alt

উপ-সম্পাদকীয়

রম্যগদ্য : ‘জনগণের ভালোবাসা কি আমার ব্যাংক-ব্যালেন্স বাড়াইবো?’

জাঁ-নেসার ওসমান

: শনিবার, ৩১ মে ২০২৫

‘ওরেপ্প বাবারে, এ্যামনেতেই ব্যেবাগতে সকাল সন্ধ্যা, দিনে রাইতে খাইতাছে, আপনের আবার রাইত পোহান লাগে নাকি? খাইতে চাইলেই খাইবেন... দিয়া খাইবেন। রাইতের জন্য ওয়েট করার দরকার কী?’

‘না বিষয়টা তুই অতো হালকাভাবে ভাবলে তো হবে না। তুই নিজে দেখছিস, গত চুয়ান্ন বছরে এ্যাতো রক্ত এ্যতো প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা কতগুলো অর্থলোভীর হাতে পড়ে জনগণতন্ত্রের কেমন ল্যাজে গোবরে অবস্থা।’

‘আরে রাখেন মিয়া আপনের... গণতন্ত্র, গাধার সংখ্যা বেশি হোইলে হ্যেরাই সংখ্যাগরিষ্ট ব্যাস। গণতন্ত্রও গাধার গণতন্ত্র!’

‘কিন্তু একাত্তরে তোরা শোষক বর্বর স্বৈরাচার পাকিস্তানিদের শাসন থেকে বাঁচার জন্য লক্ষ লক্ষ প্রাণ উৎসর্গ করে স্বাধীনতা লাভ করলি অথচ বাঙালি যখন নিজে নিজ ভাগ্য গড়ার দায়িত্ব পেলো, ব্যাস নিজেই আবার বাঙালি স্বৈরশাসকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হলো।’

‘আরে ভাই দেশ স্বাধীনের পরপরই আপনেরা মিয়া ননবেঙ্গলিগো ঘর-বাড়ি, টাকা-পয়সা, বৌ-ঝি, খাওয়া শুরু করলেন, তো গণতন্ত্র গঠনের টাইম পাইলেন কোই!’

‘সাতচল্লিশের পাকিস্তান হওয়ার পরও তোরা, মুসলিম লীগাররা পাকিস্তানের সব হিন্দুধর্মালম্বীদের ঘর-বাড়ি, টাকা-পয়সা, বৌ-ঝি, খাওয়া শুরু করলি, ‘রাধিকা ভবন’ হয়ে গেলো ‘নুর মহল’! এটা ইতিহাসের অমোঘ নিয়ম এরতো কোনো ব্যত্যয় নেই।’

‘মানে কী? এ্যাক ব্যাডা যাইবো আর এ্যক ব্যাডা আইবো আর ইনক্লাবের পাবলিকে খালি, ঘর-বাড়ি, টাকা-পয়সা, বৌ-ঝি, খাওয়া শুরু করবো! এর লাই¹ানি আপনেরা সংগ্রাম করেন!?’ ‘সংগ্রামতো মানুষ ঘর-বাড়ী, টাকা-পয়সা, বৌ-ঝি, খাওয়ার জন্য করেনা, সংগ্রাম করে তার ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য। যেমন দ্যাখ ১৭৮০ সালে ফরাসি বিপ্লবে, বাস্তিল দূর্গের পতনের ফলে ওদের সাধারণের ভাগ্যের পরিবর্তনের জন্য শাষক লুইয়ের গিলোটিনে শিরোñেদ হলো। সরকার পরিবর্তন হলো কিন্তু আবার নব্য স্বৈরাচারের জন্ম হলো। জ্যাকোবিন ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য প্রায় ২০,০০০ জনসাধারণকে হত্যা করলো কিন্তু শেষ রক্ষা কি হলো?’

‘সাধারণ মানুষ মাইরা, মানুষরে শাসন করবেন হ্যেইডা বেশি দিন টিকবো না।’ ‘জ্বী, শেষে জেনারেল, নেপোলিয়ান বোনাপার্ট দেশটাকে বর্তমান জনগণতন্ত্রের জন্য বাসযোগ্য

করে তুললেন।’

‘ধূর ভাই ফ্রান্স ১৭৮০, দুই-তিন শ বছর আগের সংগ্রাম এ্যাখন অচলরে ভাই অচল, যে অহন জেন-জী, অহন আর সেই জেনারেল নাই গরীব দুঃখী লোকের কতা চিন্তা করবো, আমাগো ওয়ান ইলেভেন দেখলেন না, আর্মি মাইনাস টু করতে যায়া নিজেরাই দুই বছরের মাথায় মাইনাস!! ক্যা, ওই ট্যাকার লোভ। খালি খাইবার চায়। তাই কোই অহন গাদ্দাফীর মতো সেই পুরান জেনারেল নাই যারা গরীব-দুঃখী লোকের কতা চিন্তা করবো।’

‘তাহলে ভাই ১৯১৭ সালে অক্টোবর রেভুল্যেশনে তোমার রাশিয়াতে ভøাডিমির ইলিচ লেলিন তো ঠিকই জনগণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। জারের বিরুদ্ধে লড়াই করে জনগণের অধিকার ছিনিয়ে আনলেন।’

‘ধূর হালায় আপনে মিয়া আস্ত বুড়বক, একশ বছর আগের নেতারা আছিলো ত্যাগী নির্লোভ, জনদরদী, আর এ্যাহোনকার নেতারা প্রায় সব দুই নাম্বার, হোমুন্দির পুতরা ট্যাকা দেখলেই কয় গণতন্ত্রের মুখে আমি পুত কোইরা দিমু আমি পুত কোইরা দিমু।’

‘তা তোর এই সংগ্রামে, তোর. এই ইনক্লাবে কেবলই সরকার বদলাবে জনসাধারণের অধিকার কোন দিনও প্রতিষ্ঠিত হবে না?!’

‘ক্যেমনে হোইবো, এই যে এ্যাতো ফাল পাড়লেন ৫-ই আগস্ট, ৫-ই আগস্ট, তো কি হোইলো ভাবছিলাম বাংলার তরুণরা এই বিপ্লব সাধন করেছেন, ওদের বয়েসে দুই নাম্বারী প্রবেশের সুযোগ নাই, এবার দেশটারে ওরা ভøাডিমির ইলিচ লেলিনের মতো, নেপোলিয়ান বোনপার্টএ’র মতো কোরে সুন্দরভাবে সুন্দরের দিকে আগায়া নিবে। কিন্তু যেইনা দেখছে ট্যাকা, ব্যাস দেশটারে গণতন্ত্রের দিকে না আগায়া সিম্পেলি দেশটারে মানে প্রশাসনরে হাগায়া ছাড়ছে। আইজ সচিবালয় কর্মবিরতি, কাইল এনবিআরের কলম ধর্মঘট, পরশু প্রাইমারি শিক্ষকদের অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য হরতাল।’

‘যে কোনো সরকার পাল্টালে শুরুতে তো একটু অগোছালো হোতেই পারে।’ ‘শুরুতে? কন কি মিয়াভাই, নয় মাসে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করলো আর আপনের নয়মাসে, ৫-ই আগস্টের সংগ্রামী জনতা, জুলাই আহতদের সাথে চক্ষুবিজ্ঞানের কর্মচারীর মারামারি! বন্যার ট্যাকা ব্যাংকে, আবুলের এপিএস, বিদেশ যাওয়া নিষিদ্ধ, ব্যেডির ব্যাংক এ্যকাউন্ট ফ্রীজ। মব জাস্টিস পাবলিক ধইরা হিডা। হেলিকপ্টারে সম্বনয়কের ঘুরাফিরা ব্যাস আবার খাই খাই শুরু, রাত ফুরালেই দেরে খাই, দেরে খাই!’

‘তো সাধারণ জনগনতো তোদের প্রতি কত আশা কোরে বন্যার সময় বাচ্চা বাচ্চা শিশুরা তাদের মাটির ব্যাংক ভেঙে সামান্য গচ্ছিত সম্পদ দিচ্ছিলো এই বিশ্বাসের এই ভালোবাসার কোনো মূল্যই নেই তোর কাছে?’

‘কিয়ের ভালোবাসা মিয়া, রাইত কোইরা গুলশানে ট্যাকা লয়া খাড়াইলেই ভালোবাসা পাওন যায়, আপনের... জনগণের ভালোবাসা কি আমার ব্যাংক-ব্যালেন্স বাড়াইবো? ট্যাকা চাই ভাই ট্যাকা চাই।’

‘চোখের সামনে দেখলি বস্তা বস্তা টাকা খাটের নিচে। তিন বেডরুম ভাড়া কোরে থরে থরে টাকা সাজানো, কিন্তু কি লাভ হোলো, এ্যাখন কোমোরে দড়ি হাতে হাতকড়া, পথের খেঁকি কুকুরও তোর মোতো কুলাঙ্গার দেখে ঘৃণায় মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। তোরাও আবার সেই টাকার পেছনেই ছুটলি!’

‘ভাই না ভালা, ওই সব নীতিকথা ভুইল্লা বাস্তবটা মাইন্না নেন, আর দৃঢ়কণ্ঠে কনÑ রাত ফুরালেই দেরে খাই, দেরে খাই!’

[লেখক : চলচ্চিত্রকার]

ছবি

বোধের স্ফূরণ, না ‘মেটিকুলাস ডিজাইন’?

এসএসসিতে গণিত বিষয়ে ফল বিপর্যয় : কারণ ও উত্তরণের উপায়

দক্ষ মানবসম্পদ ও সমৃদ্ধ গ্রন্থাগার

আফ্রিকায় হঠাৎ কেন যুক্তরাষ্ট্রের ঝোঁক?

ঢাকা মহানগর ও বুড়িগঙ্গা

জামাই মেলা : উৎসব, ঐতিহ্য ও কৃষ্টির রঙিন চিত্রপট

হারিয়ে যাওয়া ক্লাস, কঠোর মূল্যায়ন আর প্রশ্নের জটিলতায় নুয়ে পড়া এক প্রজন্ম

বৈষম্য দূর করে নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলুন

চিকিৎসা যেন বাণিজ্যের হাতিয়ারে পরিণত না হয়

পথশিশু ও বাংলাদেশে সামাজিক চুক্তির ব্যর্থতা

মেগা প্রকল্প : প্রশ্ন হওয়া উচিত স্বচ্ছতা নিয়ে

আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া জরুরি

স্মার্ট দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা : উপগ্রহ চিত্র ও ওয়েবসাইটের অপরিহার্যতা

ক্ষমতা ও জনপ্রশাসন : আমলাতন্ত্রের ছায়াতলে আমজনতা

জনসংখ্যা : সম্পদ না সংকট?

ব্রিকসে নতুন ভূ-রাজনৈতিক ব্যবস্থার উত্থান

রম্যগদ্য : ‘ল্যাংড়া-লুলা, আতুড়-পাতুড়’

আষাঢ়ী পূর্ণিমা : আত্মশুদ্ধির সাধনায় বুদ্ধের অনন্ত আলো

বদলে যাওয়া মাটিতে সাহসী বীজ : জলবায়ুর বিপরীতে বাংলাদেশের কৃষির অভিযোজনগাথা

ছবি

জুলাই অভ্যুত্থান-গাথা : ‘শিকলে নাহি দিব ধরা’

প্রাচীন যৌধেয় জাতি ও তাদের সাম্যবাদী শাসন

গণঅভ্যুত্থান-উত্তর ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র বিনির্মাণের স্বপ্ন

টেকসই উন্নয়নের স্বপ্নপূরণে উপগ্রহ চিত্রই চাবিকাঠি

রাবার শিল্প : সংকট, করণীয় ও উত্তরণের দিশা

রম্যগদ্য : দুধ, দই, কলা...

ছবি

কোপার্নিকাস : আলো হয়ে জন্ম নেওয়া বৈপ্লবিক মতবাদের প্রবর্তক

জলবায়ু সংকটে মানবসভ্যতা

টেকসই অর্থনীতির জন্য চাই টেকসই ব্যাংকিং

ডিজিটাল দাসত্ব : মনোযোগ অর্থনীতি ও জ্ঞান পুঁজিবাদে তরুণ প্রজন্মের মননশীলতার অবক্ষয়

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার : আস্থা ভঙ্গ ও জবাবদিহিতার সংকট

আসামি এখন নির্বাচন কমিশন

কোথায় হারাল একান্নবর্তী পরিবার?

এই শান্তি কি মহাঝড়ের পূর্বলক্ষণ?

মেগাসিটি : দারিদ্র্য যখন ‘অবাঞ্ছিত বর্জ্য’

ফলের রাজ্য পার্বত্য চট্টগ্রাম

ছবি

তৃতীয় শক্তির জন্য জায়গা খালি : বামপন্থীরা কি ঘুরে দাঁড়াতে পারে না

tab

উপ-সম্পাদকীয়

রম্যগদ্য : ‘জনগণের ভালোবাসা কি আমার ব্যাংক-ব্যালেন্স বাড়াইবো?’

জাঁ-নেসার ওসমান

শনিবার, ৩১ মে ২০২৫

‘ওরেপ্প বাবারে, এ্যামনেতেই ব্যেবাগতে সকাল সন্ধ্যা, দিনে রাইতে খাইতাছে, আপনের আবার রাইত পোহান লাগে নাকি? খাইতে চাইলেই খাইবেন... দিয়া খাইবেন। রাইতের জন্য ওয়েট করার দরকার কী?’

‘না বিষয়টা তুই অতো হালকাভাবে ভাবলে তো হবে না। তুই নিজে দেখছিস, গত চুয়ান্ন বছরে এ্যাতো রক্ত এ্যতো প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা কতগুলো অর্থলোভীর হাতে পড়ে জনগণতন্ত্রের কেমন ল্যাজে গোবরে অবস্থা।’

‘আরে রাখেন মিয়া আপনের... গণতন্ত্র, গাধার সংখ্যা বেশি হোইলে হ্যেরাই সংখ্যাগরিষ্ট ব্যাস। গণতন্ত্রও গাধার গণতন্ত্র!’

‘কিন্তু একাত্তরে তোরা শোষক বর্বর স্বৈরাচার পাকিস্তানিদের শাসন থেকে বাঁচার জন্য লক্ষ লক্ষ প্রাণ উৎসর্গ করে স্বাধীনতা লাভ করলি অথচ বাঙালি যখন নিজে নিজ ভাগ্য গড়ার দায়িত্ব পেলো, ব্যাস নিজেই আবার বাঙালি স্বৈরশাসকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হলো।’

‘আরে ভাই দেশ স্বাধীনের পরপরই আপনেরা মিয়া ননবেঙ্গলিগো ঘর-বাড়ি, টাকা-পয়সা, বৌ-ঝি, খাওয়া শুরু করলেন, তো গণতন্ত্র গঠনের টাইম পাইলেন কোই!’

‘সাতচল্লিশের পাকিস্তান হওয়ার পরও তোরা, মুসলিম লীগাররা পাকিস্তানের সব হিন্দুধর্মালম্বীদের ঘর-বাড়ি, টাকা-পয়সা, বৌ-ঝি, খাওয়া শুরু করলি, ‘রাধিকা ভবন’ হয়ে গেলো ‘নুর মহল’! এটা ইতিহাসের অমোঘ নিয়ম এরতো কোনো ব্যত্যয় নেই।’

‘মানে কী? এ্যাক ব্যাডা যাইবো আর এ্যক ব্যাডা আইবো আর ইনক্লাবের পাবলিকে খালি, ঘর-বাড়ি, টাকা-পয়সা, বৌ-ঝি, খাওয়া শুরু করবো! এর লাই¹ানি আপনেরা সংগ্রাম করেন!?’ ‘সংগ্রামতো মানুষ ঘর-বাড়ী, টাকা-পয়সা, বৌ-ঝি, খাওয়ার জন্য করেনা, সংগ্রাম করে তার ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য। যেমন দ্যাখ ১৭৮০ সালে ফরাসি বিপ্লবে, বাস্তিল দূর্গের পতনের ফলে ওদের সাধারণের ভাগ্যের পরিবর্তনের জন্য শাষক লুইয়ের গিলোটিনে শিরোñেদ হলো। সরকার পরিবর্তন হলো কিন্তু আবার নব্য স্বৈরাচারের জন্ম হলো। জ্যাকোবিন ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য প্রায় ২০,০০০ জনসাধারণকে হত্যা করলো কিন্তু শেষ রক্ষা কি হলো?’

‘সাধারণ মানুষ মাইরা, মানুষরে শাসন করবেন হ্যেইডা বেশি দিন টিকবো না।’ ‘জ্বী, শেষে জেনারেল, নেপোলিয়ান বোনাপার্ট দেশটাকে বর্তমান জনগণতন্ত্রের জন্য বাসযোগ্য

করে তুললেন।’

‘ধূর ভাই ফ্রান্স ১৭৮০, দুই-তিন শ বছর আগের সংগ্রাম এ্যাখন অচলরে ভাই অচল, যে অহন জেন-জী, অহন আর সেই জেনারেল নাই গরীব দুঃখী লোকের কতা চিন্তা করবো, আমাগো ওয়ান ইলেভেন দেখলেন না, আর্মি মাইনাস টু করতে যায়া নিজেরাই দুই বছরের মাথায় মাইনাস!! ক্যা, ওই ট্যাকার লোভ। খালি খাইবার চায়। তাই কোই অহন গাদ্দাফীর মতো সেই পুরান জেনারেল নাই যারা গরীব-দুঃখী লোকের কতা চিন্তা করবো।’

‘তাহলে ভাই ১৯১৭ সালে অক্টোবর রেভুল্যেশনে তোমার রাশিয়াতে ভøাডিমির ইলিচ লেলিন তো ঠিকই জনগণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। জারের বিরুদ্ধে লড়াই করে জনগণের অধিকার ছিনিয়ে আনলেন।’

‘ধূর হালায় আপনে মিয়া আস্ত বুড়বক, একশ বছর আগের নেতারা আছিলো ত্যাগী নির্লোভ, জনদরদী, আর এ্যাহোনকার নেতারা প্রায় সব দুই নাম্বার, হোমুন্দির পুতরা ট্যাকা দেখলেই কয় গণতন্ত্রের মুখে আমি পুত কোইরা দিমু আমি পুত কোইরা দিমু।’

‘তা তোর এই সংগ্রামে, তোর. এই ইনক্লাবে কেবলই সরকার বদলাবে জনসাধারণের অধিকার কোন দিনও প্রতিষ্ঠিত হবে না?!’

‘ক্যেমনে হোইবো, এই যে এ্যাতো ফাল পাড়লেন ৫-ই আগস্ট, ৫-ই আগস্ট, তো কি হোইলো ভাবছিলাম বাংলার তরুণরা এই বিপ্লব সাধন করেছেন, ওদের বয়েসে দুই নাম্বারী প্রবেশের সুযোগ নাই, এবার দেশটারে ওরা ভøাডিমির ইলিচ লেলিনের মতো, নেপোলিয়ান বোনপার্টএ’র মতো কোরে সুন্দরভাবে সুন্দরের দিকে আগায়া নিবে। কিন্তু যেইনা দেখছে ট্যাকা, ব্যাস দেশটারে গণতন্ত্রের দিকে না আগায়া সিম্পেলি দেশটারে মানে প্রশাসনরে হাগায়া ছাড়ছে। আইজ সচিবালয় কর্মবিরতি, কাইল এনবিআরের কলম ধর্মঘট, পরশু প্রাইমারি শিক্ষকদের অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য হরতাল।’

‘যে কোনো সরকার পাল্টালে শুরুতে তো একটু অগোছালো হোতেই পারে।’ ‘শুরুতে? কন কি মিয়াভাই, নয় মাসে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করলো আর আপনের নয়মাসে, ৫-ই আগস্টের সংগ্রামী জনতা, জুলাই আহতদের সাথে চক্ষুবিজ্ঞানের কর্মচারীর মারামারি! বন্যার ট্যাকা ব্যাংকে, আবুলের এপিএস, বিদেশ যাওয়া নিষিদ্ধ, ব্যেডির ব্যাংক এ্যকাউন্ট ফ্রীজ। মব জাস্টিস পাবলিক ধইরা হিডা। হেলিকপ্টারে সম্বনয়কের ঘুরাফিরা ব্যাস আবার খাই খাই শুরু, রাত ফুরালেই দেরে খাই, দেরে খাই!’

‘তো সাধারণ জনগনতো তোদের প্রতি কত আশা কোরে বন্যার সময় বাচ্চা বাচ্চা শিশুরা তাদের মাটির ব্যাংক ভেঙে সামান্য গচ্ছিত সম্পদ দিচ্ছিলো এই বিশ্বাসের এই ভালোবাসার কোনো মূল্যই নেই তোর কাছে?’

‘কিয়ের ভালোবাসা মিয়া, রাইত কোইরা গুলশানে ট্যাকা লয়া খাড়াইলেই ভালোবাসা পাওন যায়, আপনের... জনগণের ভালোবাসা কি আমার ব্যাংক-ব্যালেন্স বাড়াইবো? ট্যাকা চাই ভাই ট্যাকা চাই।’

‘চোখের সামনে দেখলি বস্তা বস্তা টাকা খাটের নিচে। তিন বেডরুম ভাড়া কোরে থরে থরে টাকা সাজানো, কিন্তু কি লাভ হোলো, এ্যাখন কোমোরে দড়ি হাতে হাতকড়া, পথের খেঁকি কুকুরও তোর মোতো কুলাঙ্গার দেখে ঘৃণায় মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। তোরাও আবার সেই টাকার পেছনেই ছুটলি!’

‘ভাই না ভালা, ওই সব নীতিকথা ভুইল্লা বাস্তবটা মাইন্না নেন, আর দৃঢ়কণ্ঠে কনÑ রাত ফুরালেই দেরে খাই, দেরে খাই!’

[লেখক : চলচ্চিত্রকার]

back to top