alt

মতামত » উপ-সম্পাদকীয়

রম্যগদ্য: রবার্ট ব্রুস ও মাকড়শা

জাঁ-নেসার ওসমান

: বৃহস্পতিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

“কী ভাই চামে চামে সুযোগ বুইঝে কিন্ডার গার্টেন স্কুল খুইলাচ্চেন? রাবার ব্যারাস বেইচ্চা কুটিপতি হওনের ধান্দা ভালোই পাইছেন!”

“মানে কী? তুই এখানে ব্যবসার সুযোগ কোথায় দেখছিস!”

“ক্যা, এই যে, রাবার-বেরাস এইগুলা কচি কচি বাচ্চাগোর বাপের কাছে বেইচ্চা মাল কামাইবেন।”

“তাহলে আমি কি মাকড়শাও বিক্রি করবো?”

“ধুর মিয়া মাকড়শা বেঁচবেন ক্যা, এইগুলাতো আজকাইলকার জেন-জি পোলাপানের গ্রুপের নাম। স্পাইডারম্যান, নিনজা টার্টেল, সান অব টাইগার,ম্যান ইজ মোরাটাল, এইরম আর কি। না না এতে দুষের কিছু নাই আপনে স্পাইডাররে বাংলা মায়ের ভাষায় মাকড়শা কোরছেন। জানেন ভাই আপনের মাকড়শা শব্দ দ্যেইক্ষা চুক্ষে পানি চইল্লা আসলো। নষ্টালজিয়া, ছুট্টবেলার কথা স্মৃতিতে ভাইশা উঠলো...”

“মানে কি এই দেখলি রাবার বেচে মাল কামানো, এখন আবার নষ্টালজিয়া, তাও আবার মাকড়শা শব্দ দেখে...”

“ভাইরে আপনেরে কী কমু, বাতেন চাচীর মেয়ে বাবালীর নানু একদিন আমাগো পোলাপানগো ধাঁধাঁ ধরলো,কন চাইন দেখি, “একমাথা আট হাঁটু/ নাম তার মিয়া টাটু/ আকশে পাতিয়া জাল/ মাছ খায় চিরকাল” জিনিশটা কী?”

“আমরা পোলাপানরা আকাশে জাল, ভাইব্বা তো টব্বশ, তহনতো আর অর্ন্তজাল বা ইন্টারনেটের টাইম না, তয় আমরা আর পারি না।”

“গবেট, এই সামান্য জিনিস তোরা বুঝতে পারলি না, কারণ মাকড়শার আট’পা তাই আট হাঁটু...”

“এ্যাঁ,আন্নে একদম বুদ্ধির ঢেঁকি। কন দেখী “এ্যাতো টুকু কানি/ শুকাইতে না জানি/ এইডা কী? ও কয়া দ্যেই, কানি মাইনে কাপড়ের টুকরা। কন এইডা কী, “এ্যাতো টুকু কানি/ শুকাইতে না জানি?”

“টুকরো ভিজে কাপড় শুকানো যাবে না, তা হয় নাকি? কত্ত ড্রায়ার বেড়িয়েছে মুহুর্তেই সব শুকানো যাবে।”

“এই মিয়া বোঝেন না, কানি মানে জিনিসটারে রূপক অর্থে ব্যবহার করছে, যেমন মাকড়শার মাছ মাইনে পুকা মাকড়। কন জিনিসটা কী?”

“না রে পারলাম না, তুইই বলে দে “এ্যাতো টুকু কানি/ শুকাতে না জানি...” জিনিসটা কী?”

“ খুবই সিম্পেল, এইডা হোইলো জীবলা, জীবলা কুনো দিনও শুকান যায় না।”

“জীহ্বা! তাইতো, মরণ ছাড়া জীহ্বা শুকানে যায় না।”

“হেঃ হেঃ তায়লে যে খুব ফুটানি মাইরা কোইলেন, “গবেট, এই সামান্য জিনিস তোরা বুঝতে পারস নাই, কারণ মাকড়শার আট’পা হেইলাই¹া আট হাঁটু...”

“কিন্তু তুই যা ভাবছিস আমি কোনো কিন্ডার গার্টেন স্কুল খুলছি না, আমি বলছিলাম তোর বিগত স্বৈরাচারী সরকারের মতাদর্শের মানুষরা মাঝে মাঝে ঝটিকা মিছিল বের করছে হয়তো আবার দেশের জনগণ তাদের দেশ পরিচালনার সুযোগ দিবে, এ যেন অনেকটা স্কটল্যান্ডের রাজা রর্বাট ব্রুসের মতো যিনি সাতবার চেষ্টা কোরে তার হারান রাজত্ব ফিরে পেয়েছিলেন।”

“বুঝলাম ছয়-সাতবার আক্রমণ কইরা রাজ্য ফিইরা পাইলো তো এর মইধ্যে মাকড়শা হান্দাইলেন ক্যা?”

“ক্যানো তুই ঘটনাটা শুনিসনি, আশ্চর্য!”

“ওই মিয়া আন্নে কুনো দিন টি’চাইকো ভেচকীর, অর্কেস্ট্রা চুয়ান লেক হুনচেন?”

“না রে পৃথিবীর বিখ্যাত কম্পোজার চাইকোভেস্কির সোয়ান লেক, অর্কেস্ট্রা আমি দেখিনি।”

“মানুষ তো জীবনে কতো কিছু না শুইন্নাই না দেইখ্যাই মইরা যাইবো তো এতে আর্শ্চয হওনের কী আচে।”

“না আমি বলছিলাম কথিত আছে যে, একবার স্কটল্যান্ডের রাজা রর্বাট ব্রুস, যুদ্ধে পরাজিত হয়ে পাহাড়ের এক গুহায় লুকিয়ে ছিলেন, তখন দেখলেন যে এক মাকড়শা উপরে উঠতে যেয়ে পড়ে যাচ্ছে, এমনি করে সাতবারের চেষ্টায় মাকড়শা সফল হলো, সে উপরে উঠে গেলো। তখন স্কটল্যান্ডের রাজা রর্বাট ব্রুসের মনে হলো তাইতো কোন কিছু করতে গেলে লেগে থাকতে হয়, হতাশ হলে চলে না। তারপর তিনি বারবার আক্রমণ করে সাতবারের মাথায় সফল হয়েছিলেন।”

“কথাতো ঠিকই। কুনো কাজে লাই¹া থাকলে সফল আপনে হোইবেনই। দ্যেহেন না, কত্ত পোলা মাইয়ার পিছে ঘুইরা ঘুইরা ঠিকই মাইয়ার মন জয় কইরা হেতীরে বিয়া করের।”

“ঠিক ঠিক তোর কথায় যুক্তি আছে। যেই মেয়ে প্রথম প্রথম ছেলেটাকে জুতো দ্যাখাতো সেই মেয়েই বিয়ের পর ওই ছেলের জুতো মুছে দ্যায়।”

“তো বিগত সরকার তো স্কটল্যান্ডের রাজা রর্বাট ব্রুসের মতুন টিরাই করবো, ১৯৭৫ পঁচাত্তরের ২১ বছর পর হ্যারা যহন আবার দেশ সেবার সুযোগ পাইলো হেইডা হ্যারা ঠিক মতুন কাজে লাগাই নাই। তাই পাবলিকে মইরা হ্যাগো দরজার চৌকাঠ পর্যন্ত খুইল্লা নিছে। কর্মফল!”

“আরে আমিও তো সেই ভয়টাই পাচ্ছিরে, এরা যদি আবার কখনো স্কটল্যান্ডের রাজা রর্বাট ব্রুসের মতো দেশ পরিচালনার সুযোগ পায় তখনও কি আবার বস্তা বস্তা টাকা খাটের নিচে রাখবে নাকি রির্জাভ বিদেশে পাচার করবে!”

‘কথাটা ঠিকই কোইছেন, ঢেঁকি স্বর্গে গিয়াও ধানই ভাঙ্গে...। তয় আমার মনে লয় ইদানিং কুনো হালাই আর পয়সার লোভ কোইরা জনগণের হাতে জান হারাইতে চাইবে না!”

“বলা যায় না রে, মানুষতো ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয় না। না হলে এতো তাড়াতাড়ি তোর জুলাই যোদ্ধার বিদেশের মাটিতে পঁচা ডিমের ব্যবসা শুরু করেছে! বন্যার টাকা আজও ব্যাংকে, কেউ জানেনা আবার কবে বন্যা হবে তারপর ওই টাকা কাজে লাগবে! বড় চিন্তা হয়রে।”

“চিন্তা কোইরা কি করবেন। আমাগো দেশেতো আর কুনো দিন হযরত ওমর-এর (রা.) মতুন দেশ পরিচালক পামু না যিনি নিজে উট থ্যাইক্কা নাইম্মা ক্রীতদাসরে উটের পিঠে উঠাইছে, আর তখন ক্রীতদাসের মুখে হাসি ফুইট্টা উঠছে। আর এই নিয়া কথাশিল্পী শওকত ওসমান উপন্যাস লিখছেন ক্রীতদাসের হাসি।”

“আরে বাংলাদেশে হযরত ওমর-এর (রা.) মতন দেশ পরিচালক হয়তো হবে না, তবে উমুর-বিন-তাচিকের মতো কচি কবি তো পাবো যিনি তার ড্রইংরুমের বরফ দেয়া বাতাস খেতে খেতে দেশের আপামর জনগণের মুক্তির জন্য লড়াই করবেন! কবিতা লিখবেন!”

“দ্যখেন কী হয়। বাংলার জনগণ যে দিন সত্যিকারে জাগবো হেই দিন যুদি মাইনষ্যের ট্যাকার লোভ কমে।”

“কিন্তু মর্নিং শোওস দ্যা ডে...সকাল বেলা এমন কোনো আভাস তো পাচ্ছি না!”

“তয় ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের লাই¹া অপেক্ষা করেন...”

“ওকে তাই সই ওয়েটিং ফর কামিং জেনেরাল ইলেকশান...”

[লেখক: চলচ্চিত্রকার]

ডেঙ্গু সংকট দূরদৃষ্টির ব্যর্থতা

ষাটের দশকে বামপন্থী ভাবনার উত্থান ও বিবর্তন

দেখিতে পাও না তুমি মৃত্যুদূত দাঁড়ায়েছে দ্বারে!

বায়ুর অপর নাম জীবন

ছবি

হাওরের জীবন ও সংস্কৃতি

বিখণ্ডিত আত্মপরিচয়: তরল সহানুভূতিতে নৈতিক মূলধনের সমাজতত্ত্ব

প্রভাষকের ‘প্রভা’ যখন ‘শোক’: শিক্ষা ক্যাডারে পদোন্নতি বঞ্চনা

যুদ্ধ বিরতি গাজাবাসীর জন্য জরুরি ছিল

লবলং খালের মৃত্যু: স্মৃতিতে নদী, বাস্তবে দূষণ

বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বাধীনতা: অর্থনৈতিক স্থিতির পূর্বশর্ত

হায় যম! আর কতক্ষণ, হবে অপেক্ষা করিতে মোরে?

পোশাক শিল্প : অগ্রগতি ও শ্রমিকের অধিকার

গণভোটের রাজনৈতিক গুরুত্ব

বামঘরানার বাটখারা...

বাগদা ফার্ম : স্মারকলিপি, অবরোধ, অনশন, আন্দোলন- কিছুতেই বরফ গলেনি

ব্যাটারি-শকট: নতুন সংকট

মতপ্রকাশ কিংবা দ্বিমত পোষণ: নাগরিক অধিকার ও রাজনৈতিক বাস্তবতা

সরকারি কর্মচারীদের জন্য নতুন ব্যাংক কি আদৌ প্রয়োজন

ট্রাম্প ও শি’র ‘কৌশলগত শান্তি’

আশার সমাজতত্ত্ব: বিভ্রান্তির যুগে ভবিষ্যৎ নির্মাণের বিপ্লবী বিজ্ঞান

পিএইচডি: উচ্চ শিক্ষার মানদণ্ড না প্রতীকী মরীচিকা?

ডিম নয় তবু অশ্বডিম্ব!

ছবি

অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও নির্বাচন

পিএইচডি: উচ্চ শিক্ষার মানদণ্ড না প্রতীকী মরীচিকা?

প্রকৃতার্থে ফকির কারা

এনসিপি চায় অবিনাশী জুলাই সনদ

পিএইচডি: উচ্চ শিক্ষার মানদণ্ড না প্রতীকী মরীচিকা?

আলুর প্রাচুর্যে কৃষকের সংকট

তাহলে কী ‘কোটা’ই জয়যুক্ত হবে!

ব্যাংকিং খাতে বিষফোঁড়া: বাংলাদেশের অর্থনীতির ধমনী বিষাক্ত হয়ে উঠছে

ছবি

ঢাকার নদী ও খালের দখল-দূষণ: পুনরুদ্ধার কোন পথে

জমি কী মূলে রেকর্ড হয়েছে, দলিল মূলে না উত্তরাধিকার মূলে?

কার্বন-নিরপেক্ষ শিশুর অনুপ্রেরণায় দেশ

এবার আমরা সভ্য হলাম!

সোনার প্রাসাদের দেয়ালে ঘামের দাগ

নিরাপদ সড়ক চাই কিন্তু কার্যকর উদ্যোগ কোথায়?

tab

মতামত » উপ-সম্পাদকীয়

রম্যগদ্য: রবার্ট ব্রুস ও মাকড়শা

জাঁ-নেসার ওসমান

বৃহস্পতিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

“কী ভাই চামে চামে সুযোগ বুইঝে কিন্ডার গার্টেন স্কুল খুইলাচ্চেন? রাবার ব্যারাস বেইচ্চা কুটিপতি হওনের ধান্দা ভালোই পাইছেন!”

“মানে কী? তুই এখানে ব্যবসার সুযোগ কোথায় দেখছিস!”

“ক্যা, এই যে, রাবার-বেরাস এইগুলা কচি কচি বাচ্চাগোর বাপের কাছে বেইচ্চা মাল কামাইবেন।”

“তাহলে আমি কি মাকড়শাও বিক্রি করবো?”

“ধুর মিয়া মাকড়শা বেঁচবেন ক্যা, এইগুলাতো আজকাইলকার জেন-জি পোলাপানের গ্রুপের নাম। স্পাইডারম্যান, নিনজা টার্টেল, সান অব টাইগার,ম্যান ইজ মোরাটাল, এইরম আর কি। না না এতে দুষের কিছু নাই আপনে স্পাইডাররে বাংলা মায়ের ভাষায় মাকড়শা কোরছেন। জানেন ভাই আপনের মাকড়শা শব্দ দ্যেইক্ষা চুক্ষে পানি চইল্লা আসলো। নষ্টালজিয়া, ছুট্টবেলার কথা স্মৃতিতে ভাইশা উঠলো...”

“মানে কি এই দেখলি রাবার বেচে মাল কামানো, এখন আবার নষ্টালজিয়া, তাও আবার মাকড়শা শব্দ দেখে...”

“ভাইরে আপনেরে কী কমু, বাতেন চাচীর মেয়ে বাবালীর নানু একদিন আমাগো পোলাপানগো ধাঁধাঁ ধরলো,কন চাইন দেখি, “একমাথা আট হাঁটু/ নাম তার মিয়া টাটু/ আকশে পাতিয়া জাল/ মাছ খায় চিরকাল” জিনিশটা কী?”

“আমরা পোলাপানরা আকাশে জাল, ভাইব্বা তো টব্বশ, তহনতো আর অর্ন্তজাল বা ইন্টারনেটের টাইম না, তয় আমরা আর পারি না।”

“গবেট, এই সামান্য জিনিস তোরা বুঝতে পারলি না, কারণ মাকড়শার আট’পা তাই আট হাঁটু...”

“এ্যাঁ,আন্নে একদম বুদ্ধির ঢেঁকি। কন দেখী “এ্যাতো টুকু কানি/ শুকাইতে না জানি/ এইডা কী? ও কয়া দ্যেই, কানি মাইনে কাপড়ের টুকরা। কন এইডা কী, “এ্যাতো টুকু কানি/ শুকাইতে না জানি?”

“টুকরো ভিজে কাপড় শুকানো যাবে না, তা হয় নাকি? কত্ত ড্রায়ার বেড়িয়েছে মুহুর্তেই সব শুকানো যাবে।”

“এই মিয়া বোঝেন না, কানি মানে জিনিসটারে রূপক অর্থে ব্যবহার করছে, যেমন মাকড়শার মাছ মাইনে পুকা মাকড়। কন জিনিসটা কী?”

“না রে পারলাম না, তুইই বলে দে “এ্যাতো টুকু কানি/ শুকাতে না জানি...” জিনিসটা কী?”

“ খুবই সিম্পেল, এইডা হোইলো জীবলা, জীবলা কুনো দিনও শুকান যায় না।”

“জীহ্বা! তাইতো, মরণ ছাড়া জীহ্বা শুকানে যায় না।”

“হেঃ হেঃ তায়লে যে খুব ফুটানি মাইরা কোইলেন, “গবেট, এই সামান্য জিনিস তোরা বুঝতে পারস নাই, কারণ মাকড়শার আট’পা হেইলাই¹া আট হাঁটু...”

“কিন্তু তুই যা ভাবছিস আমি কোনো কিন্ডার গার্টেন স্কুল খুলছি না, আমি বলছিলাম তোর বিগত স্বৈরাচারী সরকারের মতাদর্শের মানুষরা মাঝে মাঝে ঝটিকা মিছিল বের করছে হয়তো আবার দেশের জনগণ তাদের দেশ পরিচালনার সুযোগ দিবে, এ যেন অনেকটা স্কটল্যান্ডের রাজা রর্বাট ব্রুসের মতো যিনি সাতবার চেষ্টা কোরে তার হারান রাজত্ব ফিরে পেয়েছিলেন।”

“বুঝলাম ছয়-সাতবার আক্রমণ কইরা রাজ্য ফিইরা পাইলো তো এর মইধ্যে মাকড়শা হান্দাইলেন ক্যা?”

“ক্যানো তুই ঘটনাটা শুনিসনি, আশ্চর্য!”

“ওই মিয়া আন্নে কুনো দিন টি’চাইকো ভেচকীর, অর্কেস্ট্রা চুয়ান লেক হুনচেন?”

“না রে পৃথিবীর বিখ্যাত কম্পোজার চাইকোভেস্কির সোয়ান লেক, অর্কেস্ট্রা আমি দেখিনি।”

“মানুষ তো জীবনে কতো কিছু না শুইন্নাই না দেইখ্যাই মইরা যাইবো তো এতে আর্শ্চয হওনের কী আচে।”

“না আমি বলছিলাম কথিত আছে যে, একবার স্কটল্যান্ডের রাজা রর্বাট ব্রুস, যুদ্ধে পরাজিত হয়ে পাহাড়ের এক গুহায় লুকিয়ে ছিলেন, তখন দেখলেন যে এক মাকড়শা উপরে উঠতে যেয়ে পড়ে যাচ্ছে, এমনি করে সাতবারের চেষ্টায় মাকড়শা সফল হলো, সে উপরে উঠে গেলো। তখন স্কটল্যান্ডের রাজা রর্বাট ব্রুসের মনে হলো তাইতো কোন কিছু করতে গেলে লেগে থাকতে হয়, হতাশ হলে চলে না। তারপর তিনি বারবার আক্রমণ করে সাতবারের মাথায় সফল হয়েছিলেন।”

“কথাতো ঠিকই। কুনো কাজে লাই¹া থাকলে সফল আপনে হোইবেনই। দ্যেহেন না, কত্ত পোলা মাইয়ার পিছে ঘুইরা ঘুইরা ঠিকই মাইয়ার মন জয় কইরা হেতীরে বিয়া করের।”

“ঠিক ঠিক তোর কথায় যুক্তি আছে। যেই মেয়ে প্রথম প্রথম ছেলেটাকে জুতো দ্যাখাতো সেই মেয়েই বিয়ের পর ওই ছেলের জুতো মুছে দ্যায়।”

“তো বিগত সরকার তো স্কটল্যান্ডের রাজা রর্বাট ব্রুসের মতুন টিরাই করবো, ১৯৭৫ পঁচাত্তরের ২১ বছর পর হ্যারা যহন আবার দেশ সেবার সুযোগ পাইলো হেইডা হ্যারা ঠিক মতুন কাজে লাগাই নাই। তাই পাবলিকে মইরা হ্যাগো দরজার চৌকাঠ পর্যন্ত খুইল্লা নিছে। কর্মফল!”

“আরে আমিও তো সেই ভয়টাই পাচ্ছিরে, এরা যদি আবার কখনো স্কটল্যান্ডের রাজা রর্বাট ব্রুসের মতো দেশ পরিচালনার সুযোগ পায় তখনও কি আবার বস্তা বস্তা টাকা খাটের নিচে রাখবে নাকি রির্জাভ বিদেশে পাচার করবে!”

‘কথাটা ঠিকই কোইছেন, ঢেঁকি স্বর্গে গিয়াও ধানই ভাঙ্গে...। তয় আমার মনে লয় ইদানিং কুনো হালাই আর পয়সার লোভ কোইরা জনগণের হাতে জান হারাইতে চাইবে না!”

“বলা যায় না রে, মানুষতো ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয় না। না হলে এতো তাড়াতাড়ি তোর জুলাই যোদ্ধার বিদেশের মাটিতে পঁচা ডিমের ব্যবসা শুরু করেছে! বন্যার টাকা আজও ব্যাংকে, কেউ জানেনা আবার কবে বন্যা হবে তারপর ওই টাকা কাজে লাগবে! বড় চিন্তা হয়রে।”

“চিন্তা কোইরা কি করবেন। আমাগো দেশেতো আর কুনো দিন হযরত ওমর-এর (রা.) মতুন দেশ পরিচালক পামু না যিনি নিজে উট থ্যাইক্কা নাইম্মা ক্রীতদাসরে উটের পিঠে উঠাইছে, আর তখন ক্রীতদাসের মুখে হাসি ফুইট্টা উঠছে। আর এই নিয়া কথাশিল্পী শওকত ওসমান উপন্যাস লিখছেন ক্রীতদাসের হাসি।”

“আরে বাংলাদেশে হযরত ওমর-এর (রা.) মতন দেশ পরিচালক হয়তো হবে না, তবে উমুর-বিন-তাচিকের মতো কচি কবি তো পাবো যিনি তার ড্রইংরুমের বরফ দেয়া বাতাস খেতে খেতে দেশের আপামর জনগণের মুক্তির জন্য লড়াই করবেন! কবিতা লিখবেন!”

“দ্যখেন কী হয়। বাংলার জনগণ যে দিন সত্যিকারে জাগবো হেই দিন যুদি মাইনষ্যের ট্যাকার লোভ কমে।”

“কিন্তু মর্নিং শোওস দ্যা ডে...সকাল বেলা এমন কোনো আভাস তো পাচ্ছি না!”

“তয় ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের লাই¹া অপেক্ষা করেন...”

“ওকে তাই সই ওয়েটিং ফর কামিং জেনেরাল ইলেকশান...”

[লেখক: চলচ্চিত্রকার]

back to top