alt

উপ-সম্পাদকীয়

আসামের ডিটেনশন সেন্টারের নাম কেন বদলাচ্ছে

ইমতিয়াজ আহমেদ সজল

: বুধবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২১

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ও বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী আসাম রাজ্যের সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেখানে ‘চিহ্নিত বিদেশিদের’ আটক রাখার জন্য যেসব ডিটেনশন সেন্টার বা বন্দিশিবির আছে, সেগুলোর নতুন নাম হবে ট্রানজিট ক্যাম্প। আসামে এ রকম ছয়টি বন্দিশিবির রয়েছে, যেগুলোর অবস্থান বিভিন্ন সাধারণ কারাগারের অভ্যন্তরেই। আসামের বন্দিশিবিরগুলোতে একটা সময়ে প্রায় ২ হাজার মানুষ বন্দি ছিলেন, যাদের পরিবার-পরিজন ভারতীয় হলেও রাজ্যের ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল এদের বিদেশি বলে চিহ্নিত করেছিল। বর্তমানে ওই ডিটেনশন সেন্টারগুলোতে ১৮১ জন বন্দি রয়েছেন। আসাম ছাড়াও, ভারতের রাজধানী দিল্লিসহ বিভিন্ন রাজ্যে অন্তত ১০টি সচল ডিটেনশন ক্যাম্প রয়েছে। তবে শুধু ভারতেই নয়, বিশ্বের প্রায় সব প্রান্তেই রাষ্ট্রগুলো তাদের ভৌগোলিক সীমানা, সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা রক্ষার জন্য অবৈধ অনুপ্রবেশকারী বা বিদেশিদের আটকে রাখতে এ ধরনের বন্দিশিবির করেছে। বর্তমান বিশ্বে অন্তত ১৩০টি দেশে ১ হাজারেরও বেশি ডিটেনশন ক্যাম্প আছে।

বৈধ নথিপত্র ছাড়া ভারতে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশকারী অথবা বৈধ কিন্তু মেয়াদোত্তীর্ণ নথিপত্রসহ কোন বিদেশিকে ১৯২০ সালের পাসপোর্ট আইন বা ১৯৪৬ সালের ফরেনার্স আইনে আটক করে, যেখানে রাখা হতো সে জায়গাকেই ডিটেনশন সেন্টার হিসেবে নাম দেয়া হয়েছিল। তবে এই ডিটেনশন সেন্টারকে ঘিরে বিভিন্ন সময় বিতর্কের মুখে পড়তে হয়েছে আসাম সরকারকে। অমানবিকভাবে এই ক্যাম্পে আটকে রাখা কিংবা অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনাও বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছিল। আসামে নাগরিক নিবন্ধনের কাজ চলাকালীন সেখানকার ডিটেনশন সেন্টারে থাকা ব্যক্তিদের মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে, এই যুক্তিতে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছিলেন একজন মানবাধিকারকর্মী। ২০১৯ সালের ১৫ মে তিন বছরের বেশি ডিটেনশন সেন্টারে থাকা ব্যক্তিদের কিছু শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দেয়ার আদেশ করেন সুপ্রিম কোর্ট। গত ১৭ আগস্ট ২০২১ রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দপ্তর একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে এই নাম পরিবর্তনের বিষয়টি ঘোষণা করে।

কিন্তু প্রজ্ঞাপনে নাম পরিবর্তনের কোন কারণ বর্ণনা করা হয়নি। নাম পরিবর্তনের মাধ্যমে এই বন্দিশিবিরগুলোর প্রকৃতি ও বৈশিষ্ট্যগত কোনো রদবদল নিয়েও কিছু বলা হয়নি সংশ্লিষ্ট প্রজ্ঞাপনে। আর তাই নাম পরিবর্তন নিয়ে জনমনে রয়েছে নানা গুঞ্জন। অনেকের মতে, ডিটেনশন সেন্টার নামটা অনেকটা কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের মতো শোনায়। তাই মূলত আরেকটু মানবিক ও নমনীয় শোনানোর জন্যই করা হয়েছে এ পরিবর্তন। আবার কারও মতে, এই শাব্দিক/আভিধানিক পরিবর্তনেরও রয়েছে কিছু অন্তর্নিহিত তাৎপর্য। ডিটেনশন সেন্টার বলতে বোঝায় কাউকে কোথাও আটক রাখা আর ট্রানজিট ক্যাম্প বলতে মূল গন্তব্যে পৌঁছার পথে সাময়িকভাবে কোথাও অবস্থান করাকে বোঝায়।

যে কারণেই হোক, নামকরণের এই পরিবর্তন অবশ্যই তাৎপর্যপূর্ণ। এ পরিবর্তনের রয়েছে কিছু ঐতিহাসিক বাস্তবতা ও সমসাময়িক রাজনৈতিক প্রেক্ষিত। আসামে এই বিতর্কের পেছনে রয়েছে রাজ্যের অসমিয়াদের সঙ্গে বাঙালি বসতি স্থাপনকারীদের বিরোধ এবং রাজ্যের অনেক অধিবাসীর পরিচয় ও নাগরিকত্বের প্রশ্ন, যা বহু বছর ধরে ঝুলে আছে। সমসাময়িক প্রেক্ষাপটে এ বিতর্ক উসকে দিয়েছে রাজ্যের জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) এবং ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধন আইন (সিএএ)।

অসমে কোটি কোটি বাংলাদেশি অবৈধভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে- এই প্রচার একসময় সারা ভারতে ছড়িয়ে দিয়েছিল উগ্র অসমিয়া জাতীয়তাবাদী দলগুলো। বিভিন্ন সময়ে আসাম থেকে ‘বাঙালি হটাও’ আন্দোলন চলতে থাকে। আশির দশকে আসামে বিদেশি বিতাড়ন আন্দোলন চরম আকার ধারণ করে, ১৯৮৫ সালের ১৫ আগস্ট সম্পাদিত আসাম চুক্তির মাধ্যমে যার অবসান ঘটে। আসামে ‘ডি ভোটার’ বা সন্দেহজনক নাগরিকদের তালিকা তৈরি করা শুরু হয় ১৯৯৮ সাল থেকে। ২০০৮ সাল থেকে সে রাজ্যে নতুন করে ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। বিভিন্ন জেলায় মোট ১০০টি ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল চালু হয়। এর পরেও অসমিয়ারা সন্তুষ্ট না হওয়ায় কেন্দ্রীয় সরকার আসামের ক্ষেত্রে সরাসরি এনআরসি করার ঘোষণা করে, যার ভিত্তিবর্ষ ধরা হয় বাংলাদেশের আবির্ভাবের সময়কালকে ২৫ মার্চ, ১৯৭১।

ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানে আসামের এনআরসির নবায়নের কাজ শুরু হয় ২০১৫ সালে। ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর প্রথম প্রকাশিত খসড়ায় নাগরিকত্বের জন্য আবেদনকারী ৯০ লাখ মানুষের নাম বাদ পড়েছিল। ৩০ জুলাই, ২০১৮-র দ্বিতীয় খসড়ায় বাদ পড়া মানুষের সংখ্যা কমে হয়েছে ৪০ লাখ, আর সবশেষে ৩১ আগস্ট, ২০১৯-এ এনআরসির চূড়ান্ত তালিকায় ৩ কোটি ৩০ লক্ষ আবেদনকারী থেকে ১৯ লাখ ৬ হাজার ৬৫৭ জন বাসিন্দার নাম বাদ গিয়েছে। এরপর দুই বছর অতিবাহিত হলেও বাদ পড়া লোকদের এখনও ‘রিজেকশন স্লিপ’সহ ‘স্পিকিং অর্ডার’ দেয়া হয়নি, যেখানে নাম না আসার কারণ উল্লেখ থাকবে। আসামের এনআরসি কর্তৃপক্ষের প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশ ছিল- ২০২০ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে এনআরসির কাজ শেষ করতে হবে। এর মধ্যে, ২০১৯ সালে কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে নাগরিকত্বের দাবি ও প্রকাশিত তালিকার বিরোধ নিষ্পত্তিতে নতুন আরও ২০০টি ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছে। এত সব ধাপ ও প্রক্রিয়ার পরও এনআরসির চূড়ান্ত খসড়া তালিকায় কিছু গুরুতর অনিয়ম চিহ্নিত করা হয়েছে- দাবি করে পুনরায় তা যাচাইয়ের জন্য গত ২১ মে ২০২১ সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছে এনআরসি কর্তৃপক্ষ। অর্থাৎ, পুনরায় যাচাই করলে বাদ পড়া লোকের সংখ্যা আরও কমবে। কিন্তু, ইতোমধ্যে এসব আয়োজনে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয়ের পর তারা এখন ব্যয় সংকোচন নীতি অবলম্বন করছে। এ খাতে নতুন করে কোনো অর্থ ব্যয় করতে আগ্রহী নয় কেন্দ্রীয় সরকার।

নামকরণের এই পরিবর্তন অবশ্যই তাৎপর্যপূর্ণ। এ পরিবর্তনের রয়েছে কিছু ঐতিহাসিক বাস্তবতা ও সমসাময়িক রাজনৈতিক প্রেক্ষিত। আসামে এই বিতর্কের পেছনে রয়েছে রাজ্যের অসমিয়াদের সঙ্গে বাঙালি বসতি স্থাপনকারীদের বিরোধ এবং রাজ্যের অনেক অধিবাসীর পরিচয় ও নাগরিকত্বের প্রশ্ন, যা বহু বছর ধরে ঝুলে আছে

পুরো এনআরসি প্রক্রিয়ায় ছয়-সাত বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পরও কার্যকর কোনো অগ্রগতি না থাকায় এবং নথিপত্র যাচাই ও আইনি জটিলতায় অনেক অসমিয়া, গোর্খা, হরিজন সম্প্রদায়, চা জনগোষ্ঠীসহ অজস্র পরিবারের ছেলেমেয়ের নামও বাদ পড়ে গেছে এনআরসি থেকে। গোটা বিষয়টি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছেও গ্রহণযোগ্য হলো না। এত বড় একটা প্রক্রিয়ার পরও বোঝা গেল না, কোথায় সেই ১ কোটি অবৈধ বাংলাদেশি? তা হলে এই হেনস্তা এবং কোটি কোটি টাকা খরচ করার দরকার কী ছিল?

এখন কথা হলো, যদি ধরে নিই, রাজ্যের এনআরসি কর্তৃপক্ষ নিকট ভবিষ্যতে আরেকটি পরিমার্জিত তালিকা প্রকাশ করবে, যাতে বাদ পড়া লোকের সংখ্যা আরও কমবে। এনআরসির ওই চূড়ান্ত ‘ত্রুটিমুক্ত’ তালিকা থেকে বাদ পড়ে যাওয়া লোকদের মধ্যে যারা ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে আপিল করেও হেরে যাবে তাদের ‘বিদেশি’ হিসেবে ঘোষণা করা হবে, তাদের ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকার কী সিদ্ধান্ত নেবে? ট্রানজিট ক্যাম্পে ঠেলে দেয়া হবে এত মানুষকে (সেখানেও বড়জোর তিন বছরের বেশি রাখা যাবে না তাদের)? নাকি ভোটাধিকারসহ কিছু মৌলিক অধিকারবঞ্চিত করে দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক করে রাখা হবে তাদের? নাকি মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের মতো ‘রাষ্ট্রহীন’ নাগরিক করে রাখা হবে তাদের? নাকি উদ্দেশ্য, সস্তা শ্রম তৈরি করা?

ভারতের জাতীয়তাবাদী রাজনীতিতে এনআরসির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত আছে ২০১৯ সালের ১২ ডিসেম্বর পাশ হওয়া সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা সিএএ। যে আইন অনুযায়ী, ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তানে ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে নিপীড়নের শিকার হয়ে ভারতে আসা ‘সংখ্যালঘু’ শরণার্থীদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেয়ার কথা বলা হয়েছে। ওই দেশগুলি থেকে হিন্দু, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ, পারসি ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের শরণার্থীদের নাগরিকত্ব প্রদানের বিষয়টি সিএএতে উল্লেখ করা হয়েছে। তার জন্য নিজের এবং বাবা-মায়ের জন্মের প্রমাণপত্র দিতে হবে। কোনো কারণে তা না দিতে পারলে ভারতে ছ’বছর বসবাসের পর নাগরিকত্বের জন্য আবেদন জানাতে পারবেন তারা। যদিও আইনে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর ‘সংখ্যাগরিষ্ঠ’ মুসলিম সম্প্রদায়ভুক্তদের কথা বলা হয়নি, সিএএ-বিরোধীদের দাবি, এই আইনে ধর্মের ভিত্তিতে বৈষম্য করা হয়েছে, যা ভারতীয় সংবিধানের মূলনীতির পরিপন্থি। সংশোধনী পাস হওয়ার দেড় বছর পরও সংশ্লিষ্ট বিধিমালা প্রণীত না হওয়ায় আইনটি এখনও কার্যকর হয়নি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রাজ্যসভার কাছে সিএএ-সংক্রান্ত নিয়মনীতি নির্ধারণ এবং বাস্তবায়নের জন্য ২০২২-এর ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় চেয়ে নিয়েছে। কিন্তু, দেশজুড়ে সিএএ বাস্তবায়িত হলে আসাম চুক্তির ভিত্তিতে করা আসামের এনআরসিও এক রকম নিরর্থক হয়ে যাবে। তবে কি নিষ্ফল হবে এত সব আয়োজন? প্রশ্ন হলো, কেনই-বা তবে ভারতের কেন্দ্রীয় ও আসাম সরকার এ কাজে তাদের এত শ্রমশক্তি বিনিয়োগ করল?

তবে শুধু আসামেই নয়, পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতের আর কিছু রাজ্যেও অবৈধ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের সয়লাব রয়েছে বলে গুজব আছে। তাই সবখানেই আছে এনআরসি তৈরির দাবি। দেশজুড়ে ওই তালিকা তৈরি হওয়ার আশু কোন সম্ভাবনা নেই বুঝে উগ্র জাতীয়তাবাদী বিজেপি নেতৃত্ব চাইছেন, এনআরসির আগেই সর্বত্র সিএএ কার্যকর হোক, যা বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশ থেকে আসা বাঙালি হিন্দুদের নাগরিকত্ব দেয়া সম্ভব হবে। নির্বাচনী ইশতাহারে দেয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা হবে বিজেপির। ধারণা করা হচ্ছে, এই এনআরসি-সিএএ প্রক্রিয়া/বিতর্ক গড়াবে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন পর্যন্ত। উগ্র জাতীয়তাবাদী ও সাম্প্রদায়িক চেতনা জিইয়ে রেখে ভোটের রাজনীতির জন্যই মূলত এত আয়োজন।

[লেখক : শিক্ষক]

সৌজন্যে : আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)

চিকিৎসা জগতের বাতিঘর জন হপকিনস বিশ^বিদ্যালয়

জলবায়ু পরিবর্তনের দৃশ্যমান প্রভাব

দুর্নীতির বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর অবস্থান ও আজকের বাংলাদেশ

আবিষ্কারমূলক শিখন পদ্ধতি

টেকসই কৃষিতে নবায়নযোগ্য জ্বালানির সম্ভাবনা

ছবি

জয়নুলের সাঁওতাল দম্পতি এবং সুমনের সৌন্দর্যপ্রিয়তা

এরপরও কি গাছ লাগাবেন না, বন রক্ষা করবেন না?

বিশ্ব ধরিত্রী দিবস

সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মিছিলের শেষ কোথায়

খুব জানতে ইচ্ছে করে

কোন দিকে মোড় নিচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের সংকট?

কৃষিগুচ্ছ : ভর্তির আবেদনের নূ্যূনতম যোগ্যতা ও ফলাফল প্রস্তুতিতে বৈষম্য

ছবি

গণপরিবহনে নৈরাজ্যের শেষ কোথায়

ছাত্র রাজনীতি : পক্ষে-বিপক্ষে

ছবি

বি আর আম্বেদকর : নিম্নবর্গের মানুষের প্রতিনিধি

চেকের মামলায় আসামির মুক্তির পথ কী

রাম-নবমী : হিন্দুত্বের নয়া গবেষণাগার

‘একটি গ্রাম একটি পণ্য’ উদ্যোগ কি সফল হবে

কিশোর গ্যাং : সমস্যার মূলে যেতে হবে

গীতি চলচ্চিত্র ‘কাজল রেখা’ : সুস্থধারার চলচ্চিত্র বিকাশ ঘটুক

ছবি

ঋতুভিত্তিক চিরায়ত বাঙালি সংস্কৃতি

ছবি

স্মরণ : কাঙ্গাল হরিনাথ মজুমদার

ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস

দাবদাহে সুস্থ থাকবেন কীভাবে

কত দিন পরে এলে, একটু শোনো

রম্যগদ্য : আনন্দ, দ্বিগুণ আনন্দ...

ছবি

ইতিহাসের এক অবিস্মরণীয় নাম

বৈসাবি : ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বর্ষবরণ উৎসব

‘ইন্ডিয়া আউট’ ক্যাম্পেইন

উদার-উদ্দাম বৈশাখ চাই

ঈদ নিয়ে আসুক শান্তি ও সমৃদ্ধি, বিস্তৃত হোক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ

প্রসঙ্গ: বিদেশি ঋণ

ছাত্ররাজনীতি কি খারাপ?

জাকাত : বিশ্বের প্রথম সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা

বাংলাদেশ স্কাউটস দিবস : শুরুর কথা

ছবি

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দৃষ্টান্ত

tab

উপ-সম্পাদকীয়

আসামের ডিটেনশন সেন্টারের নাম কেন বদলাচ্ছে

ইমতিয়াজ আহমেদ সজল

বুধবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২১

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ও বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী আসাম রাজ্যের সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেখানে ‘চিহ্নিত বিদেশিদের’ আটক রাখার জন্য যেসব ডিটেনশন সেন্টার বা বন্দিশিবির আছে, সেগুলোর নতুন নাম হবে ট্রানজিট ক্যাম্প। আসামে এ রকম ছয়টি বন্দিশিবির রয়েছে, যেগুলোর অবস্থান বিভিন্ন সাধারণ কারাগারের অভ্যন্তরেই। আসামের বন্দিশিবিরগুলোতে একটা সময়ে প্রায় ২ হাজার মানুষ বন্দি ছিলেন, যাদের পরিবার-পরিজন ভারতীয় হলেও রাজ্যের ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল এদের বিদেশি বলে চিহ্নিত করেছিল। বর্তমানে ওই ডিটেনশন সেন্টারগুলোতে ১৮১ জন বন্দি রয়েছেন। আসাম ছাড়াও, ভারতের রাজধানী দিল্লিসহ বিভিন্ন রাজ্যে অন্তত ১০টি সচল ডিটেনশন ক্যাম্প রয়েছে। তবে শুধু ভারতেই নয়, বিশ্বের প্রায় সব প্রান্তেই রাষ্ট্রগুলো তাদের ভৌগোলিক সীমানা, সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা রক্ষার জন্য অবৈধ অনুপ্রবেশকারী বা বিদেশিদের আটকে রাখতে এ ধরনের বন্দিশিবির করেছে। বর্তমান বিশ্বে অন্তত ১৩০টি দেশে ১ হাজারেরও বেশি ডিটেনশন ক্যাম্প আছে।

বৈধ নথিপত্র ছাড়া ভারতে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশকারী অথবা বৈধ কিন্তু মেয়াদোত্তীর্ণ নথিপত্রসহ কোন বিদেশিকে ১৯২০ সালের পাসপোর্ট আইন বা ১৯৪৬ সালের ফরেনার্স আইনে আটক করে, যেখানে রাখা হতো সে জায়গাকেই ডিটেনশন সেন্টার হিসেবে নাম দেয়া হয়েছিল। তবে এই ডিটেনশন সেন্টারকে ঘিরে বিভিন্ন সময় বিতর্কের মুখে পড়তে হয়েছে আসাম সরকারকে। অমানবিকভাবে এই ক্যাম্পে আটকে রাখা কিংবা অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনাও বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছিল। আসামে নাগরিক নিবন্ধনের কাজ চলাকালীন সেখানকার ডিটেনশন সেন্টারে থাকা ব্যক্তিদের মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে, এই যুক্তিতে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছিলেন একজন মানবাধিকারকর্মী। ২০১৯ সালের ১৫ মে তিন বছরের বেশি ডিটেনশন সেন্টারে থাকা ব্যক্তিদের কিছু শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দেয়ার আদেশ করেন সুপ্রিম কোর্ট। গত ১৭ আগস্ট ২০২১ রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দপ্তর একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে এই নাম পরিবর্তনের বিষয়টি ঘোষণা করে।

কিন্তু প্রজ্ঞাপনে নাম পরিবর্তনের কোন কারণ বর্ণনা করা হয়নি। নাম পরিবর্তনের মাধ্যমে এই বন্দিশিবিরগুলোর প্রকৃতি ও বৈশিষ্ট্যগত কোনো রদবদল নিয়েও কিছু বলা হয়নি সংশ্লিষ্ট প্রজ্ঞাপনে। আর তাই নাম পরিবর্তন নিয়ে জনমনে রয়েছে নানা গুঞ্জন। অনেকের মতে, ডিটেনশন সেন্টার নামটা অনেকটা কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের মতো শোনায়। তাই মূলত আরেকটু মানবিক ও নমনীয় শোনানোর জন্যই করা হয়েছে এ পরিবর্তন। আবার কারও মতে, এই শাব্দিক/আভিধানিক পরিবর্তনেরও রয়েছে কিছু অন্তর্নিহিত তাৎপর্য। ডিটেনশন সেন্টার বলতে বোঝায় কাউকে কোথাও আটক রাখা আর ট্রানজিট ক্যাম্প বলতে মূল গন্তব্যে পৌঁছার পথে সাময়িকভাবে কোথাও অবস্থান করাকে বোঝায়।

যে কারণেই হোক, নামকরণের এই পরিবর্তন অবশ্যই তাৎপর্যপূর্ণ। এ পরিবর্তনের রয়েছে কিছু ঐতিহাসিক বাস্তবতা ও সমসাময়িক রাজনৈতিক প্রেক্ষিত। আসামে এই বিতর্কের পেছনে রয়েছে রাজ্যের অসমিয়াদের সঙ্গে বাঙালি বসতি স্থাপনকারীদের বিরোধ এবং রাজ্যের অনেক অধিবাসীর পরিচয় ও নাগরিকত্বের প্রশ্ন, যা বহু বছর ধরে ঝুলে আছে। সমসাময়িক প্রেক্ষাপটে এ বিতর্ক উসকে দিয়েছে রাজ্যের জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) এবং ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধন আইন (সিএএ)।

অসমে কোটি কোটি বাংলাদেশি অবৈধভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে- এই প্রচার একসময় সারা ভারতে ছড়িয়ে দিয়েছিল উগ্র অসমিয়া জাতীয়তাবাদী দলগুলো। বিভিন্ন সময়ে আসাম থেকে ‘বাঙালি হটাও’ আন্দোলন চলতে থাকে। আশির দশকে আসামে বিদেশি বিতাড়ন আন্দোলন চরম আকার ধারণ করে, ১৯৮৫ সালের ১৫ আগস্ট সম্পাদিত আসাম চুক্তির মাধ্যমে যার অবসান ঘটে। আসামে ‘ডি ভোটার’ বা সন্দেহজনক নাগরিকদের তালিকা তৈরি করা শুরু হয় ১৯৯৮ সাল থেকে। ২০০৮ সাল থেকে সে রাজ্যে নতুন করে ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। বিভিন্ন জেলায় মোট ১০০টি ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল চালু হয়। এর পরেও অসমিয়ারা সন্তুষ্ট না হওয়ায় কেন্দ্রীয় সরকার আসামের ক্ষেত্রে সরাসরি এনআরসি করার ঘোষণা করে, যার ভিত্তিবর্ষ ধরা হয় বাংলাদেশের আবির্ভাবের সময়কালকে ২৫ মার্চ, ১৯৭১।

ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানে আসামের এনআরসির নবায়নের কাজ শুরু হয় ২০১৫ সালে। ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর প্রথম প্রকাশিত খসড়ায় নাগরিকত্বের জন্য আবেদনকারী ৯০ লাখ মানুষের নাম বাদ পড়েছিল। ৩০ জুলাই, ২০১৮-র দ্বিতীয় খসড়ায় বাদ পড়া মানুষের সংখ্যা কমে হয়েছে ৪০ লাখ, আর সবশেষে ৩১ আগস্ট, ২০১৯-এ এনআরসির চূড়ান্ত তালিকায় ৩ কোটি ৩০ লক্ষ আবেদনকারী থেকে ১৯ লাখ ৬ হাজার ৬৫৭ জন বাসিন্দার নাম বাদ গিয়েছে। এরপর দুই বছর অতিবাহিত হলেও বাদ পড়া লোকদের এখনও ‘রিজেকশন স্লিপ’সহ ‘স্পিকিং অর্ডার’ দেয়া হয়নি, যেখানে নাম না আসার কারণ উল্লেখ থাকবে। আসামের এনআরসি কর্তৃপক্ষের প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশ ছিল- ২০২০ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে এনআরসির কাজ শেষ করতে হবে। এর মধ্যে, ২০১৯ সালে কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে নাগরিকত্বের দাবি ও প্রকাশিত তালিকার বিরোধ নিষ্পত্তিতে নতুন আরও ২০০টি ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছে। এত সব ধাপ ও প্রক্রিয়ার পরও এনআরসির চূড়ান্ত খসড়া তালিকায় কিছু গুরুতর অনিয়ম চিহ্নিত করা হয়েছে- দাবি করে পুনরায় তা যাচাইয়ের জন্য গত ২১ মে ২০২১ সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছে এনআরসি কর্তৃপক্ষ। অর্থাৎ, পুনরায় যাচাই করলে বাদ পড়া লোকের সংখ্যা আরও কমবে। কিন্তু, ইতোমধ্যে এসব আয়োজনে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয়ের পর তারা এখন ব্যয় সংকোচন নীতি অবলম্বন করছে। এ খাতে নতুন করে কোনো অর্থ ব্যয় করতে আগ্রহী নয় কেন্দ্রীয় সরকার।

নামকরণের এই পরিবর্তন অবশ্যই তাৎপর্যপূর্ণ। এ পরিবর্তনের রয়েছে কিছু ঐতিহাসিক বাস্তবতা ও সমসাময়িক রাজনৈতিক প্রেক্ষিত। আসামে এই বিতর্কের পেছনে রয়েছে রাজ্যের অসমিয়াদের সঙ্গে বাঙালি বসতি স্থাপনকারীদের বিরোধ এবং রাজ্যের অনেক অধিবাসীর পরিচয় ও নাগরিকত্বের প্রশ্ন, যা বহু বছর ধরে ঝুলে আছে

পুরো এনআরসি প্রক্রিয়ায় ছয়-সাত বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পরও কার্যকর কোনো অগ্রগতি না থাকায় এবং নথিপত্র যাচাই ও আইনি জটিলতায় অনেক অসমিয়া, গোর্খা, হরিজন সম্প্রদায়, চা জনগোষ্ঠীসহ অজস্র পরিবারের ছেলেমেয়ের নামও বাদ পড়ে গেছে এনআরসি থেকে। গোটা বিষয়টি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছেও গ্রহণযোগ্য হলো না। এত বড় একটা প্রক্রিয়ার পরও বোঝা গেল না, কোথায় সেই ১ কোটি অবৈধ বাংলাদেশি? তা হলে এই হেনস্তা এবং কোটি কোটি টাকা খরচ করার দরকার কী ছিল?

এখন কথা হলো, যদি ধরে নিই, রাজ্যের এনআরসি কর্তৃপক্ষ নিকট ভবিষ্যতে আরেকটি পরিমার্জিত তালিকা প্রকাশ করবে, যাতে বাদ পড়া লোকের সংখ্যা আরও কমবে। এনআরসির ওই চূড়ান্ত ‘ত্রুটিমুক্ত’ তালিকা থেকে বাদ পড়ে যাওয়া লোকদের মধ্যে যারা ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে আপিল করেও হেরে যাবে তাদের ‘বিদেশি’ হিসেবে ঘোষণা করা হবে, তাদের ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকার কী সিদ্ধান্ত নেবে? ট্রানজিট ক্যাম্পে ঠেলে দেয়া হবে এত মানুষকে (সেখানেও বড়জোর তিন বছরের বেশি রাখা যাবে না তাদের)? নাকি ভোটাধিকারসহ কিছু মৌলিক অধিকারবঞ্চিত করে দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক করে রাখা হবে তাদের? নাকি মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের মতো ‘রাষ্ট্রহীন’ নাগরিক করে রাখা হবে তাদের? নাকি উদ্দেশ্য, সস্তা শ্রম তৈরি করা?

ভারতের জাতীয়তাবাদী রাজনীতিতে এনআরসির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত আছে ২০১৯ সালের ১২ ডিসেম্বর পাশ হওয়া সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা সিএএ। যে আইন অনুযায়ী, ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তানে ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে নিপীড়নের শিকার হয়ে ভারতে আসা ‘সংখ্যালঘু’ শরণার্থীদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেয়ার কথা বলা হয়েছে। ওই দেশগুলি থেকে হিন্দু, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ, পারসি ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের শরণার্থীদের নাগরিকত্ব প্রদানের বিষয়টি সিএএতে উল্লেখ করা হয়েছে। তার জন্য নিজের এবং বাবা-মায়ের জন্মের প্রমাণপত্র দিতে হবে। কোনো কারণে তা না দিতে পারলে ভারতে ছ’বছর বসবাসের পর নাগরিকত্বের জন্য আবেদন জানাতে পারবেন তারা। যদিও আইনে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর ‘সংখ্যাগরিষ্ঠ’ মুসলিম সম্প্রদায়ভুক্তদের কথা বলা হয়নি, সিএএ-বিরোধীদের দাবি, এই আইনে ধর্মের ভিত্তিতে বৈষম্য করা হয়েছে, যা ভারতীয় সংবিধানের মূলনীতির পরিপন্থি। সংশোধনী পাস হওয়ার দেড় বছর পরও সংশ্লিষ্ট বিধিমালা প্রণীত না হওয়ায় আইনটি এখনও কার্যকর হয়নি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রাজ্যসভার কাছে সিএএ-সংক্রান্ত নিয়মনীতি নির্ধারণ এবং বাস্তবায়নের জন্য ২০২২-এর ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় চেয়ে নিয়েছে। কিন্তু, দেশজুড়ে সিএএ বাস্তবায়িত হলে আসাম চুক্তির ভিত্তিতে করা আসামের এনআরসিও এক রকম নিরর্থক হয়ে যাবে। তবে কি নিষ্ফল হবে এত সব আয়োজন? প্রশ্ন হলো, কেনই-বা তবে ভারতের কেন্দ্রীয় ও আসাম সরকার এ কাজে তাদের এত শ্রমশক্তি বিনিয়োগ করল?

তবে শুধু আসামেই নয়, পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতের আর কিছু রাজ্যেও অবৈধ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের সয়লাব রয়েছে বলে গুজব আছে। তাই সবখানেই আছে এনআরসি তৈরির দাবি। দেশজুড়ে ওই তালিকা তৈরি হওয়ার আশু কোন সম্ভাবনা নেই বুঝে উগ্র জাতীয়তাবাদী বিজেপি নেতৃত্ব চাইছেন, এনআরসির আগেই সর্বত্র সিএএ কার্যকর হোক, যা বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশ থেকে আসা বাঙালি হিন্দুদের নাগরিকত্ব দেয়া সম্ভব হবে। নির্বাচনী ইশতাহারে দেয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা হবে বিজেপির। ধারণা করা হচ্ছে, এই এনআরসি-সিএএ প্রক্রিয়া/বিতর্ক গড়াবে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন পর্যন্ত। উগ্র জাতীয়তাবাদী ও সাম্প্রদায়িক চেতনা জিইয়ে রেখে ভোটের রাজনীতির জন্যই মূলত এত আয়োজন।

[লেখক : শিক্ষক]

সৌজন্যে : আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)

back to top