alt

উপ-সম্পাদকীয়

দুই দেশের অভিন্ন নদ-নদীর পানি ভাগাভাগি- আর কত অপেক্ষা

আব্দুল মান্নান খান

: শুক্রবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২২

মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী গেল। ৩০ লক্ষ শহীদের তাজা রক্তের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের এ স্বাধীনতা, লাল-সবুজের পতাকা, জাতীয় সংগীত ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’ এসবই আমাদের নিজস্ব অর্জন। কোনো দেশের সরকার হয়তো আমাদের মুক্তিকামী মানুষের স্বাধীনতার সংগ্রামকে সমর্থন করেনি যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চীন ও সৌদি আরব কিন্তু তাতে আমাদের ঠেকে থাকেনি। ওই সব দেশের মানুষের অকুণ্ঠ সমর্থন আমরা পেয়েছি। সবচেয়ে বেশি পেয়েছি ভারতের সমর্থন ও সরাসরি সহযোগিতা। পাকিস্তানি হানাদাররা যখন গণহত্যা চালিয়েছিল, লাখো লাখো মানুষ যখন ঘরবাড়ি ছেড়ে জীবন বাঁচাতে দিগি¦দিক হারিয়ে বেরিয়ে পড়েছিল তখন ভারত মানবিক বিপর্যয় ঠেকাতে সীমান্ত খুলে দিয়েছিল। এক কোটি লোক প্রায় শরণার্থী হয়ে তখন ভারতে প্রবেশ করে। ভারত শুধু তাদের আশ্রয় ও খাদ্য-চিকিৎসা দিয়েই থেমে থাকেনি অস্ত্র দিয়ে ট্রেনিং দিয়ে হানাদার পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে সহযোগিতা করেছে। বিশ্বজনমত সৃষ্টি করেছে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে। ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মহীয়সী নারী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী কী না করেছেন তখন। ছুটে গেছেন পৃথিবীর একপ্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে। তারপর একপর্যায়ে যখন যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে তখন যুদ্ধ থামিয়ে দিতে বিশ্বের পরাশক্তিগুলো জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে কাজে লাগাতে বৈঠকে বসেছে কিন্তু ভারতের কূটনীতির কাছে তারা হেরে গেছে। একাধিকবার রাশিয়া (তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন) যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ভেটো পাওয়ার প্রয়োগ করে জানিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশের মুক্তিকামী মানুষদের থামানো যাবে না। শেষে পরাজিত হয়ে নাকে খত দিয়ে লেজ গুটিয়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে পাকিস্তানি হানাদাররা। অভ্যুদয় ঘটেছে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের। জয় হয়েছে মুক্তিকামী মানুষের, জয় হয়েছে মানবতার, জয় হয়েছে গণতন্ত্রের।

মুক্তিযুদ্ধে ইন্দিরা গান্ধী তথা ভারতের সরকার ও জনগণের অবদানের কথা আসলে বাংলাদেশ সৃষ্টির ইতিহাসে চির ভাস্বর যা কখনও ম্লান হবার নয়। সেই ভারত বাংলাদেশের অমঙ্গল চাইতে পারে না। বলতে চাচ্ছি ভারত ও বাংলাদেশের অভিন্ন নদ-নদীর পানির বিষয়টি নিয়ে। গঙ্গায় ফারাক্কা বাঁধ দিয়ে আমাদের পদ্মার পানি সরিয়ে নেয়া থেকে দুই দেশের অভিন্ন নদ-নদীর পানি ভাগাভাগির বিষয়টি প্রথম আসে। পঁচাত্তর সালে সালে ভারত পরীক্ষা মূলকভাবে চালু করে বাঁধটি। ওই বছরই ১৫ আগস্ট আমরা আমাদের মহান নেতাকে হারাই। বঙ্গবন্ধুকে হারিয়ে বাংলাদেশ নেতৃত্ব শূন্য হয়ে পড়ে। সেই থেকে শুরু হলো পদ্মা-গড়াইসহ এর বহু শাখা উপশাখা নদ-নদীর বেহাল দশা। গঙ্গার জল পায় না পদ্মা। ব্যাপারটা এমন হয়ে দাঁড়ায় যেন মায়ের দুধ সন্তান পায় না। আর পদ্মার অববাহিকার গঙ্গার নাতি-নাতনিরা খাঁবি খেতে থাকে, আর্তচিৎকার পাড়তে থাকে বাঁচার জন্য।

এক সময় গঙ্গার পানি চুক্তির বিষয়টি জাতিসংঘে যায়। অনেক পরে সেটা জাতিসংঘ থেকে প্রত্যাহার করে এনে চুক্তি একটা হয় দু’দেশের মধ্যে। এতে পদ্মা-গড়াইসহ এর শাখা-উপশাখা নদ-নদী কতটুকু বাঁচতে পেরেছে নাকি প্রবাহ হারিয়ে দূষণ দখলে খাঁবি খাচ্ছে- তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না সবাই দেখছেন। পদ্মা-গড়াই-মধুমতির প্রবাহ কতটা ফিরে এসেছে এবং অন্যান্য শাখা নদী উপনদীগুলোর নাব্যতা কতটুকু ফিরে এসেছে তাও সবাই দেখছেন। পত্রিকায় এসেছে, উজানে পানি প্রবাহ কমে গেছে, দক্ষিণাঞ্চলে নদ-নদীর পানিতে লবণাক্ততা দ্বিগুণ বেড়েছে, পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা’।

তবে সুবিধা একটা আমাদের হয়েছে তাহলো, নদ-নদীর প্রবাহ না থাক, সমুদ্রের লোনাজল যতই উজানে উঠে আসুক, ফসল ও জীববৈচিত্র্যের ভবিষ্যৎ বিপর্যয় যতই ঘনিয়ে আসুক, ভূগর্ভস্থ পানির লেয়ার যতই নিচে নেমে যাক না কেন সব ওই বৈশ্বিক জলবায়ুর ওপর দিয়ে চালিয়ে দেয়া যাচ্ছে। একটা সুবিধাজনক অবস্থা আমরা পেয়েছি বৈকি। একটা কথা এখানে বলতে হয়, আগেই বলেছি এক সময় গঙ্গার পানি চুক্তির বিষয়টি জাতিসংঘে ওঠায় বাংলাদেশ।

এনিয়ে আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয় অনেক কথা বলেছিলেন ২০১৯ সালে (পত্রপত্রিকায় বিস্তারিত এসেছিল)। তিনি বলেছিলেন, ‘আমরা চেয়েছিলাম উজান ও ভাটির দেশের ক্ষেত্রে অববাহিকা ব্যবস্থাপনায় সমান অধিকার থাকবে। কিন্তু তারা চাচ্ছিলেন এটার ওপর এককভাবে তাদের অধিকার থাকবে। তিনি বলেন, গঙ্গার পানি চুক্তির বিষয়টি জাতিসংঘে নিলে ১৯৭৮ থেকে ১৯৯৫ পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে জাতিসংঘে কোন অধিবেশন হয়নি। পরবর্তী সময়ে আমরা বিষয়টি জাতিসংঘ থেকে প্রত্যাহার করি এবং দ্বিপক্ষীয়ভাবে সমাধান করি। গঙ্গার বিষয়টি জাতিসংঘে নিয়ে আমাদের কোন লাভ হয়নি বরং ক্ষতি হয়েছে এবং এতে একটা বিপর্যয়কর অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল’। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয়ের একথার পরিপ্রেক্ষিতে যে কথাটা এসে যায় তাহলো, ভারতের ওই মনোভাবের (‘আমরা চেয়েছিলাম উজান ও ভাটির দেশের ক্ষেত্রে অববাহিকা ব্যবস্থাপনায় সমান অধিকার থাকবে। কিন্তু তারা চাচ্ছিলেন এটার ওপর এককভাবে তাদের অধিকার থাকবে) কোন পরিবর্তন এখন পর্যন্ত ঘটেছে কি না। যদি না ঘটে থাকে তাহলে স্বাধীনতার ৫০ বছর কেন ১০০ বছরেও কোন কাজ হবে বলে মনে করার কোন কারণ নেই। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয় যদি এনিয়ে কিছু বলতেন আমরা একটু স্বস্তি পেতাম।

এ তো গেল পদ্মা-গড়াই নিয়ে দু-এক কথা। সারাদেশের অধিকাংশ নদ-নদীর অবস্থা কী। তিস্তার কথায় ধরুন, কথায় বলে না, রাজায় রাজায় যুদ্ধ করে উলু খাগড়ার প্রাণ যায়’। এযুদ্ধ সে যুদ্ধ নয়। এযুদ্ধ একে অপরের ওপর প্রভাব খাটানোর যুদ্ধ আর আভ্যন্তরীণভাবে ক্ষমতায় যাওয়ার আর ক্ষমতায় টিকে থাকার যুদ্ধ। ভারতের কাছে এ ইস্যুটিতে আর কিছু শুনতে চাইনে আমরা, চাই পানির ন্যায্য হিস্যা। আমরা কারও কর্তৃত্য কারও কূটনৈতিক ঘোরপ্যাঁচ দেখতে চাই না। আমরা আমাদের মৃতপ্রায় নদ-নদীতে প্রবাহ ফিরে আসুক তাই চাই। খনন করে নদ-নদী বাঁচানো যাবে না পানির প্রবাহ ফিরে না পেলে। এতে উল্টা সমুদ্রের লোনা জলের কুমির ডেকে আনা হতে পারে।

দিল্লি-পশ্চিম বাংলার কী স্বার্থ না স্বার্থ আমরা জানতে চাইনি, আমরা চাই তিস্তার পানিসহ ভারত থেকে আসা অভিন্ন নদ-নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা। আমরা ভাটির দেশের মানুষ। উজানের দেশ আমাদের পানির ব্যাপারটা অগ্রাহ্য করে চলবে এটা আর কিছু না হলেও অমানবিক। এটা চলতে পারে না

দিল্লি-পশ্চিম বাংলার কী স্বার্থ না স্বার্থ আমরা জানতে চাইনি, আমরা চাই তিস্তার পানিসহ ভারত থেকে আসা অভিন্ন নদ-নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা। আমরা ভাটির দেশের মানুষ। উজানের দেশ আমাদের পানির ব্যাপারটা অগ্রাহ্য করে চলবে এটা আর কিছু না হলেও অমানবিক। এটা চলতে পারে না। যেদেশ একাত্তরে এ অঞ্চলের জনগণের মানবিক বিপর্যয় ঠেকাতে সীমান্ত উন্মুক্ত করে দিতে পেরেছে সেই দেশ ‘জীবনের অপর নাম পানি’ সেই পানি নিয়ে এ অঞ্চলের মানুষের ওপর বৈরী মনোভাব পোষণ করতে পারে এ বিশ্বাস আমরা সাধারণ জনগণ করতে পারছি না। মনে করি ব্যর্থতা, যা তা আমাদের। একবারে হবে না, দুই বারে হবে না, পাঁচ বছরে হবে না, পঞ্চাশ বছরে কেন হবে না। যে শিশু স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছে এখন তাকেই তো বিষয়টি নিয়ে বসতে হচ্ছে বৈঠকে। এখন কেন হবে না।

আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং স্বাধীনতার স্থপতি মহান নেতা হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপনের কথা ছিল ২০২০ সালে। সালটি ‘মুজিববর্ষ’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। কথা ছিল এ উপলক্ষে বিশ্বনেতারা ঢাকায় আসবেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আসবেন সঙ্গে ভারতের অন্যান্য শীর্ষ নেতারাও আসবেন। শীর্ষ দুই নেতা দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় বসবেন। আমরা আশা করেছিলাম তিস্তাসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানি ভাগাভাগির বিষয়টা সামনে আসবে এবং একটা ফলাফল আমরা দেখতে পাব। ঠিক সেই মুহূর্তে সবকিছু লন্ডভন্ড করে দেয় করোনাভাইরাস। স্থগিত হয়ে যায় সব আয়োজন। এর এক বছর পরে এসে করোনা পরিস্থিতি অনেকটা সহনীয় পর্যায়ে চলে আসাতে এ উপলক্ষে অনুষ্ঠানমালার শুভসূচনা আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করা হয় ২০২১ সালের ১৭ মার্চ। চলে ২৬ মার্চ পর্যন্ত। সবই ঠিকঠাক মতো হয় শীর্ষ বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠান শেষে আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন জানান, ‘তিস্তাসহ যৌথ নদীর পানির ন্যায্য হিস্যার ওপর বাংলাদেশের অধিকারের বিষয়টি বরাবরের মতোই জোরালোভাবেই উত্থাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চুক্তিটি দ্রুত স্বাক্ষরে ভারত আন্তরিকভাবে অঙ্গীকারাবদ্ধ এবং এ বিষয়ে প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে বলে জানিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি’। পত্রিকায় তখন শিরোনাম হয় ‘তিস্তা সমস্যার দ্রুত সমাধানে ভারতের আশ্বাস’।

সেই একই কথা ‘আশ্বাস’। আর কত বছর চলবে এ আশ্বাস। এদিকে বাংলাদেশের নদ-নদীর অবস্থা ওই আশ্বাসে আশ্বাসে কোথায় এসে দাঁড়িয়েছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। বাংলাদেশের পঞ্চগড় জেলার বাংলাবান্দা সীমান্ত থেকে চোখে পড়ে মহানন্দা নদীর ওপর ভারতের নির্মিত সুউচ্চ বাঁধটি। তার সঙ্গে চোখে পড়ে এপাশে মহানন্দার ক্ষীণ ধারাটি। মনে হয় যেন ওর (মহানন্দার) চোখের জল বইছে এপারে। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে প্রবাহিত পঞ্চাশের অথিক নদ-নদীর এপারের অবস্থা এখন ওই মহানন্দার এপারের ধারাটির মতোই হাপসি কাটছে। বলা হয় ৫৪টি অভিন্ন নদ-নদীর উজানে বাঁধ নির্মাণ করে ভারত পানির প্রবাহ আটকে দিয়েছে একতরফাভাবে। এযাবৎকাল যেমনই হোক যুক্তি একটা হয়েছে গঙ্গার পানি চুক্তি আর তিস্তার পানি চুক্তির ব্যাপারে চলছে একের পর এক আশ্বাস। এমন অবস্থা চলতে থাকলে ৫৪টা নদ-নদীর পানি বণ্টন চুক্তি সম্পন্ন কত বছরে হতে পারে এটা হিসাব করতে সেকালের যাদবের পাটি গণিতের ঐকিক নিয়মে যেতে হতে পারে এ কথা বললে কি বেশি বলা হবে?

আগের টার্ম বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগ তথা বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সরকার টানা ১৩ বছর ক্ষমতায় আছেন বা দেশ পরিচালনার দায়িত্বে আছেন। এর মধ্যে ভারতের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদে অমীমাংশিত কিছু সমস্যা তিনি সমাধান করেছেন। এর মধ্যে ‘সমুদ্র জয়’ অন্যতম প্রধান। বলতে চাচ্ছি সমুদ্র জয় করে এসে নদ-নদীতে পরাজয় আমরা মেনে নিতে পারছি না। আরও যেটা বলে শেষ করতে চাচ্ছি তা হলো, অনেক সাহসের সঙ্গে করোনার মতো পরিস্থিতি মোকাবিলা করে যাচ্ছে শেখ হাসিনার সরকার। এখানেও ভারতের সহযোগিতা রয়েছে। আমরা আশা করব করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা করার মতোই দুই দেশের অভিন্ন নদ-নদীর পানি বণ্টনের ইস্যুটি মোকাবিলা করা হবে।

[লেখক : প্রাবন্ধিক]

আবিষ্কারমূলক শিখন পদ্ধতি

টেকসই কৃষিতে নবায়নযোগ্য জ্বালানির সম্ভাবনা

ছবি

জয়নুলের সাঁওতাল দম্পতি এবং সুমনের সৌন্দর্যপ্রিয়তা

এরপরও কি গাছ লাগাবেন না, বন রক্ষা করবেন না?

বিশ্ব ধরিত্রী দিবস

সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মিছিলের শেষ কোথায়

খুব জানতে ইচ্ছে করে

কোন দিকে মোড় নিচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের সংকট?

কৃষিগুচ্ছ : ভর্তির আবেদনের নূ্যূনতম যোগ্যতা ও ফলাফল প্রস্তুতিতে বৈষম্য

ছবি

গণপরিবহনে নৈরাজ্যের শেষ কোথায়

ছাত্র রাজনীতি : পক্ষে-বিপক্ষে

ছবি

বি আর আম্বেদকর : নিম্নবর্গের মানুষের প্রতিনিধি

চেকের মামলায় আসামির মুক্তির পথ কী

রাম-নবমী : হিন্দুত্বের নয়া গবেষণাগার

‘একটি গ্রাম একটি পণ্য’ উদ্যোগ কি সফল হবে

কিশোর গ্যাং : সমস্যার মূলে যেতে হবে

গীতি চলচ্চিত্র ‘কাজল রেখা’ : সুস্থধারার চলচ্চিত্র বিকাশ ঘটুক

ছবি

ঋতুভিত্তিক চিরায়ত বাঙালি সংস্কৃতি

ছবি

স্মরণ : কাঙ্গাল হরিনাথ মজুমদার

ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস

দাবদাহে সুস্থ থাকবেন কীভাবে

কত দিন পরে এলে, একটু শোনো

রম্যগদ্য : আনন্দ, দ্বিগুণ আনন্দ...

ছবি

ইতিহাসের এক অবিস্মরণীয় নাম

বৈসাবি : ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বর্ষবরণ উৎসব

‘ইন্ডিয়া আউট’ ক্যাম্পেইন

উদার-উদ্দাম বৈশাখ চাই

ঈদ নিয়ে আসুক শান্তি ও সমৃদ্ধি, বিস্তৃত হোক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ

প্রসঙ্গ: বিদেশি ঋণ

ছাত্ররাজনীতি কি খারাপ?

জাকাত : বিশ্বের প্রথম সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা

বাংলাদেশ স্কাউটস দিবস : শুরুর কথা

ছবি

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দৃষ্টান্ত

প্রবাসীর ঈদ-ভাবনা

বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস

ধানের ফলন বাড়াতে ক্লাইমেট স্মার্ট গুটি ইউরিয়া প্রযুক্তি

tab

উপ-সম্পাদকীয়

দুই দেশের অভিন্ন নদ-নদীর পানি ভাগাভাগি- আর কত অপেক্ষা

আব্দুল মান্নান খান

শুক্রবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২২

মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী গেল। ৩০ লক্ষ শহীদের তাজা রক্তের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের এ স্বাধীনতা, লাল-সবুজের পতাকা, জাতীয় সংগীত ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’ এসবই আমাদের নিজস্ব অর্জন। কোনো দেশের সরকার হয়তো আমাদের মুক্তিকামী মানুষের স্বাধীনতার সংগ্রামকে সমর্থন করেনি যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চীন ও সৌদি আরব কিন্তু তাতে আমাদের ঠেকে থাকেনি। ওই সব দেশের মানুষের অকুণ্ঠ সমর্থন আমরা পেয়েছি। সবচেয়ে বেশি পেয়েছি ভারতের সমর্থন ও সরাসরি সহযোগিতা। পাকিস্তানি হানাদাররা যখন গণহত্যা চালিয়েছিল, লাখো লাখো মানুষ যখন ঘরবাড়ি ছেড়ে জীবন বাঁচাতে দিগি¦দিক হারিয়ে বেরিয়ে পড়েছিল তখন ভারত মানবিক বিপর্যয় ঠেকাতে সীমান্ত খুলে দিয়েছিল। এক কোটি লোক প্রায় শরণার্থী হয়ে তখন ভারতে প্রবেশ করে। ভারত শুধু তাদের আশ্রয় ও খাদ্য-চিকিৎসা দিয়েই থেমে থাকেনি অস্ত্র দিয়ে ট্রেনিং দিয়ে হানাদার পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে সহযোগিতা করেছে। বিশ্বজনমত সৃষ্টি করেছে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে। ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মহীয়সী নারী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী কী না করেছেন তখন। ছুটে গেছেন পৃথিবীর একপ্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে। তারপর একপর্যায়ে যখন যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে তখন যুদ্ধ থামিয়ে দিতে বিশ্বের পরাশক্তিগুলো জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে কাজে লাগাতে বৈঠকে বসেছে কিন্তু ভারতের কূটনীতির কাছে তারা হেরে গেছে। একাধিকবার রাশিয়া (তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন) যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ভেটো পাওয়ার প্রয়োগ করে জানিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশের মুক্তিকামী মানুষদের থামানো যাবে না। শেষে পরাজিত হয়ে নাকে খত দিয়ে লেজ গুটিয়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে পাকিস্তানি হানাদাররা। অভ্যুদয় ঘটেছে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের। জয় হয়েছে মুক্তিকামী মানুষের, জয় হয়েছে মানবতার, জয় হয়েছে গণতন্ত্রের।

মুক্তিযুদ্ধে ইন্দিরা গান্ধী তথা ভারতের সরকার ও জনগণের অবদানের কথা আসলে বাংলাদেশ সৃষ্টির ইতিহাসে চির ভাস্বর যা কখনও ম্লান হবার নয়। সেই ভারত বাংলাদেশের অমঙ্গল চাইতে পারে না। বলতে চাচ্ছি ভারত ও বাংলাদেশের অভিন্ন নদ-নদীর পানির বিষয়টি নিয়ে। গঙ্গায় ফারাক্কা বাঁধ দিয়ে আমাদের পদ্মার পানি সরিয়ে নেয়া থেকে দুই দেশের অভিন্ন নদ-নদীর পানি ভাগাভাগির বিষয়টি প্রথম আসে। পঁচাত্তর সালে সালে ভারত পরীক্ষা মূলকভাবে চালু করে বাঁধটি। ওই বছরই ১৫ আগস্ট আমরা আমাদের মহান নেতাকে হারাই। বঙ্গবন্ধুকে হারিয়ে বাংলাদেশ নেতৃত্ব শূন্য হয়ে পড়ে। সেই থেকে শুরু হলো পদ্মা-গড়াইসহ এর বহু শাখা উপশাখা নদ-নদীর বেহাল দশা। গঙ্গার জল পায় না পদ্মা। ব্যাপারটা এমন হয়ে দাঁড়ায় যেন মায়ের দুধ সন্তান পায় না। আর পদ্মার অববাহিকার গঙ্গার নাতি-নাতনিরা খাঁবি খেতে থাকে, আর্তচিৎকার পাড়তে থাকে বাঁচার জন্য।

এক সময় গঙ্গার পানি চুক্তির বিষয়টি জাতিসংঘে যায়। অনেক পরে সেটা জাতিসংঘ থেকে প্রত্যাহার করে এনে চুক্তি একটা হয় দু’দেশের মধ্যে। এতে পদ্মা-গড়াইসহ এর শাখা-উপশাখা নদ-নদী কতটুকু বাঁচতে পেরেছে নাকি প্রবাহ হারিয়ে দূষণ দখলে খাঁবি খাচ্ছে- তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না সবাই দেখছেন। পদ্মা-গড়াই-মধুমতির প্রবাহ কতটা ফিরে এসেছে এবং অন্যান্য শাখা নদী উপনদীগুলোর নাব্যতা কতটুকু ফিরে এসেছে তাও সবাই দেখছেন। পত্রিকায় এসেছে, উজানে পানি প্রবাহ কমে গেছে, দক্ষিণাঞ্চলে নদ-নদীর পানিতে লবণাক্ততা দ্বিগুণ বেড়েছে, পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা’।

তবে সুবিধা একটা আমাদের হয়েছে তাহলো, নদ-নদীর প্রবাহ না থাক, সমুদ্রের লোনাজল যতই উজানে উঠে আসুক, ফসল ও জীববৈচিত্র্যের ভবিষ্যৎ বিপর্যয় যতই ঘনিয়ে আসুক, ভূগর্ভস্থ পানির লেয়ার যতই নিচে নেমে যাক না কেন সব ওই বৈশ্বিক জলবায়ুর ওপর দিয়ে চালিয়ে দেয়া যাচ্ছে। একটা সুবিধাজনক অবস্থা আমরা পেয়েছি বৈকি। একটা কথা এখানে বলতে হয়, আগেই বলেছি এক সময় গঙ্গার পানি চুক্তির বিষয়টি জাতিসংঘে ওঠায় বাংলাদেশ।

এনিয়ে আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয় অনেক কথা বলেছিলেন ২০১৯ সালে (পত্রপত্রিকায় বিস্তারিত এসেছিল)। তিনি বলেছিলেন, ‘আমরা চেয়েছিলাম উজান ও ভাটির দেশের ক্ষেত্রে অববাহিকা ব্যবস্থাপনায় সমান অধিকার থাকবে। কিন্তু তারা চাচ্ছিলেন এটার ওপর এককভাবে তাদের অধিকার থাকবে। তিনি বলেন, গঙ্গার পানি চুক্তির বিষয়টি জাতিসংঘে নিলে ১৯৭৮ থেকে ১৯৯৫ পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে জাতিসংঘে কোন অধিবেশন হয়নি। পরবর্তী সময়ে আমরা বিষয়টি জাতিসংঘ থেকে প্রত্যাহার করি এবং দ্বিপক্ষীয়ভাবে সমাধান করি। গঙ্গার বিষয়টি জাতিসংঘে নিয়ে আমাদের কোন লাভ হয়নি বরং ক্ষতি হয়েছে এবং এতে একটা বিপর্যয়কর অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল’। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয়ের একথার পরিপ্রেক্ষিতে যে কথাটা এসে যায় তাহলো, ভারতের ওই মনোভাবের (‘আমরা চেয়েছিলাম উজান ও ভাটির দেশের ক্ষেত্রে অববাহিকা ব্যবস্থাপনায় সমান অধিকার থাকবে। কিন্তু তারা চাচ্ছিলেন এটার ওপর এককভাবে তাদের অধিকার থাকবে) কোন পরিবর্তন এখন পর্যন্ত ঘটেছে কি না। যদি না ঘটে থাকে তাহলে স্বাধীনতার ৫০ বছর কেন ১০০ বছরেও কোন কাজ হবে বলে মনে করার কোন কারণ নেই। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয় যদি এনিয়ে কিছু বলতেন আমরা একটু স্বস্তি পেতাম।

এ তো গেল পদ্মা-গড়াই নিয়ে দু-এক কথা। সারাদেশের অধিকাংশ নদ-নদীর অবস্থা কী। তিস্তার কথায় ধরুন, কথায় বলে না, রাজায় রাজায় যুদ্ধ করে উলু খাগড়ার প্রাণ যায়’। এযুদ্ধ সে যুদ্ধ নয়। এযুদ্ধ একে অপরের ওপর প্রভাব খাটানোর যুদ্ধ আর আভ্যন্তরীণভাবে ক্ষমতায় যাওয়ার আর ক্ষমতায় টিকে থাকার যুদ্ধ। ভারতের কাছে এ ইস্যুটিতে আর কিছু শুনতে চাইনে আমরা, চাই পানির ন্যায্য হিস্যা। আমরা কারও কর্তৃত্য কারও কূটনৈতিক ঘোরপ্যাঁচ দেখতে চাই না। আমরা আমাদের মৃতপ্রায় নদ-নদীতে প্রবাহ ফিরে আসুক তাই চাই। খনন করে নদ-নদী বাঁচানো যাবে না পানির প্রবাহ ফিরে না পেলে। এতে উল্টা সমুদ্রের লোনা জলের কুমির ডেকে আনা হতে পারে।

দিল্লি-পশ্চিম বাংলার কী স্বার্থ না স্বার্থ আমরা জানতে চাইনি, আমরা চাই তিস্তার পানিসহ ভারত থেকে আসা অভিন্ন নদ-নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা। আমরা ভাটির দেশের মানুষ। উজানের দেশ আমাদের পানির ব্যাপারটা অগ্রাহ্য করে চলবে এটা আর কিছু না হলেও অমানবিক। এটা চলতে পারে না

দিল্লি-পশ্চিম বাংলার কী স্বার্থ না স্বার্থ আমরা জানতে চাইনি, আমরা চাই তিস্তার পানিসহ ভারত থেকে আসা অভিন্ন নদ-নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা। আমরা ভাটির দেশের মানুষ। উজানের দেশ আমাদের পানির ব্যাপারটা অগ্রাহ্য করে চলবে এটা আর কিছু না হলেও অমানবিক। এটা চলতে পারে না। যেদেশ একাত্তরে এ অঞ্চলের জনগণের মানবিক বিপর্যয় ঠেকাতে সীমান্ত উন্মুক্ত করে দিতে পেরেছে সেই দেশ ‘জীবনের অপর নাম পানি’ সেই পানি নিয়ে এ অঞ্চলের মানুষের ওপর বৈরী মনোভাব পোষণ করতে পারে এ বিশ্বাস আমরা সাধারণ জনগণ করতে পারছি না। মনে করি ব্যর্থতা, যা তা আমাদের। একবারে হবে না, দুই বারে হবে না, পাঁচ বছরে হবে না, পঞ্চাশ বছরে কেন হবে না। যে শিশু স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছে এখন তাকেই তো বিষয়টি নিয়ে বসতে হচ্ছে বৈঠকে। এখন কেন হবে না।

আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং স্বাধীনতার স্থপতি মহান নেতা হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপনের কথা ছিল ২০২০ সালে। সালটি ‘মুজিববর্ষ’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। কথা ছিল এ উপলক্ষে বিশ্বনেতারা ঢাকায় আসবেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আসবেন সঙ্গে ভারতের অন্যান্য শীর্ষ নেতারাও আসবেন। শীর্ষ দুই নেতা দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় বসবেন। আমরা আশা করেছিলাম তিস্তাসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানি ভাগাভাগির বিষয়টা সামনে আসবে এবং একটা ফলাফল আমরা দেখতে পাব। ঠিক সেই মুহূর্তে সবকিছু লন্ডভন্ড করে দেয় করোনাভাইরাস। স্থগিত হয়ে যায় সব আয়োজন। এর এক বছর পরে এসে করোনা পরিস্থিতি অনেকটা সহনীয় পর্যায়ে চলে আসাতে এ উপলক্ষে অনুষ্ঠানমালার শুভসূচনা আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করা হয় ২০২১ সালের ১৭ মার্চ। চলে ২৬ মার্চ পর্যন্ত। সবই ঠিকঠাক মতো হয় শীর্ষ বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠান শেষে আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন জানান, ‘তিস্তাসহ যৌথ নদীর পানির ন্যায্য হিস্যার ওপর বাংলাদেশের অধিকারের বিষয়টি বরাবরের মতোই জোরালোভাবেই উত্থাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চুক্তিটি দ্রুত স্বাক্ষরে ভারত আন্তরিকভাবে অঙ্গীকারাবদ্ধ এবং এ বিষয়ে প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে বলে জানিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি’। পত্রিকায় তখন শিরোনাম হয় ‘তিস্তা সমস্যার দ্রুত সমাধানে ভারতের আশ্বাস’।

সেই একই কথা ‘আশ্বাস’। আর কত বছর চলবে এ আশ্বাস। এদিকে বাংলাদেশের নদ-নদীর অবস্থা ওই আশ্বাসে আশ্বাসে কোথায় এসে দাঁড়িয়েছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। বাংলাদেশের পঞ্চগড় জেলার বাংলাবান্দা সীমান্ত থেকে চোখে পড়ে মহানন্দা নদীর ওপর ভারতের নির্মিত সুউচ্চ বাঁধটি। তার সঙ্গে চোখে পড়ে এপাশে মহানন্দার ক্ষীণ ধারাটি। মনে হয় যেন ওর (মহানন্দার) চোখের জল বইছে এপারে। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে প্রবাহিত পঞ্চাশের অথিক নদ-নদীর এপারের অবস্থা এখন ওই মহানন্দার এপারের ধারাটির মতোই হাপসি কাটছে। বলা হয় ৫৪টি অভিন্ন নদ-নদীর উজানে বাঁধ নির্মাণ করে ভারত পানির প্রবাহ আটকে দিয়েছে একতরফাভাবে। এযাবৎকাল যেমনই হোক যুক্তি একটা হয়েছে গঙ্গার পানি চুক্তি আর তিস্তার পানি চুক্তির ব্যাপারে চলছে একের পর এক আশ্বাস। এমন অবস্থা চলতে থাকলে ৫৪টা নদ-নদীর পানি বণ্টন চুক্তি সম্পন্ন কত বছরে হতে পারে এটা হিসাব করতে সেকালের যাদবের পাটি গণিতের ঐকিক নিয়মে যেতে হতে পারে এ কথা বললে কি বেশি বলা হবে?

আগের টার্ম বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগ তথা বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সরকার টানা ১৩ বছর ক্ষমতায় আছেন বা দেশ পরিচালনার দায়িত্বে আছেন। এর মধ্যে ভারতের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদে অমীমাংশিত কিছু সমস্যা তিনি সমাধান করেছেন। এর মধ্যে ‘সমুদ্র জয়’ অন্যতম প্রধান। বলতে চাচ্ছি সমুদ্র জয় করে এসে নদ-নদীতে পরাজয় আমরা মেনে নিতে পারছি না। আরও যেটা বলে শেষ করতে চাচ্ছি তা হলো, অনেক সাহসের সঙ্গে করোনার মতো পরিস্থিতি মোকাবিলা করে যাচ্ছে শেখ হাসিনার সরকার। এখানেও ভারতের সহযোগিতা রয়েছে। আমরা আশা করব করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা করার মতোই দুই দেশের অভিন্ন নদ-নদীর পানি বণ্টনের ইস্যুটি মোকাবিলা করা হবে।

[লেখক : প্রাবন্ধিক]

back to top