদী রাজনীতি পরাজিত হলেও এবং হত্যাযজ্ঞের দায়ে অভিযুক্ত হয়ে তাদের রাজনীতির মাঠে নামার নৈতিক ভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়লেও আওয়ামী রাজনীতি বিলুপ্ত হয়ে যায়নি, বরং সাম্প্রতিক সময়ে মৌলবাদী গোষ্ঠীর উত্থান, সমন্বয়কদের একাংশের উসকানিতে প্রতিহিংসামূলক নানা কাণ্ড এবং সমাজে ও রাজনীতিতে ক্রোধ আর অস্থিরতার নেতিবাচক সুবিধা পতিত শক্তিকে বিনাশ্রমে কিছুটা শক্তি সঞ্চয়ের সুযোগ সৃষ্টি করে দিচ্ছে। আওয়ামী লীগের প্রতি সহানুভূতিশীল ‘প্রগতিবাদীদের’ একটা অংশ মুখ ফুটে বলতে না পারলেও মৌলবাদীদের উত্থানকে যুক্তি হিসেবে তুলে ধরে ইনিয়ে-বিনিয়ে আফসোসের সুরে বলার চেষ্টা করেন ‘এর চেয়ে আগেই তো ভালো ছিল’!

অথচ এক দশকেরও অধিককাল যাবত বিনা ভোটে বা রাতের ভোটে এবং নানা কৌশলে বিরোধী দলকে নির্বাচনের বাইরে রেখে এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় এক কলঙ্কিত অধ্যায়ের সাক্ষর রেখে আওয়ামী লীগ এবং দলের নেত্রী যা করেছেন তা অন্ধকারের শক্তির উত্থান ঘটানোর জন্য যথেষ্ট ছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যে দখলদারিত্ব ছাত্রলীগ কায়েম করেছিল এবং জোর করে ছাত্রলীগ করানোর যে সংস্কৃতি তৈরি হয়েছিল ছাত্র বিদ্রোহ যে আরো আগে হয়নি সেটাই বরং বিষ্ময়ের। এসব বিষয় এড়িয়ে এখন শুধু আফসোস আর আক্ষেপমূলক ভাবে মৌলবাদের বিপদের কথা বলে কাজের কাজ কিছু হবে না। পতিত শাসকগোষ্ঠীই জেদ, দম্ভ ও স্বৈরাচারের এক বিপজ্জনক ককটেল বানিয়ে জবরদস্তি মূলকভাবে ক্ষমতা আঁকড়ে রেখে যে কোনো ধরনের একটি অভ্যুত্থানের জন্য উর্বর জমিন সৃষ্টি করে রেখেছিল। তাই ‘শুধু ষড়যন্ত্রতত্ত্ব’ থেকে মোহমুক্তি না হলে আফসোস করা যাবে কিন্তু উগ্র মৌলবাদী উত্থানকে মোকাবিলা করা যাবে না।

প্রধান বিরোধী দলের ওপর তীব্র দমনপীড়ন চালিয়ে নির্বাচনসমূহ করা হয়েছে প্রশাসনিক সহায়তায় তাই সরকারের কার্যত কোন রাজনৈতিক কর্তৃত্ব ছিল না। সিভিল প্রশাসন এবং পুলিশ, র‌্যাবের ওপর নির্ভর করে রাজত্ব চলছিল। ব্যতিক্রম ছাড়া মনে হত জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ডিসি আর সাধারণ সম্পাদক এসপি। তেমনি উপজেলার সভাপতি ইউএনও এবং সাধারণ সম্পাদক ওসি। দলকে টিকিয়ে রাখা ও নির্বাচনে জিতিয়ে আনা তাদের দায়িত্ব। আর দলীয় রাজনৈতিক কাজ বাদ দিয়ে ব্যতিক্রম ছাড়া আওয়ামী লীগ নেতাদের বড় অংশ নিজেদের পরিণত করেছিলেন ‘মানি মেকিং মেশিন’ হিসেবে। এভাবেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্ব প্রদানকারী দলটি নিজেদের জনবিচ্ছিন্ন করে ফেলে এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকেও হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে দমন করতে গিয়ে দ্রুত নিজেদের পতন ডেকে আনে।

সর্বশেষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংঘটিত আন্দোলনে বিএনপি সারা দেশে সুসংগঠিত হয়। আন্দোলনকে এমন পর্যায়ে তারা নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছিল যে, সরকার শেষ পর্যন্ত নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে সক্ষম হলেও দেশে-বিদেশে নির্বাচনটি তামাশা হিসেবেই বিবেচিত হয়েছে। ছাত্র গণ-অভ্যুত্থানের বিজয়ের পরে বিএনপি নেতা কর্মীদের একাংশ দখলদারিত্ব, চাঁদাবাজি, মামলা বাণিজ্যসহ নেতিবাচক কার্যক্রমে জড়িত হয়ে পড়ায় তাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ হলেও জনসমর্থনের বিচারে বিএনপিই এখন দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল। তারপরেও কোথায় যেন একটা ভাটার টান! আওয়ামী রাজনীতিতে পরিবারতন্ত্রের পতনের প্রভাব বিএনপির ওপরও পড়েছে। এস্টাবলিশমেন্টের সঙ্গে এক/এগারোর সময় সৃষ্ট ক্ষত এখনও পুরোপুরি শুকায়নি বলেই মনে হয়।

বাংলাদেশের বাম ঘরানার রাজনৈতিক দলসমূহ দলীয় ভাঙনে বিপর্যস্ত এবং একই সঙ্গে বহুধারায় বিভক্ত। একটি অংশ তো বাম জোট গড়ে তোলার শুরুতেই জোট থেকে বেরিয়ে যেয়ে বামপন্থী আন্দোলনকে ক্ষতিগ্রস্ত করে প্রায় দুই দশক যাবত আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটে আছেন। অপর একটি অংশ বিপরীত প্রতিক্রিয়া হিসেবে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটে সরাসরি শরিক না হলেও তাদের সঙ্গে সমান্তরালভাবে চলছেন এবং ইতোমধ্যে তাদের নেতাদের জন্য পার্লামেন্টের কয়েকটি সিটে বিএনপির সমর্থনের নিশ্চয়তা পাওয়ায় তাদের রাজনীতি সে অনুযায়ী আবর্তিত হচ্ছে। বামপন্থীদের প্রধান দল হিসেবে পরিচিত সিপিবি নেতৃত্বাধীন জোট নীতিনিষ্ঠ অবস্থান নিয়ে চলার চেষ্টা করলেও এখন পর্যন্ত রাজনীতির মাঠে বাম গণতান্ত্রিক বিকল্প গড়ে তোলার মতো শক্তি সমাবেশ এবং জনআস্থা গড়ে তুলতে পারছে না। কিছু ক্ষেত্রে সীমিত পরিসরে শ্রেণী আন্দোলন গড়ে তোলার প্রচেষ্টা থাকলেও পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ও এক নতুন বাস্তবতায় দলের পক্ষ থেকে সাধারণ মানুষের বোধগম্য ভাষায় যুক্তিনির্ভর আকর্ষণীয় বক্তব্য ও যুৎসই কর্মসূচি অনুপস্থিত। বিশেষত ছাত্র তরুণ এবং মধ্যবিত্তের মাঝে এক উদার ও মানবিক সমাজ বিনির্মানের যে নতুন ধরনের আকাক্সক্ষা সৃষ্টি হয়েছে, ব্যক্তি ও পরিবারকেন্দ্রিক রাজনীতির বিপরীতে দলের অভ্যন্তরেও নিজস্ব মত প্রকাশের পূর্ণ স্বাধীনতার পরিবেশ সৃষ্টির উপায় উদ্ভাবনের যে রাজনৈতিক সংস্কৃতি তরুণরা দেখতে চায়, তাকে ধারণ করে অগ্রসর হওয়ার মতো গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক, প্রগতিমুখীন রাজনৈতিক সামাজিক শক্তিসমূহ এবং আস্থাভাজন ব্যক্তিবর্গকে এক প্লাটফর্মে একত্রিত করার জটিল ও কঠিন কাজটি খুব একটা অগ্রসর হচ্ছে বলে মনে হয় না।

অনেকটা এ ধরনেরই এক রাজনৈতিক বাস্তবতায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যখন তুঙ্গে সেই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের টাইম টেলিভিশন চ্যানেলকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান মোজেনা বলেন, ‘বাংলাদেশে নতুন রাজনৈতিক দলের উত্থান ঘটতে পারে’।

সাক্ষাৎকারের আর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে, কোটা আন্দোলনকে ঘিরে সহিংসতা প্রসঙ্গে মোজেনা বলেন, ‘সম্ভবত নিষেধাজ্ঞাও সহায়ক হতে পারে’। সেই নিষেধাজ্ঞার হুমকিই কি ছিল বিদেশে শান্তিরক্ষী পাঠানো স্থগিত করা প্রসঙ্গে! ওই সময়েই ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভারতীয় পত্রিকা ‘দ্য হিন্দুকে’ দেয়া এক সাক্ষাৎকারে অবাধ ও সুষ্ঠু নতুন নির্বাচন দাবি করেন।

এসব বক্তব্য বিশ্লেষণ করে, পশ্চিমা দুনিয়ার কাছে গ্রহণযোগ্য ড. মুহাম্মদ ইউনূস আগে থেকে নয় বরং বিদেশে হাসপাতালের অপারেশন টেবিলে থাকা অবস্থায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বা ওই সময়ের রাজনৈতিক ঘটনা প্রবাহের সঙ্গে যুক্ত হন, এটা আর বিশ্বাসযোগ্য হচ্ছে না। নতুন দলের উত্থান সম্পর্কে ড্যান মোজেনার উক্তি, আবার তার কিছুদিন পরেই ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দেয়া সাক্ষাৎকারেও ছাত্রদের নতুন দল গঠন সম্পর্কে ইঙ্গিত, সব মিলিয়ে নতুন দল পশ্চিমা-সমর্থিত ভিন্ন একটি রাজনৈতিক শক্তির উত্থান প্রয়াস কিনা সেই ধন্দ্বে পড়ে যেতে হচ্ছে। নতুন দল সৃষ্টির প্রথম ঘোষণা কোনো বাংলাদেশির পক্ষ থেকে নয় একজন ভিনদেশি রাষ্ট্রদূতের পক্ষ থেকে দেয়া নতুন দলের জন্য অমর্যাদাকর বৈকি। এতকাল ভারতবর্ষের একচেটিয়া বাহাদুরির জায়গায় সরাসরি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ছড়ি ঘোরানো, আবার চীন-পাকিস্তানও বসে নেই, মায়ানমারকে কেন্দ্র করে আরেক পরিস্থিতি এক জটিল ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতির মুখোমুখি আমরা। এ পরিস্থিতিতে ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ তত্ত্ব হাজির হয়েছে।

পরিশোধিত আওয়ামী লীগের বিষয়ে সব থেকে কড়া প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন নতুন দল নাগরিক পার্টি আর জামায়াতের নতুন সংস্করণ ‘এবিসিডি’ ওয়ালারা। নাগরিক পার্টির বিরোধিতার প্রধান কারণ ভোটের রাজনীতি। তাই নতুন রাজনৈতিক দল গঠনে সারা দেশের সব সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার অপসারিত কাউন্সিলরদের ‘সর্বোচ্চ সহযোগিতা’ চেয়েছিল জাতীয় নাগরিক কমিটি। এই অপসারিত কাউন্সিলররা কারা? ৫ আগস্টের আগে সারা বাংলাদেশে সব পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনগুলোতে কারা নির্বাচিত মেয়র কাউন্সিলর ছিলেন? তা সবার জানা থাকলেও তাদেরকেই জাতীয় নাগরিক পার্টির ওয়াশিং মেশিন দিয়ে পরিশুদ্ধ বা রিফাইন্ড করে ভোটের মাঠের দুর্বলতাকে তারা দূর করতে চান। নতুন এক পরিস্থিতিতে নতুন কোনো রাজনৈতিক শক্তির উন্মেষ হতেই পারে। কিন্তু রাজনৈতিক দল গঠনের শুরুতেই নিজেদের শক্তির ওপর ভরসা না করে বিভিন্ন দল ও গোষ্ঠী থেকে বিশেষত পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনের মেয়র কাউন্সিলরদের ভাগিয়ে ওয়াশিং মেশিন দিয়ে পরিশুদ্ধ করে আনার অনৈতিক পরিকল্পনা কোনো ভালো ইঙ্গিত বহন করছে না।

দল গঠনের সুবিধা নিতে নাগরিক পার্টি প্রথমে স্থানীয় সরকার নির্বাচন চায়। যেহেতু তারা রাষ্ট্রক্ষমতার অংশীদার এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ও তাদের কব্জায় তাই এ সব পরিকল্পনা ও কাজে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহারও হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের তত্বাবধানে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও কাউন্সিলরদেরও নাগরিক পার্টির ওয়াশিং মেশিনে ঢুকানোর প্রচেষ্টা জোরেশোরে চলছে।

এ পরিস্থিতিতে পরিশুদ্ধ আওয়ামী লীগ গঠনের জন্য পৃথক ওয়াশিং মেশিন কাজ শুরু করলে তরুণদের রাজনৈতিক দলে ভাটার টান সৃষ্টি হতে পারে। অবশ্য আওয়ামী লীগ তো বন্দী! আগে বন্দী ছিল শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের কাছে। তবু তো দেশের লোকের কাছে বন্দী ছিল। এখন তো বিদেশির হাতে বন্দী। বিদেশিদের হাতে বন্দী না থেকে বাংলাদেশের জনগণের কাছে আত্মসমর্পণ করা মর্যাদার। পরিশুদ্ধ হতে চাইলে বাংলাদেশি ওয়াশিং মেশিনেই পরিশুদ্ধ হতে হবে। রাজনীতির কারবারিরা গভীর আগ্রহ ভরে লক্ষ্য করছেন কোন ওয়াশিং মেশিনের কার্যকারিতা শেষ পর্যন্ত রাজনীতির ময়দানে দৃশ্যমান হবে।

[লেখক : সাবেক ছাত্র নেতা]

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয়

প্রযুক্তির ফাঁদে শৈশব : স্ক্রিন টাইম গিলে খাচ্ছে খেলার মাঠ

রমগদ্য : সিরাজগঞ্জে ‘ব্রিটিশ প্রেতাত্মা’

বামপন্থা : নীতির সঙ্গে নেতৃত্বের ভূমিকা

দাবি আদায়ে জনদুর্ভোগ : জনশিক্ষা ও সুশাসনের পথ

ইমাম রইস উদ্দিন হত্যাকাণ্ড : সুবিচার নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব

কারাগার, সংশোধনাগার ও ভবঘুরে কেন্দ্রগুলোর সংস্কার কি হবে

জ্বালানির বদল, জীবিকার ঝুঁকি

প্রসঙ্গ : রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী ও চট্টগ্রামে এস্কর্ট ডিউটি

দেশটা কারো বাপের নয়!

বুদ্ধের বাণীতে বিশ্বশান্তির প্রার্থনা

আর কত ধর্ষণের খবর শুনতে হবে?

সংস্কারের স্বপ্ন বনাম বাস্তবতার রাজনীতি

মধুমাসের স্মৃতি ও দেশীয় ফলের রসাল সমারোহ

মুর্শিদাবাদে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট

লিঙ্গের রাজনীতি বা বিবাদ নয়, চাই মানবিকতার নিবিড় বন্ধন

বাজেট : বাস্তবতা, চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা

যুক্তরাষ্ট্র-ইরান পারমাণবিক আলোচনার স্থবিরতা

রম্যগদ্য: “বাঙালি আমরা, নহি তো মেষ...”

সর্বজনীন শিক্ষার বলয়ের বাইরে আদিবাসীরা : অন্তর্ভুক্তির লড়াইয়ে বৈষম্যের দেয়াল

শোনার গান, দেখার টান : অনুভূতির ভোঁতা সময়

ছবি

ছিন্নপত্রে বাংলাদেশের প্রকৃতি ও রবীন্দ্র চেতনা

ভেতরের অদৃশ্য অপরাধ : সমাজের বিপন্ন মানসিকতা

দারিদ্র্য ও বৈষম্য নিরসনে খাসজমি ও জলার গুরুত্ব

অবহেলিত কৃষক ও বাজার ব্যবস্থার বৈষম্য

রাক্ষুসে মাছের দাপটে বিপন্ন দেশীয় মাছ : করণীয় কী?

বজ্রপাতের আতঙ্কে জনজীবন

তাহলে কি ঘৃণায় ছেয়ে যাবে দেশ, মানবজমিন রইবে পতিত

কর্পোরেট ও ব্যক্তিগত সামাজিক দায়বদ্ধতা

‘রাখাইন করিডর’ : একটি ভূ-রাজনৈতিক বিশ্লেষণ

ভিন্নমতের ভয়, নির্বাচনের দোলাচল ও অন্তর্বর্তী সরকারের কৌশলী অবস্থান

সমুদ্রসম্পদ সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা

কৃষি শিক্ষা হোক উদ্যোক্তা গড়ার মাধ্যম

রঙ্গব্যঙ্গ : কোটের কেবল রং বদলায়

মে দিবসের চেতনা বনাম বাস্তবতা

শ্রম আইন ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় চাই আন্তরিকতা

tab

উপ-সম্পাদকীয়

‘রিফাইন্ড’ আওয়ামী লীগ হলে ‘ওয়াশিং মেশিন পার্টি’ বেকার হয়ে পড়বে না তো!

আনোয়ারুল হক

মঙ্গলবার, ০৮ এপ্রিল ২০২৫

গত কিছু দিন যাবৎ ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ তত্ত্ব নিয়ে দেশে নানা ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া পরিলক্ষিত হচ্ছে। অবশ্য যাকে নিয়ে এত কথা বাকবিতণ্ডা তার খবর নেই, কিন্তু পাড়া-প্রতিবেশীর ঘুম নেই অবস্থা। আগেও বহুবার লিখেছি সাধারণভাবে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী, এমনকি সমর্থকদের মধ্যেও কোন আত্মসমালোচনা ও অনুশোচনা নেই এবং জুলাই-আগস্ট হত্যাকা-ের কুশীলবদের বিচারের দাবি আওয়ামী লীগের ভেতর থেকেই না ওঠায় দলের জনবিচ্ছিন্নতা আরো বেড়েছে। তবে আওয়ামী লীগের কর্তৃত্ববাদী রাজনীতি পরাজিত হলেও এবং হত্যাযজ্ঞের দায়ে অভিযুক্ত হয়ে তাদের রাজনীতির মাঠে নামার নৈতিক ভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়লেও আওয়ামী রাজনীতি বিলুপ্ত হয়ে যায়নি, বরং সাম্প্রতিক সময়ে মৌলবাদী গোষ্ঠীর উত্থান, সমন্বয়কদের একাংশের উসকানিতে প্রতিহিংসামূলক নানা কাণ্ড এবং সমাজে ও রাজনীতিতে ক্রোধ আর অস্থিরতার নেতিবাচক সুবিধা পতিত শক্তিকে বিনাশ্রমে কিছুটা শক্তি সঞ্চয়ের সুযোগ সৃষ্টি করে দিচ্ছে। আওয়ামী লীগের প্রতি সহানুভূতিশীল ‘প্রগতিবাদীদের’ একটা অংশ মুখ ফুটে বলতে না পারলেও মৌলবাদীদের উত্থানকে যুক্তি হিসেবে তুলে ধরে ইনিয়ে-বিনিয়ে আফসোসের সুরে বলার চেষ্টা করেন ‘এর চেয়ে আগেই তো ভালো ছিল’!

অথচ এক দশকেরও অধিককাল যাবত বিনা ভোটে বা রাতের ভোটে এবং নানা কৌশলে বিরোধী দলকে নির্বাচনের বাইরে রেখে এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় এক কলঙ্কিত অধ্যায়ের সাক্ষর রেখে আওয়ামী লীগ এবং দলের নেত্রী যা করেছেন তা অন্ধকারের শক্তির উত্থান ঘটানোর জন্য যথেষ্ট ছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যে দখলদারিত্ব ছাত্রলীগ কায়েম করেছিল এবং জোর করে ছাত্রলীগ করানোর যে সংস্কৃতি তৈরি হয়েছিল ছাত্র বিদ্রোহ যে আরো আগে হয়নি সেটাই বরং বিষ্ময়ের। এসব বিষয় এড়িয়ে এখন শুধু আফসোস আর আক্ষেপমূলক ভাবে মৌলবাদের বিপদের কথা বলে কাজের কাজ কিছু হবে না। পতিত শাসকগোষ্ঠীই জেদ, দম্ভ ও স্বৈরাচারের এক বিপজ্জনক ককটেল বানিয়ে জবরদস্তি মূলকভাবে ক্ষমতা আঁকড়ে রেখে যে কোনো ধরনের একটি অভ্যুত্থানের জন্য উর্বর জমিন সৃষ্টি করে রেখেছিল। তাই ‘শুধু ষড়যন্ত্রতত্ত্ব’ থেকে মোহমুক্তি না হলে আফসোস করা যাবে কিন্তু উগ্র মৌলবাদী উত্থানকে মোকাবিলা করা যাবে না।

প্রধান বিরোধী দলের ওপর তীব্র দমনপীড়ন চালিয়ে নির্বাচনসমূহ করা হয়েছে প্রশাসনিক সহায়তায় তাই সরকারের কার্যত কোন রাজনৈতিক কর্তৃত্ব ছিল না। সিভিল প্রশাসন এবং পুলিশ, র‌্যাবের ওপর নির্ভর করে রাজত্ব চলছিল। ব্যতিক্রম ছাড়া মনে হত জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ডিসি আর সাধারণ সম্পাদক এসপি। তেমনি উপজেলার সভাপতি ইউএনও এবং সাধারণ সম্পাদক ওসি। দলকে টিকিয়ে রাখা ও নির্বাচনে জিতিয়ে আনা তাদের দায়িত্ব। আর দলীয় রাজনৈতিক কাজ বাদ দিয়ে ব্যতিক্রম ছাড়া আওয়ামী লীগ নেতাদের বড় অংশ নিজেদের পরিণত করেছিলেন ‘মানি মেকিং মেশিন’ হিসেবে। এভাবেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্ব প্রদানকারী দলটি নিজেদের জনবিচ্ছিন্ন করে ফেলে এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকেও হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে দমন করতে গিয়ে দ্রুত নিজেদের পতন ডেকে আনে।

সর্বশেষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংঘটিত আন্দোলনে বিএনপি সারা দেশে সুসংগঠিত হয়। আন্দোলনকে এমন পর্যায়ে তারা নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছিল যে, সরকার শেষ পর্যন্ত নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে সক্ষম হলেও দেশে-বিদেশে নির্বাচনটি তামাশা হিসেবেই বিবেচিত হয়েছে। ছাত্র গণ-অভ্যুত্থানের বিজয়ের পরে বিএনপি নেতা কর্মীদের একাংশ দখলদারিত্ব, চাঁদাবাজি, মামলা বাণিজ্যসহ নেতিবাচক কার্যক্রমে জড়িত হয়ে পড়ায় তাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ হলেও জনসমর্থনের বিচারে বিএনপিই এখন দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল। তারপরেও কোথায় যেন একটা ভাটার টান! আওয়ামী রাজনীতিতে পরিবারতন্ত্রের পতনের প্রভাব বিএনপির ওপরও পড়েছে। এস্টাবলিশমেন্টের সঙ্গে এক/এগারোর সময় সৃষ্ট ক্ষত এখনও পুরোপুরি শুকায়নি বলেই মনে হয়।

বাংলাদেশের বাম ঘরানার রাজনৈতিক দলসমূহ দলীয় ভাঙনে বিপর্যস্ত এবং একই সঙ্গে বহুধারায় বিভক্ত। একটি অংশ তো বাম জোট গড়ে তোলার শুরুতেই জোট থেকে বেরিয়ে যেয়ে বামপন্থী আন্দোলনকে ক্ষতিগ্রস্ত করে প্রায় দুই দশক যাবত আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটে আছেন। অপর একটি অংশ বিপরীত প্রতিক্রিয়া হিসেবে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটে সরাসরি শরিক না হলেও তাদের সঙ্গে সমান্তরালভাবে চলছেন এবং ইতোমধ্যে তাদের নেতাদের জন্য পার্লামেন্টের কয়েকটি সিটে বিএনপির সমর্থনের নিশ্চয়তা পাওয়ায় তাদের রাজনীতি সে অনুযায়ী আবর্তিত হচ্ছে। বামপন্থীদের প্রধান দল হিসেবে পরিচিত সিপিবি নেতৃত্বাধীন জোট নীতিনিষ্ঠ অবস্থান নিয়ে চলার চেষ্টা করলেও এখন পর্যন্ত রাজনীতির মাঠে বাম গণতান্ত্রিক বিকল্প গড়ে তোলার মতো শক্তি সমাবেশ এবং জনআস্থা গড়ে তুলতে পারছে না। কিছু ক্ষেত্রে সীমিত পরিসরে শ্রেণী আন্দোলন গড়ে তোলার প্রচেষ্টা থাকলেও পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ও এক নতুন বাস্তবতায় দলের পক্ষ থেকে সাধারণ মানুষের বোধগম্য ভাষায় যুক্তিনির্ভর আকর্ষণীয় বক্তব্য ও যুৎসই কর্মসূচি অনুপস্থিত। বিশেষত ছাত্র তরুণ এবং মধ্যবিত্তের মাঝে এক উদার ও মানবিক সমাজ বিনির্মানের যে নতুন ধরনের আকাক্সক্ষা সৃষ্টি হয়েছে, ব্যক্তি ও পরিবারকেন্দ্রিক রাজনীতির বিপরীতে দলের অভ্যন্তরেও নিজস্ব মত প্রকাশের পূর্ণ স্বাধীনতার পরিবেশ সৃষ্টির উপায় উদ্ভাবনের যে রাজনৈতিক সংস্কৃতি তরুণরা দেখতে চায়, তাকে ধারণ করে অগ্রসর হওয়ার মতো গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক, প্রগতিমুখীন রাজনৈতিক সামাজিক শক্তিসমূহ এবং আস্থাভাজন ব্যক্তিবর্গকে এক প্লাটফর্মে একত্রিত করার জটিল ও কঠিন কাজটি খুব একটা অগ্রসর হচ্ছে বলে মনে হয় না।

অনেকটা এ ধরনেরই এক রাজনৈতিক বাস্তবতায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যখন তুঙ্গে সেই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের টাইম টেলিভিশন চ্যানেলকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান মোজেনা বলেন, ‘বাংলাদেশে নতুন রাজনৈতিক দলের উত্থান ঘটতে পারে’।

সাক্ষাৎকারের আর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে, কোটা আন্দোলনকে ঘিরে সহিংসতা প্রসঙ্গে মোজেনা বলেন, ‘সম্ভবত নিষেধাজ্ঞাও সহায়ক হতে পারে’। সেই নিষেধাজ্ঞার হুমকিই কি ছিল বিদেশে শান্তিরক্ষী পাঠানো স্থগিত করা প্রসঙ্গে! ওই সময়েই ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভারতীয় পত্রিকা ‘দ্য হিন্দুকে’ দেয়া এক সাক্ষাৎকারে অবাধ ও সুষ্ঠু নতুন নির্বাচন দাবি করেন।

এসব বক্তব্য বিশ্লেষণ করে, পশ্চিমা দুনিয়ার কাছে গ্রহণযোগ্য ড. মুহাম্মদ ইউনূস আগে থেকে নয় বরং বিদেশে হাসপাতালের অপারেশন টেবিলে থাকা অবস্থায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বা ওই সময়ের রাজনৈতিক ঘটনা প্রবাহের সঙ্গে যুক্ত হন, এটা আর বিশ্বাসযোগ্য হচ্ছে না। নতুন দলের উত্থান সম্পর্কে ড্যান মোজেনার উক্তি, আবার তার কিছুদিন পরেই ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দেয়া সাক্ষাৎকারেও ছাত্রদের নতুন দল গঠন সম্পর্কে ইঙ্গিত, সব মিলিয়ে নতুন দল পশ্চিমা-সমর্থিত ভিন্ন একটি রাজনৈতিক শক্তির উত্থান প্রয়াস কিনা সেই ধন্দ্বে পড়ে যেতে হচ্ছে। নতুন দল সৃষ্টির প্রথম ঘোষণা কোনো বাংলাদেশির পক্ষ থেকে নয় একজন ভিনদেশি রাষ্ট্রদূতের পক্ষ থেকে দেয়া নতুন দলের জন্য অমর্যাদাকর বৈকি। এতকাল ভারতবর্ষের একচেটিয়া বাহাদুরির জায়গায় সরাসরি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ছড়ি ঘোরানো, আবার চীন-পাকিস্তানও বসে নেই, মায়ানমারকে কেন্দ্র করে আরেক পরিস্থিতি এক জটিল ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতির মুখোমুখি আমরা। এ পরিস্থিতিতে ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ তত্ত্ব হাজির হয়েছে।

পরিশোধিত আওয়ামী লীগের বিষয়ে সব থেকে কড়া প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন নতুন দল নাগরিক পার্টি আর জামায়াতের নতুন সংস্করণ ‘এবিসিডি’ ওয়ালারা। নাগরিক পার্টির বিরোধিতার প্রধান কারণ ভোটের রাজনীতি। তাই নতুন রাজনৈতিক দল গঠনে সারা দেশের সব সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার অপসারিত কাউন্সিলরদের ‘সর্বোচ্চ সহযোগিতা’ চেয়েছিল জাতীয় নাগরিক কমিটি। এই অপসারিত কাউন্সিলররা কারা? ৫ আগস্টের আগে সারা বাংলাদেশে সব পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনগুলোতে কারা নির্বাচিত মেয়র কাউন্সিলর ছিলেন? তা সবার জানা থাকলেও তাদেরকেই জাতীয় নাগরিক পার্টির ওয়াশিং মেশিন দিয়ে পরিশুদ্ধ বা রিফাইন্ড করে ভোটের মাঠের দুর্বলতাকে তারা দূর করতে চান। নতুন এক পরিস্থিতিতে নতুন কোনো রাজনৈতিক শক্তির উন্মেষ হতেই পারে। কিন্তু রাজনৈতিক দল গঠনের শুরুতেই নিজেদের শক্তির ওপর ভরসা না করে বিভিন্ন দল ও গোষ্ঠী থেকে বিশেষত পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনের মেয়র কাউন্সিলরদের ভাগিয়ে ওয়াশিং মেশিন দিয়ে পরিশুদ্ধ করে আনার অনৈতিক পরিকল্পনা কোনো ভালো ইঙ্গিত বহন করছে না।

দল গঠনের সুবিধা নিতে নাগরিক পার্টি প্রথমে স্থানীয় সরকার নির্বাচন চায়। যেহেতু তারা রাষ্ট্রক্ষমতার অংশীদার এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ও তাদের কব্জায় তাই এ সব পরিকল্পনা ও কাজে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহারও হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের তত্বাবধানে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও কাউন্সিলরদেরও নাগরিক পার্টির ওয়াশিং মেশিনে ঢুকানোর প্রচেষ্টা জোরেশোরে চলছে।

এ পরিস্থিতিতে পরিশুদ্ধ আওয়ামী লীগ গঠনের জন্য পৃথক ওয়াশিং মেশিন কাজ শুরু করলে তরুণদের রাজনৈতিক দলে ভাটার টান সৃষ্টি হতে পারে। অবশ্য আওয়ামী লীগ তো বন্দী! আগে বন্দী ছিল শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের কাছে। তবু তো দেশের লোকের কাছে বন্দী ছিল। এখন তো বিদেশির হাতে বন্দী। বিদেশিদের হাতে বন্দী না থেকে বাংলাদেশের জনগণের কাছে আত্মসমর্পণ করা মর্যাদার। পরিশুদ্ধ হতে চাইলে বাংলাদেশি ওয়াশিং মেশিনেই পরিশুদ্ধ হতে হবে। রাজনীতির কারবারিরা গভীর আগ্রহ ভরে লক্ষ্য করছেন কোন ওয়াশিং মেশিনের কার্যকারিতা শেষ পর্যন্ত রাজনীতির ময়দানে দৃশ্যমান হবে।

[লেখক : সাবেক ছাত্র নেতা]

back to top